Advertisement
১১ মে ২০২৪
Crocodile

কুমিরের মৃত্যুতে কাতর গোটা গ্রাম, গড়তে চায় মন্দির

গঙ্গারামের মৃতদেহ ট্র্যাক্টরে চড়িয়ে বেরোয় শোকযাত্রা বেরোয়। গায়ে ফুল-চন্দন ঠেকিয়ে তাকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

রীতি মেনে শেষকৃত্য গঙ্গারামের। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

রীতি মেনে শেষকৃত্য গঙ্গারামের। ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
রায়পুর শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৯ ১৭:১৪
Share: Save:

দেহ রেখেছে পুকুরের কুমির। সেই শোকে ভেঙে পড়ল গোটা পাড়া। শোকযাত্রায় সামিল হলেন প্রায় ৫০০ মানুষ। রীতি মেনে সারা হল শেষকৃত্যও। কুমিরটিকে দেবতারূপে পুজো করতেন গ্রামবাসীরা। তার স্মৃতিতে একটি মন্দির গড়ার পরিকল্পনাও চলছে।

ঘটনাটি ঘটেছে ছত্তীসগঢ়ের বেমেত্রা জেলার বাওয়ামোহত্রা গ্রামে। সংবাদ সংস্থা পিটিআইজানিয়েছে,পাড়ার একটি পুকুরে দীর্ঘদিন ধরে বাস ছিল ওই কুমিরটির। বয়স হয়েছিল প্রায় ১৩০ বছর। দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ১১ ফুট। কখনও কারও দিকে তেড়ে যায়নি সে। তাই সকলেই ভালবাসত তাকে। রক্ষাকর্তা হিসাবে পুজো করত। নামও রাখা হয়েছিল গঙ্গারাম।

কিন্তু মঙ্গলবার সকালে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে যায় গঙ্গারাম। তাতে শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা গ্রামে। বেশিরভাগ বাড়িতেই হাঁড়ি চড়েনি সেদিন। বরং পুকুর পাড়েই দাঁড়িয়ে কান্নাকাটি করে সারা দিন কেটে যায় তাঁদের। খবর দেওয়া হয় বন দফতরে। সেখান থেকে আধিকারিকরা এসে ময়নাতদন্ত করে দেখেন, বার্ধক্যজনিত কারণেই মৃত্যু হয়েছে তার।

গঙ্গারামকে বিদায় জানাতে হাজির গ্রামবাসীরা।

আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতির সইয়ের আগেই সংরক্ষণ বিলে চ্যালেঞ্জ, সুপ্রিম কোর্টে রুজু জনস্বার্থ মামলা​

তার পর গঙ্গারামের মৃতদেহ ট্র্যাক্টরে চড়িয়ে বেরোয় শোকযাত্রা বেরোয়। গায়ে ফুল-চন্দন ঠেকিয়ে তাকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। গা ছুঁয়ে প্রণামও করেন অনেকে। সে সব মিটলে পুকুর পাড়েই কবর দেওয়া হয় গঙ্গারামকে।

গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান মোহন সাহু পিটিআই-কে জানান, ‘‘গঙ্গারামকে সকলেই খুব ভালবাসত। রক্ষাকর্তা বলে মানত। ওইদিনকারও কারও বাড়িতে রান্না চড়েনি। ওর স্মৃতিতে পুকুর পাড়ে একটি সৌধ বানানো হবে শীঘ্রই। মন্দির গড়ারও পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।’’

আর এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘গঙ্গারাম খুব শান্ত স্বভাবের ছিল। কখনও কারও দিকে তেড়ে যায়নি। ওই পুকুরে তার গা ঘেঁষে সাঁতার কেটে বেড়াত ছেলেপুলেরা। কিন্তু কখনও তাদের আক্রমণ করেনি। মানুষের দুঃখ কষ্টও বুঝত গঙ্গারাম। নোলা ছিল না একেবারেই। বরং ডাল-ভাত দিলে খেয়ে নিত। জল থেকে কয়েকবার গ্রামে উঠে এসেছিল। কিন্তু পুকুরেই ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে।’’

আরও পড়ুন: সেনায় মালবাহকের কাজ করতে এসে চরবৃত্তি! গ্রেফতার সন্দেহভাজন যুবক​

বন দফতরের সাব ডিভিশনাল অফিসার আরকে সিংহ জানান, ‘‘কুমিরটির সঙ্গে গ্রামবাসীদের আবেগ জড়িয়েছিল। তাই তাঁদের হাতে দেহটি তুলে দিই আমরা, যাতে পুকুর পাড়ে তাকে সমাধিস্থ করা যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE