Advertisement
০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
Tadmor Prison

বন্দিদের খাওয়ানো হত নর্দমার জল-ইঁদুর, চলত অকথ্য অত্যাচার! যে কারাগারের অপর নাম ছিল ‘মৃত্যু ও উন্মাদনার রাজ্য’

তাদমোর কারাগার ছিল সিরিয়ার পলমায়রা এলাকায়। ফরাসিরা ১৯৩০-এর দশকে মরুভূমির কেন্দ্রে তাদমোর তৈরি করে। মূলত, সামরিক বাহিনীর সেনাছাউনি হিসাবে তৈরি করা হয়েছিল ভবনটি। কিন্তু ১৯৮০-এর পর এই জায়গার ব্যবহারে বদল আসে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০২৫ ১২:০১
Share: Save:
০১ ১৭
All need to know about Tadmor Prison, known to be one of the dangerous prisons of world

‘শ্যশাঙ্ক রিডেমপ্‌শন’, ‘এস্কেপ ফ্রম আলকাতরাজ’, ‘দ্য গ্রিন মাইল’-এর মতো সিনেমাগুলির কথা শুনলেই কী মনে পড়ে? অন্ধকার কারাগার, কারারক্ষীদের অকথ্য অত্যাচার, বন্দিজীবন। কারণ, এই প্রতিটি সিনেমাতেই জেলের ভয়ঙ্কর জীবন স্পষ্ট ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এই সব সিনেমায় জেলবন্দিদের উপর অত্যাচারের ঘটনা দেখে কারও মনে হতেই পারে যে বাস্তব জীবনে বন্দিদের সঙ্গে নিশ্চয়ই এতটা অত্যাচার করা হয় না।

০২ ১৭
All need to know about Tadmor Prison, known to be one of the dangerous prisons of world

তবে বাস্তবে সত্যিই এমন একটি কারাগার ছিল, যা বছর দশেক আগে পর্যন্ত বিশ্বের অন্যতম জঘন্য কারাগার হিসাবে পরিচিত ছিল। বিশ্বের দরবারে কুখ্যাত তকমা পাওয়া এই কারাগারের নাম তাদমোর। অনেক কারাগার বিশেষজ্ঞের মতে, কারাগারটিকে নরক বললেও কম বলা হবে। কারণ, ওই কারাগারে বন্দিদের উপর চলত নিয়মিত মারধর এবং অকথ্য নির্যাতন।

০৩ ১৭
All need to know about Tadmor Prison, known to be one of the dangerous prisons of world

তাদমোর কারাগার ছিল সিরিয়ার পলমায়রা এলাকায়। ফরাসিরা ১৯৩০-এর দশকে মরুভূমির কেন্দ্রে তাদমোর তৈরি করে। মূলত, সামরিক বাহিনীর সেনাছাউনি হিসাবে তৈরি করা হয়েছিল ভবনটি। কিন্তু ১৯৮০-এর পর এই জায়গার ব্যবহারে বদল আসে। কারাগারে পরিণত করা হয় তাদমোরকে।

০৪ ১৭
All need to know about Tadmor Prison, known to be one of the dangerous prisons of world

তাদমোর কারাগারে বন্দিদের জীবন নারকীয় করে তোলার পিছনে যে মানুষটির হাত ছিল বলে মনে করা হয়, তিনি সিরিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হাফিজ় আল-আসাদ।

০৫ ১৭
All need to know about Tadmor Prison, known to be one of the dangerous prisons of world

১৯৮০ সালে হাফিজ়ের উপর প্রাণঘাতী হামলা চালানো হয়। কিন্তু প্রাণে বেঁচে যান তিনি। আক্রমণের দায় বর্তায় ‘দ্য সোসাইটি অফ দ্য মুসলিম ব্রাদার্স’-এর উপর।

০৬ ১৭
All need to know about Tadmor Prison, known to be one of the dangerous prisons of world

এর পরই হাফিজ়ের ভাই রিফাত আল-আসাদ গণহত্যার আদেশ দেন। মনে করা হয়, সেই গোষ্ঠীর হাজারখানেক সদস্যকে মেরে তাঁদের দেহ তাদমোর কারাগারের বাইরে কবর দেওয়া হয়। অনেককে কারাগারে ঢোকানো হয়। চলে অকথ্য অত্যাচার।

০৭ ১৭
All need to know about Tadmor Prison, known to be one of the dangerous prisons of world

তাদমোর কারাগারের বন্দিদের বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছিল। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করা দূর অস্ত্‌, একে অপরের সঙ্গে দেখা করার সুযোগও দেওয়া হত না বন্দিদের। কারারক্ষীরা দু’জন বন্দিকে কথা বলতে দেখলেও ছিল বিপদ। যে কোনও সময়ে চলে আসত মৃত্যুদণ্ডের আদেশ।

০৮ ১৭
All need to know about Tadmor Prison, known to be one of the dangerous prisons of world

তাদমোর কারাগারে বন্দিদের মাথা তোলার, উপরে তাকানোর বা একে অপরের দিকে তাকানোর অনুমতি পর্যন্ত দেওয়া হত না।

০৯ ১৭
All need to know about Tadmor Prison, known to be one of the dangerous prisons of world

তাদমোর কারাগার ছিল বৃত্তাকার। কারাগারটি এমন ভাবেই তৈরি করা হয়েছিল, যাতে প্রহরীরা যে কোনও সময়ে সহজেই বন্দিদের উপর নজর রাখতে পারেন।

১০ ১৭
All need to know about Tadmor Prison, known to be one of the dangerous prisons of world

১৯৮০ থেকে ১৯৯০ সালের মধ্যে প্রায় ২০ হাজার মানুষকে এই কারাগারে বন্দি হিসাবে রাখা হয়েছিল। বন্দিদের মধ্যে একটি বড় অংশ ছিলেন রাজনৈতিক কর্মী। এক সময়ে তাদমোর কারাগার বন্দিদের সংখ্যা এতই বেড়ে গিয়েছিল যে, বন্দিদের পালা করে ঘুমোনোর সুযোগ দেওয়া হত। যখন কিছু বন্দি ঘুমোতেন, তখন বাকিরা দাঁড়িয়ে থাকতেন।

১১ ১৭
All need to know about Tadmor Prison, known to be one of the dangerous prisons of world

বলা হয় তাদমোর কারাগার কর্তৃপক্ষ কখনওই বন্দিদের প্রতি দয়া দেখাতেন না। দয়া দেখানো হয়নি সিরিয়ার কবি ফারাজ় বায়রাকদারকেও। তাঁকেও চার বছর ওই ভয়ঙ্কর কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছিল।

১২ ১৭
All need to know about Tadmor Prison, known to be one of the dangerous prisons of world

ফারাজ় নিজের লেখা বইয়ে সেই কারাগারকে ‘মৃত্যু ও উন্মাদনার রাজ্য’ হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন। তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন, বন্দিদের সারা দিন বন্ধ করে রাখা হত। কোনও বন্দি যদি শ্বাসকষ্ট হচ্ছে বলে জানাতেন, তা হলে তাঁদের কারাগার চত্বরের উঠোনের চারপাশে দৌড়তে বলা হত। এর ফলে শ্বাস আটকে অনেকে মারাও যেতেন। কখনও কখনও আবার শুধু পিটিয়ে হত্যা করা হত কারাগারের বন্দিদের।

১৩ ১৭
All need to know about Tadmor Prison, known to be one of the dangerous prisons of world

ফারাজ়ের বইয়ে বন্দিদের জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় নির্যাতনের কিছু পদ্ধতির উল্লেখও রয়েছে। কারাগারে ঢোকার পরপরই বন্দিদের বলা হত, একটি নিকাশি নালার জল খেতে। যাঁরা এই জল খেতে অস্বীকার করতেন, তাঁদের সেখানেই মেরে ফেলা হত।

১৪ ১৭
All need to know about Tadmor Prison, known to be one of the dangerous prisons of world

বইয়ে উল্লেখ রয়েছে, এক কারাবন্দিকে একদল প্রহরী এক বার মৃত ইঁদুর গিলে খেতে বাধ্য করে। ওই ব্যক্তি মৃত ইঁদুরটি খেয়ে মারা না গেলেও কয়েক মাস পর পাগল হয়ে যান।

১৫ ১৭
All need to know about Tadmor Prison, known to be one of the dangerous prisons of world

বইয়ে আরও লেখা হয়েছে, এক বয়স্ক বন্দিকে এক বার মাটিতে শুইয়ে সারা দিন ধরে এক জন উচ্চপদস্থ কারাকর্তার বুট চাটতে বলা হয়েছিল। নিয়মিত বেত্রাঘাত ছিল সাধারণ ব্যাপার। বন্দিদের একই জায়গায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে বাধ্য করা হত। মৃত্যুই ছিল একমাত্র মুক্তি।

১৬ ১৭
All need to know about Tadmor Prison, known to be one of the dangerous prisons of world

ফারাজ়ের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর স্মৃতি এক বন্দিকে ‘মানব ট্রামপোলিন’ হিসাবে ব্যবহার করা। ওই বন্দিকে মাটিতে শুইয়ে প্রহরীরা তাঁর উপর দাঁড়িয়ে লাফিয়েছিলেন। ওই বন্দি ঘাড় এবং মেরুদণ্ড ভেঙে মারা যাওয়া অবধি সেই প্রক্রিয়া চলেছিল।

১৭ ১৭
All need to know about Tadmor Prison, known to be one of the dangerous prisons of world

২০১৫ সালে ইসলামিক স্টেট (আইসিস) এই কারাগারটি দখল করে নেয়। এর পর কারাগারটির ভিতরের চিত্র প্রকাশ্যে আসে। অধিগ্রহণের ন’দিন পরে সেই কারাগার বোমা মেরে উড়িয়ে দেয় আইসিস।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy