প্রথম বিয়ের পর সমাজচ্যুত, পরে জনপ্রিয় টেলি অভিনেতাকে বিয়ে করে ঘোর সংসারী তনাজ

দীর্ঘ প্রেমপর্বের পরে বিয়ের কথা ভাবতে শুরু করেন দুই কুশীলব। কিন্তু তাঁদের বিয়ের পথে অনেক বাধা ছিল। বখতিয়ারের থেকে বয়সে ৮ বছরের বড় তনাজ। তার উপর তিনি ডিভোর্সি। ফলে তনাজকে পুত্রবধূ হিসেবে মেনে নিতে তীব্র আপত্তি ছিল বখতিয়ারের পরিবারে।

শেষে বখতিয়ারের বোন অভিনেত্রী দেলনাজ বোঝান বাবা মাকে। তার পর তাঁরা সম্মতি দেন। ২০০৭ সালে বিয়ে করেন তনাজ এবং বখতিয়ার। তখন তনাজের প্রথম পক্ষের মেয়ে জিয়ানের বয়স ১৩ বছর।

পার্সি রীতিনীতি মেনে বিয়ে হয় বখতিয়ার এবং তনাজের। ২০০৮ সালে জন্ম হয় তাঁদের ছেলে জিউস এবং ৩ বছর পরে পরিবারে আসে কন্যা জারা।

তনাজের দ্বিতীয় দাম্পত্যের টানাপড়েন নিয়ে অনেক কথা শোনা গিয়েছিল। কিন্তু সে সব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ব্যস্ত অভিনেত্রী। বরং জানিয়েছেন, দ্বিতীয় বিয়ে তাঁর মধ্যে অনেক পরিবর্তন এনেছে। আগে তিনি রুক্ষ ছিলেন। এখন অনেক পরিণত এবং আবেগপ্রবণ।

দুই সন্তানের পাশাপাশি তাঁরা একে অন্যের বৃহত্তর পরিবারের সদস্যদের ব্যাপারেও নিয়মিত খোঁজখবর নেন বলে জানিয়েছেন তনাজ। এই খুঁটিনাটি দিকগুলি তাঁদের সম্পর্কের বন্ধনকে আরও দৃঢ় করেছে বলে মনে করেন তনাজ।

পরিবার অন্ত প্রাণ তনাজ সমান সক্রিয় কেরিয়ার নিয়েও। ২০০২ সালে মিসেস ইন্ডিয়ার চূড়ান্ত পর্বের এক জন প্রতিযোগিনী ছিলেন তিনি। নয়ের দশকে ‘জবান সামহাল কে’, ‘স্বাভিমান’-এর মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিকে তিনি ছিলেন অন্যতম মুখ।

কেরিয়ারের সূত্রপাতে জনপ্রিয়তার পরে আর ফিরে তাকাতে হয়নি তনাজকে। ‘শ্রী’, ‘মিলে জব হাম তুম’, ‘শশসসস…কোই হ্যায়’, ‘বড়ি দূর সে আয়ে হ্যায়’, ‘কহাঁ হম কহাঁ তুম’-সহ বহু ধারাবাহিকে তাঁর অভিনয় মনে রেখেছেন টেলি দর্শক।

তনাজ সেই সব অভিনেত্রীদের মধ্যে পড়েন যাঁরা টেলিভিশন থেকে সিনেমায় এসেও সমাদৃত হয়েছেন। ২০০০ সালে তিনি প্রথম অভিনয় করেন ‘হদ কর দি অপনে’-তে। সে বছরই মুক্তি পায় তাঁর আরও দু’টি ছবি। ‘হমারা দিল আপকে পাস হ্যায়’ এবং সুপারহিট ‘কহো না প্যায়ার হ্যায়’।

সিনেমায় নায়ক-নায়িকাদের পাশাপাশি সব সময় নজর টেনেছে পার্শ্বচরিত্রে তনাজের উজ্জ্বল উপস্থিতি। তাঁর ফিল্মোগ্রাফিতে উল্লেখযোগ্য হল ‘রেহনা হ্যায় কেরে দিল মেঁ’, ‘মেরে ইয়ার কি শাদি’, ‘দিওয়ানগি’, ‘ম্যায়ঁ প্রেম কি দিওয়ানি হুঁ’, ‘কুছ না কহো’, ’৩৬ চায়না টাউন’, ‘রোডসাইড রোমিয়ো’ এবং ‘গোলমাল থ্রি’।

তবে দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের পরে ছবিতে কাজ কমিয়ে দিয়েছেন তনাজ। ২০১০ সালে তাঁর শেষ ছবি ‘গোলমাল থ্রি’ মুক্তি পেয়েছিল। গত ১ দশক বড় পর্দায় অভিনয় না করলেও টেলিভিশনে তনাজ বিরাজমান স্বমহিমাতেই।

তনাজের পাশাপাশি বখতিয়ারও ব্যস্ত নিজের কেরিয়ারে। দু’জনে দক্ষ নৃত্যশিল্পীও। বিদেশে নাচ শেখানোর প্রতিষ্ঠানও পরিচালনা করেন তাঁরা। ‘নাচ বালিয়ে’-সহ একাধিক রিয়েলিটি শো-এ অংশ নিয়েছেন এই তারকা দম্পতি।

তবে বখতিয়ার-তনাজ সম্পর্কেও ওঠাপড়া এসেছে। অন্য নায়িকার সঙ্গে বখতিয়ারের নাম জড়িয়ে গিয়েছে। তনাজের সঙ্গেও সহ অভিনেতার প্রেমের গুঞ্জন শোনা গিয়েছে। অভিযোগ, বদমেজাজি বখতিয়ার একবার প্রকাশ্যেই তনাজকে চড় মেরেছিলেন।

কিন্তু সে সব অভিযোগকে রটনা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন তনাজ। তিনি এবং বখতিয়ার দু’জনেই জানিয়েছেন, কাজ এবং পরিবার নিয়ে তাঁরা খুশি। পরিবারকে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে এভাবেই সবদিকে ভারসাম্য বজায় রেখে এগিয়ে যেতে চান তাঁরা।