Advertisement
E-Paper

লাভের পরিকাঠামো

পরিকাঠামোয় বিপুল লগ্নি টানতে কোমর বেঁধেছে কেন্দ্র। তাই রিটার্ন দেওয়ার ক্ষমতা বাড়ছে পরিকাঠামো ফান্ডের। আপনি তৈরি?ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই দেশের রাস্তাঘাট, সমুদ্র-বন্দর, বিমানবন্দর, রেলপথ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ-সহ পুরো পরিকাঠামোকে চাঙ্গা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন নরেন্দ্র মোদী। পরে দিল্লির মসনদে বসে পরিকাঠামো উন্নয়নকে ঠাঁইও দিয়েছেন সরকারের অগ্রাধিকার তালিকায়।

নীলাঞ্জন দে

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৫৯

ক্ষমতায় আসার আগে থেকেই দেশের রাস্তাঘাট, সমুদ্র-বন্দর, বিমানবন্দর, রেলপথ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ-সহ পুরো পরিকাঠামোকে চাঙ্গা করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছেন নরেন্দ্র মোদী। পরে দিল্লির মসনদে বসে পরিকাঠামো উন্নয়নকে ঠাঁইও দিয়েছেন সরকারের অগ্রাধিকার তালিকায়। বাজেটে এই খাতে খরচ অনেকখানি বাড়িয়েছেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও। ফলে লগ্নিকারীদের বিশ্বাস, সরকার নিজেই উঠেপড়ে লাগায়, আগামী দিনে এই ক্ষেত্রে লগ্নির জোয়ার আসবে। কাজ হবে বিপুল। আর এই কারণেই বেশ কিছু দিন ধরে দ্রুত চড়ছে পরিকাঠামো ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংস্থার শেয়ার দর। ফলে চড়চড় করে বাড়ছে পরিকাঠামো ফান্ডের ন্যাভও। বাড়ছে এখান থেকে অনেক বেশি রিটার্ন ঘরে তোলার সম্ভাবনা। আপনি এর শরিক হতে চান কি না, ভেবে দেখতে পারেন। তবে একটা কথা মনে রাখা জরুরি, পরিকাঠামো ফান্ডের এই সুদিন কিন্তু এখনও পর্যন্ত এসেছে মূলত প্রত্যাশার ডানায় ভর করে। তাই সরকার কোমর বাঁধলেও আগামী দিনে পরিকাঠামোয় সত্যিই কতটা বেসরকারি লগ্নি আসবে বা আদপে কাজ কতটা হবে, তা বলবে সময়ই।

চক্ষু চড়ক গাছ

আপনাদের মনে হয়তো প্রথমেই প্রশ্ন জাগবে, এই যে পরিকাঠামো বা ইনফ্রাস্ট্রাকচার (সংক্ষেপে ইনফ্রা) ফান্ডের কথা এমন ফলাও করে বলা হচ্ছে, বাস্তব ছবিটা আদপে এ রকমই তো? আমি বলব, ঝুঁকি অবশ্যই আছে। কিন্তু এখন যা হাওয়া এবং পরিসংখ্যান যেটা দেখাচ্ছে, তাতে পরিকাঠামো ফান্ড কিনে আপনার রিটার্ন বেশি পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

বিষয়টি তুলে ধরতে কয়েকটি পরিসংখ্যান দেব আমি—

পরিকাঠামো ফান্ড কোনও একটি শিল্পের সংস্থার শেয়ারে টাকা ঢালে না। কারণ, এটি এক ধরনের থিম বা বিষয়বস্তু নির্ভর (থিম্যাটিক) ফান্ড। এখানে পরিকাঠামোকে বিষয়বস্তু হিসেবে ধরে নিয়ে, তার সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে যুক্ত বিভিন্ন শিল্পের নানা সংস্থার শেয়ারে তহবিল খাটানো হয়। এ রকমই বিভিন্ন থিম্যাটিক ফান্ডের মধ্যে গত এক বছরে সেরার শিরোপা কিন্তু উঠেছে পরিকাঠামো ফান্ডের মাথায়।

আমরা যদি সেক্টর ফান্ডের সঙ্গে এর তুলনা টানি, তা হলেও হতাশ হব না। যে ফান্ড একটিমাত্র শিল্পেরই একাধিক সংস্থার শেয়ারে তহবিল লগ্নি করে, তাকে বলে সেক্টর বা নির্দিষ্ট শিল্প নির্ভর ফান্ড। যেমন ধরুন, ফার্মা ফান্ড। শুধু ওষুধ শিল্পের বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারই কেনা হয় এই ফান্ডের তহবিলের টাকা দিয়ে। জেনে রাখুন, থিম হিসেবে পরিকাঠামোকে বছর খানেকের মধ্যে টেক্কা দিতে পারেনি তথ্যপ্রযুক্তি, ব্যাঙ্কিং বা ভোগ্যপণ্যের মতো শিল্প। গত ২৭ মার্চ হাতে আসা পরিসংখ্যান বলছে, গত এক বছরে পরিকাঠামো ফান্ড গড়ে ৫৩% রিটার্ন দিয়েছে। গড়ে ৬৬% রিটার্ন দিতে পারার সুবাদে শুধুমাত্র ফার্মা ফান্ড তার উপরে ছিল। অথচ যেগুলি তুলনায় লগ্নিকারীদের কাছে বেশি পছন্দের, সেই তথ্যপ্রযুক্তি ও ভোগ্যপণ্য নির্ভর সেক্টর ফান্ডের রিটার্ন যথাক্রমে ৩৩% ও ২৩%। ব্যাঙ্কিং ফান্ডের ক্ষেত্রে তা কিছুটা বেশি, ৪৩ শতাংশ।

গত বছর অন্তত এক ডজন পরিকাঠামো ফান্ড ৫০ শতাংশ বা তার বেশি রিটার্ন দিতে পেরেছে।

আরও তাক লাগবে পরিকাঠামো ফান্ডের বৃত্তে সেরাদের কথা শুনলে। তহবিল বাড়িয়ে লগ্নিকারীকে রিটার্ন দেওয়ার নিরিখে এই শিরোপা পেয়েছে ফ্র্যাঙ্কলিন বিল্ড ইন্ডিয়া ফান্ড ও রেলিগেয়ার ইনভেস্কো ইনফ্রা ফান্ড। ৭৫ শতাংশেরও বেশি রিটার্ন দিয়েছে তারা। শেয়ার বাজারে মার খাওয়ার ঝুঁকি সব সময়েই থাকে। এখানেও আছে। কিন্তু এতটা রিটার্ন চাট্টিখানি কথা নয়।

তবে একটা কথা পরিষ্কার বলে রাখি। এখানে দু’টি ফান্ডের নাম উল্লেখ করা হলেও এগুলিকে কোনও সুপারিশ হিসেবে ধরবেন না। স্রেফ উদাহরণ দিয়ে দেখাতেই নামগুলো বললাম। এক সময় তারা ভাল রিটার্ন দিয়েছে বলে আগামী দিনেও যে তা দেবে, তার কোনও মানে নেই। লগ্নি-দুনিয়ায় সেরার জায়গা খুব তাড়াতাড়ি বদলাতে থাকে। কাজেই ফান্ড কেনার আগে নিজের ক্ষমতা, ঝুঁকি ও ফান্ডের খুঁটিনাটি বিবেচনা করে তবেই এগোবেন। চাইলে উপদেষ্টার পরামর্শও নিতে পারেন।

কোথায় ঢালা হবে টাকা?

পরিকাঠামো ফান্ড যে সত্যিই নজর কাড়ছে, তার হাতেগরম প্রমাণ আশা করি কিছুটা অন্তত দিতে পেরেছি। এ বার চোখ রাখব আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে। ফান্ড যখন কিনবেন, তখন এটা জানা জরুরি যে, আপনার ফান্ড ম্যানেজার কোথায় টাকা খাটাচ্ছেন। কেন খাটাচ্ছেন? খুব সচেতন লগ্নিকারী হলে আপনি এটাও বুঝতে চাইবেন যে, ওই সিদ্ধান্ত কতটা ঠিক? এর জন্য জানা জরুরি পরিকাঠামো ফান্ড কোন কোন ধরনের সংস্থায় লগ্নি করতে পারে। সাবধান! অনেকে কিন্তু সাধারণ ডাইভার্সিফায়েড ফান্ডকে (যার তহবিল নানা ধরনের শিল্পের বিভিন্ন সংস্থায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে খাটানো হয়) পরিকাঠামো ফান্ড বলে চালায়। সেই ফাঁদে পড়লে এই বাজারে পরিকাঠামোকে ঘিরে তৈরি হওয়া সুযোগের বাইরেই থেকে যেতে হবে আপনাকে। সুতরাং মনে রাখুন—

ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ডের তহবিল পরিকাঠামোর সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে এমন সব সংস্থার শেয়ারে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে খাটানো হয়ে থাকে। ফলে তার পরিসর অনেকটা বড়। পরিকাঠামো বললেই সকলে সাধারণত বোঝেন রাস্তাঘাট, সেতু, রেলপথ, বন্দর, বিমানবন্দর, টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা, হোটেল, বিদ্যুৎ ইত্যাদি। ফলে এগুলো তৈরি করে, এমন সমস্ত সংস্থার শেয়ারই এর মধ্যে পড়ে।

পরিকাঠামো ক্ষেত্রের আওতায় আছে সিমেন্ট, ইস্পাত, কয়লা, তেল-গ্যাস, রাবার, ইঞ্জিনিয়ারিং ইত্যাদিও। কারণ, পরিকাঠামো তৈরির জন্য এগুলি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে ব্যবহার হয়ে থাকে।

বাজারে কিছু ভাল ইনফ্রা ফান্ড কিন্তু ব্যাঙ্কিং, গাড়ি, তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদি সংস্থার শেয়ারেও তহবিল ছড়িয়ে দেয়। এটা অনেকটাই নির্ভর করে ফান্ড ম্যানেজার তহবিলকে কোন যুক্তিতে বাড়াতে চাইছেন তার উপর। যেমন, যে কোনও পরিকাঠামো গড়তেই বিপুল টাকা লাগে। যা ঋণ হিসেবে দেয় ব্যাঙ্কগুলি। পরিকাঠামো যত চাঙ্গা হওয়ার পথে হাঁটে, তত বেশি ঋণ দিতে পারে ব্যাঙ্কগুলি। বাড়তে পারে তাদের সুদ থেকে আয়। কমে ধারের টাকা ফেরত না-পাওয়ার সম্ভাবনাও। তাই ইনফ্রা ফান্ডের তহবিল বিভিন্ন ব্যাঙ্কের শেয়ারেও খাটানো হয়। আবার বহু ফান্ড ম্যানেজার গাড়ি সংস্থার শেয়ারকে বাছেন এই যুক্তিতে যে, তা তৈরি করতে লাগে ইস্পাত ও রাবারের মতো পণ্য, যেগুলি পরিকাঠামো শিল্পের মধ্যে পড়ে। গাড়ি শিল্পের উন্নতি হলে লাভবান হয় তারা। তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার শেয়ার বাছার যুক্তিও রয়েছে। ভেবে দেখুন, টেলি যোগাযোগের মতো পরিকাঠামো তথ্যপ্রযুক্তি ছাড়া কার্যত অচল। তাই না?

ইনফ্রা ফান্ডের তহবিল বাড়ানোর মূল চালক কিন্তু পরিকাঠামোর সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে সম্পর্ক রয়েছে এমন শিল্পগুলিকেই হতে হবে। তবেই না সেই ফান্ডের ইউনিট কিনে পরিকাঠামো উন্নয়নের অংশীদার হতে পারবেন?

মোদ্দা কথা, পরিকাঠামো ফান্ড এমন একটি ইকুইটি ফান্ড, যা তহবিল খাটানোর জন্য বেছে নেয় অর্থনীতির প্রধান ক্ষেত্রগুলিকে। ফলে সংস্কারের জ্বালানিতে সেই অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা জোরালো হলে, তাতে আপনারও লাভ হওয়ার কথা।

জলে নামার আগে

এত কথা বলার পরেও একটা অনুরোধ করব। তা হল, অযৌক্তিক আবেগে ভেসে যাবেন না। মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি করা এমন কিছু কঠিন নয়। কিন্তু তার জন্য সতর্ক আপনাকে থাকতেই হবে। বাজারে এখন ভাল পরিকাঠামো ফান্ডের সংখ্যা নেহাত কম নয়। তবে তা কিনতে ঝাঁপানোর আগে কতগুলি বিষয় স্পষ্ট বুঝে নিন। যেমন—

ইনফ্রা ফান্ডকে অন্যান্য সাধারণ ইকুইটি ফান্ডের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলবেন না। এতে ফান্ডের তহবিল খাটে পরিকাঠামোর সঙ্গে যোগ রয়েছে, এমন সংস্থার শেয়ারে। ফলে তার বৈশিষ্ট্যই হল, পরিকাঠামোর উন্নতি হলে, সেখানে ঢেলে লগ্নি এলে এবং সার্বিক শিল্প পরিবেশে তার তাক লাগানো প্রভাব পড়লে, ফান্ড তার তহবিল বাড়াতে পারবে। ডাইভার্সিফায়েড ইকুইটি ফান্ডে অন্যান্য নানা ধরনের শিল্পের সংস্থার পাশাপাশি পরিকাঠামোয় যুক্ত সংস্থার শেয়ারও থাকতে পারে। তা বলে এগুলিকে কিন্তু কোনও ভাবেই পরিকাঠামো ফান্ড বলা যায় না।

বছর দুই-তিন আগেও পরিকাঠামো ফান্ডের এত রমরমা চোখে পড়েনি। ফান্ড সংস্থাগুলি একে তেমন ধর্তব্যের মধ্যে রাখত না। বাড়তি আগ্রহ দেখা যেত না লগ্নিকারীদের মধ্যেও। ফলে সাধারণ ভাবে এই ধরনের ফান্ডের মোট তহবিলের পরিমাণ অনেক কম হত। যে কারণে, বাজারে ৫০০ কোটি টাকারও কম তহবিলের পরিকাঠামো ফান্ড রয়েছে। ফান্ডের পুঁজি এতটা কম হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়। কারণ, এতে তহবিল বাড়ানোর জন্য পদক্ষেপ করতে অসুবিধা হয় ফান্ড ম্যানেজারের। তবে এখন ছবিটা বদলাচ্ছে। কাজেই কোনও পরিকাঠামো ফান্ডের কম তহবিল দেখে পিছিয়ে না-গিয়ে, তার গুণমান যাচাইয়ে মন দিন। কারণ যা পরিস্থিতি, তাতে ওই তহবিল আগামী দিনে বাড়ার কথা।

ফান্ড বাবদ খরচের বিষয়টি খতিয়ে দেখে নেওয়া জরুরি। কিছু নাম করা পরিকাঠামো ফান্ডে এই হার কিন্তু অনেকটা বেশি। প্রায় তিন শতাংশের মতো। সম্ভাব্য রিটার্নের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিচার করে নেওয়া অবশ্যই বুদ্ধিমানের কাজ।

আশা, প্রত্যাশা, সম্ভাবনা, ইঙ্গিত— শেয়ার বাজার ও মিউচুয়াল ফান্ডে এই শব্দগুলির গুরুত্ব অনেক। শেয়ার বাজার নির্ভর লগ্নিতে রিটার্নের কোনও গ্যারান্টি নেই। তাই ঝুঁকি নেওয়ার মতো পরিস্থিতি এবং সাহস থাকলে, তবেই সেই পথে হাঁটা উচিত।

প্রত্যাশার পারদ অবশ্য চড়ছে

কেন্দ্রে এনডিএ সরকার এসেছে মাস দশেক কেটে গিয়েছে। হালে মাঝেমধ্যে শেয়ার বাজার পড়লেও, পরিকাঠামো উন্নয়নের কর্মকাণ্ড গতি পাওয়ার আশায় এই ক্ষেত্রের সংস্থাগুলির শেয়ার দর কিন্তু কম-বেশি বাড়ছে। প্রত্যাশা আরও মাথা তুলেছে কেন্দ্র বিমা, প্রতিরক্ষার মতো ক্ষেত্রে সংস্কারের পথে হাঁটতে শুরু করায়। অনেকেই বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন যে, সংস্কারের চাকা যখন এক বার গড়িয়েছে, তখন আগামী দিনে পরিকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে দেওয়া প্রতিশ্রুতিও পালন করবে সরকার। এতে ইন্ধন জুগিয়েছে বাজেটে পরিকাঠামো উন্নয়ন খাতে খরচ ও লগ্নির টানার লক্ষ্য বাড়ানো। সেই সঙ্গে করমুক্ত পরিকাঠামো বন্ড ছাড়ার মতো নানা পরিকল্পনা ঘোষণা।

এই পরিস্থিতিতে সকলেই আশা করে আছেন, পরিকাঠামো ক্ষেত্রে লগ্নি আসার পরিমাণ আগামী দিনে আরও অনেকটা বাড়বে। আর তার হাত ধরে আরও চড়বে পরিকাঠামোয় যুক্ত বিভিন্ন সংস্থার শেয়ার দর। যে কারণে এখনই তা কিনতে ঝাঁপাচ্ছেন লগ্নিকারীরা।

সুতরাং শেষে একটা কথা জোর দিয়েই বলব যে, মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা ঢালতে ইচ্ছুক সাধারণ লগ্নিকারীদের জীবনে এখন পরিকাঠামো ফান্ডের ভূমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। পরিকাঠামোয় উন্নতির হাত ধরে আর্থিক বৃদ্ধির যে-সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তাতে সওয়ার হতে এই ফান্ডের জুরি নেই। ফান্ড ম্যানেজারও এই সম্ভাবনার সুযোগ নিয়ে নানা ভাবে এই ফান্ডে তহবিল বাড়াতে পারেন।

লেখক মিউচুয়াল ফান্ড বিশেষজ্ঞ (মতামত ব্যক্তিগত)

পরিকাঠামো ফান্ড কী?

পরিকাঠামো (ইনফ্রাস্ট্রাকচার) ক্ষেত্রের সঙ্গে কোনও-না-কোনও ভাবে যুক্ত, এমন বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারে তহবিল খাটায় এই ফান্ড। সেই তালিকায় রাস্তাঘাট, বন্দর, সেতু, রেলপথ ইত্যাদি নির্মাণকারী সংস্থা অবশ্যই আছে। সঙ্গে রয়েছে টেলিকম, ইস্পাত, রাবার, বিদ্যুৎ, ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মতো নানা শিল্পের সংস্থা। এমনকী ব্যাঙ্ক, গাড়ি, তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার শেয়ারকেও অনেক সময় বেছে নেওয়া হয় এই ফান্ডের তহবিল খাটানোর জন্য। সব মিলিয়ে, অনেকগুলি শিল্পের দুনিয়ায় এই ফান্ডের ঘোরাফেরা। পরিসরও বেশ বড়। তবে ওই সমস্ত সংস্থাই একটি অদৃশ্য বিষয়ের সুতোয় বাঁধা— পরিকাঠামো

রিটার্ন বাড়ছে কেন?

লোকসভা ভোটের আগেই প্রচারে নেমে নরেন্দ্র মোদীর পরিকাঠামো ক্ষেত্রে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি

সরকার গড়ার পরেও বারবার এই একই অঙ্গীকার। অগ্রাধিকার তালিকায় ঠাঁই পরিকাঠামোর

বাজেটে চলতি অর্থবর্ষে এই ক্ষেত্রে ৭০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ বাড়ানোর দাওয়াই

রাস্তা, রেলপথে বরাদ্দ ১০ হাজার কোটিরও বেশি বাড়ানো

রেল, রাস্তা ও সেচ প্রকল্পের হাত ধরে করমুক্ত পরিকাঠামো বন্ড ফিরিয়ে আনার কথা ঘোষণা। যা কিনলে করছাড়ের সুবিধা পাবেন সাধারণ লগ্নিকারীরা

বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় পুঁজি ঢালার অঙ্ক প্রায় ৮০,৮৪৪ কোটি বাড়িয়ে ৩,১৭,৮৮৯ কোটি টাকা করার ইঙ্গিত। যার মধ্যে পরিকাঠামো ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাও রয়েছে

বিভিন্ন পরিকাঠামো প্রকল্প রূপায়ণে অর্থ জোগাতে জাতীয় লগ্নি ও পরিকাঠামো তহবিল (ন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফান্ড বা এনআইআইএফ) গড়ার প্রস্তাব। যেখানে বছরে ঢালা হবে ২০ হাজার কোটি টাকা

আগামী কয়েক বছরে ভারতীয় রেলে জীবনবিমা নিগমের (এলআইসি) ১.৫ লক্ষ কোটি টাকা ঢালার কথা ঘোষণা

বিমায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা ২৬% থেকে বাড়িয়ে ৪৯% করার ব্যাপারে কেন্দ্রের সাফল্য। এই সংস্কার লগ্নিকারীদের বিশ্বাস আরও কিছুটা পোক্ত করেছে যে, পরিকাঠামো ক্ষেত্রে উন্নয়নের অঙ্গীকারও রাখবে মোদী-সরকার

জমিই হোক বা সঞ্চয়। আপনার যে কোনও বিষয়-সমস্যা নিয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শের জন্য লিখুন।
ঠিকানা ও ফোন নম্বর জানাতে ভুলবেন না। ‘বিষয়’, ব্যবসা বিভাগ, আনন্দবাজার পত্রিকা,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা, পিন-৭০০০০১। ই-মেল: bishoy@abp.in

Infrastructure fund Nilanjan Dey Stock Market Bombay Stock Exchange Rail road
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy