Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
France Pension Controversy

এক আইনেই কি পড়ে যাবে মাকরঁ সরকার? উত্তাল ফ্রান্স থেকে শিক্ষা নিতে পারে ভারতও

গত কয়েক মাসে বিক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠেছে ফ্রান্সে। সরকারের সিদ্ধান্ত কিছুতেই মেনে নিতে চাইছেন না সাধারণ মানুষ। তাঁরা প্রেসিডেন্ট মাকরেঁর পদত্যাগ দাবি করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০২৩ ১৩:৪৪
Share: Save:
০১ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

অষ্টাদশ শতকে ফ্রান্স সাম্রাজ্য তথা ইউরোপের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিল ফরাসি বিপ্লব। সেই থেকে ফ্রান্সের মানুষের বিদ্রোহী মেজাজ সারা বিশ্বে পরিচিত। যখনই সে দেশে কোনও জনবিরোধী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, শাসকের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছেন ফরাসিরা।

ছবি: সংগৃহীত।

০২ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

গত কয়েক মাসে আবার জনগণের বিদ্রোহের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে ফ্রান্সের অলিগলিতে। জ্বলেছে ক্ষোভের আগুন। পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের ধোঁয়ায় বিষাক্ত হয়েছে প্যারিসের রাজপথ।

ছবি: সংগৃহীত।

০৩ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরেঁর একটি সিদ্ধান্ত দেশটিকে উত্তাল করে তুলেছে। ফ্রান্স সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দেশে চাকুরিজীবীদের অবসরের বয়সসীমা ৬২ বছর থেকে বাড়িয়ে ৬৪ বছর করা হবে।

ছবি: সংগৃহীত।

০৪ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

অবসরের বয়স বৃদ্ধির এই সরকারি সিদ্ধান্ত মোটেই ভাল চোখে দেখেননি ফ্রান্সের সাধারণ মানুষ। তাঁরা বৃদ্ধ বয়সে বাড়তি দু’বছর খাটতে রাজি নন একেবারেই। তাই মাকরেঁর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে জনতা।

ছবি: সংগৃহীত।

০৫ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস থেকে বর্দো, মার্সেই, লিয়ঁ, সর্বত্রই ছবিটা এক। কেউ প্রকাশ্যে পথে নেমে সরকারের বিরোধিতা করছেন, কেউ নিত্যদিনের কাজে সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন।

ছবি: সংগৃহীত।

০৬ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

ফ্রান্সের রাস্তায় ডাঁই হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে আবর্জনার স্তূপ। সাফাইকর্মীরা সরকারের বিরোধিতা করে নিজেদের কাজ বন্ধ রেখেছেন। এ ছাড়া, ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরে বিক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষও দেখা গিয়েছে বার বার।

ছবি: সংগৃহীত।

০৭ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

অবসরের বয়স বাড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তে কেন জনগণের এমন প্রতিক্রিয়া? তার আগে জানা দরকার, কেন ফ্রান্স সরকার এমন একটি সিদ্ধান্ত নিল? এর মাধ্যমে সমাজের কোন পরিস্থিতিতে বদল আসতে পারে?

ছবি: সংগৃহীত।

০৮ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

ফ্রান্সে সরকারি বা বেসরকারি চাকুরিজীবীরা ৬২ বছর বয়স পর্যন্ত কাজ করে অবসরগ্রহণ করেন। তার পর সরকার বা সংস্থার কাছ থেকে তাঁরা পেনশন পান। কিন্তু মাকরেঁর পেনশন সংস্কার আইনে বলা হয়েছে, ৬৪ বছরের আগে অবসর নিতে পারবেন না চাকুরিজীবীরা।

ছবি: সংগৃহীত।

০৯ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

২০৩০ সালের পর এই আইন কার্যকর করা হবে বলে জানিয়েছে ফরাসি সরকার। কিন্তু জনগণ তা মানতে নারাজ। দেশের ৭০ শতাংশ জনগণ জানিয়েছেন, পেনশন পাওয়ার জন্য বাড়তি দু’বছর তাঁরা খাটবেন না।

ছবি: সংগৃহীত।

১০ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

ফ্রান্সের শাসনব্যবস্থা পুঁজিবাদ এবং সমাজতন্ত্রের মিশেল। ব্যবসাবাণিজ্যে জোর দেওয়া হলেও সেখানে জনগণের স্বার্থ সমান ভাবে প্রাধান্য পায়। চাইলেই সরকার বাণিজ্যে উন্নতির স্বার্থে জনবিরোধী কাজ করতে পারেন না।

ছবি: সংগৃহীত।

১১ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

প্রতি বছর অবসরপ্রাপ্ত জনগণকে পেনশন দিতে ফ্রান্স সরকারের বিপুল খরচ হয়। এক জনকে সারা বছর পেনশন দিতেই ৯ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা খরচ করে সরকার। এই বিপুল খরচের প্রভাব পড়ে দেশের জিডিপিতে। প্রতি বছর জিডিপি-র ১৩ শতাংশ খরচ হয় পেনশন বাবদ।

ছবি: সংগৃহীত।

১২ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

দেশ চালাতে তাই বছর বছর ঋণ নিতে হয় ফ্রান্স সরকারকে। ঋণের চাপ বৃদ্ধি পেলে দেশের অর্থনীতি দুর্বল হয়। সরকারি খরচ নিয়ন্ত্রণ করতেই তাই অবসরের বয়স বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফ্রান্স।

ছবি: সংগৃহীত।

১৩ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

ফ্রান্সে ২২ শতাংশ মানুষ ২৫ বছর বা তার কমবয়সি। আর ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সি মানুষ আছেন ৩০ শতাংশ। অর্থাৎ, ফ্রান্সে বার্ধক্য তারুণ্যের চেয়ে বেশি। এই বয়স্করা অবসরের পর পেনশন এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত খরচ পান সরকারের কাছ থেকে।

ছবি: সংগৃহীত।

১৪ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

চাকুরিজীবীরা দু’বছর বাড়তি কর্মক্ষম থাকলে আরও কিছু বাড়তি কর পাবে সরকার। এতে সরকারের খরচ বহনের চাপ কিছুটা হলেও কমবে। সেই কারণে অবসরের বয়স বৃদ্ধি করে অর্থনীতি সামাল দিতে চেয়েছেন মাকরঁ।

ছবি: সংগৃহীত।

১৫ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

বিক্ষোভকারীদের দাবি, যাঁরা সুস্থসবল এবং কর্মক্ষম, দু’বছর বাড়তি চাকরি করা তাঁদের পক্ষে সমস্যার নয়। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রেই সরকারি এই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া কষ্টকর। চাকরির পরিবেশ, শারীরিক সমস্যা এই দু’বছরকে তাঁদের কাছে বিষময় করে তুলতে পারে।

ছবি: সংগৃহীত।

১৬ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

তরুণ প্রজন্মের দাবি, এত দিন তাঁদের দেওয়া কর থেকে ৬৩ বছর বা তার বেশি বয়সিদের পেনশন দেওয়া হয়েছে। তা হলে তাঁরা বয়স হলে একই সুবিধা পাবেন না কেন? কেন তাঁদের বাড়তি দু’বছর খাটতে এবং কর দিতে হবে?

ছবি: সংগৃহীত।

১৭ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

ফ্রান্সে বিক্ষোভকারীদের আরও দাবি, অবসরগ্রহণের সময় বৃদ্ধি করার এই সিদ্ধান্ত ঐচ্ছিক হওয়া উচিত। যাঁরা ৬২ বছর বয়সে গিয়েও চাকরি করতে পারবেন, তাঁরা আরও দু’বছর চাকরি করবেন। যাঁরা পারবেন না, তাঁরা অবসর নেবেন।

ছবি: সংগৃহীত।

১৮ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

এ ক্ষেত্রে বিক্ষোভকারীদের যুক্তি, বয়স্করা যদি দু’বছর বাড়তি কাজ করেন, তবে তরুণদের মধ্যে বেকারত্ব বৃদ্ধি পাবে। কর্মক্ষেত্রে উন্নতির জন্য তাঁদের আগের চেয়ে বেশি অপেক্ষা করতে হবে।

ছবি: সংগৃহীত।

১৯ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

সব মিলিয়ে প্রেসিডেন্ট মাকরেঁর পদত্যাগের দাবি উঠেছে ফ্রান্সে। জনগণ সরকারের কথা বা যুক্তি শুনতে চাইছেন না। তাঁরা যেনতেন প্রকারেণ এই পেনশন সংস্কার আইন রদ করতে চান।

ছবি: সংগৃহীত।

২০ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

কী কী ভুল করেছেন মাকরঁ? প্রথমত, অবসরের বয়স বাড়িয়ে দেওয়ার আইন পাশ করতে তাঁর সরকার তাড়াহুড়ো করেছে। দ্বিতীয়ত, ফ্রান্সের জনগণের বিক্ষোভমুখী মানসিকতাকে কম গুরুত্ব দিয়েছেন মাকরঁ।

ছবি: সংগৃহীত।

২১ ২১
France is facing huge protest against Government decision of changing Pension system.

অনেকেই মনে করছেন, ফ্রান্সের থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত ভারতেরও। অতীতে ভারত সরকারও ফ্রান্সের মতো বিক্ষোভের মুখে পড়েছিল। সরকারের তরফে কোনও সংস্কারমূলক আইন পাশ করতে হলে তাড়াহুড়ো না করে তা নিয়ে পর্যাপ্ত সময় ধরে আলোচনা প্রয়োজন। সেই আইনের জনহিতৈষী দিকগুলি আগে জনতার কাছে তুলে ধরা প্রয়োজন। তবেই সরকার এবং জনগণের মধ্যে গণতান্ত্রিক ভারসাম্য বজায় থাকবে।

ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE