Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

নাগরিকত্ব সংশোধনীর বিরোধিতা করবে তৃণমূল

বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান-সহ কয়েকটি দেশ থেকে আসা হিন্দু, পার্সি, জৈন, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ‘শরণার্থীদের’ নাগরিকত্ব দেওয়া হবে এই বিলের (সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল বা সিএবি)  মাধ্যমে।

ছবি: পিটিআই।

ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:২৫
Share: Save:

এখনও পর্যন্ত পাওয়া ইঙ্গিত অনুযায়ী আগামী সপ্তাহের গোড়ায় সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল আনতে চলেছে কেন্দ্র। রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, অসমে চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জির তালিকা (এনআরসি) নিয়ে দেশে আতঙ্কিত হিন্দুরা। এবং তার প্রভাব পশ্চিমবঙ্গের তিনটি উপনির্বাচনে পড়েছে। সেই আতঙ্ক দূর করতে সরকার চাইছে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলটি (সিএবি) আনতে। কিন্তু লোকসভা বা রাজ্যসভা যে কক্ষেই আনা হোক না কেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল এর বিরোধিতা করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে।

বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান-সহ কয়েকটি দেশ থেকে আসা হিন্দু, পার্সি, জৈন, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ‘শরণার্থীদের’ নাগরিকত্ব দেওয়া হবে এই বিলের (সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল বা সিএবি) মাধ্যমে। কিন্তু মুসলিমরা বাদ। হিন্দু শরণার্থীদের যে কোনও কাগজপত্র দেখাতে হবে না, সে কথাও রাজনৈতিক স্তরে পশ্চিমবঙ্গে বলে এসেছেন অমিত শাহ।

তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, বিলটি সংসদে এলে পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলা হবে যে এনআরসি-তে ধর্মের ভিত্তিতে তালিকা করা হয়নি ঠিকই, কিন্তু তাতে যে সব হিন্দুর নাম বাদ পড়েছে, তাঁদের দেশে রাখার জন্যই সিএবি আনা হচ্ছে। এটি ধর্মের ভিত্তিতে শরণার্থীদের আশ্রয় দেওয়ার কৌশল বলে চিহ্নিত করে আগেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সংসদীয় যৌথ কমিটিতে চিঠি লিখেছিলেন তৃণমূলে‌র লোকসভা এবং রাজ্যসভার দুই সাংসদ সৌগত রায় এবং ডেরেক ও ব্রায়েন। তাতে বলা হয়েছিল, এনআরসি-র ফলে যে ৪০ লক্ষ মানুষের নাগরিকত্ব সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে, তাঁদের মধ্যে ২৮ লক্ষ বাঙালি হিন্দু। ১০ লক্ষ বাঙালি মুসলিম। বিজেপির দাবি, এর পর সিএবি এনে সরকার ওই ২৮ লক্ষ বাঙালি হিন্দুকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, এর অর্থ ওই হিন্দুরা নাগরিক হিসেবে তালিকায় অন্তর্ভুক্তির আবেদন করার পর এ বার নিজেদের শরণার্থী বলে আবেদন করতে বাধ্য হবেন। আর ১০ লাখ বাঙালি মুসলিমকে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে।

আরও পড়ুন: সচ্ছল দলিতদেরও সং‌রক্ষণের আওতায় চায় কেন্দ্র

তৃণমূলের বক্তব্য, সিএবি-র বাস্তবায়ন হলে বাংলায় সংখ্যালঘু সমাজে বড় ধরনের অসন্তোষ তৈরি হবে। হিন্দুদের অনেকেই নাগরিকত্ব খুইয়ে শরণার্থীদের খাতায় নাম লেখাতে বাধ্য হবেন। সৌগতবাবুর কথায়, ‘‘অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষরা সুবিধা পেলে কেন মুসলিমরা এর বাইরে থাকবেন? কমিটিতে এই বিলটি আলোচনা করে দেখা যাচ্ছে, সুচিন্তিত ভাবে বিজেপি বিভেদকামী পরিকল্পনা চরিতার্থ করতে চাইছে। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করাই এই বিলের মূল উদ্দেশ্য। সে জন্য এই বিল খারিজের দাবি তুলবে তৃণমূল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Citizenship Aamendment Bill Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE