প্রতীকী ছবি।
স্মার্ট ফোন কিংবা ইন্টারনেট সংযোগের অভাবে দেশের প্রত্যন্ত প্রান্তের পড়ুয়ারও যাতে পড়াশোনা না-আটকায়, তা নিশ্চিত করতে প্রাণপণ চেষ্টার কথা করোনা-কালে বহু বার বলেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক। তার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন সমস্ত রাজ্যকে। দাবি করেছেন, মূলত নেট-সংযোগে পিছিয়ে থাকা প্রত্যন্ত ও গ্রামাঞ্চলের কথা মাথায় রেখেই অনলাইন ক্লাসের বিকল্প হিসেবে টিভি চ্যানেলে শিক্ষাদানের মতো এক গুচ্ছ ব্যবস্থা চালুর। কিন্তু অসরকারি সংস্থা প্রথমের সমীক্ষা অনুয়ায়ী, ফাঁক থেকে গিয়েছে আরও গোড়াতেই। দেখা যাচ্ছে, অনলাইন পঠনপাঠনের সুবিধা তো দূর, এই শিক্ষাবর্ষে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিজের ক্লাসের পাঠ্য বইটুকুও পৌঁছয়নি দেশের প্রায় ২০ শতাংশ পড়ুয়ার কাছে। যাদের সিংহ ভাগই গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দা।
ওই সমীক্ষার তথ্য অনুসারে, দেশে করোনা-কালেও পাঠ্যবই সংগ্রহ করতে পেরেছে মেরেকেটে ৮০% পড়ুয়া। তার মানে, ২০%-এর সেটুকুও জোটেনি। তা পাওয়ার ক্ষেত্রে সব থেকে খারাপ দশা তিন রাজ্যের। রাজস্থান (৬০.৪%), তেলঙ্গনা (৬৮.১%) এবং অন্ধ্রপ্রদেশ (৩৪.৬%)। পশ্চিমবঙ্গে অবশ্য পাঠ্যবই হাতে পেয়েছে অন্তত ৯৮% পড়ুয়া। প্রশ্ন উঠছে, করোনার সময়ে কেন্দ্র এত ফলাও করে অনলাইন শিক্ষা ও পরীক্ষার কথা বলেছে। অথচ পাঠ্যবই পাওয়া থেকেই এত পড়ুয়া বঞ্চিত? প্রশ্নের মুখে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলির ভূমিকাও।
এর আগে সরকারি সমীক্ষাতেই দেখা গিয়েছিল, গ্রামাঞ্চলের বিপুল সংখ্যক পড়ুয়ার কাছে অনলাইন ক্লাসে নিয়ে বসার মতো ল্যাপটপ কিংবা স্মার্ট ফোন নেই। ইন্টারনেট সংযোগও হয় নেই, নয়তো তা ভরসাযোগ্য নয়। এই সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, সেখানে লাইভ অনলাইন ক্লাসে বসার সুযোগ পাচ্ছে মাত্র ১১% পড়ুয়া। প্রতি তিন জনে দু’জন স্কুলের তরফ থেকে কোনও ‘লার্নিং অ্যাক্টিভিটি’ পায়নি। সমস্যা শুধু প্রযুক্তির নয়। কারণ, যাদের স্মার্ট ফোন রয়েছে, তাদের এক-তৃতীয়াংশও ওই বৈদ্যুতিন মাধ্যমে স্কুলের তরফ থেকে শিক্ষার মালমশলা পাওয়া থেকে বঞ্চিত। কোভিডের কামড়ে স্কুলের দরজা দীর্ঘদিন বন্ধ। এর পরে সেখানে ফের উপস্থিত হলে, পড়ার চাপের সঙ্গে এত দিন পিছিয়ে পড়া পড়ুয়ারা কী ভাবে মানিয়ে নেবে, সেই প্রশ্ন তাই থাকছেই। করোনার প্রকোপ স্পষ্ট স্কুলে ভর্তির পরিসংখ্যানেও। ২০১৮ সালে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ৬ থেকে ১০ বছর বয়সীদের মধ্যে স্কুলে ভর্তি হয়নি মাত্র ১.৮%। সেখানে এ বছর তা ৫.৩%। সামান্য হলেও বেড়েছে বেসরকারি স্কুল ছেড়ে সরকারি স্কুলে ভর্তি হওয়ার প্রবণতা। যদিও তার কারণ টাকার টানাটানি কিনা তা অস্পষ্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy