All you need to know about bollywood actor Pavan Malhotra dgtl
Pavan Malhotra
ধর্ষণের দৃশ্যে অভিনয় করেই জনপ্রিয়, এখন কী করছেন ‘মিলখা’র কোচ?
মুম্বইয়ে ১৫ দিনের জন্য ‘গান্ধী’ ছবির শুটিং চলেছিল। দিনপ্রতি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা পেতেন পবন মলহোত্র।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৮:০০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২০
২৫ বছর সময় কাটিয়ে ফেলেছেন বলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে। থিয়েটার, হিন্দি ধারাবাহিক এবং দক্ষিণী ছবিতেও অভিনয় করেছেন। ‘পরদেশ’, ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’, ‘জব উই মেট’, ‘ভাগ মিলখা ভাগ’-এর মতো ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। কিন্তু বলিপাড়ায় কখনও নিজের জায়গা গড়ে তুলতে পারেনি পবন মলহোত্র।
ছবি: সংগৃহীত
০২২০
লাহোরে দেশের বাড়ি ছিল পবনের। দেশভাগের সময় পবনের বাবা-মা লাহোর ছেড়ে দিল্লিতে চলে আসেন। ১৯৫৮ সালে দিল্লিতে জন্ম হয় তাঁর। তিন ভাই এবং দুই বোনের মধ্যে পবনই ছিলেন সবচেয়ে ছোট। শৈশব থেকেই আদরে বড় হয়েছেন তিনি।
ছবি: সংগৃহীত
০৩২০
দিল্লিতে স্কুলের পড়াশোনা শেষ করে কলেজে ভর্তি হন পবন। সেনাবাহিনীতে যোগদান করবেন বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু কলেজে পড়ার সময় তাঁর জীবন অন্য দিকে মোড় নেয়। মুম্বই থেকে তাঁর বন্ধু পবনের সঙ্গে দেখা করতে আসেন এবং তাঁকে একটি নাটকে অভিনয় করার প্রস্তাব দেন।
ছবি: সংগৃহীত
০৪২০
পবনের বন্ধু জানান যে, নাটকে যাঁর অভিনয় করার কথা ছিল, তিনি আসতে পারবেন না। পবন তাঁর প্রস্তাবে রাজি না হলে নাটকের সম্পূর্ণ দলই সমস্যায় পড়বে। শুরুর দিকে আপত্তি জানালেও পরে বন্ধুর প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান তিনি। পবন ভেবেছিলেন যে, জন্মাষ্টমী উপলক্ষে কোনও ছোট মঞ্চে নাটক পরিবেশন করা হবে। কিন্তু পরে তিনি জানতে পারেন, একটি বড় মঞ্চে ‘তুঘলক’ নাটকের একটি চরিত্রের জন্য অভিনয় করতে হবে তাঁকে।
ছবি: সংগৃহীত
০৫২০
থিয়েটার জগতের সঙ্গে কোনও পরিচিতি ছিল না পবনের। ‘তুঘলক’ করার সময় থিয়েটারের প্রথম অভিজ্ঞতা হল তাঁর। প্রথম শোয়ের পর যখন পবন মঞ্চের পিছনে গিয়েছিলেন, তখন থিয়েটার দলের সকলেই তাঁর অভিনয়ের প্রশংসা করলেন।
ছবি: সংগৃহীত
০৬২০
পরে ‘রুচিকা’ থিয়েটার দলের সদস্য হিসাবে যুক্ত হন পবন। কিন্তু হিন্দি মিডিয়াম স্কুল থেকে পড়াশোনা করে আসা পবন থিয়েটার দলে যুক্ত হওয়ার পর সমস্যায় পড়লেন। দলের সকলে ইংরেজি ভাষায় কথা বলতেন। হিন্দি ভাষায় যত সহজে কথা বলতে পারতেন, ইংরেজি ভাষায় ততটা দক্ষ ছিলেন না পবন। কিন্তু তিনি এত ভাল অভিনয় করতেন যে, দলের সকলেই তাঁকে খুব ভালবাসতেন।
ছবি: সংগৃহীত
০৭২০
কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি বহু নাটকে অভিনয় করেছিলেন পবন। কিন্তু কলেজে পড়াশোনা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর বাবা পারিবারিক ব্যবসা সামলানোর নির্দেশ দেন পবনকে। বাবার কথামতো বাড়িতে ফিরে ব্যবসার কাজে হাত লাগান তিনি। কিন্তু তাঁর মন পড়েছিল অভিনয়ে ।
ছবি: সংগৃহীত
০৮২০
এক দিন হঠাৎ পবনের এক বন্ধু তাঁর সঙ্গে দোকানে দেখা করতে আসেন। পবনের বন্ধু জানান, ‘গান্ধী’ নামের একটি ছবির কাজ শুরু হতে চলেছে মুম্বইয়ে। ‘ওয়ার্ড্রোব অ্যাসিস্ট্যান্ট’ হিসাবে কাজ করার জন্য পবনকে প্রস্তাব দেন তিনি। পবনও চাইছিলেন অন্তত এক বারের জন্য মুম্বই যেতে।
ছবি: সংগৃহীত
০৯২০
পবন তাঁর বাবাকে জানালেন, এই শেষ বারের মতো মুম্বইয়ে কাজ করতে যাবেন তিনি। কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর বাড়ি ফিরে এসে ব্যবসাতেই মন দেবেন। মুম্বইয়ে ১৫ দিনের জন্য ‘গান্ধী’ ছবির শুটিং চলেছিল। দিনপ্রতি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা পেতেন তিনি। তবে, শুটিং শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও বাড়ি ফেরেননি তিনি। তিন মাস মুম্বইয়েই ছিলেন পবন।
ছবি: সংগৃহীত
১০২০
১৯৮৩ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘জানে ভি দো ইয়ারো’। এই ছবিতে সহকারী হিসাবে কাজ করেছিলেন পবন। রোজগার করতে শুরু করলেও মুম্বইয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই ছিল না তাঁর।
ছবি: সংগৃহীত
১১২০
বলি পরিচালক সুধীর মিশ্রের কাছে গিয়ে নিজের সমস্যার কথা জানান পবন। সুধীর বলেন, ‘‘তোমার খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা আমি করে দেব। আমি তোমার খাবার নিয়ে আসব।’’ অন্য দিকে সুধীর তাঁর সহকর্মীর ফ্ল্যাটে পবনের থাকার ব্যবস্থা করে দিলেন।
ছবি: সংগৃহীত
১২২০
পবন যে ফ্ল্যাটে থাকতেন, সেখানে ডেভিড ধাওয়ান, অলোকনাথ, রাকেশ বেদীর মতো বলিপাড়ার তারকারা থাকতেন। তাঁরা সকলেই লড়াই করে বলিউডে নিজেদের জায়গা গড়ে তোলার চেষ্টা করছিলেন। পরবর্তী কালে ‘ইয়ে জো হ্যায় জ়িন্দেগি’ ধারাবাহিকে কাজ করার সুযোগ পেলেও এর পর বেকার হয়ে বসেছিলেন তিনি।
ছবি: সংগৃহীত
১৩২০
টাকা রোজগার করার কোনও রাস্তা ছিল না পবনের। কোনও উপায় না দেখে তিনি বেকারির দোকানের অবশিষ্ট পাউরুটি বিক্রি করতেন। এমনকি, অর্থের জন্য গরুকে খাওয়ানোর কাজও করেছিলেন তিনি। তবে ভাগ্যের চাকা ঘুরেছিল পবনের।
ছবি: সংগৃহীত
১৪২০
‘নুক্কর’ নামে একটি নাটকে ‘হরি’ চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল পবনকে। সম্পূর্ণ নাটক জুড়ে তাঁকে শুধু দাঁড়িয়ে থাকতে হত। কোনও সংলাপ ছিল না পবনের মুখে। কিন্তু এই চরিত্রে অভিনয় করেই প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি। যেখানে ‘নুক্কর’ নাটকের দু’তিনটি শো মঞ্চস্থ হওয়ার কথা ছিল, সেখানে ১৩ বার মঞ্চস্থ হল নাটকটি। থিয়েটারপাড়ায় বেশ নামডাক হতে থাকল পবনর। তাঁর বাবাও পুত্রের এই জনপ্রিয়তা দেখে খুশি হয়েছিলেন।
ছবি: সংগৃহীত
১৫২০
‘বাঘ বাহাদুর’ নামে একটি নাটকে বাঘের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন পবন। নাটক শুরু হওয়ার প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা আগে থেকে সারা শরীরে পেন্ট লাগানো শুরু করতেন তিনি। নাটক শেষ হওয়ার পর কেরোসিন দিয়ে ওই রং তুলতে হত।
ছবি: সংগৃহীত
১৬২০
পবন খোঁজ পেয়েছিলেন যে, যশ চোপড়া ‘মশাল’ নামের একটি ছবির জন্য নতুন মুখ খুঁজছেন। শোনামাত্রই যশের সঙ্গে দেখা করতে যান পবন। পবনকে দশ দিন পর দেখা করতে আসতে বলেন যশ। দশ দিন পর এলেও তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন যশ। তাঁকে জানান যে, তিনি যেন আরও ১ দিন পর দেখা করতে আসেন।
ছবি: সংগৃহীত
১৭২০
১ দিন পর আবার যশের সঙ্গে দেখা করতে যান পবন। সেখানে গিয়ে দেখেন, অডিশন দেওয়ার জন্য আরও ১০০ জন অপেক্ষা করে রয়েছেন। যশের সঙ্গে দেখা করতে চাওয়ায় ‘মশাল’ ছবির এক কাস্টিং ডিরেক্টর পবনের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। সেখান থেকে ফিরে আসেন পবন। কিন্তু কালের নিয়মে যশরাজ ফিল্মসের সঙ্গেই কাজ করার সুযোগ পান তিনি। ‘বদমাশ কোম্পানি’ ছবিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন পবন।
ছবি: সংগৃহীত
১৮২০
সুভাষ ঘাইয়ের সঙ্গেও প্রথম আলাপ সুখকর ছিল না পবনের। ‘বাঘ বাহাদুর’ নাটকে তাঁর অভিনয়ের একটি অংশ দেখাতে চাইছিলেন সুভাষকে। কিন্তু সুভাষ কোনও আগ্রহ দেখাননি। ১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পরদেশ’ ছবিতে পবনকে অভিনয় করতে দেখা যায়। এই ছবির পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন সুভাষ।
ছবি: সংগৃহীত
১৯২০
হিন্দি ধারাবাহিক-সহ ৪-৫টি দক্ষিণী ছবিতে অভিনয় করেছিলেন পবন। এমনকি, ‘চিলড্রেন অব ওয়ার’ নামে একটি ইংরেজি ছবিতেও কাজ করেছিলেন তিনি। রাইমা সেনের বিপরীতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। ওই ছবিতে থাকা একটি ধর্ষণের দৃশ্যে অভিনয় করে দর্শকের মন জিতে নিয়েছিলেন পবন।
ছবি: সংগৃহীত
২০২০
‘পরদেশ’, ‘জব উই মেট’, ‘বদমাশ কোম্পানি’, ‘ভাগ মিলখা ভাগ’, ‘জুড়ওয়া ২’ ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করলেও কখনও বলিপাড়ায় প্রশংসা পাননি তিনি। পবনের দাবি, বলিউড ইন্ডাস্ট্রি তাঁর অভিনয়ের কদর করেনি। তাই এখনও পার্শ্বচরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পান তিনি।