Advertisement
০১ মে ২০২৪
Masood Azhar

তাঁর মুক্তির জন্য বিমান অপহরণ, ভারতকে ‘শেষ’ করার হুমকি, মাসুদ আজহার কি সত্যিই নিহত?

১৯৯৪ সালে এই হরকত-উল-আনসারের হয়ে পরিচয় গোপন কাশ্মীরে এসেছিলেন তিনি। ওই সংগঠনের দুই শাখার মধ্যে বিবাদ শুরু হয়েছিল। তা দমন করতেই শ্রীনগরে গিয়েছিলেন মাসুদ। তার পর?

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:৩০
Share: Save:
০১ ২৩
image of masood azhar

দাউদের পর মাসুদ আজহার? বছরের প্রথম দিন ছড়িয়ে পড়ল তাঁর নিহত হওয়ার খবর। সমাজমাধ্যমে কিছু সংবাদ সংস্থা দাবি করল, পাকিস্তানে একটি বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে তাঁর। যদিও কোনও সূত্রের তরফে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি। মাসুদের তরফেও আসেনি বিবৃতি। কে এই মাসুদ?

০২ ২৩
image of blast

সোমবার ভোরে পাক পঞ্জাবের বাহাওয়ালপুরের অদূরে কয়েকটি বিস্ফোরণ হয়েছে। সমাজমাধ্যমে দাবি করা হয়েছে, ওই বিস্ফোরণের মধ্যে পড়েছিল মাসুদের গাড়ি। তাতেই নিহত হয়েছেন জইশ-এ-মহম্মদের প্রধান।

০৩ ২৩
image of blast

সোমবারে ভোরে ভওয়ালপুরের মসজিদ থেকে ফিরছিলেন মাসুদ। পথে অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীদের নিশানা হন তিনি। তাঁর কনভয় লক্ষ্য করে পর পর বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।

০৪ ২৩
image of terrorist

গত কয়েক মাসে পাকিস্তানে একাধিক ভারত বিরোধী কাশ্মীরি এবং খলিস্তানপন্থী জঙ্গি নেতা খুন হয়েছেন। পাক সংবাদমাধ্যমের একাংশ প্রতিটি ক্ষেত্রেই ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’-এর দিকে আঙুল তুলেছে।

০৫ ২৩
image of masood azhar

নভেম্বরে করাচিতে খুন হয়েছিলেন জইশের প্রথম সারির নেতা মৌলানা রহিমউল্লা। তাঁকেও গুলি করে খুন করেন অজ্ঞাতপরিচয় কয়েক জন। অভিযুক্তদের এখনও ধরতে পারেনি পাকিস্তানের পুলিশ। সেই হত্যাকাণ্ডের পিছনেও ‘র’-এর হাত দেখছে পাকিস্তানের একাংশ। তার পরেই সমাজমাধ্যমে একটি অংশ দাবি করেছে, মাসুদের খুনের নেপথ্যে থাকতে পারে ‘র’-এর হাত।

০৬ ২৩
image of dawood

সমাজমাধ্যমে এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘‘দাউদের পর মাসুদ আজহার। অজ্ঞাতপরিচয়দের হাতে খুন হয়েছে ভারতের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জঙ্গি। নতুন বছরের এই উপহারের জন্য অপরিচিত সেই ব্যক্তিকে ধন্যবাদ।’’

০৭ ২৩
image of masood azhar

২০২০ সালের মে মাসে মাসুদকে ‘আন্তর্জাতিক জঙ্গি’ (গ্লোবাল টেররিস্ট) ঘোষণা করে রাষ্ট্রপুঞ্জ। তার আগে এই পদক্ষেপের ক্ষেত্রে দীর্ঘ দিন বাধা হয়েছিল চিন। পরে তা প্রত্যাহার করার পর ‘আন্তর্জাতিক জঙ্গি’-র তকমা পান মাসুদ। একে ভারতের নৈতিক জয় বলে মনে করা হয়।

০৮ ২৩
image of masood azhar

কেন মাসুদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা? তার উত্তর খুঁজতে গেলে যেতে হবে অতীতে। ১৯৬৮ সালে পাক পঞ্জাব প্রদেশের বাহাওয়ালপুরে জন্ম মাসুদের। ১৯৬৮ সালের ১০ জুলাই। তাঁর বাবা ছিলেন সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক। পাশাপাশি ধর্ম প্রচারকও ছিলেন। পশুপালন এবং ডেয়ারির ব্যবসা ছিল তাঁর পরিবারের।

০৯ ২৩
image of masood azhar

অষ্টম শ্রেণিতে উঠে স্কুল ছাড়েন মাসুদ। ভর্তি হন জামিয়া উলুম ইসলামিক স্কুলে। ১৯৮৯ সালে স্নাতক হন। এর পর ওই মাদ্রাসারই শিক্ষক নিযুক্ত হন। ক্রমে তিনি পাকিস্তানে জিহাদি গোষ্ঠী ‘হরকত-উল-আনসার’-র দ্বারা প্রভাবিত হন।

১০ ২৩
image of masood azhar

এর পর আফগানিস্তানে জিহাদ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেও যোগ দিয়েছিলেন মাসুদ। প্রশিক্ষণের মাঝেই সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধে শামিল হন তিনি। তবে আহত হয়ে যুদ্ধের মাঝপথেই ফিরতে বাধ্য হন। পরে হরকত-উল-আনসারের সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হন মাসুদ। ওই সংগঠনের হয়ে বিদেশে গিয়ে অনুদান জোগাড়ের কাজ শুরু করেন।

১১ ২৩
image of terrorist

১৯৯৩ সালের নাইরোবি গিয়েছিলেন মাসুদ। সেখানে আল-কায়দার সোমালিয়া কেন্দ্রিক শাখা সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন। আমেরিকার গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ একটি রিপোর্টে দিয়ে জানিয়েছিল, হরকত-উল-আনসারের জঙ্গি কার্যকলাপ ক্রমেই বৃদ্ধি পেয়েছে। কাশ্মীরে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে নিশানা করছে তারা।

১২ ২৩
image of arrest

১৯৯৪ সালে এই হরকত-উল-আনসারের হয়ে পরিচয় গোপন কাশ্মীরে এসেছিলেন তিনি। ওই সংগঠনের দুই শাখার মধ্যে বিবাদ শুরু হয়েছিল। তা দমন করতেই শ্রীনগরে গিয়েছিলেন মাসুদ। তখনই ধরা পড়ে যান। প্রথমে শ্রীনগরের বাদামি বাগ ক্যান্টনমেন্ট, তার পর দিল্লির তিহাড়, শেষে ছিলেন জম্মুর কোটবলওয়াল জেলে। সেখান থেকেই মুক্তি।

১৩ ২৩
image of flight

১৯৯৯ সালে নেপালের কাঠমান্ডু থেকে দিল্লিতে আসছিল ইন্ডিয়ান এয়ারলাইনসের একটি বিমান। সেটিকে অপহরণ করে নিয়ে বিভিন্ন জায়গা ঘুরে নামানো হয়েছিল আফগানিস্তানের কন্দহরে। সে সময় তালিবানের নিয়ন্ত্রণে ছিল কন্দহর, যাদের আবার সমর্থন করত পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই।

১৪ ২৩
image of masood azhar

পণবন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে মাসুদ-সহ তিন জঙ্গিকে ফেরানোর শর্ত দেয় জঙ্গিরা। নেতৃত্বে ছিলেন মাসুদের ভাই ইব্রাহিম আথার। শর্ত মেনে নেয় ভারত সরকার। কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে অনেকে ‘কূটনৈতিক ব্যর্থতা’ বলেছিলেন। অপহরণকারীদের হাতে মাসুদকে তুলে দেওয়ার পর তাঁরা পাকিস্তানে পালিয়ে গিয়েছিলেন।

১৫ ২৩
image of flag

পাকিস্তান সরকার জানিয়েছিল, অপহরণকারীদের খোঁজ মিললে অবশ্যই গ্রেফতার করা হবে। তবে তা আর কখনও হয়নি। যদিও মাসুদকে যে কিছু করা হবে না, সেই ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিল পাকিস্তান।

১৬ ২৩
image of masood azhar

এর পর করাচিতে একটি জনসভা করেছিলেন মাসুদ। সেখানে বলেছিলেন, ভারতকে শেষ না করা পর্যন্ত মুসলিমদের নিশ্চিন্তে থাকা উচিত নয়। কাশ্মীরকে ভারতের শাসন থেকে ‘স্বাধীন’ করার অঙ্গীকারও নিয়েছিলেন।

১৭ ২৩
image of terrorist

১৯৯৯ সালে হরকত-উল-আনসারকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের তালিকায় স্থান দেয় আমেরিকা। এর পর সংগঠনটি নাম বদলে ফেলে। নতুন নাম হয় হরকত-উল-মুজাহিদিন। এর পর আজহার তৈরি করেন নতুন সংগঠন। নাম দেন জইশ-এ-মহম্মদ। রিপোর্টে জানা গিয়েছিল, আইএসআই, তালিবান, ওসামা বিন লাদেনও নাকি সমর্থন জুগিয়েছিলেন মাসুদকে।

১৮ ২৩
image of parliament attack

এর পর ভারতে একের পর এক জঙ্গি হামলার নেপথ্যে নাম জড়িয়েছে জইশের। ২০০১ সালের ১৩ ডিসেম্বর ভারতের সংসদে হামলা হয়। অভিযুক্তেরা লস্কর-এ-তইবা এবং জইশের সদস্য ছিলেন। ঘটনায় পাঁচ জঙ্গি, দিল্লি পুলিশের ছ’জন কর্মী, দু’জন নিরাপত্তারক্ষী, এক জন মালি— মোট ১৪ জন নিহত হন।

১৯ ২৩
image of attack

২০০৫ সালে অযোধ্যায় রাম জন্মভূমি মন্দিরে হামলায়ও নাম জড়ায় জইশের। ২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি আফগানিস্তানে মাজার-ই-শরিফে ভারতীয় দূতাবাসের উপর হামলাও তাঁরই নির্দেশে হয়েছিল।

২০ ২৩
image of nia

২০১৬ সালে পাঠানকোটে সেনাঘাঁটিতে হামলা করে জইশ। হামলার আগে হামলাকারীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ ছিল মাসুদ এবং তাঁর ভাইয়ের। হামলাকারীদের ফোনে ক্রমাগত নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ) তদন্তে নেমে সেই প্রমাণ খুঁজে বার করেছিল। সেই প্রমাণ দাখিল করে ইন্টারপোলকে মাসুদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় রেড কর্নার নোটিস জারি করার অনুরোধ জানিয়েছিল কেন্দ্র।

২১ ২৩
image of blast

২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সিআরপিএফের কনভয় লক্ষ্য করে আত্মঘাতী হামলা হয়েছিল। নিহত ৪৪ জন জওয়ান। পাকিস্তানের সেনা হাসপাতালে বসে হামলার দায় নেন মাসুদ। এর পরেই তাঁর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব আনে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স।

২২ ২৩
image of masood azhar

গত মাসে একটি রিপোর্টে জানা যায়, এখন পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে নিরাপদে রয়েছেন মাসুদ আজহার। শুধু তাই নয়, বহাল তবিয়তে রয়েছেন। জইশের রোজের কাজকর্ম দেখাশোনা করেন তাঁর ভাই আবদুল রউফ আসগার আলভি। মাসুদের ভগ্নিপতি মহম্মদ ইউসুফ আজহার প্রশিক্ষণের বিষয়টি তদারকি করেন। কান্দাহার অপহরণের নেপথ্যে ছিলেন মাসুদের যে ভাই, সেই আথার আলভি এখন সন্ত্রাসের জন্য অনুদান সংগ্রহ করেন।

২৩ ২৩
image of masood azhar

রিপোর্টে এও জানা গিয়েছিল, ভারতে সন্ত্রাস হামলার ছক এখনও কষছে জইশ। তার মাঝেই কি তবে নিহত হলেন জইশ প্রধান? নেপথ্যে ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা? সেই প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। — ফাইল চিত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE