Advertisement
E-Paper

আইন আদালত

...

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০১৪ ০১:২৬

আমরা পাঁচ ভাই, এক বোন। বাবা মারা যাওয়ার আগে আমাদের প্রত্যেকের নামে ৫ কাঠা করে জমি রেকর্ড করে যান। কিন্তু মোট জায়গা আজ পর্যন্ত ভাগ হয়নি। ওই জায়গায় ১ কাঠার উপরে আমার একটি বাড়ি আছে। আর দুই ভাই ওখানে থাকেন। এক ভাইয়ের জায়গা নিয়ে কোনও আগ্রহ নেই। বড়দাদাকে বলেছিলাম জমি ভাগ করে, রাস্তা বার করে আমাকে দিয়ে দিতে। কিন্তু দাদারা তাতে রাজি নন। যেহেতু ওঁরা সব জায়গা দখল করে আছেন, তাই কোন জায়গা পাব, সেটাও ঠিক জানি না। যে কারণে জমি থাকলেও তা ভবিষ্যতে বিক্রিতে সমস্যা হবে। এই পরিস্থিতিতে আমি আইনত আমার নামে রেকর্ড করা ৫ কাঠা জমি কী ভাবে পাব?

জহরলাল মজুমদার, বর্ধমান

জহরলালবাবু, আপনারা পাঁচ ভাই, এক বোন। আপনার বাবা আপনাদের প্রত্যেককে ৫ কাঠা করে জায়গা দিয়ে তা রেকর্ড করে যান। অর্থাত্‌ প্রত্যেকের নামে ৫ কাঠা করে জায়গা নথিবদ্ধ রয়েছে। কিন্তু মোট জায়গা আজ পর্যন্ত ভাগ হয়নি। কিন্তু একটা বিষয় আপনার প্রশ্ন থেকে পরিষ্কার নয়। আপনি বলছেন, ওই জায়গায় ১ কাঠার ওপর আপনার একটি বাড়ি আছে। আর আপনার দু’জন ভাই ওখানে থাকেন। আপনি ঠিক কী বলতে চাইছেন? বাড়িটি কি আপনি নিজের খরচে করেছেন? যদি নিজের খরচে বাড়িটি তৈরি করে থাকেন, তা হলে আপনি আপনাদের জায়গা নির্ধারিত না-হওয়া সত্ত্বেও ১ কাঠা জায়গার উপর বাড়ি তৈরি করে বসলেন কেন? যদি নিজের খরচে বাড়ি করেন তা হলে আপনার অন্য দু’জন ভাই আপনার খরচে তৈরি করা বাড়িতে থাকছেন কী ভাবে? আপনাদের মধ্যে কোনও আন্ডারস্ট্যান্ডিং বা মৌখিক অথবা লিখিত চুক্তি হয়েছিল কি? অথবা ওই বাড়িটি কি আপনাদের পৈতৃক সম্পত্তি? একটা কথা পরিষ্কার যে, আপনার বাবা প্রত্যেকের নামে ৫ কাঠা করে জায়গা নথিবদ্ধ করে গেছেন। তবে নথিবদ্ধ করার সময়ে শুধু জায়গা নয়, কতটা জায়গা, কোথায় অবস্থিত ইত্যাদি সংবলিত ‘তফসিল’-এর বর্ণনাও থাকে। আপনি আপনার এলাকার ‘বি এল এল আর ও’ অফিসে গিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখুন, পরচাতে জায়গার বিবরণ আছে কি না। হয়তো দেখা যাবে আপনার বাবা আপনাদের প্রত্যেকের নামে জায়গা নথিবদ্ধ করার সময়ে কাকে কোন দিকের জায়গা দেওয়া হচ্ছে, সেটাও নথিবদ্ধ করেছিলেন। তা হলে আর সমস্যা থাকবে না। আর একটা প্রশ্ন জাগছে, আপনারা কি ওই জমির খাজনা দেন না? যদি দেন তা হলে কী ভাবে দেন? মোট ৩০ কাঠা জমির ওপরে (৬ জন ৫ কাঠা করে), নাকি প্রত্যেকে নিজ নিজ ৫ কাঠা জমির উপরে?

যদি সত্যি সত্যিই দেখা যায় যে আপনাদের জমিগুলিতে সীমারেখা নির্দিষ্ট নেই, অর্থাত্‌ ‘আনডিভাইডেড’, ‘আনডিমার্কেটেড’ অর্থাত্‌ অবিভক্ত এবং সীমারেখাবিহীন, তা হলে আপনার এলাকার দেওয়ানি আদালতে ‘পার্টিশন’-এর মামলা করতে পারেন। যদি মামলায় যেতে না-চান তাহলে নিজেরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে উপযুক্ত স্ট্যাম্প ডিউটি দিয়ে ‘পার্টিশন ডিড’ করে নিতে হবে। তবে সে ক্ষেত্রে আলোচনায় বসতে হবে। আপনাকেই বেশি উদ্যোগী হতে হবে। আপনি জমির দখল পাচ্ছেন না, অন্য ভাইয়েরা আপনার জমিতে বসে আছেন এই বলে ‘রিকভারি অব পজেশন’ বা জমির দখল ফিরে পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট আদালতে মামলা করতে পারেন। তবে মামলা করার আগে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে চেষ্টা করুন। প্রত্যেকেরই জমিতে ঢোকা-বেরোনোর জন্য রাস্তা রাখতেই হবে। সেটাই আপনাদের আইনি অধিকার। তবে এই মামলাটি জমি যে-এলাকায় অবস্থিত, সেই এলাকার আদালতেই করতে হবে।

পরামর্শ: জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়।

জমিই হোক বা সঞ্চয়। আপনার যে কোনও বিষয়-সমস্যা নিয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শের জন্য লিখুন। ঠিকানা ও ফোন নম্বর জানাতে ভুলবেন না।

‘বিষয়’, ব্যবসা বিভাগ, আনন্দবাজার পত্রিকা,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা, পিন-৭০০০০১

ই-মেল: bishoy@abp.in

jayantanarayan chattopadhay suggestions
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy