এর পরই শ্রীলঙ্কার তৎকালীন রনিল বিক্রমাসিঙ্ঘের সরকার দেশের অর্থনৈতিক ভান্ডারে বৈদেশিক মুদ্রা বৃদ্ধি করার তাগিদে এই বন্দর বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত নেয়। চিনের এক সংস্থাকে ১১২ কোটি ডলারের বিনিময়ে বন্দরটি লিজ় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় শ্রীলঙ্কা। পাশাপাশি চুক্তি করা হয়, বন্দরটিকে ঢেলে সাজাতে এবং অত্যাধুনিক বানাতেও বিনিয়োগ করবে ওই চিনা সংস্থা।
কিন্তু এই যুক্তি মানতে রাজি হয়নি দিল্লি। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের মতে, চিনের স্বার্থে হাত পড়লে তারা হামবানটোটায় নৌসেনা মোতায়েন করতেই পারে। এই বন্দর চিনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান করিডর’ প্রকল্পেরই অঙ্গ। গোড়া থেকেই যে প্রকল্পের বিরোধিতা করছে ভারত। ভারতকে চারদিক থেকে ঘিরতে বেজিংয়ের কাছে শ্রীলঙ্কার এই বন্দর বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে বলেও দাবি করে নয়াদিল্লি। চিনের সঙ্গে চুক্তির কারণে ভারত এবং শ্রীলঙ্কার সম্পর্কের সমীকরণেও চিড় ধরে।
শ্রীলঙ্কা প্রশাসন জানায়, তারা চিনা জাহাজকে হামবানটোটা বন্দরে ঠাঁই দেওয়া হবে না। এই নিয়ে একপ্রস্ত জলঘোলা হয়। বিশেষজ্ঞদের একাংশ তখন বলেছিলেন, ভারতের চাপের মুখেই চিনা নজরদার জাহাজটিকে তাদের বন্দর ব্যবহার করার অনুমতি দিতে চাইছে না শ্রীলঙ্কা। পরে অবশ্য শ্রীলঙ্কার তরফে এই বিষয়ে অনুমতি দেওয়া হয়। ১৬ অগস্ট হামবানটোটা বন্দরে ঢোকে ইউয়ান ওয়াং ৫।
তবে এর পর থেকে পরিস্থিতি অনেক বদলেছে। অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে পড়ে প্রায় দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার বিদেশি মুদ্রার ভাঁড়ারও প্রায় শূন্য। শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষের আমলে চিনের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ নেওয়া হয়েছে। চিনের ঋণের জালেই দ্বীপরাষ্ট্রটি অর্থনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে বলে মনে করেন সে দেশের বাসিন্দারাই। তাই শ্রীলঙ্কায় চিনের প্রভাব নিয়ে বহু বার ক্ষোভ প্রকাশ করতেও দেখা গিয়েছে শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষকে।
শ্রীলঙ্কা অর্থনৈতিক ভাবে দুঃস্থ হয়ে যাওয়ার পর সে দেশের পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। ফলে শ্রীলঙ্কা এবং ভারতের সম্পর্ক এখন অনেকটাই পোক্ত বলে মনে করছেন কূটনীতিবিদরা। সম্পর্কের সাময়িক শীতলতা কাটিয়ে উষ্ণ হয়েছে দুই প্রতিবেশীর সম্পর্ক। এই সম্পর্ক হাম্বানটোটা তথা সারা শ্রীলঙ্কার উপর চিনের প্রভাব কমাতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy