আর্জেন্টিনার হৃদয়ে এখন একটাই নাম! বিশ্বকাপের আগে মেসিকে তাতিয়ে দিলেন তরুণী

সেমিফাইনালের পরেই মেসি ঘোষণা করে দিয়েছেন, দেশের জন্য ফাইনালের ম্যাচই হবে তাঁর শেষ খেলা। এর পর আর তাঁকে আর্জেন্টিনার হয়ে খেলতে দেখা যাবে না।

ফুটবলের কেরিয়ারে এখনও পর্যন্ত ৭ বার বর্ষসেরার পুরস্কার জিতেছেন মেসি। যে কোনও সাক্ষাৎকারে তাঁর কাছে ফিরে ফিরে এসেছে একটাই প্রশ্ন, আরও ব্যালন ডি’অর, না কি বিশ্বকাপ, এলএম১০-এর সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত কী?

মেসি বারবার উত্তর দিয়েছেন, বিশ্বকাপ হাতে নিয়ে চুম্বন করা তাঁর চিরকালের স্বপ্ন। ফিফার বর্ষসেরার পুরস্কারের চেয়েও কয়েক গুণ দামি সেই সম্মান। তিনি দেশকে আরও এক বার বিশ্বকাপ এনে দিতে চান।

সেই স্বপ্ন পূরণের শেষ সুযোগ রবিবার পাবেন মেসি। ফাইনালে তাঁর আর্জেন্টিনা হেরে গেলে কি দেশে তারকা ফুটবলারকে নিয়ে তিক্ততা বাড়বে? জবাবটা কাতারে সাংবাদিক সোফিয়া দিয়ে দিয়েছেন।

কাতারে ফাইনালের পর আর্জেন্টিনার ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে মেসি বনাম মারাদোনার দ্বন্দ্ব ঘুচবে কি না তার নিশ্চয়তা নেই। তবে সোফিয়ার কথা ফাইনালের আগে মেসিকে তাতাবে বলে মনে করছেন সমর্থকদের কেউ কেউ।

সেমিফাইনালের আগে মেসি জানিয়েছিলেন, তাঁদের জয়ের নেপথ্যে মারাদোনার হাত রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। স্বর্গ থেকে মারাদোনার আশীর্বাদ তাঁদের সঙ্গে রয়েছে বলেই এতটা দূরে আসতে পেরেছেন তাঁরা।

অদৃশ্য সেই হাত কি ফাইনালেও কেরামতি দেখাতে পারবে? অপেক্ষা আর তিন দিনের।

অনেকেই বলছেন, ’৭৮ বিশ্বকাপের স্মৃতি ফিরে এসেছে গ্রুপপর্বে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের হারের কারণে। ৪৪ বছর আগের সেই বিশ্বকাপেও ফাইনালে ওঠার পথে গ্রুপপর্বে একটি ম্যাচ হেরেছিল আর্জেন্টিনা। ফাইনালের অপর দল নেদারল্যান্ডসও হেরেছিল গ্রুপপর্বে। এ বারও তেমনটা হল— ফাইনালে উঠে আসার পথে একটি করে ম্যাচ হেরেছে আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্স।

’৭৮ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আর্জেন্টিনা! যে হেতু ’৭৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠা দুই দলের সঙ্গে এ বারের বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠা দুই দলের বেশ কিছু সাদৃশ্য রয়েছে, তাই কাপ জয় নিয়ে আশাবাদী হতেই পারেন আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা।

তবে এমন পরিসংখ্যান ফ্রান্সেরও রয়েছে। যেমন, ১৯৯৮ বিশ্বকাপে প্রথম বিশ্বকাপ জেতে ফ্রান্স। সে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ক্রোয়েশিয়াকে ২–১ গোলে হারিয়েছিল তারা। জোড়া গোল করেছিলেন ফ্রান্সের ডিফেন্ডার লিলিয়ান থুরাম। তার ঠিক ২০ বছর পর ২০১৮ সালে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে বেলজিয়ামের মুখোমুখি হয় ফ্রান্স। ১–০ জয়ে ওঠে ফাইনালে। সেমিফাইনালে ফ্রান্সের হয়ে গোলটি করেছিলেন ডিফেন্ডার স্যামুয়েল উমতিতি। সে বারও ফ্রান্সই চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।

এর আগে যে দু’টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ডিফেন্ডাররা গোল করেছেন, দু’বারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফ্রান্স। এ বারও যে হেতু সেমিফাইনালে ডিফেন্ডার গোল করেছেন, ফ্রান্স তাই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার আশা করতেই পারে।

এমবাপে, গ্রিয়াজমানরা যেমন রয়েছেন ফ্রান্সে, তেমন মেসির পাশে রয়েছেন ‘মাকড়সা’ আলভারেস কিংবা মার্টিনেজের মতো ফুটবলার। ফলে দেশের জার্সি গায়ে শেষ ম্যাচ খেলার আগে মেসি যে মারাদোনাকে স্পর্শ করার শেষ চেষ্টা করবেন, তা কি বলার অপেক্ষা রাখে?