Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Suraj Singh Parihar

কলসেন্টারকর্মী থেকে আইপিএস অফিসার! ইচ্ছা থাকলে অসম্ভব নয় কোনও কিছু, বলছেন ইনি

এরপর তাঁর সামনে নামজাদা কলেজে পড়ার অনন্ত হাতছানি। কিন্তু সে সব উপেক্ষা করতে বাধ্য হলেন। কারণ পরিবারের অনটন। সূরজ ভর্তি হলেন তুলনামূলকভাবে অখ্যাত কলেজে। যেখানে উপস্থিতির হার নিয়ে কড়াকড়ি ছিল না। কারণ বন্ধুর সঙ্গে একটি ভাড়ার ফ্ল্যাটে স্পোকেন ইংরেজি শেখানোর ক্লাস শুরু করেছিলেন তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৯ ১০:৩৪
Share: Save:
০১ ১৩
চারপাশের সবাই হেসেই খুন। তবু থামছেন না যুবক। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মুখভঙ্গি করে বলেই চলেছেন ইংরেজি। এই প্রতিবন্ধকতা জয় না করলে কাজের জায়গায় খুব সমস্যা হচ্ছে। সেই প্রতিবন্ধকতা মনের জোরে জয় করেছিলেন সূরজ সিংহ পারিহার। সেদিনের কলসেন্টার-কর্মী, আজকের দক্ষ পুলিশকর্তা।

চারপাশের সবাই হেসেই খুন। তবু থামছেন না যুবক। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মুখভঙ্গি করে বলেই চলেছেন ইংরেজি। এই প্রতিবন্ধকতা জয় না করলে কাজের জায়গায় খুব সমস্যা হচ্ছে। সেই প্রতিবন্ধকতা মনের জোরে জয় করেছিলেন সূরজ সিংহ পারিহার। সেদিনের কলসেন্টার-কর্মী, আজকের দক্ষ পুলিশকর্তা।

০২ ১৩
পঞ্চম শ্রেণি অবধি সূরজের পড়াশোনা উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের অখ্যাত স্কুলে। তাঁর শৈশব কেটেছে ঠাকুরদা ঠাকুরমার কাছে। এরপর তিনি চলে আসেন কানপুরের শহরতলিতে, বাবা মায়ের কাছে। ভর্তি হন হিন্দিমাধ্যম স্কুলে। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

পঞ্চম শ্রেণি অবধি সূরজের পড়াশোনা উত্তরপ্রদেশের জৌনপুরের অখ্যাত স্কুলে। তাঁর শৈশব কেটেছে ঠাকুরদা ঠাকুরমার কাছে। এরপর তিনি চলে আসেন কানপুরের শহরতলিতে, বাবা মায়ের কাছে। ভর্তি হন হিন্দিমাধ্যম স্কুলে। ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া

০৩ ১৩
পড়াশোনার পাশাপাশি তাঁর আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিল খেলাধূলা এবং লেখালেখি। লেখালেখির স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কারও। ২০০১ সালে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তরপ্রদেশ বোর্ডে তিনি প্রথম স্থান লাভ করেন।

পড়াশোনার পাশাপাশি তাঁর আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিল খেলাধূলা এবং লেখালেখি। লেখালেখির স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কারও। ২০০১ সালে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তরপ্রদেশ বোর্ডে তিনি প্রথম স্থান লাভ করেন।

০৪ ১৩
এরপর তাঁর সামনে নামজাদা কলেজে পড়ার অনন্ত হাতছানি। কিন্তু সে সব উপেক্ষা করতে বাধ্য হলেন। কারণ পরিবারের অনটন। সূরজ ভর্তি হলেন তুলনামূলকভাবে অখ্যাত কলেজে। যেখানে উপস্থিতির হার নিয়ে কড়াকড়ি ছিল না। কারণ বন্ধুর সঙ্গে একটি ভাড়ার ফ্ল্যাটে স্পোকেন ইংরেজি শেখানোর ক্লাস শুরু করেছিলেন তিনি।

এরপর তাঁর সামনে নামজাদা কলেজে পড়ার অনন্ত হাতছানি। কিন্তু সে সব উপেক্ষা করতে বাধ্য হলেন। কারণ পরিবারের অনটন। সূরজ ভর্তি হলেন তুলনামূলকভাবে অখ্যাত কলেজে। যেখানে উপস্থিতির হার নিয়ে কড়াকড়ি ছিল না। কারণ বন্ধুর সঙ্গে একটি ভাড়ার ফ্ল্যাটে স্পোকেন ইংরেজি শেখানোর ক্লাস শুরু করেছিলেন তিনি।

০৫ ১৩
কিন্তু সে ক্লাস বেশি দিন চলল না। বাড়িওয়ালার সঙ্গে ঝামেলায় পাততাড়ি গোটাতে হল তাড়াতাড়ি। হিন্দুস্তান ইউনিলিভারের বিপণন কেন্দ্রে চাকরি নিলেন তিনি। কিন্তু সে চাকরিও বেশি দিন থাকল না কপালে।

কিন্তু সে ক্লাস বেশি দিন চলল না। বাড়িওয়ালার সঙ্গে ঝামেলায় পাততাড়ি গোটাতে হল তাড়াতাড়ি। হিন্দুস্তান ইউনিলিভারের বিপণন কেন্দ্রে চাকরি নিলেন তিনি। কিন্তু সে চাকরিও বেশি দিন থাকল না কপালে।

০৬ ১৩
এর পর কলসেন্টারে চাকরি দেখে পাঠালেন আবেদন। সাত রাউন্ড ইন্টারভিউয়ের শেষে শিকে ছিঁড়ল কপালে। নয়ডায় চাকরিতে যোগ দিতে বাড়ি ছাড়লেন উনিশ বছর বয়সী সূরজ।

এর পর কলসেন্টারে চাকরি দেখে পাঠালেন আবেদন। সাত রাউন্ড ইন্টারভিউয়ের শেষে শিকে ছিঁড়ল কপালে। নয়ডায় চাকরিতে যোগ দিতে বাড়ি ছাড়লেন উনিশ বছর বয়সী সূরজ।

০৭ ১৩
বাড়িতে টাকা পাঠানোর পাশাপাশি সূরজের লক্ষ্য ছিল ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হওয়া। কিন্তু স্বপ্ন তো দূর অস্ত। চাকরি টেকানোই দায় হয়ে পড়ল। কারণ ইংরেজি বলায় তিনি দুর্বল। ফলে ইংরেজি বুঝতে ও লিখতেও পারলেও চাকরি টলমল হয়ে পড়ল।

বাড়িতে টাকা পাঠানোর পাশাপাশি সূরজের লক্ষ্য ছিল ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হওয়া। কিন্তু স্বপ্ন তো দূর অস্ত। চাকরি টেকানোই দায় হয়ে পড়ল। কারণ ইংরেজি বলায় তিনি দুর্বল। ফলে ইংরেজি বুঝতে ও লিখতেও পারলেও চাকরি টলমল হয়ে পড়ল।

০৮ ১৩
এক মাস চেয়ে নিলেন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। কঠোর অনুশীলনে ইংরেজি বলা তো আয়ত্ত করলেনই। পাশাপাশি সংস্থার সেরা পারফর্মার হলেন। কিন্তু হাতে টাকা জমতেই ছেড়ে দিলেন কাজ। দ্বিগুণ মাইনের আশ্বাসেও থাকলেন না। প্রতীকী চিত্র

এক মাস চেয়ে নিলেন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। কঠোর অনুশীলনে ইংরেজি বলা তো আয়ত্ত করলেনই। পাশাপাশি সংস্থার সেরা পারফর্মার হলেন। কিন্তু হাতে টাকা জমতেই ছেড়ে দিলেন কাজ। দ্বিগুণ মাইনের আশ্বাসেও থাকলেন না। প্রতীকী চিত্র

০৯ ১৩
দিল্লি গিয়ে ভর্তি হলেন ইউপিএসসি প্রশিক্ষণ-পাঠে। কিন্তু সেখানেও ফুরিয়ে গেল টাকা। অতঃপর আবার চাকরির সন্ধান। এ বার পরীক্ষা দিয়ে পেলেন ব্যাঙ্কের চাকরি। প্রথমে মহারাষ্ট্র ব্যাঙ্ক, তারপরে এসবিআই।

দিল্লি গিয়ে ভর্তি হলেন ইউপিএসসি প্রশিক্ষণ-পাঠে। কিন্তু সেখানেও ফুরিয়ে গেল টাকা। অতঃপর আবার চাকরির সন্ধান। এ বার পরীক্ষা দিয়ে পেলেন ব্যাঙ্কের চাকরি। প্রথমে মহারাষ্ট্র ব্যাঙ্ক, তারপরে এসবিআই।

১০ ১৩
কয়েক বছর চাকরির পরে তখন তিনি চামোলিতে কর্মরত এসবিআইয়ের ম্যানেজার হিসেবে। তবুও মনে হল, পূর্ণ হচ্ছে না তাঁর জীবনের স্বপ্ন। চাকরি করতে করতেই শুরু ফের প্রশিক্ষণ। সাফল্য এল তৃতীয় প্রচেষ্টায়।      প্রতীকী চিত্র।

কয়েক বছর চাকরির পরে তখন তিনি চামোলিতে কর্মরত এসবিআইয়ের ম্যানেজার হিসেবে। তবুও মনে হল, পূর্ণ হচ্ছে না তাঁর জীবনের স্বপ্ন। চাকরি করতে করতেই শুরু ফের প্রশিক্ষণ। সাফল্য এল তৃতীয় প্রচেষ্টায়। প্রতীকী চিত্র।

১১ ১৩
চাকরি পেলেন ইন্ডিয়ান রেভেনিউ সার্ভিসেস-এ। কিন্তু তাঁর তো স্বপ্ন আইপিএস অফিসার হওয়া। আবার পরীক্ষা দিলেন। এ বার লক্ষ্যভেদ। তিরিশ বছর বয়সে আইপিএস অফিসার।

চাকরি পেলেন ইন্ডিয়ান রেভেনিউ সার্ভিসেস-এ। কিন্তু তাঁর তো স্বপ্ন আইপিএস অফিসার হওয়া। আবার পরীক্ষা দিলেন। এ বার লক্ষ্যভেদ। তিরিশ বছর বয়সে আইপিএস অফিসার।

১২ ১৩
পোস্টিং ছিল দন্তেওয়াড়ার মতো মাওবাদী ডেরায়। কখনও দৃঢ় হাতে দমন করেছেন মাওবাদী সমস্যা। আবার কখনও কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন মাওবাদীদের মূলস্রোতে ফেরাতে। সমাজের সব স্তরে পৌঁছতে হাতিয়ার করেছেন কবিতা ও গানকে।

পোস্টিং ছিল দন্তেওয়াড়ার মতো মাওবাদী ডেরায়। কখনও দৃঢ় হাতে দমন করেছেন মাওবাদী সমস্যা। আবার কখনও কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে গিয়েছেন মাওবাদীদের মূলস্রোতে ফেরাতে। সমাজের সব স্তরে পৌঁছতে হাতিয়ার করেছেন কবিতা ও গানকে।

১৩ ১৩
তাঁর কথায়, আইপিএস হওয়াকে চাকরি নয়, বর‌ং একে ভাবতে হবে সেবা হিসেবে। সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে শিখতে হবে নিজের ভুল থেকে। সমালোচনাকে নিতে হবে সদর্থকভাবে। পড়াশোনার পাশাপাশি গড়ে তুলতে হবে কোনও শখ। বলছেন কলসেন্টার কর্মী থেকে আইপিএস হওয়া এই হার-না-মানা যোদ্ধা।

তাঁর কথায়, আইপিএস হওয়াকে চাকরি নয়, বর‌ং একে ভাবতে হবে সেবা হিসেবে। সেই লক্ষ্যে পৌঁছতে শিখতে হবে নিজের ভুল থেকে। সমালোচনাকে নিতে হবে সদর্থকভাবে। পড়াশোনার পাশাপাশি গড়ে তুলতে হবে কোনও শখ। বলছেন কলসেন্টার কর্মী থেকে আইপিএস হওয়া এই হার-না-মানা যোদ্ধা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE