Advertisement
E-Paper

দিনে কম করেও আড়াই লিটার জল খান

ইউরিনে জ্বালা, বার বার বাথরুমে যাওয়া, হাঁচলে-কাশলে নানা সমস্যা পোস্টমেনোপজাল মহিলাদের। স্ত্রীরোগ-বিশেষজ্ঞ ডা. মল্লিনাথ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বললেন সুজাতা মুখোপাধ্যায়। এই বয়সে ব্লাডার অতি সক্রিয় হয়ে যায় অনেকের। যাকে বলে ওভার অ্যাকটিভ ব্লাডার। ফলে ব্লাডার ফুল না হলেও বার বার ইউরিন পায়। জল কম খেয়ে একে এড়ানো যায় না।

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৬ ০৭:৫০

প্র: অসংখ্য বার বাথরুমে ছুটতে হয়। জল কম খেলে ইউরিনে জ্বালা বাড়ে। কিন্তু টয়লেট ট্রিপ কমে না।

উ: এই বয়সে ব্লাডার অতি সক্রিয় হয়ে যায় অনেকের। যাকে বলে ওভার অ্যাকটিভ ব্লাডার। ফলে ব্লাডার ফুল না হলেও বার বার ইউরিন পায়। জল কম খেয়ে একে এড়ানো যায় না।

প্র: তা হলে? রাস্তাঘাটে তো বেরোনো মুশকিল। রাতেও ঘুমের দফারফা।

: ইউরোগায়নোকোলোজিস্ট দেখান। কিছু দিন ওষুধ খান। ভাল থাকতে পারবেন। সঙ্গে দু’চারটে নিয়ম মানতে হবে। জল খেতে হবে পর্যাপ্ত।

প্র: বাইরের ঘোরার সময় জল না খেয়ে যদি ঘরে ফিরে খাই?

উ: এক-আধদিন চলতে পারে। নিয়মিত নয়।

প্র: কিন্তু বেরোনোর আগে বেশি জল খেলে তো পাবলিট টয়লেটে যেতে হবে। ইনফেকশনের চান্স বাড়বে যে তাতে!

উ: পাবলিক টয়লেটের সঙ্গে ইউরিন ইনফেকশনের কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ ইউরিন করার সময় টয়লেটের কোনও অংশই শরীরের সংস্পর্শে আসে না। টয়লেট সেরে তাড়াতাড়ি উঠে পড়ার সময় দু’এক ফোটা মলদ্বারের দিকে চলে গেলে সেখান থেকে সংক্রমণ আসতে পারে। কাজেই ইউরিন করার পর উপরের দিক থেকে জল ঢেলে জায়গাটা ধুয়ে দিন। জল নীচের দিক থেকে উপরে দেবেন না। টিস্যু পেপার দিয়েও মুছতে পারেন।

প্র: তাও তো মাঝে মাঝেই ইউরিনে জ্বালা হয়। অ্যান্টিবায়োটিক খেলে ক’দিন ঠিক থাকে। আবার যে কে সেই।

উ: ইউরিনে জ্বালা মানে কিন্তু সংক্রমণ নয়। ওভার অ্যাকটিভ ব্লাডারের কারণেও এ রকম হতে পারে। কাজেই কথায় কথায় অ্যান্টিবায়োটিক না খেয়ে ডাক্তার দেখান।

প্র: ইউরিন কালচারে দোষ পাওয়া গেলে?

উ: তখন অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হবে। এবং দেখতে হবে কী কারণে ঘন ঘন সংক্রমণ হচ্ছে।

প্র: মেনোপজের পর এত ঘন ঘন সংক্রমণ কেন?

উ: প্রধান কারণ শরীরে স্ত্রী হরমোনের পরিমাণ কমে যাওয়া। ওবেসিটি, ডায়াবেটিস, ভুল লাইফ স্টাইলের সঙ্গে যুক্ত হলে সমস্যা আরও বাড়ে। চিকিৎসায় সমস্যা কম থাকে।

প্র: সে না হয় হল, কিন্তু ঘুরে বেড়ানোর কাজ হলে সব জায়গায় টয়লেট পাওয়া যাবে এমনও তো নয়। তখন?

উ: চিকিৎসা করলে বার বার বাথরুম পাওয়ার সমস্যা কমে যাবে। তা সত্ত্বেও অজায়গায় ইউরিন পেলে প্যানিক না করে পেলভিক ফ্লোর মাসলকে ২-৩ বার ভেতরে টেনে ধরুন ও ছাড়ুন। এতে ব্লাডারের সিগন্যাল শর্ট সার্কিট হয়ে যাবে ও আপনি কিছুক্ষণ এক্সট্রা সময় পাবেন।

প্র: আর জোরে হাসলে বা কাশলে যে দু-তার ফোঁটা ইউরিন বেরিয়ে যায়, সেও কি ওভারঅ্যাকটিভ ব্লাডারের জন্য?

উ: না, একে বলে স্ট্রেস ইনকনটিনেন্স। পেলভিক ফ্লোর মাসল দুর্বল হয়ে গেলে এ রকম হয়।

প্র: পেলভিক ফ্লোর মাসল আবার কোনটা?

উ: চেয়ারে বসলে শরীরের যে অংশ চেয়ারকে ছুঁয়ে থাকে, সেই হল পেলভিক ফ্লোর মাসল।

প্র: এই মাসল এত কথায় কথায় দুর্বল হয় কেন?

উ: অন্য মাসলের মতো এই মাসলের নীচে কোনও হাড়ের সাপোর্ট থাকে না বলে সন্তান ক্যারি করা, ক্রনিক কনস্টিপেশন, ওজন বেড়ে যাওয়া ইত্যাদির চাপে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সে দুর্বল হতে থাকে। সবার হয় না অবশ্য। তবে বাচ্চা হওয়ার সময় যদি পেলভিক ফ্লোরের মাসল ক্ষতিগ্রস্থ হয় মনোপজের পর তা বেড়ে যাওয়ার চান্স খুব প্রবল।

প্র: উপায়?

উ: ওজন বেশি হলে ভাল করে ডায়েট করে এবং হাঁটা-চলা বাড়িয়ে তা কমানোর চেষ্টা করুন। ডাক্তারের পরামর্শ মতো পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ করুন নিয়মিত। তাতে সমস্যা না কমলে ছোট্ট একটি অপারেশন করতে হবে।

প্র: অপারেশন?

উ: তেমন বড় কিছু নয়। মূত্রানালীর নীচে ছোট ফুটো করে একটি ফিতে, যাকে বলে টিভিটি বা ট্রান্সভ্যাজাইনাল টেপ পরিয়ে ইউরিনের রাস্তার ঢিলে অংশকে টাইট করা হয়। অজ্ঞান না করেই এই অপারেশন করা যায়। হাসপাতালে একদিনের বেশি থাকতে হয় না।

প্র: সাকসেস রেট?

উ: ম্যাজিকের মতো হয়।

যোগাযোগ-৯৮৩১০২১৭৭৭

Drink water
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy