Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Joshimath land subsidence

জোশীমঠ তিন ভাগ, বিপজ্জনক বাড়িতে পড়ছে লাল কালি, যে ভাবে ভাঙা হচ্ছে ‘ডুবন্ত’ শহর

ভূমি অবনমনের প্রভাব অনুযায়ী জোশীমঠকে মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করেছে প্রশাসন। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি ভেঙে ফেলা হবে সবার আগে। বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অন্যত্র।

সংবাদ সংস্থা
দেহরাদূন শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৩ ১২:৩৯
Share: Save:
০১ ১৯
জোশীমঠে বিপজ্জনক বাড়িগুলি ভাঙার কাজ শুরু হবে মঙ্গলবার। কেন্দ্রের প্রতিনিধি দল ইতিমধ্যে সেখানে পৌঁছে গিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে আরও একটি দলকে মঙ্গলবারই জোশীমঠে পাঠানোর কথা। তাদের তত্ত্বাবধানে শুরু হবে ‘ধ্বংসলীলা’।

জোশীমঠে বিপজ্জনক বাড়িগুলি ভাঙার কাজ শুরু হবে মঙ্গলবার। কেন্দ্রের প্রতিনিধি দল ইতিমধ্যে সেখানে পৌঁছে গিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে আরও একটি দলকে মঙ্গলবারই জোশীমঠে পাঠানোর কথা। তাদের তত্ত্বাবধানে শুরু হবে ‘ধ্বংসলীলা’।

০২ ১৯
গত ৫ এবং ৬ জানুয়ারি জোশীমঠের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা পরামর্শ দিয়েছিলেন, শহরের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি ভেঙে ফেলা দরকার অবিলম্বে। সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হবে।

গত ৫ এবং ৬ জানুয়ারি জোশীমঠের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা পরামর্শ দিয়েছিলেন, শহরের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িগুলি ভেঙে ফেলা দরকার অবিলম্বে। সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু হবে।

০৩ ১৯
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, ‘ডুবন্ত’ জোশীমঠকে মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করেছে প্রশাসন। ভাগ বা জ়োনগুলির নাম দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে ‘ডেঞ্জার জ়োন’ বা বিপজ্জনক, ‘বাফার জ়োন’ বা অপেক্ষাকৃত কম বিপজ্জনক এবং ‘সেফ জ়োন’ বা নিরাপদ।

সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, ‘ডুবন্ত’ জোশীমঠকে মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করেছে প্রশাসন। ভাগ বা জ়োনগুলির নাম দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে ‘ডেঞ্জার জ়োন’ বা বিপজ্জনক, ‘বাফার জ়োন’ বা অপেক্ষাকৃত কম বিপজ্জনক এবং ‘সেফ জ়োন’ বা নিরাপদ।

০৪ ১৯
জোশীমঠের এই বিপজ্জনক অংশে যে যে বাড়িঘর রয়েছে, তার গায়ে লাল কালি দিয়ে দাগ এঁকে দেওয়া হয়েছে। সেই বাড়িগুলিই আগে ভেঙে ফেলা হবে।

জোশীমঠের এই বিপজ্জনক অংশে যে যে বাড়িঘর রয়েছে, তার গায়ে লাল কালি দিয়ে দাগ এঁকে দেওয়া হয়েছে। সেই বাড়িগুলিই আগে ভেঙে ফেলা হবে।

০৫ ১৯
এখনও পর্যন্ত জোশীমঠে ভূমি অবনমনের কবলে পড়েছে মোট ৬৭৮টি বাড়ি। শুধু মাত্র সোমবারই নতুন করে ফাটল দেখা দিয়েছে ৬৮টি বাড়িতে।

এখনও পর্যন্ত জোশীমঠে ভূমি অবনমনের কবলে পড়েছে মোট ৬৭৮টি বাড়ি। শুধু মাত্র সোমবারই নতুন করে ফাটল দেখা দিয়েছে ৬৮টি বাড়িতে।

০৬ ১৯
প্রশাসন সূত্রে খবর, যে বাড়িগুলি না ভাঙলেই নয়, যেগুলি অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত, সেগুলিই প্রাথমিক ভাবে ভেঙে ফেলা হবে।

প্রশাসন সূত্রে খবর, যে বাড়িগুলি না ভাঙলেই নয়, যেগুলি অত্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত, সেগুলিই প্রাথমিক ভাবে ভেঙে ফেলা হবে।

০৭ ১৯
জোশীমঠে এই মুহূর্তে প্রশাসনের ৯টি দল কাজ করছে। ৩ থেকে ৪ সদস্যবিশিষ্ট এই দলগুলি বাড়ি বাড়ি ঘুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে। চিহ্নিত করছে বিপজ্জনক বাড়িগুলিকে।

জোশীমঠে এই মুহূর্তে প্রশাসনের ৯টি দল কাজ করছে। ৩ থেকে ৪ সদস্যবিশিষ্ট এই দলগুলি বাড়ি বাড়ি ঘুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে। চিহ্নিত করছে বিপজ্জনক বাড়িগুলিকে।

০৮ ১৯
সোমবার সেই দলের সদস্যরা জোশীমঠের ৪টি পুরসভা এলাকায় নতুন করে ১০০টির বেশি বিপজ্জনক বাড়ি চিহ্নিত করেছেন। অবিলম্বে সেখান থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার সেই দলের সদস্যরা জোশীমঠের ৪টি পুরসভা এলাকায় নতুন করে ১০০টির বেশি বিপজ্জনক বাড়ি চিহ্নিত করেছেন। অবিলম্বে সেখান থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

০৯ ১৯
বাড়ি ভাঙার সময় আশপাশের অন্য বাড়ির উপর যাতে এই ভাঙনের প্রভাব না পড়ে, তা খেয়াল রাখবে প্রশাসন। বাড়িগুলি যদি ভেঙে না ফেলা হয়, তবে তার প্রভাবেই অন্য বাড়িতেও ফাটল দেখা দিতে পারে।

বাড়ি ভাঙার সময় আশপাশের অন্য বাড়ির উপর যাতে এই ভাঙনের প্রভাব না পড়ে, তা খেয়াল রাখবে প্রশাসন। বাড়িগুলি যদি ভেঙে না ফেলা হয়, তবে তার প্রভাবেই অন্য বাড়িতেও ফাটল দেখা দিতে পারে।

১০ ১৯
রুরকির কেন্দ্রীয় আবাসন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট)-এর তত্ত্বাবধানে জোশীমঠের বিপজ্জনক বাড়িগুলি ভাঙা হবে। তাদের সহায়তা করবে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।

রুরকির কেন্দ্রীয় আবাসন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (সেন্ট্রাল বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট)-এর তত্ত্বাবধানে জোশীমঠের বিপজ্জনক বাড়িগুলি ভাঙা হবে। তাদের সহায়তা করবে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।

১১ ১৯
জোশীমঠের অবনমনকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ আখ্যা দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে আবেদন জানানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। ইতিমধ্যে জোশীমঠকে ‘বিপর্যয়প্রবণ এলাকা’ হিসাবে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে নিষিদ্ধ যে কোনও রকমের নির্মাণকার্য।

জোশীমঠের অবনমনকে ‘জাতীয় বিপর্যয়’ আখ্যা দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে আবেদন জানানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। ইতিমধ্যে জোশীমঠকে ‘বিপর্যয়প্রবণ এলাকা’ হিসাবে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে নিষিদ্ধ যে কোনও রকমের নির্মাণকার্য।

১২ ১৯
জোশীমঠের অন্যতম জনপ্রিয় দুই হোটেল ‘মাউন্ট ভিউ’ এবং ‘মালারি ইন’ একে অপরের গায়ে হেলে পড়েছে। বিপজ্জনক বাড়িগুলির পাশাপাশি এই হোটলগুলিও ভেঙে ফেলা হবে।

জোশীমঠের অন্যতম জনপ্রিয় দুই হোটেল ‘মাউন্ট ভিউ’ এবং ‘মালারি ইন’ একে অপরের গায়ে হেলে পড়েছে। বিপজ্জনক বাড়িগুলির পাশাপাশি এই হোটলগুলিও ভেঙে ফেলা হবে।

১৩ ১৯
ইতিমধ্যে জোশীমঠের ৪ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভিটেমাটি ছেড়ে প্রাণভয়ে বেরিয়ে আসতে হয়েছে বহু মানুষকে।

ইতিমধ্যে জোশীমঠের ৪ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভিটেমাটি ছেড়ে প্রাণভয়ে বেরিয়ে আসতে হয়েছে বহু মানুষকে।

১৪ ১৯
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জোশীমঠের প্রায় ৩০ শতাংশ এলাকা ভূমি অবনমনের কবলে পড়েছে। সকলকে একজোট হয়ে এই বিপর্যয়ের মোকাবিলা করার অনুরোধ করেছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, জোশীমঠের প্রায় ৩০ শতাংশ এলাকা ভূমি অবনমনের কবলে পড়েছে। সকলকে একজোট হয়ে এই বিপর্যয়ের মোকাবিলা করার অনুরোধ করেছেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী।

১৫ ১৯
জোশীমঠের এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী করা হচ্ছে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য খোঁড়া একটি সুড়ঙ্গকে, ২০০৯ সালে যা খোঁড়ার কাজ শুরু হয়েছিল। এই সুড়ঙ্গ খোঁড়ার যন্ত্র প্রকৃতির তৈরি একটি বিরাট জলভান্ডারে ছিদ্র করে দিয়েছিল। যা থেকে বেরিয়ে এসেছিল হাজার হাজার গ্যালন জল।

জোশীমঠের এই বিপর্যয়ের জন্য দায়ী করা হচ্ছে জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য খোঁড়া একটি সুড়ঙ্গকে, ২০০৯ সালে যা খোঁড়ার কাজ শুরু হয়েছিল। এই সুড়ঙ্গ খোঁড়ার যন্ত্র প্রকৃতির তৈরি একটি বিরাট জলভান্ডারে ছিদ্র করে দিয়েছিল। যা থেকে বেরিয়ে এসেছিল হাজার হাজার গ্যালন জল।

১৬ ১৯
এর ফলে এলাকার ছোটখাটো ঝর্না এবং জলের অন্যান্য উৎস শুকিয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ওই বিপুল জলভান্ডার শেষ হয়ে যাওয়ার ফলে এলাকার মাটি শুকিয়ে ঝুরঝুরে, ফাঁপা হয়ে যায়। ফলে পাহাড় ভাঙার ধ্বংসাবশেষের উপর দাঁড়িয়ে থাকা জোশীমঠের ধ্বংসও নিশ্চিত, বরং তা কেবল সময়ের অপেক্ষা।

এর ফলে এলাকার ছোটখাটো ঝর্না এবং জলের অন্যান্য উৎস শুকিয়ে যায়। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ওই বিপুল জলভান্ডার শেষ হয়ে যাওয়ার ফলে এলাকার মাটি শুকিয়ে ঝুরঝুরে, ফাঁপা হয়ে যায়। ফলে পাহাড় ভাঙার ধ্বংসাবশেষের উপর দাঁড়িয়ে থাকা জোশীমঠের ধ্বংসও নিশ্চিত, বরং তা কেবল সময়ের অপেক্ষা।

১৭ ১৯
শহরটি হিমালয়ের কোলে পুরোপুরি বসে যাওয়ার আগেই তাই তড়িঘড়ি বাসিন্দাদের সরানো এবং বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে ফেলতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। উত্তরাখণ্ড সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

শহরটি হিমালয়ের কোলে পুরোপুরি বসে যাওয়ার আগেই তাই তড়িঘড়ি বাসিন্দাদের সরানো এবং বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে ফেলতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। উত্তরাখণ্ড সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

১৮ ১৯
জোশীমঠে বিপর্যয়ের সূত্রপাত নতুন বছরের একেবারে গোড়ায়। জানুয়ারি মাসের শুরু থেকে শহরের একাধিক বাড়িতে হঠাৎ ফাটল দেখা দেয়। ক্রমশ চওড়া হয় সেই ফাটল। কোনও কোনও বাড়ি চোখের সামনে ভেঙে পড়ে হুড়মুড়িয়ে।

জোশীমঠে বিপর্যয়ের সূত্রপাত নতুন বছরের একেবারে গোড়ায়। জানুয়ারি মাসের শুরু থেকে শহরের একাধিক বাড়িতে হঠাৎ ফাটল দেখা দেয়। ক্রমশ চওড়া হয় সেই ফাটল। কোনও কোনও বাড়ি চোখের সামনে ভেঙে পড়ে হুড়মুড়িয়ে।

১৯ ১৯
জোশীমঠ শহরটি মূলত ভূমিধসপ্রবণ এলাকার উপরেই তৈরি। তাই সেখানকার মাটি আলগা। তার উপর অবাধে পাহাড় কেটে নগরের সম্প্রসারণ, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, জাতীয় সড়ক প্রশস্তকরণের মতো কাজে শহরের ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যে কারণে ধীরে ধীরে বসে যেতে শুরু করেছে গোটা শহর।

জোশীমঠ শহরটি মূলত ভূমিধসপ্রবণ এলাকার উপরেই তৈরি। তাই সেখানকার মাটি আলগা। তার উপর অবাধে পাহাড় কেটে নগরের সম্প্রসারণ, জলবিদ্যুৎ প্রকল্প, জাতীয় সড়ক প্রশস্তকরণের মতো কাজে শহরের ক্ষতি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যে কারণে ধীরে ধীরে বসে যেতে শুরু করেছে গোটা শহর।

ছবি: পিটিআই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE