Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Presents

নেট ঘেঁটে বিমা

পিত্‌জা হোক বা নতুন মোবাইল। অনেক সময়ে এ সব কিছু এখন অনলাইনেই কিনে ফেলছি আমরা। অথচ নেটে হেঁটে বিমা কেনায় এখনও যেন বেশ আড়ষ্টতা। কিন্তু জানেন কি, তাতে প্রিমিয়াম কম পড়ে? কমে ভুল পলিসি কেনার সম্ভাবনা? অনলাইনে বিমা কেনার পদ্ধতি জানাচ্ছেন প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী।পিত্‌জা হোক বা নতুন মোবাইল। অনেক সময়ে এ সব কিছু এখন অনলাইনেই কিনে ফেলছি আমরা। অথচ নেটে হেঁটে বিমা কেনায় এখনও যেন বেশ আড়ষ্টতা। কিন্তু জানেন কি, তাতে প্রিমিয়াম কম পড়ে? কমে ভুল পলিসি কেনার সম্ভাবনা? অনলাইনে বিমা কেনার পদ্ধতি জানাচ্ছেন প্রজ্ঞানন্দ চৌধুরী।

শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৪ ০১:৩৭
Share: Save:

সুবিধার সাত-সতেরো

এজেন্টের কোনও ভূমিকা নেই। ফলে তাঁর কমিশন বাবদ কোনও টাকাও আপনার প্রিমিয়াম থেকে কাটা যাবে না। ফলে তাতে আপনার লাভ।

অনলাইনে পলিসি কিনলে, সাধারণত তুলনায় কম প্রিমিয়াম গুনতে হয় গ্রাহককে। কারণ, এজেন্টকে কমিশন দেওয়ার দায় এ ক্ষেত্রে সংস্থার নেই।

অনেক সময়ে গ্রাহককে ভুল তথ্য দিয়ে কিংবা বিভিন্ন মিথ্যে সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিয়ে পলিসি বিক্রি করেন এজেন্ট। কিন্তু এখানে সংস্থার ওয়েবসাইটে সমস্ত সুবিধা-অসুবিধা দেখে-পড়ে পলিসি কিনছেন আপনি নিজে। ফলে ওই ‘মিস সেলিং’-এর সম্ভাবনা এখানে না-থাকারই কথা।

এমন বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইট আছে, যেখানে বিভিন্ন বিমা সংস্থার বিভিন্ন ধরনের পলিসি সম্পর্কে তুলনামূলক আলোচনা পাওয়া যায়। যেমন ধরুন, বছরে ২৫,০০০ টাকা প্রিমিয়াম দিয়ে কোন সংস্থার কী এনডাওমেন্ট পলিসি পেতে পারেন, ওই সব সাইটে তা এক ঝলকে দেখে ফেলতে পারেন আপনি। নেটে পলিসি কেনার আগে ওই সমস্ত তথ্য সহজেই যাচাই করতে পারাও মস্ত সুবিধা।

জরুরি কথা

এক বার স্রেফ হুজুগে পলিসি কিনে ফেলা বড় কথা নয়। মনে রাখবেন, প্রতি বার নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে নেটের মাধ্যমেই কিন্তু প্রিমিয়াম জমা করতে হবে আপনাকে। ফলে নেটে কিছুটা সড়গড় হওয়া জরুরি।

নেটে পলিসি কেনার জন্য শুরুতে প্রাথমিক কিছু তথ্য (বিমার অঙ্ক, পলিসির মেয়াদ ইত্যাদি) দিলে প্রিমিয়াম কত পড়বে, তার মোটামুটি একটা হিসাব পেয়ে যাবেন আপনি। সেই অনুসারে সিদ্ধান্ত নিন।

সব ধরনের বিমায় (যেমন, পেনশন প্রকল্প) স্বাস্থ্য পরীক্ষা (মেডিক্যাল টেস্ট) করানোর প্রয়োজন হয় না। তেমনই আবার কিছু বিমায় (যেমন, টার্ম পলিসি) এই পরীক্ষা কার্যত বাধ্যতামূলক। উল্লেখ্য, টার্ম পলিসি হল সেই জীবনবিমা, যেখানে তুলনায় অনেক কম প্রিমিয়ামে বেশি কভারেজ মেলে। কিন্তু তেমনই একমাত্র গ্রাহকের মৃত্যু হলে, তবেই টাকা পাওয়া যায়। নইলে মেয়াদ শেষে কিছু পাওয়া যায় না।

কভারেজের অঙ্ক বেশি হলে, বেশির ভাগ বিমার (কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া) অধিকাংশ পলিসি কেনার জন্যই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে বলে সংস্থা। সাধারণত এই পরীক্ষা করিয়ে নেয় বিমা সংস্থা নিয়োজিত টিপিএ (থার্ড পার্টি অ্যাডমিনিস্ট্রেটর)। কোন টিপিএ-কে মেডিক্যাল টেস্টের দায়িত্ব দেওয়া হল এবং কী কী পরীক্ষা করানো হবে, ই-মেল মারফত তা আপনাকে জানিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব বিমা সংস্থার। খরচও তাদেরই।

সহজ করতে উদাহরণ

অনলাইনে বিমা কী ভাবে কিনতে হয়, তা সহজ করে বোঝাতে এখানে এলআইসি-র টার্ম পলিসির উদাহরণ তুলে দিলাম আমরা। চেষ্টা করলাম, পলিসি কেনার মূল পদ্ধতিটুকু তুলে ধরার। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, সব সংস্থার সব পলিসি কেনার জন্য ওয়েবসাইটে এ রকম দেখতে পাতাই ভর্তি করতে হবে। বরং প্রত্যেক সংস্থার ক্ষেত্রে তা আলাদা। এমনকী একই সংস্থার বিভিন্ন ধরনের বিমা (ধরুন, টার্ম ও এনডাওমেন্ট) কিংবা পলিসির ক্ষেত্রেও তা পৃথক হতে পারে। তবে যে-যে তথ্যের কথা এখানে বলা হল, মোটামুটি তার মধ্যেই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে জানতে চায় বিভিন্ন সংস্থা। তাই গোড়ার বিষয়টি বুঝে রাখা ভাল।


এখান থেকে শুরু। প্রথম ধাপে প্রাথমিক তথ্য। যেমন, আপনি ভারতীয় নাগরিক কি না


জন্মতারিখ, পুরুষ/মহিলা, বিমার অঙ্ক, মেয়াদ লিখুন। সম্ভাব্য প্রিমিয়াম জানাবে সংস্থাই


লিখতে হবে নিজের নাম, শহরের নাম, মোবাইল নম্বর, ই-মেল ইত্যাদি


নাম, বাবা-মা-স্বামী/স্ত্রীয়ের নাম, শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়সের প্রমাণপত্র ইত্যাদি জানান


এ বার পরপর কয়েকটি পাতা একই ভাবে পূরণ করে যেতে হবে আপনাকে। জানাতে হবে বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা, ফোন ও মোবাইল নম্বর, ই-মেল ইত্যাদি। দিতে হবে পরিচয়পত্রের তালিকা ও ঠিকানা। ভর্তি করতে হবে চাকরি সংক্রান্ত তথ্যও। তার মধ্যে সংস্থার নাম, আয়ের অঙ্ক, কাজের ধরন, সেই কাজে বাইরে ঘুরতে হয় কি না কিংবা শরীরের ক্ষতির সম্ভাবনা আছে কি না, এই সমস্ত কিছুও জানাতে হবে আপনাকে


জানান আপনার জীবনযাত্রা কেমন। সিগারেট খান কি না, মদ্যপানের অভ্যাস আছে কি নেই, কখনও গ্রেফতার হয়েছেন কি না ইত্যাদি। পরের দু’টি পাতায় দিতে হবে যাঁকে নমিনি করতে চান, তাঁর সম্পর্কে তথ্য। লিখতে হবে পরিবারের সদস্যদের খুঁটিনাটি


আগে কোনও বিমা কেনা থাকলে, সে সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য জানান এখানে


নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিন। জানান, আগে কোনও বড় অসুখ করেছে কি না,
হাসপাতালে গিয়েছেন কি না, দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন কি না ইত্যাদি

প্রিমিয়ামের টাকা মেটাতে ব্যাঙ্কের নাম, অ্যাকাউন্ট নম্বর ইত্যাদি জানান। টাকা দেওয়া হয়ে গেলে,
পলিসির কাগজ আপনার কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব সংস্থারই

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE