All need to know about Raheel Sharif, ex chief of army staff of Pakistan dgtl
Raheel Sharif
ছিলেন সেনাপ্রধান, অবসর নিয়ে হলেন অন্য দেশের সন্ত্রাসবিরোধী শাখার কর্তা! বিরল নজির শরিফের, যত কাণ্ড পাকিস্তানেই
প্রাক্তন পাক সেনাপ্রধান রাহিলের জন্ম পাকিস্তানের বালোচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায়। পঞ্জাবি রাজপুত (ভাট্টি) পরিবারের সদস্য তিনি। তিন ভাই এবং দুই বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট রাহিল।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৭:৫৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
পাকিস্তানের ১৫তম সেনাপ্রধান। ১১তম ‘চিফ অফ আর্মি স্টাফ’ (১৯৭২ সালের আগে পাক সেনাবাহিনীতে ‘চিফ অফ আর্মি স্টাফ’ বলে কোনও পদ ছিল না। সেনার সর্বোচ্চ সেই পদকে বলা হত ‘কমান্ডার অফ চিফ’)। ২০১৩ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত পাক সেনাপ্রধানের পদে ছিলেন তিনি। কর্মজীবন শেষ হতেই সটান সৌদি আরব পাড়ি দেন। আরব দেশটির সন্ত্রাসবিরোধী শাখায় কাজ জুটে যায় তাঁর। বর্তমানে রিয়াধের ‘ইসলামিক মিলিটারি অ্যালায়েন্স টু ফাইট টেররিজ়ম’-এর দায়িত্বে রয়েছেন তিনি।
০২১৯
কথা হচ্ছে রাহিল শরিফের। এক দেশের সেনাপ্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালনের পর অন্য কোনও দেশে গিয়ে সরকারের সন্ত্রাসদমন শাখার কমান্ডার পদে বসার নজির পৃথিবীতে খুব একটা নেই। সে ক্ষেত্রে নজির গড়েছেন রাহিল।
০৩১৯
প্রাক্তন পাক সেনাপ্রধান রাহিলের জন্ম পাকিস্তানের বালোচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায়। পঞ্জাবি রাজপুত (ভাট্টি) পরিবারের সদস্য তিনি। তিন ভাই এবং দুই বোনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট রাহিল।
০৪১৯
রাহিলের বাবা-দাদারাও ছিলেন পাক সেনার সদস্য। রাহিলের বাবা মহম্মদ শরিফ ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মেজর। দাদা শব্বিরও মেজর পদে পাক সেনার দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় মরণোত্তর ‘নিশান-ই-হায়দার’ খেতাব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।
০৫১৯
শব্বিরকে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সর্বোচ্চ সম্মানিত সামরিক কর্তাদের অন্যতম হিসাবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, ‘নিশান-ই-হায়দার’ (১৯৭১)-এর পাশাপাশি ‘সিতারা-ই-জ়ুর্রত’ও (১৯৬৫) পেয়েছিলেন তিনি।
০৬১৯
রাহিলের আর এক দাদা মমতাজ শরিফ ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন। একটি দুর্ঘটনার সময় জ্বলন্ত ট্যাঙ্ক থেকে সৈন্যদের বাঁচানোর জন্য তাঁকে ‘সিতারা-ই-বাসালাত’ খেতাব দেওয়া হয়েছিল।
০৭১৯
রাহিলের পড়াশোনা লাহৌর ক্যান্টনমেন্টের গ্যারিসন বয়েজ় হাই স্কুল থেকে। পরে তিনি লাহৌরের সরকারি কলেজ থেকে পড়াশোনা করেন এবং পরবর্তী কালে পাকিস্তান মিলিটারি অ্যাকাডেমি থেকে প্রশিক্ষণ নেন।
০৮১৯
১৯৭৬ সালে প্রশিক্ষণ শেষ হওয়ার পর ফ্রন্টিয়ার ফোর্স রেজিমেন্টের ৬ষ্ঠ ব্যাটালিয়নে কমিশন লাভ করেন রাহিল। প্রথমে পাক সেনা অ্যাকাডেমিতে একজন অ্যাডজুট্যান্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে গিলগিটে একটি পদাতিক ব্রিগেডে যোগ দেন।
০৯১৯
১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের সময় দু’টি পদাতিক ইউনিট, ৬ এফএফ এবং ২৬ এফএফ লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসাবে এবং শিয়ালকোটে ভারপ্রাপ্ত ব্রিগেড কমান্ডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন রাহিল।
১০১৯
২০০০ সালের সেনাবাহিনীর পর্যবেক্ষণের সময় রাহিলকে গুজরানওয়ালা জেলার নিয়ন্ত্রণ দেওয়া হয়। এলাকায় উল্লেখযোগ্য প্রশাসনিক ও সামাজিক সংস্কার আনার দায়িত্বও পান তিনি।
১১১৯
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার হিসাবে দু’টি পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন রাহিল। ২০০১ সালে তিনি ৩০ কোর গুজরানওয়ালার ‘চিফ অফ স্টাফ’ নিযুক্ত হন। পরে তিনি বালোচিস্তানের কোয়েটায় কোর হেড কোয়ার্টারে ‘চিফ অফ স্টাফ’ পদে যোগ দেন।
১২১৯
২০০৪ সালে ব্রিটেনের ‘রয়্যাল কলেজ অফ ডিফেন্স স্টাডিজ়’-এ যোগ দেওয়ার সুযোগ পান রাহিল। কৃতিত্বের সঙ্গে স্নাতক ডিগ্রিও অর্জন করেন সেখান থেকে।
১৩১৯
২০০৫ সালে পদোন্নতি হয় রাহিলের। পাক সেনার মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন তিনি। লাহৌরে ১১তম পদাতিক ডিভিশনের কমান্ডারও নিযুক্ত হন। দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে সেই দায়িত্বে ছিলেন রাহিল।
১৪১৯
এর পর কাকুলের পাকিস্তান মিলিটারি অ্যাকাডেমির কমান্ড্যান্ট নিযুক্ত হন রাহিল। লেফটেন্যান্ট জেনারেল হওয়ার পর গুজরানওয়ালার কোর কমান্ডার এবং পরে পাক সেনার প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়নের জন্য ইনস্পেক্টর জেনারেল হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন।
১৫১৯
পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়নের ইনস্পেক্টর জেনারেল হিসাবে দেশের সামরিক কলেজগুলিকে উন্নত করতে চেষ্টা করেছিলেন রাহিল। ‘তেহরিক-ই-তালিবান’ (পাকিস্তানি তালিবান) জঙ্গিদের উৎখাত করতেও সচেষ্ট হয়েছিলেন।
১৬১৯
২০১৩ সালের নভেম্বরে রাহিলকে পাক সেনাবাহিনীর প্রধান নিযুক্ত করেন পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। কোনও কোনও পাক সেনাকর্তার মতে, ভারতের দিকে মনোযোগ দেওয়ার চেয়ে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ তালিবান-সমস্যার বিরুদ্ধে লড়াই করা বেশি জরুরি। মনে করা হয়, রাহিল তাঁদের মধ্যে ছিলেন অন্যতম।
১৭১৯
পাক জেনারেল হিসাবে ২০১৩ সালে ‘করাচি অপারেশন’ শুরু করেছিলেন রাহিল। উদ্দেশ্য ছিল, শহরটিকে অপরাধমুক্ত করা। সে সময় বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক শহরগুলির মধ্যে ৬ষ্ঠ হিসাবে গণ্য করা হত করাচিকে। কিন্তু রাহিলের চেষ্টায় ২০১৭ সালে ১০০টি বিপজ্জনক শহরের তালিকা থেকে বাদ পড়ে করাচি।
১৮১৯
অবসরগ্রহণের পর সৌদি আরব চলে গিয়েছিলেন রাহিল। পাকিস্তানের অনুমোদন পেয়ে আরব দেশটির সন্ত্রাসবিরোধী শাখায় যোগ দেন তিনি। ‘ইসলামিক মিলিটারি অ্যালায়েন্স টু ফাইট টেররিজ়ম’-এ কমান্ডারের দায়িত্ব পান। ইয়েমেনের সশস্ত্র বিদ্রোহীদের দমনে সৌদি সরকারের যাবতীয় পরিকল্পনার নেপথ্যে তাঁর মস্তিষ্ক রয়েছে বলে সূত্র মারফত মিলেছে খবর।
১৯১৯
পাক সেনায় দায়িত্ব পালনের সময় অনেক পুরস্কার পেয়েছিলেন রাহিল। রাহিল শরিফ বিবাহিত। তিন ছেলে এবং এক মেয়ে রয়েছে তাঁর।