Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
The Bom Jesus treasure

হিরে খুঁজতে গিয়ে উঁকি মারল জাহাজের মাস্তুল, উপকূলের বালির রাশির নীচ থেকে উদ্ধার ৫০০ বছরের পুরনো রাজার ধন!

প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা ও ইতিহাসবিদেরা প্রমাণ করেন এই নিদর্শনগুলি ষোড়শ শতকের পর্তুগিজ জাহাজের অংশ। ভারত ভ্রমণে বেরিয়ে নিখোঁজ হওয়া জাহাজটি ২০০৮ সাল পর্যন্ত মরুভূমির নীচে চাপা পড়ে ছিল। একটি নৌবহরের অংশ হিসেবে ভারত অভিমুখে যাত্রা করেছিল বোম জেসাস।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:২৪
Share: Save:
০১ ১৪
The Bom Jesus treasure

ঊষর বালুর নীচে কয়েকশো বছর ধরে চাপা পড়েছিল কুবেরের ধন। ৫০০ বছর ধরে রাশি রাশি বালির তলায় চাপা পড়ে থাকার পর সেই গুপ্তধন উদ্ধার হয় নামিবিয়ার ‘স্কেলিটন’ উপকূল থেকে। আফ্রিকা মহাদেশের এই উপকূলটি নৌ-অভিযানের ইতিহাসে জাহাজডুবির জন্য দীর্ঘ দিন ধরে কুখ্যাত। সেই এলাকার বালির স্তূপের গভীর থেকে উদ্ধার করা হয় জাহাজের ধ্বংসাবশেষ।

০২ ১৪
The Bom Jesus treasure

সমুদ্রের তলদেশ নয়, বালুরাশির আড়ালে লুকিয়ে ছিল বিপুল ধনরাশি। ধনসম্পদগুলি ১৫৩৩ সালে নিখোঁজ হওয়া জাহাজ ‘বোম জেসাস’-এর বলে প্রমাণিত হয়েছে। এই অঞ্চলে হিরের খনি অনুসন্ধানের সময় খনিশ্রমিকেরা কাঠ এবং ধাতুর টুকরো খুঁজে পান। প্রাথমিক ভাবে সেগুলিকে সাধারণ কোনও বস্তুর ধ্বংসাবশেষ বলে ধরা হয়েছিল।

০৩ ১৪
The Bom Jesus treasure

পরে প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা ও ইতিহাসবিদেরা প্রমাণ করেন এই নিদর্শনগুলি ষোড়শ শতকের পর্তুগিজ জাহাজের অংশ। ভারত ভ্রমণে বেরিয়ে নিখোঁজ হওয়া জাহাজটি ২০০৮ সাল পর্যন্ত মরুভূমির নীচে চাপা পড়ে ছিল। একটি নৌবহরের অংশ হিসাবে ভারত অভিমুখে যাত্রা করেছিল বোম জেসাস। পর্তুগিজ শব্দগুচ্ছ বোম জেসাস-এর অর্থ হল ‘পবিত্র যিশু’। এই জাহাজের ভান্ডারে সোনা, তামা এবং হাতির দাঁত ঠাসা ছিল।

০৪ ১৪
The Bom Jesus treasure

দু’হাজার স্বর্ণমুদ্রা, তাল তাল রুপো, তামা ও হাতির দাঁত ছা়ড়াও প্রত্নবিদেরা নৌযান সরঞ্জাম এবং এমনকি পাঁচ শতাব্দীর বেশি পুরনো একটি বন্দুক উদ্ধার করেছিলেন। ২০০৮ সালের পর সর্বসমক্ষে আসে আফ্রিকার অন্যতম বড় সামুদ্রিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলি।

০৫ ১৪
The Bom Jesus treasure

প্রত্নতাত্ত্বিক এবং ঐতিহাসিকেরা প্রথমে জাহাজটির পরিচয় সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু ষোড়শ শতাব্দীর পর্তুগিজ স্বর্ণমুদ্রার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে সাহায্য করেছিল যে এটি প্রকৃতপক্ষে হারিয়ে যাওয়া বোম জেসাস। মুদ্রাগুলি অক্ষত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে। সম্ভবত জাহাজের ভারী কাঠামোর নীচে চাপা পড়ে যাওয়ার ফলে উপকূলীয় আবহাওয়ার ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল।

০৬ ১৪
The Bom Jesus treasure

নামিবিয়া, অ্যাঙ্গোলা এবং দক্ষিণ আফ্রিকা— এই তিন দেশে রয়েছে নামিব মরুর অংশ। অতলান্তিক মহাসাগরের উপকূলের এই উপকূলীয় মরুভূমি প্রায় ২০০০ কিমি অঞ্চল জুড়ে বিস্তৃত। তার মধ্যে নামিবিয়ার অংশেই পড়েছে ওই স্কেলিটন কোস্ট।

০৭ ১৪
The Bom Jesus treasure

প্রচুর জাহাজের কবরস্থানের জন্য পরিচিত এই অঞ্চলটি। সব সময় ঢেউ আছড়ে পড়ে তটে। অতীতে সমুদ্রের এই অংশে ঘন ঘন জাহাজ দুর্ঘটনা হত। তার চিহ্ন ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে উপকূল জুড়ে। সামুদ্রিক অভিযানের বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন, বোম জেসাসও একটি শক্তিশালী ঝড়ের কবলে পড়েছিল।

০৮ ১৪
The Bom Jesus treasure

তীরের খুব কাছে টেনে নিয়ে যাওয়ার আগে জাহাজটি একটি পাথরে ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায়। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে উপকূলরেখার স্থানান্তর ঘটার ফলে মরুভূমির বালি দখল করে নেয় জাহাজের ধ্বংসাবশেষকে। বালির আড়ালে লুকিয়ে যায় জাহাজটি।

০৯ ১৪
The Bom Jesus treasure

বোম জেসাস থেকে উদ্ধার হওয়া পণ্যসম্ভার পর্তুগিজ সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক উন্নতির আভাস দেয়। সবচেয়ে মূল্যবান আবিষ্কারের মধ্যে ছিল স্বর্ণমুদ্রাগুলি। সেগুলি পর্তুগালের রাজা তৃতীয় জোয়াওয়ের সমকালের এবং সব ক’টিই নতুনের মতো ঝকঝকে অবস্থায় ছিল। এ ছাড়াও জাহাজটিতে প্রচুর পরিমাণে তামার পিণ্ডের সন্ধান মিলেছে। তামাকে সেই সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য পণ্য বলে ধরা হত। সেই সঙ্গে ছিল রুপোর মুদ্রা, নৌকোর সরঞ্জাম ও কামান।

১০ ১৪
The Bom Jesus treasure

শুষ্ক মরুভূমির জলবায়ু ধাতুর মুদ্রা ও অন্যান্য সম্পদ সুরক্ষিত রেখেছিল। মুদ্রা এবং শিল্পকর্মগুলি প্রায় নিখুঁত অবস্থায় সংরক্ষণ করেছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে, বালি এবং শুষ্ক পরিবেশ একটি প্রাকৃতিক ‘ভল্ট’-এর কাজ করেছিল। তাঁরা ব্যাখ্যা করেছেন, পাঁচ শতাব্দী পরে এত বড় ধনসম্পত্তি অক্ষত অবস্থায় টিকে থাকার বিষয়টি প্রায় বিরল।

১১ ১৪
The Bom Jesus treasure

সাদার্ন আফ্রিকা ইনস্টিটিউট অফ মেরিটাইম আর্কিয়োলজিক্যাল রিসার্চের প্রধান প্রত্নতাত্ত্বিক ডিটার নোলির মতে এই আবিষ্কারটি যুগান্তকারী। এটি কেবলমাত্র ট্রান্সআটলান্টিক বাণিজ্যপথের প্রাথমিক রূপরেখার সন্ধান দেয়নি, ষোড়শ শতাব্দীতে বিশ্ব বাণিজ্য ও রাজনীতিতে আফ্রিকার কেন্দ্রীয় ভূমিকাকেও আরও সুস্পষ্ট করে তুলেছিল।

১২ ১৪
The Bom Jesus treasure

কারণ সোনা-রুপোর সঙ্গে যে পরিমাণ হাতির দাঁতের সম্ভার পাওয়া গিয়েছে তা থেকে বোঝা যায় যে এটি আফ্রিকা সম্পর্কিত বাণিজ্যের অংশ ছিল। এই বাণিজ্যপথটি পর্তুগিজ সাম্রাজ্যকে আফ্রিকা এবং এশিয়ার বাজারের সঙ্গে সংযুক্ত করেছিল।

১৩ ১৪
The Bom Jesus treasure

যদিও জাহাজটি পর্তুগিজ নাবিক ও পর্তুগাল থেকে এসেছিল, কিন্তু ইউনেস্কো চুক্তি অনুসারে জাহাজ থেকে প্রাপ্ত এই ধনভান্ডারটি এখন আইনত নামিবিয়ার সম্পত্তি। পর্তুগালও সেই দাবি থেকে সরে এসেছে। তারা জানিয়েছে, এই আবিষ্কারকে দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সহযোগিতার নিদর্শন হিসাবেই দেখতে চায়।

১৪ ১৪
The Bom Jesus treasure

নামিবিয়ার সরকার উদ্ধার হওয়া ধনসম্পদ ও ঐতিহাসিক নির্দশনগুলিকে জাদুঘরে প্রদর্শনীর পরিকল্পনা করার কথা ঘোষণা করেছে। জনসাধারণ সেই যুগের সঙ্গে একটি বাস্তব সংযোগ প্রত্যক্ষ করতে পারেন। শুধুমাত্র ঐতিহাসিক নয়, অর্থনৈতিক দিক থেকেও বোম জেসাসের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে।

সব ছবি : সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy