Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
International News

তীব্র ভূকম্পে বসে গিয়েছে একটি শহর, দু’টি দ্বীপ আরও কাছাকাছি!

ওই তীব্র ভূমিকম্পের পর গত দু’বছরে নিউজিল্যান্ডের দু’টি দ্বীপ নর্থ ও সাউথ আইল্যান্ড একে অন্যের দিকে এগিয়ে এসেছে ৩৫ সেন্টিমিটার বা সাড়ে ১৩ ইঞ্চি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
ওয়েলিংটন (নিউজিল্যান্ড) শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০১৮ ১৮:১৪
Share: Save:

দু’বছর আগেকার ভয়াবহ ভূমিকম্প তলে তলে অনেকটাই বদলে দিয়েছে নিউজিল্যান্ডের ভূগোল। ওই সুতীব্র ভূকম্পনে নিউজিল্যান্ডের মানচিত্রে থাকা দু’টি দ্বীপ একে অন্যের দিকে কিছুটা এগিয়ে এসেছে। তাদের মধ্যে থাকা সমুদ্র উধাও হয়ে গিয়েছে কিছুটা। আর মাটিতে অনেকটা বসে গিয়েছে নিউজিল্যান্ডের একটি শহর।

ভূকম্প বিশেষজ্ঞ, বিশিষ্ট ভূতাত্ত্বিক রব ল্যাংরিজের নেতৃত্বে এক গবেষকদল এ কথা জানিয়েছে। তাঁরা জানিয়েছেন, ওই তীব্র ভূমিকম্পের পর গত দু’বছরে নিউজিল্যান্ডের দু’টি দ্বীপ নর্থ ও সাউথ আইল্যান্ড একে অন্যের দিকে এগিয়ে এসেছে ৩৫ সেন্টিমিটার বা সাড়ে ১৩ ইঞ্চি। কোনও ভূখণ্ডের নিরিখে তা খুব বেশি না হলেও, মানচিত্রের মানদণ্ডে তার গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না। আর সাউথ আইল্যান্ডের মাথার দিকে থাকা একটি শহর নেলসন মাটিতে বেশ কিছুটা বসে গিয়েছে। ২০ মিলিমিটার। গোটা একটা শহরের নিরিখে যা কিছুটা উদ্বেগজনকই।

বিশিষ্ট ভূতাত্ত্বিক রব ল্যাংরিজ বলেছেন, ‘‘গত বছরের ১৪ নভেম্বর ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল নিউজিল্যান্ডে। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৭.৮। তারই জেরে সাউথ আইল্যান্ড প্রায় সাড়ে ১৩ ইঞ্চি সরে গিয়েছে নর্থ আইল্যান্ডের দিকে। যার অর্থ, ভূখণ্ডের অবস্থান বদলেছে দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে।’’

আরও পড়ুন- এই সরীসৃপই বিক্রি হয়ে যাচ্ছিল তিন লাখ টাকায়!​

আরও পড়ুন- ইন্দোনেশিয়ায় মৃত ৮৪৪ জনের জন্য প্রস্তুত গণকবর​

তবে একটি আশার কথাও শুনিয়েছেন গবেষক ভূতাত্ত্বিকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, ওই তীব্র ভূকম্পের ফলে যে ফাটল দেখা দিয়েছিল ভূগর্ভের শিলাস্তরে, তার শেষটা হয়েছিল যেখানে সেই সাউথ আইল্যান্ডের কেপ ক্যাম্পবেল শহর আর নর্থ আইল্যান্ড দ্বীপের নীচের দিকে থাকা নিউজিল্যান্ডের রাজধানী শহর ওয়েলিংটনের মধ্যে দূরত্ব আগে যা ছিল, তেমনটাই রয়েছে। ৫০ কিলোমিটার। তার মানে, দু’টি দ্বীপের কিছুটা কাছাকাছি হয়ে পড়ার ঘটনায় রাজধানী শহর ওয়েলিংটনের সঙ্গে সাউথ আইল্যান্ড দ্বীপের শহরগুলির দূরত্ব কমেনি বা বাড়েনি। অন্তত প্রাথমিক হিসেবে।

নিউজিল্যান্ডে গত নভেম্বরের ওই ভূকম্পটি কিছুটা জটিল ছিল, এমনটাই বলছেন গবেষকরা। ওই ভূকম্পে মোট ২৫টি ফাটল-রেখা দেখা গিয়েছে ভূগর্ভের শিলাস্তরে। তবে সেগুলি খুব জটিল বলেই কোন ফাটল-রেখার জন্য নিউজিল্যান্ডের মানচিত্র, গত দু’বছরে, সামান্য হলেও বদলে গিয়েছে, তা এখনও বুঝে উঠতে পারেননি ভূতাত্ত্বিকরা। আর এক বিশিষ্ট ভূতাত্ত্বিক কেভিন বেরিম্যান বলেছেন, ‘‘রিখটার স্কেলে ৭.৫ বা তার বেশি মাত্রার ভূকম্প হলেই তা খুব জটিল হয়ে ওঠে। ভূগর্ভের শিলাস্তরে অনেক ফাটল-রেখা তৈরি হয়। কিন্তু কোনও একটি ভূকম্পে একই সঙ্গে ২৫টি ফাটল-রেখা তৈরি হওয়ার ঘটনা খুব কমই ঘটে থাকে।’’

ভূতাত্ত্বিকরা বলছেন, নিউজিল্যান্ডে ভূকম্পন প্রায়ই হয়। তার কারণ, সেই দেশের গোটা ভূখণ্ডটা রয়েছে ভূগর্ভের দু’টি শিলাস্তর- ইন্দো-অস্ট্রেলিয়ান ও প্যাসিফিক টেকটনিক প্লেটের মধ্যে। যাদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে আকছারই। তাই বছরে গড়ে ১৫ হাজারেরও বেশি ভূকম্পনের ঘটনা ঘটে নিউজিল্যান্ডে। তার মধ্যে ভয়াবহ হয়ে ওঠে অন্তত ১০০/১৫০টি ভূকম্প।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE