Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Norflok Island

রয়েছে হাঙরের উপদ্রব, প্রত্যন্ত দ্বীপে বন্দি রাখা হত কঠিন সাজাপ্রাপ্ত অপরাধীদের

নিউ জ়িল্যান্ড এবং নিউ ক্যালেডোনিয়ার মাঝখানে রয়েছে নরফ্লক দ্বীপ। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের উপর অবস্থিত এই ছোট দ্বীপটি অস্ট্রেলিয়ার শাসনাধীন।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০২৪ ১৫:৫৪
Share: Save:
০১ ১৬
আট কিলোমিটার দীর্ঘ এবং পাঁচ কিলোমিটার চওড়া। মাত্র ৩৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে তৈরি নরফ্লক দ্বীপ। এই ক্ষুদ্র দ্বীপে বাস করেন দু’হাজারেরও বেশি মানুষ। কোথায় রয়েছে এই দ্বীপ?

আট কিলোমিটার দীর্ঘ এবং পাঁচ কিলোমিটার চওড়া। মাত্র ৩৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে তৈরি নরফ্লক দ্বীপ। এই ক্ষুদ্র দ্বীপে বাস করেন দু’হাজারেরও বেশি মানুষ। কোথায় রয়েছে এই দ্বীপ?

০২ ১৬
নিউ জ়িল্যান্ড এবং নিউ ক্যালেডোনিয়ার মাঝখানে রয়েছে নরফ্লক দ্বীপ। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের উপর অবস্থিত এই ছোট দ্বীপটি অস্ট্রেলিয়ার শাসনাধীন।

নিউ জ়িল্যান্ড এবং নিউ ক্যালেডোনিয়ার মাঝখানে রয়েছে নরফ্লক দ্বীপ। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের উপর অবস্থিত এই ছোট দ্বীপটি অস্ট্রেলিয়ার শাসনাধীন।

০৩ ১৬
নরফ্লক দ্বীপের কাছেই অবস্থিত পিটকায়ের্ন দ্বীপ। সেই দ্বীপের বহু বাসিন্দা পাকাপাকি ভাবে থাকতে নরফ্লক দ্বীপে গিয়ে আস্তানা গড়েছিলেন। শোনা যায়, পিটকায়ের্ন দ্বীপে খাবারের অভাব দেখা দেওয়ায় নরফ্লক দ্বীপে চলে যান তাঁরা।

নরফ্লক দ্বীপের কাছেই অবস্থিত পিটকায়ের্ন দ্বীপ। সেই দ্বীপের বহু বাসিন্দা পাকাপাকি ভাবে থাকতে নরফ্লক দ্বীপে গিয়ে আস্তানা গড়েছিলেন। শোনা যায়, পিটকায়ের্ন দ্বীপে খাবারের অভাব দেখা দেওয়ায় নরফ্লক দ্বীপে চলে যান তাঁরা।

০৪ ১৬
নরফ্লক দ্বীপটি প্রথম নজরে পড়ে জেমস কুকের। ১৭৭৪ সালে ১০ অক্টোবর প্রশান্ত মহাসাগরে দ্বিতীয় বার পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। তখন আবিষ্কার করেন এই দ্বীপ।

নরফ্লক দ্বীপটি প্রথম নজরে পড়ে জেমস কুকের। ১৭৭৪ সালে ১০ অক্টোবর প্রশান্ত মহাসাগরে দ্বিতীয় বার পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি। তখন আবিষ্কার করেন এই দ্বীপ।

০৫ ১৬
১৭৭৫ সালে আমেরিকায় যুদ্ধ চলাকালীন সেখানকার জেলে বন্দিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। ব্রিটেনের সমস্ত কারাগারে বন্দিদের সংখ্যা উপচে পড়লে বাইরের প্রত্যন্ত দ্বীপে সাজাপ্রাপ্তদের পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

১৭৭৫ সালে আমেরিকায় যুদ্ধ চলাকালীন সেখানকার জেলে বন্দিদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। ব্রিটেনের সমস্ত কারাগারে বন্দিদের সংখ্যা উপচে পড়লে বাইরের প্রত্যন্ত দ্বীপে সাজাপ্রাপ্তদের পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

০৬ ১৬
ব্রিটেনের নানা প্রান্ত থেকে বন্দিদের পাঠানো হত নরফ্লক দ্বীপে। বন্দিদের জন্য আলাদা ভাবে তৈরি করা হয় কারাগারও। কিন্তু প্রত্যন্ত দ্বীপে যাতায়াতের সময় এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহের কারণে প্রচুর পরিমাণে অর্থ এবং সময় ব্যয় হয়।

ব্রিটেনের নানা প্রান্ত থেকে বন্দিদের পাঠানো হত নরফ্লক দ্বীপে। বন্দিদের জন্য আলাদা ভাবে তৈরি করা হয় কারাগারও। কিন্তু প্রত্যন্ত দ্বীপে যাতায়াতের সময় এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরবরাহের কারণে প্রচুর পরিমাণে অর্থ এবং সময় ব্যয় হয়।

০৭ ১৬
১৮০৮ সাল পর্যন্ত নরফ্লক দ্বীপে মাত্র ২০০ জন বন্দি ছিলেন। তার পর ১৮১৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত তাঁদেরকেও সরিয়ে নেওয়া হয়। দ্বীপটি আবার জনবসতিশূন্য হয়ে পড়ে।

১৮০৮ সাল পর্যন্ত নরফ্লক দ্বীপে মাত্র ২০০ জন বন্দি ছিলেন। তার পর ১৮১৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮২৫ সালের জুন মাস পর্যন্ত তাঁদেরকেও সরিয়ে নেওয়া হয়। দ্বীপটি আবার জনবসতিশূন্য হয়ে পড়ে।

০৮ ১৬
অস্ট্রেলিয়া থেকে নরফ্লক দ্বীপে আবার বন্দিদের পাঠানো শুরু হতে থাকে। তবে এ বার কিছু বিশেষ শর্ত রাখা হয়। নরফ্লক দ্বীপে বন্দি হতে পারেন শুধুমাত্র পুরুষ অপরাধীরাই। তবে সাজা হিসাবে যাঁরা মৃত্যুদণ্ড অথবা আজীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ পেয়েছেন তাঁরাই একমাত্র নরফ্লক দ্বীপের কারাগারে বন্দিদশা কাটাতে পারেন।

অস্ট্রেলিয়া থেকে নরফ্লক দ্বীপে আবার বন্দিদের পাঠানো শুরু হতে থাকে। তবে এ বার কিছু বিশেষ শর্ত রাখা হয়। নরফ্লক দ্বীপে বন্দি হতে পারেন শুধুমাত্র পুরুষ অপরাধীরাই। তবে সাজা হিসাবে যাঁরা মৃত্যুদণ্ড অথবা আজীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ পেয়েছেন তাঁরাই একমাত্র নরফ্লক দ্বীপের কারাগারে বন্দিদশা কাটাতে পারেন।

০৯ ১৬
২০১১ সালের তথ্যানুযায়ী প্রকাশ্যে আসে, ১৮২৫ সালের পর নরফ্লক দ্বীপে যে ৬,৪৫৮ জন বন্দি ছিলেন তাঁদের মধ্যে মাত্র ১৫ শতাংশ মৃত্যুদণ্ডের সাজা পেয়েছেন। এমনকি তিন বছরের সর্বাধিক কারাদণ্ডের নির্দেশ পাওয়া অপরাধীদের পাঠানো হয়েছে সেখানে। পরিস্থিতি নজরে এলে ১৮৫৫ সালের মে মাসের মধ্যে সকল বন্দিদের তাসমানিয়ার কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নরফ্লক দ্বীপ পুনরায় হয়ে পড়ে বন্দিশূন্য।

২০১১ সালের তথ্যানুযায়ী প্রকাশ্যে আসে, ১৮২৫ সালের পর নরফ্লক দ্বীপে যে ৬,৪৫৮ জন বন্দি ছিলেন তাঁদের মধ্যে মাত্র ১৫ শতাংশ মৃত্যুদণ্ডের সাজা পেয়েছেন। এমনকি তিন বছরের সর্বাধিক কারাদণ্ডের নির্দেশ পাওয়া অপরাধীদের পাঠানো হয়েছে সেখানে। পরিস্থিতি নজরে এলে ১৮৫৫ সালের মে মাসের মধ্যে সকল বন্দিদের তাসমানিয়ার কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। নরফ্লক দ্বীপ পুনরায় হয়ে পড়ে বন্দিশূন্য।

১০ ১৬
১৮৫৬ সালে পিটকায়ের্ন দ্বীপের ১৯৪ জন অধিবাসী নরফ্লক দ্বীপে পৌঁছন। সেখানে চাষবাস এবং তিমি মাছ শিকার করে জীবন যাপন করতে শুরু করেন তাঁরা। অনেক সময় মাছ ধরার জাহাজ এই দ্বীপে নোঙর করা হত। সেখানে কাজ করে নরফ্লক দ্বীপবাসীরা অর্থ উপার্জনও করতেন।

১৮৫৬ সালে পিটকায়ের্ন দ্বীপের ১৯৪ জন অধিবাসী নরফ্লক দ্বীপে পৌঁছন। সেখানে চাষবাস এবং তিমি মাছ শিকার করে জীবন যাপন করতে শুরু করেন তাঁরা। অনেক সময় মাছ ধরার জাহাজ এই দ্বীপে নোঙর করা হত। সেখানে কাজ করে নরফ্লক দ্বীপবাসীরা অর্থ উপার্জনও করতেন।

১১ ১৬
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নরফ্লক দ্বীপে যুদ্ধবিমান অবতরণের জন্য একটি এয়ারস্ট্রিপ তৈরি করা হয়। অস্ট্রেলিয়া, নিউ জ়িল্যান্ড এবং সোলোমন দ্বীপপুঞ্জের প্রায় সমস্ত যুদ্ধবিমানকে জ্বালানি ভরার জন্য এই দ্বীপে নামানো হত।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নরফ্লক দ্বীপে যুদ্ধবিমান অবতরণের জন্য একটি এয়ারস্ট্রিপ তৈরি করা হয়। অস্ট্রেলিয়া, নিউ জ়িল্যান্ড এবং সোলোমন দ্বীপপুঞ্জের প্রায় সমস্ত যুদ্ধবিমানকে জ্বালানি ভরার জন্য এই দ্বীপে নামানো হত।

১২ ১৬
সারা বিশ্বে নরফ্লক দ্বীপেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পাওয়া যায় টাইগার শার্ক প্রজাতির হাঙর। হাঙরের আক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে দ্বীপের বাসিন্দারা বেশি বয়সি গৃহপালিত পশুদের হত্যা করে তাদের মাংস সমুদ্রের জলে ফেলে দিতে শুরু করেন।

সারা বিশ্বে নরফ্লক দ্বীপেই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক পাওয়া যায় টাইগার শার্ক প্রজাতির হাঙর। হাঙরের আক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে দ্বীপের বাসিন্দারা বেশি বয়সি গৃহপালিত পশুদের হত্যা করে তাদের মাংস সমুদ্রের জলে ফেলে দিতে শুরু করেন।

১৩ ১৬
নরফ্লক দ্বীপের অধিবাসীদের ধারণা, পশুর মাংস খেলে আর তাঁদের আক্রমণ করবে না হাঙরগুলি। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার তরফে পশুহত্যা নিষিদ্ধ করে দেওয়ার ফলে নাকি ভয় ঘিরে ধরেছে দ্বীপের অধিবাসীদের। তাঁদের মতে, পশুর মাংস খেতে না পেলে তাঁদের উপরেই আক্রম করবে হাঙরগুলি।

নরফ্লক দ্বীপের অধিবাসীদের ধারণা, পশুর মাংস খেলে আর তাঁদের আক্রমণ করবে না হাঙরগুলি। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার তরফে পশুহত্যা নিষিদ্ধ করে দেওয়ার ফলে নাকি ভয় ঘিরে ধরেছে দ্বীপের অধিবাসীদের। তাঁদের মতে, পশুর মাংস খেতে না পেলে তাঁদের উপরেই আক্রম করবে হাঙরগুলি।

১৪ ১৬
নরফ্লক দ্বীপে রয়েছে একটি জাতীয় উদ্যান। সাধারণত এই দ্বীপে এপ্রিল থেকে অগস্ট মাস পর্যন্ত বৃষ্টি হয়। এই দ্বীপের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কখনও ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কখনও ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে পৌঁছয়নি।

নরফ্লক দ্বীপে রয়েছে একটি জাতীয় উদ্যান। সাধারণত এই দ্বীপে এপ্রিল থেকে অগস্ট মাস পর্যন্ত বৃষ্টি হয়। এই দ্বীপের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কখনও ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নীচে এবং সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কখনও ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে পৌঁছয়নি।

১৫ ১৬
২০০১ সালে নরফ্লক দ্বীপের জনসংখ্যা ২,৬০১ হলেও ২০২১ সালের জনগণনা অনুসারে এই দ্বীপে ২,১৮৮ জন বাস করেন।

২০০১ সালে নরফ্লক দ্বীপের জনসংখ্যা ২,৬০১ হলেও ২০২১ সালের জনগণনা অনুসারে এই দ্বীপে ২,১৮৮ জন বাস করেন।

১৬ ১৬
নরফ্লক দ্বীপে গলফ খেলার জন্য আলাদা ভাবে তৈরি করা হয়েছে গলফ কোর্স। এই দ্বীপের নাম ইউনেসকো ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’-এর তালিকায়ও রয়েছে।

নরফ্লক দ্বীপে গলফ খেলার জন্য আলাদা ভাবে তৈরি করা হয়েছে গলফ কোর্স। এই দ্বীপের নাম ইউনেসকো ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’-এর তালিকায়ও রয়েছে।

সকল ছবি সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE