Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Science News

এ বার মঙ্গলেও উড়বে হেলিকপ্টার!

পৃথিবীতে যতটা উচ্চতা পর্যন্ত উঠতে পারে হেলিকপ্টার, মঙ্গলে তার আড়াই গুণ বেশি উচ্চতায় পৌঁছে যেতে পারবে সেই হেলিকপ্টার। যার নাম দেওয়া হয়েছে, ‘মার্সকপ্টার’।

সেই মার্সকপ্টার, যা পাঠানো হবে মঙ্গলে। ছবি সৌজন্যে: নাসা।

সেই মার্সকপ্টার, যা পাঠানো হবে মঙ্গলে। ছবি সৌজন্যে: নাসা।

সুজয় চক্রবর্তী
শেষ আপডেট: ১২ মে ২০১৮ ১৮:০৮
Share: Save:

কোনও উপগ্রহ নয়। নয় ‘লাল গ্রহ’ মঙ্গলের মাটিতে নামা কোনও ‘ল্যান্ডার’ বা ‘রোভার’ মহাকাশযানও।

মঙ্গলের আকাশে এ বার চক্কর মারবে হেলিকপ্টার!

পৃথিবীতে যতটা উচ্চতা পর্যন্ত উঠতে পারে হেলিকপ্টার, মঙ্গলে তার আড়াই গুণ বেশি উচ্চতায় পৌঁছে যেতে পারবে সেই হেলিকপ্টার। যার নাম দেওয়া হয়েছে, ‘মার্সকপ্টার’।

পাসাডেনায় নাসার জেট প্রোপালসন ল্যাবরেটরি থেকে জানানো হয়েছে, ওই হেলিকপ্টার (উপগ্রহ প্রযুক্তির পরিভাষায় যাকে বলা হয়, ‘রোটরক্র্যাফ্ট’) মঙ্গলের উদ্দেশে রওনা হবে আর দু’বছর পর, ২০২০ সালে। এই শতাব্দীর তিনের দশকে মঙ্গলে মানুষ পাঠানোর আগে সব কিছু পরীক্ষা করে দেখতে ২০২০-তে যে রোভার মহাকাশযান পাঠাচ্ছে নাসা, তার ভিতরে পুরেই লাল গ্রহে পাঠানো হবে সেই হেলিকপ্টার বা ‘মার্সকপ্টার’।

অন্য গ্রহে হেলিকপ্টার এই প্রথম

মার্স হেলিকপ্টার প্রজেক্টের অন্যতম প্রধান গবেষক অনাবাসী ভারতীয় বিজ্ঞানী শ্রীকান্ত মুরলী সম্মুগম পাসাডেনা থেকে টেলিফোনে বলছেন, ‘‘এর আগে কখনও অন্য কোনও গ্রহে হেলিকপ্টার পাঠানো হয়নি। পৃথিবীর তুলনায় মঙ্গলে বায়ুমণ্ডল প্রায় নেই বললেই চলে। তাই মঙ্গলের আকাশে হেলিকপ্টার তোলা ও চালানোর কাজটা বেশ কঠিন। ২০১৩ সাল থেকেই ওই প্রযুক্তি নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা চালানো হচ্ছিল। এ বার এক মাস ধরে হেলিকপ্টারটির ‘ট্রায়াল’ হবে পৃথিবীতে।’’

মঙ্গলের বায়ুমণ্ডল প্রায় নেই বলেই এই হেলিকপ্টারটিকে যতটা সম্ভব হাল্কা করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত তার ওজন ৪ পাউন্ড বা ১.৮ কেজি-র কম। ‘ট্রায়াল’ চালানোর পর প্রয়োজন হলে তা আরও কমানো হতে পারে বলে নাসা সূত্রের খবর।

আরও পড়ুন- ‘ঈশ্বরের মন’ পড়তে পেরেছিলেন আইনস্টাইন!​

আরও পড়ুন- ওজন আধুলির মতো! পৃথিবীকে পাক মারছে ৬ মহাকাশযান​

শ্রীকান্ত বলছেন, হেলিকপ্টারের মাথায় বনবন করে ঘোরে যে ব্লেড, এই ‘মার্সকপ্টারের মাথাতেও তেমনই ঘুরবে দু’টি ‘রোটর’ বা ব্লেড। একে অন্যের বিপরীত দিকে। মিনিটে তা পাক মারবে ৩ হাজার বার। পৃথিবীতে হেলিকপ্টারের রোটরগুলি যে গতিবেগে ঘোরে, তার ১০ গুণ বেশি গতিবেগে।

পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের মাত্র এক শতাংশ বায়ুমণ্ডল রয়েছে লাল গ্রহে। পৃথিবীতে এখনও পর্যন্ত ৪০ হাজার ফুটের বেশি উচ্চতায় হেলিকপ্টার ওড়ানো সম্ভব হয়নি। শ্রীকান্তের কথায়, ‘‘মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলের যা ঘনত্ব, তাতে ওই মার্সকপ্টার লাল গ্রহের আকাশে ততটাই ওপরে থাকবে, পৃথিবীতে হলে যে উচ্চতা হত এক লক্ষ ফুট। অত পাতলা বায়ুমণ্ডলে হেলিকপ্টার ওড়ানোটাই একটা মস্তবড় চ্যালেঞ্জ।’’

ওই হেলিকপ্টার চালানোর আরও দু’টি অসুবিধা রয়েছে। এক, কোনও পাইলট ছাড়াই চালাতে হবে সেই মার্সকপ্টার। দুই, মঙ্গল পৃথিবী থেকে অনেক অনেক দূরে রয়েছে বলে যখন প্রয়োজন, ঠিক সেই মুহূর্তেই, প্রয়োজন হলে, তার গতিপথ বা গতিবেগ বদলানো যাবে না। গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে আগে পাঠানো কমান্ডের ভিত্তিতেই চালাতে হবে ‘মার্সকপ্টার’।

কেন হেলিকপ্টার পাঠানো হচ্ছে মঙ্গলে?

প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার মিমি আউং ই-মেলে জানিয়েছেন, রোভার, ল্যান্ডার ও কক্ষপথে ঘোরা অরবিটারগুলি দিয়ে লাল গ্রহের পাহাড়গুলির আড়ালে লুকিয়ে থাকা এলাকাগুলির হদিশ পেতে বা সেই এলাকাগুলির চেহারা-চরিত্র বুঝতে আমাদের অসুবিধা হচ্ছে। মার্সকপ্টার সেই সমস্যা মেটাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mars Helicopter NASA মিমি আউং
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE