Advertisement
E-Paper

স্ট্রোক মানেই সারাজীবন বিছানায় শুয়ে থাকা নয়

‘রিহ্যাব’-এর মাধ্যমে অনেকটাই স্বাভাবিক জীবনে ফেরা যায়। ডা. মৌলিমাধব ঘটকের সঙ্গে কথা বললেন বিপ্লবকুমার ঘোষ। যোগাযোগ- ৯০৫১৬০৩৪৩১ প্র: প্রায়ই শুনছি কারও না কারও স্ট্রোক হয়েছে। বিশেষ করে ব্রেন স্ট্রোক। বয়সেরও বাছবিচার নেই। প্রাণে বাঁচলেও কী সারা জীবন বিছানায় শুয়েই কাটাতে হবে?

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৬ ০০:০০

প্র: প্রায়ই শুনছি কারও না কারও স্ট্রোক হয়েছে। বিশেষ করে ব্রেন স্ট্রোক। বয়সেরও বাছবিচার নেই। প্রাণে বাঁচলেও কী সারা জীবন বিছানায় শুয়েই কাটাতে হবে?

উ: একেবারেই না। চিকিৎসা বিজ্ঞান অনেক এগিয়েছে। আধুনিক স্ট্রোক-রিহ্যাবের মাধ্যমে অধিকাংশ রোগীই অনেকাংশেই সুস্থ হয়ে ওঠেন।

প্র: স্ট্রোকের পর তো অনেকেরই হাত-পা অবশ হয়ে যায়। সে ক্ষেত্রে কী তা আগের মতোই স্বাভাবিক হয়ে যায়?

উ: হ্যাঁ। তবে স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই যে সব শারীরিক সমস্যা আসে তা সঠিক ভাবে সমাধান করতে হবে।

প্র: যেমন?

উ: একেবারে প্রথমে এক দিকের হাত ও পা অবশ হয়ে যায়। নার্ভগুলো অকেজো হয়ে যায়। তখন থেকেই সেগুলোর স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনতে কিছু বিশেষ পদ্ধতি নিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। অনেকেরই যেমন হয়, কাঁধের জয়েন্ট নীচে নেমে আসে। এ সব ক্ষেত্রে তৎক্ষণাৎ বিশেষ সাপোর্ট দিতে হয়।

প্র: তা হলেই সমাধান হয়ে যাবে?

উ: না। ধীরে ধীরে নাড়াচাড়া শুরুর জন্য ‘মোটর ট্রেনিং’ নামে বিশেষ রিহ্যাব প্রক্রিয়ার সাহায্য নেওয়া হয়।

প্র: এমনও রোগী দেখেছি যার স্ট্রোকের পরে হাত ও পায়ের পেশি শক্ত পাথরের মতো হয়ে যায়।

উ: হ্যাঁ, অনেকেরই হয়। ওটা স্প্যাসটিসিটি। মাসল টাইট হতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা শুরু হলে ভবিষ্যতে বড় কোনও সমস্যা থাকে না।

প্র: তার মানে হাত ও পা স্বাভাবিক কাজ করতে পারে?

উ: সব ক্ষেত্রে নয়। প্রতিটি পেশি আলাদা ভাবে নিজের কাজ করতে না পারলে হাত বা পা সঠিক কাজের উপযুক্ত হয় না। স্ট্রোকে সাইনার্জি প্যাটার্নের সমস্যা হলেও এটা হয়। বুঝে নিতে হয়, ব্রেনের কোষের কন্ট্রোল সিস্টেমে গন্ডগোল হয়েছে।

প্র: তার মানে স্বাভাবিক হবে না?

উ: হবে। বিশেষ অকুপেশনাল থেরাপি ওই অসঙ্গতিপূর্ণ পেশির গতিকে স্বাভাবিক করে দেয়।

প্র: রোগী কতটা নিজের কাজ করতে পারবে?

উ: প্রতিদিনকার প্রয়োজনীয় কাজ তিনি করতে পারবেন। যেমন, চুল আঁচড়ানো, খাওয়া, পোশাক পরা, বাথরুম যাওয়া ইত্যাদি। যাকে আমরা বলি, ‘অ্যাকটিভিটি অব ডেইলি লিভিং’। শুধু তাই নয়, পেশাগত কাজেও অনেকে দক্ষতা দেখাতে পারেন। লেখা, কম্পিউটর চালানো, বাজার-ঘাট করা প্রভৃতি।

প্র: স্ট্রোক ছাড়াও তো অন্য অসুখে মানুষ বিছানায় শয্যাশায়ী হয়?

উ: হ্যাঁ। ডায়াবেটিস, কিডনির সমস্যা, বাত, মানসিক ভারসাম্যহীনতায় মানুষ পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবন থেকে বঞ্চিত হতে পারে। রিহ্যাব পদ্ধতিতে তা স্বাভাবিক করা যায়, তবে সময় লাগে।

প্র: স্ট্রোকের কত দিন পর থেকে রিহ্যাব শুরু করতে হয়?

উ: বাঁধাধরা নিয়ম নেই। স্ট্রোকের ধরন দেখে চিকিৎসকরাই তার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

প্র: রিহ্যাব পদ্ধতি শুরু করতে দেরি হলে?

উ: প্রথম চল্লিশ দিন সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। তিন মাস পর্যন্ত উন্নতি সর্বাধিক হয়, আবার ছয় মাস পেরিয়ে গেলে সেই উন্নতির হার দ্রুত কমে যায়। এক বা দু বছর পরে উন্নতির সম্ভাবনা অনেক কম।

প্র: তার মানে সব রোগীকেই রিহ্যাব করাতে হয়?

উ: না। ছোট স্ট্রোক হলে, যাদের প্যারালিসিস কম, বা অন্য কোনও অসুবিধে যেমন কথাবার্তার অসাড়তা, মানসিক ভারসাম্যহীনতা বা অন্য কোনও সমস্যা নেই তাদের বাড়িতেই সামান্য থেরাপি করালে সমস্যা মিটে যায়।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy