Advertisement
E-Paper

ব্রিগেড সমাবেশে কত খরচ হল? প্রশ্ন পৌঁছে গিয়েছে নির্বাচন কমিশনে, ইঙ্গিত মুকুলের

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্রিগেড সমাবেশে ২৩টা দল আসেনি, ১৩টা দল এসেছিল, ভিড় মেরেকেটে তিন লাখ— এমন দাবিও এ দিন মুকুল রায় করেছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৯ ২১:৫৮
মুকুল রায়। ছবি: পিটিআই।

মুকুল রায়। ছবি: পিটিআই।

তৃণমূলের মেগা ব্রিগেড মেটার পরের দিনই সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে আর্থিক অসঙ্গতির অভিযোগ তুলে দিল বিজেপি। নির্বাচন কমিশনকে নিজেদের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের যে হিসেব তৃণমূল দিয়েছে, শুধু একটা ব্রিগেড সমাবেশেই তার চেয়ে অনেক গুণ বেশি টাকা তৃণমূল খরচ করেছে— দাবি মুকুল রায়ের। নির্বাচন কমিশনে পৌঁছে গিয়েছে এই ‘বিরাট অসঙ্গতি’র খবর— ইঙ্গিত মুকুলের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্রিগেড সমাবেশে ২৩টা দল আসেনি, ১৩টা দল এসেছিল, ভিড় মেরেকেটে তিন লাখ— এমন দাবিও এ দিন মুকুল রায় করেছেন।

গোটা দেশের প্রায় সব উল্লেখযোগ্য অ-বিজেপি শক্তিকে শনিবার ব্রিগেড সমাবশের মঞ্চে হাজির করে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাধারণ নির্বাচনের মুখে দাঁড়িয়ে থাকা দেশটায় বিরোধী শিবিরের ঐক্যের রূপরেখা প্রথম বারের জন্য স্পষ্ট ভাবে সামনে আসছে কলকাতার এক সমাবেশ মঞ্চ থেকে— এমনটা একটু বিরলই। সেই বিরল ঘটনা ঘটিয়ে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন জাতীয় রাজনীতির প্রধান নিয়ন্ত্রকদের অন্যতম। কিন্তু বিজেপি শনিবার থেকেই ক্রমাগত কটাক্ষ ছুড়ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আহ্বানে হওয়া এই সমাবেশের দিকে। শনিবার সিলভাসার এক জনসভা থেকে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কটাক্ষ করেছিলেন বিরোধী ঐক্যের প্রচেষ্টাকে। তার পরে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ সাংবাদিক বৈঠক করে তৃণমূলের ব্রিগেড সমাবেশ সম্পর্কে অবজ্ঞাসূচক মন্তব্য করেছিলেন। রবিবার ফের সাংবাদিক বৈঠক ডাকল বিজেপি। সায়ন্তন বসু এবং জয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে দু’পাশে বসিয়ে মুকুল রায় সেই সাংবাদিক সম্মেলন থেকে একাধিক প্রশ্ন তুললেন ব্রিগেডের এই সমাবেশ সম্পর্কে।

মুকুল এ দিন বলেন, ‘‘ব্রিগেড সমাবেশ থেকে শনিবার অনেকগুলো মিথ্যা কথা বলা হয়েছে। সে সবের জবাব দেওয়ার জন্যই এই সাংবাদিক সম্মেলন ডাকতে হয়েছে।’’ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেওয়া নেতার কথায়, ‘‘কালকের সভা থেকে বলা হয়েছে, ২৩ দলের সভা। কিন্তু আসলে ১৩ দলের সভা হয়েছে।’’ ব্রিগেডের এই সমাবেশে ভিড়ের সব রেকর্ড ভেঙে যাবে বলে দাবি করা হয়েছিল, কিন্তু তিন লক্ষের বেশি লোক এই সমাবেশে হয়নি— মুকুল রায় এ দিন এমন দাবিই করেন। ব্রিগেডের আয়তন কত, সেখানে কত লোক বসতে পারেন, সে তথ্য তিনি সেনার কাছ থেকে নিয়েছেন বলে মুকুল রায় জানান। তাঁর কাছে যে হিসেব এসেছে, তাতে ৩ লক্ষের বেশি লোক তৃণমূলের এই ব্রিগেড সমাবেশে হয়নি বলে মুকুল এ দিন দাবি করেন।

আরও পড়ুন: আর আঞ্চলিক নন, জাতীয় রাজনীতির অন্যতম নিয়ন্ত্রক মমতা, বুঝিয়ে দিল ব্রিগেড

আরও পড়ুন: ব্রিগেডে তেইশ কণ্ঠের এক সুরে এখনও অস্বস্তিতে মোদী!

এই ব্রিগেড সমাবেশ আয়োজন করতে কোন খাতে তৃণমূল কত খরচ করেছে, তার আন্দাজ দিতে কিছু কিছু হিসেব মুকুল রায় তুলে ধরেন এ দিনের সাংবাদিক সম্মেলনে। কিন্তু খরচের এই হিসেব তিনি কোথা থেকে জানলেন, তৃণমূল নিজে এই খরচের কোনও হিসেব প্রকাশ্যে এনেছে কি না, সাংবাদিক বৈঠকে সে সব বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য তিনি করেননি। তৃণমূল নিজেদের বার্ষিক আয়-ব্যয়ের বিষয়ে জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে কী তথ্য দিয়েছে এবং সে তথ্যের সঙ্গে এমন চোখধাঁধানো ব্রিগেড সমাবেশ আয়োজন করার জন্য প্রয়োজনীয় খরচের সঙ্গতি রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি ইতিমধ্যেই আকর্ষণ করা হয়েছে বলে বিজেপি নেতা এ দিন ইঙ্গিত দিয়েছেন। কমিশন বিষয়টি খতিয়ে দেখার দায়িত্ব সিবিআই বা ইডি-কে দিতে পারে— এমন মন্তব্যও এ দিন মুকুল রায় করেন।

আরও পড়ুন: ক্ষমতায় এলে সংবিধান বদলে দেবে বিজেপি: কেজরীওয়াল

দেশে গণতন্ত্র রক্ষার জন্য নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে হঠানো দরকার বলে যে মন্তব্য শনিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মঞ্চ থেকে প্রায় সমস্বরে করে গিয়েছে গোটা বিরোধী শিবির, তাকেও এ দিন কটাক্ষ করেছে বিজেপি। মুকুল রায় বলেন, ‘‘গণতন্ত্র রক্ষা করার জন্য যিনি সভা করছেন, তিনিই এ রাজ্যে গণতন্ত্রকে শেষ করছেন।’’ পঞ্চায়েত নির্বাচনে এ রাজ্যে ভোটই হতে দেওয়া হয়নি বলে মুকুল এ দিন মন্তব্য করেন। তিনি জানান, পঞ্চায়েত নির্বাচন কী পরিস্থিতিতে হয়েছে, তা নিয়ে একটি পুস্তিকা তৈরি করা হয়েছে এবং সেই পুস্তিকাটি তাঁরা তুলে দেওয়া চেষ্টা করেছিলেন সপা সুপ্রিমো অখিলেশ যাদব, বসপা নেতা সতীশ মিশ্র, কংগ্রেস নেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের হাতে। কিন্তু পুলিশের ঘেরাটোপে অখিলেশ-সতীশ-মল্লিকার্জুনদের এমন ভাবে ঘিরে রাখা হয়েছিল যে, তাঁরা কলকাতায় আসা ওই নেতাদের সঙ্গে দেখাই করতে পারেননি, মুকুল রায় এ দিন এমন দাবিই করেছেন।

মুকুল এ দিন আরও জানান যে, তৃণমূলের টিকিটে নির্বাচিত ৬-৮ জন সাংসদ-বিধায়ক বিজেপি-তে যোগ দিতে প্রস্তুত। মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে পুলিশ দিয়ে হেনস্থা করা হবে বলে তাঁরা এখন বিজেপি-তে যোগ দিতে পারছেন না বলে বিজেপি নেতার দাবি। তিনি বলেন, ‘‘নির্বাচন ঘোষণা হয়ে গেলেই পুলিশ চলে যাবে কমিশনের অধীনে। তখন দেখবেন, ক’জন বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছে।’’

TMC brigade TMC rally Kolkata rally Brigade Mukul Roy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy