Advertisement
E-Paper

বেন্টো বক্সে মজার খাবার

একই বক্সে অনেক পদ। দেখতে লোভনীয়। বাচ্চা আর টিফিন ফিরিয়ে আনবে না কখনওপ্রত্যেক দিন স্কুলে বাচ্চার যেমন এক খাবার খেতে ইচ্ছে করে না, তেমনই অভিভাবক হিসেবে আপনারও নিশ্চয়ই ইচ্ছে করে না তাকে সেই একঘেয়ে খাবার দিতে। বেন্টো সেখানে হরেক রকম খাবার দেওয়ার সুযোগ করে দেয়, অতিরিক্ত খাটুনি ছাড়াই।

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৮ ০৯:৪০

ছোটবেলায় একটা নির্দিষ্ট বয়স অবধি টিফিন বলতে ছিল বিস্কিট আর সন্দেশ। তাড়াহুড়োয় ওইটুকু খাবার খেয়ে ছুটতাম খেলতে। একটু বড় হতেই টিফিন বক্সে বদল এল। রুটি তরকারি। স্বাদ বদলাতে চাউমিন, এগ রোল কিংবা আচার মাখানো রুটিরোল। খুশি থাকি বা না থাকি, বকুনি খাওয়ার ভয়ে সবটা সাবাড় করতে হত। কিন্তু সময় বদলেছে। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলেছে খাওয়ার অভ্যেসও। এখন বাচ্চাদের দুটো টিফিন তো অবশ্যই জরুরি। সঙ্গে রয়েছে হাজার বায়নাক্কা। কিন্তু সে সমস্ত সমস্যার সমাধান করতে পারে বেন্টো বক্স।

বেন্টোর ধারণাটা পুরোপুরি এসেছে জাপান থেকে। জাপানি বেন্টো বক্সে রাইস বা নুডলস, ইচ্ছে মতো মাছ কিংবা মাংস, রান্না করা আনাজ আর পিকলড সবজি থাকে। তবে ফিলিপাইনস, কোরিয়া, তাইওয়ান, ম্যান্ডারিনের মতো দক্ষিণ পূর্ব এশীয় দেশগুলোতেও বেন্টো জনপ্রিয়। এখানকার বেশির ভাগ স্কুলে দুটো করে টিফিন থাকার দরুন বেন্টো বক্স জনপ্রিয় হচ্ছে। তবে বেন্টোর কিন্তু প্রাথমিক কিছু শর্ত রয়েছে।

প্রত্যেক দিন স্কুলে বাচ্চার যেমন এক খাবার খেতে ইচ্ছে করে না, তেমনই অভিভাবক হিসেবে আপনারও নিশ্চয়ই ইচ্ছে করে না তাকে সেই একঘেয়ে খাবার দিতে। বেন্টো সেখানে হরেক রকম খাবার দেওয়ার সুযোগ করে দেয়, অতিরিক্ত খাটুনি ছাড়াই।

আবার ছোট এবং বড়— দু’ধরনের টিফিনে আলাদা করে খাবার দিতে গেলে অনেক ক্ষেত্রেই একাধিক টিফিন বক্সের ঝামেলা থাকে। এখানে অনেক পদ একই বক্সে পাশাপাশি গুছিয়ে দেওয়া সম্ভব। সে ক্ষেত্রে ডিভাইডারের উপরে ছোট টিফিন দিতে পারেন। নীচের অংশে বড় টিফিনের খাবার। একাধিক পদ আলাদা করতে পারেন কাপকেক বা মাফিন লাইনার দিয়ে ছোট ছোট ভাগ তৈরি করে।

অভিভাবকেরা চাইবেনই যে, ছোট থেকেই যেন বাচ্চা সমস্ত ধরনের খাবারের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। ফলে বেন্টোর ঝলমলে চেহারার আড়ালে কিন্তু শিশুর অপছন্দের খাবারগুলোও দেওয়া যায়। এবং দেখবেন, বাচ্চা হয়তো সেগুলো খুশি মনেই খেয়ে নিচ্ছে।

রবিবার— আপনার এবং বাচ্চার ছুটির দিনে আগামী সপ্তাহের বেন্টোয় দেওয়ার জন্য কিছু খাবার তৈরির প্রাথমিক কাজ এগিয়ে রাখতে পারেন দু’জনে মিলেই। এতে বাচ্চা স্বাবলম্বী তো হবেই, পাশাপাশি খাবার নষ্ট করার প্রবণতাও তার মধ্যে জন্মাবে না।

এ বার দেখে নেওয়া যাক কিছু আদর্শ বেন্টো বক্সের উদাহরণ।

প্রাথমিক ভাবে আমরা টিফিনের জন্য তরকারির সঙ্গে রুটি, লুচি, পরোটা, মিষ্টি আর হয়তো একটা ফলের কথাই ভাবি। অনেকেরই সেই একঘেয়ে খাবার খেতে মোটেই ইচ্ছে করে না। তা হলে বদল আসুক সাজে। রুটিগুলো চার ভাঁজ করে মুড়ে না দিয়ে কুকি কাটার দিয়ে কেটে নিন। হতে পারে তা স্টার কিংবা বাটারফ্লাই শেপের। রুটির মাঝে মোটা করে মাখন কিংবা জ্যাম লাগান। মাফিন লাইনারের ভিতরে রংবেরঙের মরসুমি আনাজ সিদ্ধ করে মাখনে হালকা নেড়েচেড়ে ভরে দিন। পাশে আর একটি লাইনারের মাঝে অথবা কম্পার্টমেন্টে কমলালেবু অথবা পেয়ারার টুকরো দিন। টিফিন বক্স খুলে যদি কেউ প্রজাপতি কিংবা পছন্দের ব্যাটম্যানের আকারের রুটি দেখে, তা হলে সেটা না খাওয়ার ভাবনা সে মনেও আনবে না।

এ বার আসা যাক পাউরুটির দিকে। প্রায়শই তাড়াহুড়োর সময়ে স্যান্ডউইচের কথাই অনেকে ভাবেন। তা হলে পাউরুটি কাটুন বাচ্চার পছন্দ মতো। তার উপরে পিনাট বাটার ছড়িয়ে দিন। সমস্ত কিছুর উপরে কলার টুকরো দিয়ে চোখ, জাম দিয়ে নাক-মুখ তৈরি করুন। পিনাট বাটার স্যান্ডউইচও তৈরি হল, সঙ্গে থাকল ফলও। এর সঙ্গে কুকিজ় দিতে ভুলবেন না যেন।

আবার এমনও হতে পারে যে, বাচ্চা পেটভর্তি করে খেয়ে গিয়েছে এবং সেই দিন তার তাড়াতাড়ি ছুটি। অথচ টিফিনে তো তাকে কিছু দিতেই হবে। সে ক্ষেত্রে বেছে নিতে পারেন মুড়ি। টিফিন বক্সের বড় কম্পার্টমেন্টে চানাচুর মেশানো মুড়ি দিন। পাশে ছোট ছোট দুটো ভাগ তৈরি করে শসার টুকরো আর সন্দেশ বা মিষ্টি। তবে শসার টুকরো যেন দেখতে মজাদার হয়।

অনেক সময়ে বাচ্চাকে বাড়ি থেকে ভাত কিংবা পরিজ দেওয়া হয় টিফিনে। স্কুলে বক্স খুলে হাত দিয়ে মেখে ভাত খাওয়া যথেষ্ট অসুবিধেজনকও। তা হলে ভাত রান্না করে সামান্য তেলে অল্প সিজ়নিং দিয়ে নাড়াচাড়া করে দলা পাকান। গোটা দুই দলা যেন এক্কেবারে কিট্টি বা ডোনাল্ড ডাকের মুখের মতো। গাজর, রঙিন বেলপেপার, টম্যাটো দিয়ে সেই মুখে যোগ করে দিন নাক-চোখ-ঠোঁট। মাথায় একটা করে কাঁটা বা মজাদার ফ্রুট ফর্ক গুঁজতে ভুলবেন না। এতে ভাতে হাত না লাগিয়েই বাচ্চা তা মুখে তুলতে পারবে। সঙ্গে এ বার লেটুস পাতা দিয়ে কম্পার্টমেন্ট তৈরি করে তাতে রাখুন তরকারি আর পাশে মাছ-মাংসের ফ্রিটার্স বা বড়া। কয়েক টুকরো ফল কিন্তু এই বেন্টোয় থাকা জরুরি।

মজাদার করে আনাজ কাটতে নানা ধরনের কাটার কিনতে পাওয়া যায়। সেগুলো কিনলে কাজটা সহজ হয়ে যাবে।

এ ভাবেই রুটি থেকে ভাত, আনাজ থেকে ফল সব কিছুই বাচ্চাকে খাওয়াতে পারবেন সহজে।

রূম্পা দাস

ছবি সৌজন্য: সায়ন্তনী মহাপাত্র

Tiffin Bento Box Child
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy