Know about bollywood actor Vijay Raaz who acquitted in sexual harassment case 2020 filed by colleague dgtl
Vijay Raaz
হোটেলে ডেকে তরুণীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ! পাঁচ বছর পর যৌন হেনস্থা মামলায় বেকসুর খালাস বলি অভিনেতা
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘ফতেহ’ নামের একটি হিন্দি ছবি। এই ছবিতে অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনার দায়িত্ব সামলান বলি অভিনেতা সোনু সুদ। ‘ফতেহ’-এর হাত ধরেই পরিচালনার বৃত্তে হাতেখড়ি সোনুর। এই ছবিতে শেষ অভিনয় দেখা গিয়েছে বিজয়ের।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২০ মে ২০২৫ ১৬:১৪
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৪
শুটিং ক্রু দলের এক তরুণীকে হোটেলে ডেকে শ্লীলতাহানি করেছেন অভিনেতা। পাঁচ বছর আগে বলি নায়ক বিজয় রাজের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আনা হয়েছিল। তার প্রভাব পড়েছিল অভিনেতার কেরিয়ারেও। সম্প্রতি সেই মামলায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন বিজয়। পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে অভিনেতাকে নির্দোষ ঘোষণা করেছে আদালত।
০২২৪
২০২১ সালের জুন মাসে বিদ্যা বালন অভিনীত ‘শেরনি’ ছবিটি ওটিটির পর্দায় মুক্তি পায়। ২০২০ সালে সেই ছবির শুটিংয়ের কাজে ব্যস্ত ছিলেন বিজয়। সেই ছবির শুটিং চলাকালীন এক মহিলা ক্রু সদস্য বিজয়ের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
০৩২৪
২০২০ সালের অক্টোবর মাসে মহারাষ্ট্রের গোন্ডিয়া এলাকার রামনগর থানায় বিজয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ৪ নভেম্বর মধ্যপ্রদেশের বালাঘাট থেকে বিজয়কে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সে দিনই অবশ্য অভিনেতাকে জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। পাঁচ বছর পর বৃহস্পতিবার সেই মামলার রায় দিল মহারাষ্ট্রের আদালত।
০৪২৪
অভিযোগকারিণীর অভিযোগ, তাঁকে বিজয় একটি হোটেলে ডেকেছিলেন। কিন্তু মামলার তদন্তকারী অফিসার সেই হোটেলে প্রমাণ সংগ্রহ করতে যাননি। ঘটনার সাক্ষী হিসাবে দু’তিন জনের নাম উল্লেখ করেছিলেন ওই তরুণী। সাক্ষ্য হিসাবে তাঁদের বয়ানও নেওয়া হয়নি।
০৫২৪
আদালতের তরফে জানানো হয়েছে, সিসিটিভি ক্যামেরার যে ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে, তা বিজয়কে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য পর্যাপ্ত নয়। শুধুমাত্র মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে অভিনেতাকে দোষী প্রমাণ করা যাবে না। তাই পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাবে বিজয়কে বেকসুর খালাস করেছে আদালত।
০৬২৪
তবে এই প্রথম বার নয়। এর আগেও পুলিশের খাতায় নাম উঠেছিল বিজয়ের। তাঁকে গ্রেফতারও করেছিল পুলিশ। ২০০৫ সালে আবু ধাবির বিমানবন্দর থেকে পুলিশের হাতে ধরা প়়ড়েছিলেন বিজয়। বলিপাড়া সূত্রে খবর, তাঁর ব্যাগ থেকে ছ’গ্রাম মাদক উদ্ধার হয়েছিল।
০৭২৪
বলিপাড়ায় কানাঘুষো শোনা যায়, বিক্রম ভট্ট পরিচালিত ‘দিওয়ানে হুয়ে পাগল’ ছবির শুটিংয়ের জন্য দুবাইয়ে যাচ্ছিলেন বিজয়। সেই সময় আবু ধাবির বিমানবন্দরে অভিনেতার ব্যাগ তল্লাশি করে মাদক উদ্ধার করেছিল পুলিশ। সঙ্গে সঙ্গে বিজয়কে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে অবশ্য অভিনেতা নির্দোষ প্রমাণিত হন।
০৮২৪
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিজয় বলেছিলেন, ‘‘আমি জীবনে কোনও দিনও মাদক স্পর্শ করিনি। কী ভাবে এই মাদক আমার ব্যাগে এল তা আমি নিজেও জানি না। দেখার পর আমি নিজেই চমকে গিয়েছিলাম। আমার স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়েছিল। শরীরে মাদকের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি।’’ এই গ্রেফতারির ঘটনা জীবনে কোনও দিন ভুলতে পারবেন না বলেও জানান অভিনেতা।
০৯২৪
গ্রেফতারি প্রসঙ্গে বিজয় বলেছিলেন, ‘‘এই অভিজ্ঞতা খুবই ভয়ঙ্কর। আবু ধাবির পুলিশ আমার সঙ্গে এক মুহূর্তের জন্যও দুর্ব্যবহার করেনি। আমি হেফাজতে থাকাকালীন ভারতীয় দূতাবাসের আধিকারিকও দেখা করতে এসেছিলেন। কিন্তু আমার খুব ভয় করছিল। আমার হাতে এমন সব কাগজপত্র ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল যা অন্য ভাষায় লেখা। আমি কিছুই বুঝতে পারছিলাম না। তবুও সই করে দিয়েছিলাম। ওই দিন জীবনে ভোলার নয়।’’
১০২৪
১৯৬৩ সালের ৫ জুন উত্তরপ্রদেশের ইলাহাবাদে জন্ম বিজয়ের। তার পর দিল্লি চলে যান তিনি। দিল্লিতেই স্কুল এবং কলেজের পড়াশোনা শেষ করেন বিজয়।
১১২৪
অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ থাকায় কলেজে থাকাকালীন সেখানকার নাটকের দলের সঙ্গে যুক্ত হন বিজয়। অভিনয় নিয়ে কেরিয়ার তৈরি করবেন বলে দিল্লিতে নাটকের একটি জনপ্রিয় দলের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। পরে মাসিক ১২ হাজার টাকা বেতনের বিনিময়ে দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামায় কাজ করতে শুরু করেন।
১২২৪
‘পাগল ঘর’ নামের একটি নাটকে অভিনয়ের প্রথম সুযোগ পান বিজয়। এই নাটকে এক পুলিশকর্মীর ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। বলিপাড়া সূত্রে খবর, মঞ্চে বিজয়ের পারফরম্যান্স দেখার পর বলিপাড়ার খ্যাতনামী ছবিনির্মাতাদের কাছে তাঁর অভিনয়ের প্রশংসা করেছিলেন বলি অভিনেতা নাসিরুদ্দিন শাহ।
১৩২৪
চার বছর দিল্লিতে নাটক করার পর ১৯৯৮ সালে মুম্বই চলে যান বিজয়। বড় পর্দায় অভিনয়ের আগে টানা ১০ বছর মুম্বইয়ে নাটকে অভিনয় করতেন তিনি।
১৪২৪
গিরীশ করনাডের ‘অগ্নি অউর বরখা’ নাটকে ৯০ বছর বয়সি বৃদ্ধের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন বিজয়। দর্শকের আসনে বসেছিলেন নাসিরুদ্দিন। মঞ্চে বিজয়ের অভিনয় দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তার পর বলিপাড়ার ছবিনির্মাতাদের কাছে গিয়ে বিজয়ের কথা বলেছিলেন তিনি।
১৫২৪
১৯৯৯ সালে ‘ভোপাল এক্সপ্রেস’ ছবির হাত ধরে বড় পর্দায় আত্মপ্রকাশ করেন বিজয়। নাসিরুদ্দিনের কথা শুনে বিজয়কে অভিনয়ের সুযোগ দেন ‘ভোপাল এক্সপ্রেস’ ছবির পরিচালক মহেশ মাঠাই। এমনকি, ২০০১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘মনসুন ওয়েডিং’-এ নাসিরুদ্দিনের কথা শুনে বিজয়কে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন পরিচালক মীরা নায়ার।
১৬২৪
‘মনসুন ওয়েডিং’-ও বিজয়ের অভিনয় দর্শকের মনে ধরে। তার পর ‘লাল সালাম’, ‘শক্তি: দ্য পাওয়ার’, ‘কোম্পানি’, ‘জঙ্গল’, ‘লভ ইন নেপাল’, ‘রান’, ‘যুবা’র মতো একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় বিজয়কে। তবে অধিকাংশ ছবিতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
১৭২৪
হিন্দি ছবির পাশাপাশি মলয়ালম এবং তামিল ছবিতেও অভিনয় করেন বিজয়। ২০১৪ সালে পরিচালনায় হাতেখড়ি হয় তাঁর। ‘কয়া দিল্লি কয়া লাহৌর’ নামের একটি হিন্দি ছবির পরিচালনা করেন তিনি। এই ছবিতে মুখ্যচরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে বিজয়কেই।
১৮২৪
‘ডেলি বেলি’, ‘সনম তেরি কসম’, ‘ঢিসুম’, ‘স্ত্রী’, ‘গাল্লি বয়’, ‘ফোটোগ্রাফ’, ‘চপস্টিক্স’, ‘ড্রিম গার্ল’, ‘বালা’, ‘গুলাবো সিতাবো’, ‘লুটকেস’, ‘শেরনি’, ‘গঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি’, ‘কাঁঠাল’-এর মতো ছবিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
১৯২৪
‘মেড ইন হেভেন’ এবং ‘মার্ডার ইন মাহিম’-এর মতো ওয়েব সিরিজ়ে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেন বিজয়। বিভিন্ন সংস্থার বিজ্ঞাপন, এমনকি একাধিক হিন্দি ছবিতে কণ্ঠশিল্পী হিসাবেও কাজ করেছেন বিজয়।
২০২৪
এক সাক্ষাৎকারে বিজয় জানিয়েছিলেন যে, অমিতাভ বচ্চনের পুত্র অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে একটি ছবিতে অভিনয়ের জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু তিনি অভিনয় করতে চাননি। বার বার প্রত্যাখ্যান করার পর শেষ পর্যন্ত পঞ্চম বারে অভিনয় করতে রাজি হন তিনি।
২১২৪
২০০৪ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘রান’ নামের একটি হিন্দি ছবি। অভিষেক বচ্চন এবং ভূমিকা চাওলার সঙ্গে এই ছবিতে অভিনয় করেন বিজয়। বচ্চন-পুত্রের এই ছবিতেই অভিনয় করতে চাননি তিনি।
২২২৪
বিজয় বলেছিলেন, ‘‘আমি ‘রান’ ছবিতে কাজ করতে চাইনি। আমায় বার বার ফোন করা হচ্ছিল। আমি বার বার মানা করছিলাম। তার পর বনি কপূর আমায় ফোন করেছিলেন। আমি পারিশ্রমিক হিসাবে প্রচুর টাকা চেয়েছিলাম। বনি আমার কথায় রাজি হয়ে গেলেন। আগে চার বার প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। আর প্রস্তাব ফেরাতে পারিনি। খানিকটা বাধ্য হয়েই আমি অভিনয় করি।’’ যদিও বক্স অফিসে ছবিটি ব্যর্থ হয়েছিল।
২৩২৪
‘শেরনি’র পর ‘গঙ্গুবাই কাথিয়াওয়াড়ি’, ‘কাঁঠাল’, ‘ড্রিম গার্ল ২’, ‘চন্দু চ্যাম্পিয়ন’, ‘ভিকি বিদ্যা কা উওহ ওয়ালা ভিডিয়ো’, ‘ভুল ভুলাইয়া ৩’ নামের একাধিক হিন্দি ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে বিজয়কে। তবে বিজয়ের আইনজীবীর দাবি, শ্লীলতাহানির অভিযোগে নাম জড়িয়ে যাওয়ার পর বিজয়ের কেরিয়ারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
২৪২৪
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় ‘ফতেহ’ নামের একটি হিন্দি ছবি। এই ছবিতে অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালনার দায়িত্ব সামলান বলি অভিনেতা সোনু সুদ। ‘ফতেহ’-এর হাত ধরেই পরিচালনার বৃত্তে হাতেখড়ি সোনুর। এই ছবিতে শেষ অভিনয় দেখা গিয়েছে বিজয়ের।