Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Crocodile

Crocodile Tears: কুমির কি সত্যিই কাঁদে? মেরে খাওয়ার অনুশোচনাই কি কারণ!

কুমির কি সত্যিই খাওয়ার সময় কাঁদে? মানুষ বা পশুর মাংস খাওয়ার সময় অনুশোচনা থেকেই কি কান্না? নাকি অন্য কোনও কারণ?

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২২ ১৬:৩৩
Share: Save:
০১ ১৪
কুমির কি খেতে খেতে কাঁদে? বিষয়টি প্রথম চোখে পড়েছিল জন ম্যান্ডেভিলের। আজ থেকে প্রায় ৯০০ বছর আগে। সে কথা নিজের ভ্রমণ বিবরণীতে লিখে রেখে গিয়েছিলেন ওই পর্যটক।

কুমির কি খেতে খেতে কাঁদে? বিষয়টি প্রথম চোখে পড়েছিল জন ম্যান্ডেভিলের। আজ থেকে প্রায় ৯০০ বছর আগে। সে কথা নিজের ভ্রমণ বিবরণীতে লিখে রেখে গিয়েছিলেন ওই পর্যটক।

০২ ১৪
ম্যান্ডেভিলের পরিচয় ভাল ভাবে জানা যায় না। বই পড়ে শুধু জানা যায়, অদ্ভুত সব জায়গায় বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি।

ম্যান্ডেভিলের পরিচয় ভাল ভাবে জানা যায় না। বই পড়ে শুধু জানা যায়, অদ্ভুত সব জায়গায় বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি।

০৩ ১৪
ম্যান্ডেভিলের বইটির নাম ‘দ্য ভয়েজ অ্যান্ড ট্র্যাভেল অফ স্যর জন ম্যান্ডেভিল’। ফরাসি ভাষায় সেটি প্রথম বার প্রকাশিত হয়েছিল ১৩৫৬-৫৭ সালে। ইংরেজি ভাষায় বইটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৩৭৫ সালে। সেই বইয়ের এক জায়গায় লেখা হয়েছিল, ‘ওই দেশে রয়েছে অনেক কুমির। সেগুলি মানুষ ধরে আর কাঁদতে কাঁদতে খেয়ে ফেলে।’

ম্যান্ডেভিলের বইটির নাম ‘দ্য ভয়েজ অ্যান্ড ট্র্যাভেল অফ স্যর জন ম্যান্ডেভিল’। ফরাসি ভাষায় সেটি প্রথম বার প্রকাশিত হয়েছিল ১৩৫৬-৫৭ সালে। ইংরেজি ভাষায় বইটি প্রকাশিত হয়েছিল ১৩৭৫ সালে। সেই বইয়ের এক জায়গায় লেখা হয়েছিল, ‘ওই দেশে রয়েছে অনেক কুমির। সেগুলি মানুষ ধরে আর কাঁদতে কাঁদতে খেয়ে ফেলে।’

০৪ ১৪
ম্যান্ডেভিলের মতোই গ্রিক দার্শনিক প্লুটার্কেরও কুমিরের কান্না চোখে পড়েছিল। সেই প্রথম-দ্বিতীয় শতাব্দীতে। নিজের বইয়ে তিনি লিখেছিলেন, মানুষ খাওয়ার সময় চোখ দিয়ে জল পড়ে কুমিরের।

ম্যান্ডেভিলের মতোই গ্রিক দার্শনিক প্লুটার্কেরও কুমিরের কান্না চোখে পড়েছিল। সেই প্রথম-দ্বিতীয় শতাব্দীতে। নিজের বইয়ে তিনি লিখেছিলেন, মানুষ খাওয়ার সময় চোখ দিয়ে জল পড়ে কুমিরের।

০৫ ১৪
পরে উইলিয়াম শেক্সপিয়ারও নিজের বেশ কিছু লেখায় এর উল্লেখ করেন।

পরে উইলিয়াম শেক্সপিয়ারও নিজের বেশ কিছু লেখায় এর উল্লেখ করেন।

০৬ ১৪
এমনিতে কুমিরের কান্না খুব একটা ভাল চোখে দেখা হয় না। মন থেকে নয়, দেখানোর জন্য যে শোক, তার সঙ্গে তুলনা করা হয় কুমিরের কান্নার। রাজনীতিকদের কটাক্ষ করে প্রায়ই ব্যবহার করা হয় এই শব্দবন্ধ।

এমনিতে কুমিরের কান্না খুব একটা ভাল চোখে দেখা হয় না। মন থেকে নয়, দেখানোর জন্য যে শোক, তার সঙ্গে তুলনা করা হয় কুমিরের কান্নার। রাজনীতিকদের কটাক্ষ করে প্রায়ই ব্যবহার করা হয় এই শব্দবন্ধ।

০৭ ১৪
তা হলে কি সত্যিই কাঁদে কুমির? অষ্টাদশ শতকে সুইৎজারল্যান্ডের বিজ্ঞানী জোহান জেকব সিদ্ধান্তে পৌঁছন, মাংস খাওয়ার সময় কুমির মোটেও কাঁদে না।

তা হলে কি সত্যিই কাঁদে কুমির? অষ্টাদশ শতকে সুইৎজারল্যান্ডের বিজ্ঞানী জোহান জেকব সিদ্ধান্তে পৌঁছন, মাংস খাওয়ার সময় কুমির মোটেও কাঁদে না।

০৮ ১৪
তার ২০০ বছর পর আরও এক বিজ্ঞানী জর্জ জনসন কুমিরের উপর একটি পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। কুমিরের চোখে নুন এবং পেঁয়াজ ঘষে দিয়েছিলেন। দেখা যায়, তার পরেও চোখ থেকে এক ফোঁটাও জল পড়েনি। তাঁর মতে, কুমিরের কান্না একটা ‘মিথ’। ১৯২৭ সালে এক বিজ্ঞান পত্রিকায় সেই বিষয়টি প্রকাশিত হয়।

তার ২০০ বছর পর আরও এক বিজ্ঞানী জর্জ জনসন কুমিরের উপর একটি পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। কুমিরের চোখে নুন এবং পেঁয়াজ ঘষে দিয়েছিলেন। দেখা যায়, তার পরেও চোখ থেকে এক ফোঁটাও জল পড়েনি। তাঁর মতে, কুমিরের কান্না একটা ‘মিথ’। ১৯২৭ সালে এক বিজ্ঞান পত্রিকায় সেই বিষয়টি প্রকাশিত হয়।

০৯ ১৪
২০০৬ সালে স্নায়ুবিদ ম্যালকম শেনার এবং প্রাণীবিদ কেন্ট এ ভ্লিয়েট আরও একটি পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। তিনটি আমেরিকান অ্যালিগেটর, দু’টি কেম্যান, দু’টি ইয়াকার কেম্যানকে অ্যালিগেটর পার্কের শুকনো জমির উপর খেতে দেওয়া হয়েছিল। আশপাশে কোনও জলাভূমি ছিল না। এরা সকলেই কুমিরের জাতভাই।

২০০৬ সালে স্নায়ুবিদ ম্যালকম শেনার এবং প্রাণীবিদ কেন্ট এ ভ্লিয়েট আরও একটি পরীক্ষা চালিয়েছিলেন। তিনটি আমেরিকান অ্যালিগেটর, দু’টি কেম্যান, দু’টি ইয়াকার কেম্যানকে অ্যালিগেটর পার্কের শুকনো জমির উপর খেতে দেওয়া হয়েছিল। আশপাশে কোনও জলাভূমি ছিল না। এরা সকলেই কুমিরের জাতভাই।

১০ ১৪
পরীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, একটি ইয়াকার কেম্যান এবং একটি সাধারণ কেম্যান ছাড়া খাওয়ার সময় বাকিদের চোখে জল। এমনকি খাওয়ার পরেও তাদের চোখে জল দেখা গিয়েছিল।

পরীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, একটি ইয়াকার কেম্যান এবং একটি সাধারণ কেম্যান ছাড়া খাওয়ার সময় বাকিদের চোখে জল। এমনকি খাওয়ার পরেও তাদের চোখে জল দেখা গিয়েছিল।

১১ ১৪
সেই পরীক্ষা থেকে শেনার এবং ভ্লিয়েট সিদ্ধান্তে পৌঁছন, খাওয়ার সময় কমবেশি সব কুমিরই কাঁদে।

সেই পরীক্ষা থেকে শেনার এবং ভ্লিয়েট সিদ্ধান্তে পৌঁছন, খাওয়ার সময় কমবেশি সব কুমিরই কাঁদে।

১২ ১৪
কিন্তু কেন কাঁদে? বিজ্ঞানী শেনার এবং ভ্লিয়েটের মতে, কুমির যখন চিবিয়ে খায়, তখন চোয়ালের ওঠা-নামার কারণে তার সাইনাসে হাওয়া ঢুকে যায়। এর ফলেই কুমিরের চোখের অশ্রুগ্রন্থি উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এর সঙ্গে আবেগ, শোক বা অনুশোচনার কোনও যোগ নেই।

কিন্তু কেন কাঁদে? বিজ্ঞানী শেনার এবং ভ্লিয়েটের মতে, কুমির যখন চিবিয়ে খায়, তখন চোয়ালের ওঠা-নামার কারণে তার সাইনাসে হাওয়া ঢুকে যায়। এর ফলেই কুমিরের চোখের অশ্রুগ্রন্থি উত্তেজিত হয়ে পড়ে। এর সঙ্গে আবেগ, শোক বা অনুশোচনার কোনও যোগ নেই।

১৩ ১৪
খাওয়ার সময় মানুষও কি কাঁদে? বিজ্ঞানীরা বলেন, কাঁদতেই পারে। অস্বাভাবিক কিছু নয়। একে বলে ‘ক্রোকোডাইল টিয়ার সিনড্রোম’। বেলস পালসি থেকে সেরে ওঠা রোগীদের ক্ষেত্রে এ রকম দেখা যায়।

খাওয়ার সময় মানুষও কি কাঁদে? বিজ্ঞানীরা বলেন, কাঁদতেই পারে। অস্বাভাবিক কিছু নয়। একে বলে ‘ক্রোকোডাইল টিয়ার সিনড্রোম’। বেলস পালসি থেকে সেরে ওঠা রোগীদের ক্ষেত্রে এ রকম দেখা যায়।

১৪ ১৪
বেলস পালসি কী? এই বিরল রোগে মানুষের মুখের পেশি দুর্বল হয়ে যায় বা পক্ষাঘাত হতে পারে। মুখের পেশিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে যে স্নায়ু, তা স্ফীত হলে বা চেপে গেলে এই অবস্থা দেখা যায়।

বেলস পালসি কী? এই বিরল রোগে মানুষের মুখের পেশি দুর্বল হয়ে যায় বা পক্ষাঘাত হতে পারে। মুখের পেশিগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে যে স্নায়ু, তা স্ফীত হলে বা চেপে গেলে এই অবস্থা দেখা যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE