Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Ramesh Gholap

গ্রামে গ্রামে চুড়ি ফেরি করতেন, পোলিয়োকে হারিয়ে দেওয়া রমেশ আজ আইএএস অফিসার

সারা দিন পরিশ্রমের পর রাতে কেরোসিনের মৃদু আলোয় পড়াশোনা করতেন। রাত জেগে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও উপায় ছিল না। বেশি ক্ষণ সঙ্গ দিত না কেরোসিনের আলো। পরদিন সকালে দিনের আলো ফুটলেই শুরু হত গ্রামে গ্রামে চুড়ি ফেরি করা।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২১ ১৩:৩৪
Share: Save:
০১ ১৬
সারা দিন পরিশ্রমের পর রাতে কেরোসিনের মৃদু আলোয় পড়াশোনা করতেন। রাত জেগে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও উপায় ছিল না। বেশি ক্ষণ সঙ্গ দিত না কেরোসিনের আলো। পরদিন সকালে দিনের আলো ফুটলেই শুরু হত গ্রামে গ্রামে চুড়ি ফেরি করা।

সারা দিন পরিশ্রমের পর রাতে কেরোসিনের মৃদু আলোয় পড়াশোনা করতেন। রাত জেগে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও উপায় ছিল না। বেশি ক্ষণ সঙ্গ দিত না কেরোসিনের আলো। পরদিন সকালে দিনের আলো ফুটলেই শুরু হত গ্রামে গ্রামে চুড়ি ফেরি করা।

০২ ১৬
একটি পা পোলিয়োয় আক্রান্ত। সেই নিয়েই মায়ের হাত ধরে গ্রামে গ্রামে চুড়ি ফেরি করে বেড়াতেন তিনি। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন সেই ফেরিওয়ালাই হয়ে উঠলেন আইএএস অফিসার।

একটি পা পোলিয়োয় আক্রান্ত। সেই নিয়েই মায়ের হাত ধরে গ্রামে গ্রামে চুড়ি ফেরি করে বেড়াতেন তিনি। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন সেই ফেরিওয়ালাই হয়ে উঠলেন আইএএস অফিসার।

০৩ ১৬
২০১২ ব্যাচের আইএএস অফিসার রমেশ ঘোলাপ। এখন ঝাড়খণ্ডের এনার্জি ডিপার্টমেন্ট-এ জয়েন্ট সেক্রেটারি হিসাবে কর্মরত তিনি।

২০১২ ব্যাচের আইএএস অফিসার রমেশ ঘোলাপ। এখন ঝাড়খণ্ডের এনার্জি ডিপার্টমেন্ট-এ জয়েন্ট সেক্রেটারি হিসাবে কর্মরত তিনি।

০৪ ১৬
জীবনে অনেক ওঠাপড়া দেখেছেন রমেশ। কিন্তু সেগুলো কোনওটাই তাঁকে লক্ষ্য থেকে সরাতে পারেনি।

জীবনে অনেক ওঠাপড়া দেখেছেন রমেশ। কিন্তু সেগুলো কোনওটাই তাঁকে লক্ষ্য থেকে সরাতে পারেনি।

০৫ ১৬
রমেশের বাবা ছিলেন গোরাখ ঘোলাপ। তিনি একটি সাইকেল মেরামতির দোকান চালাতেন। যা উপার্জন হত তা দিয়ে ৪ জনের পরিবারে কোনও মতে খাবার জুটে যেত।

রমেশের বাবা ছিলেন গোরাখ ঘোলাপ। তিনি একটি সাইকেল মেরামতির দোকান চালাতেন। যা উপার্জন হত তা দিয়ে ৪ জনের পরিবারে কোনও মতে খাবার জুটে যেত।

০৬ ১৬
কিন্তু পরিবারে ঝড় নেমে আসে বাবার মৃত্যুর পর। রমেশ তখন স্কুলে পড়তেন। বাবা অত্যধিক মদ্যপান করতেন। সেই থেকেই অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।

কিন্তু পরিবারে ঝড় নেমে আসে বাবার মৃত্যুর পর। রমেশ তখন স্কুলে পড়তেন। বাবা অত্যধিক মদ্যপান করতেন। সেই থেকেই অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর।

০৭ ১৬
বাধ্য হয়ে মায়ের হাত ধরে সেই থেকেই চুড়ি বিক্রি করতে শুরু করেন রমেশ। রোজ মায়ের সঙ্গে চুড়ির বোঝা নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন। আশেপাশের গ্রামে দিনভর ঘুরে সেগুলো বেচতেন। সারা দিন হাঁটাও সমস্যার ছিল তাঁর কাছে।

বাধ্য হয়ে মায়ের হাত ধরে সেই থেকেই চুড়ি বিক্রি করতে শুরু করেন রমেশ। রোজ মায়ের সঙ্গে চুড়ির বোঝা নিয়ে বেরিয়ে পড়তেন। আশেপাশের গ্রামে দিনভর ঘুরে সেগুলো বেচতেন। সারা দিন হাঁটাও সমস্যার ছিল তাঁর কাছে।

০৮ ১৬
কারণ রমেশের বাঁ পা পোলিয়োয় আক্রান্ত ছিল। বাঁ পায়ে খুব বেশি ভর দিতে পারতেন না তিনি। তা সত্ত্বেও রোজ মায়ের সঙ্গে চুড়ি বেচতে যেতেন।

কারণ রমেশের বাঁ পা পোলিয়োয় আক্রান্ত ছিল। বাঁ পায়ে খুব বেশি ভর দিতে পারতেন না তিনি। তা সত্ত্বেও রোজ মায়ের সঙ্গে চুড়ি বেচতে যেতেন।

০৯ ১৬
মহারাষ্ট্রের সোলাপুর জেলার মহাগাঁওয়ে থাকত রমেশের পরিবার। সেখানে একটাই প্রাইমারি স্কুল ছিল। মাকে সাহায্য করার পাশাপাশি স্কুলের পড়াশোনাও চালিয়ে গিয়েছেন তিনি।

মহারাষ্ট্রের সোলাপুর জেলার মহাগাঁওয়ে থাকত রমেশের পরিবার। সেখানে একটাই প্রাইমারি স্কুল ছিল। মাকে সাহায্য করার পাশাপাশি স্কুলের পড়াশোনাও চালিয়ে গিয়েছেন তিনি।

১০ ১৬
২০০৯ সালে তিনি একটি ওপেন ইউনিভার্সিটি থেকে কলাবিদ্যায় স্নাতক হন। তার পর একটি স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন।

২০০৯ সালে তিনি একটি ওপেন ইউনিভার্সিটি থেকে কলাবিদ্যায় স্নাতক হন। তার পর একটি স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করেন।

১১ ১৬
রমেশের আইএএস হওয়ার ইচ্ছা কলেজ জীবন থেকে শুরু হয়। কলেজে পড়ার সময় এক তহশিলদারের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়েছিল। তাঁর থেকেই আইএএস হওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন তিনি।

রমেশের আইএএস হওয়ার ইচ্ছা কলেজ জীবন থেকে শুরু হয়। কলেজে পড়ার সময় এক তহশিলদারের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়েছিল। তাঁর থেকেই আইএএস হওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন তিনি।

১২ ১৬
কিন্তু এই কঠিন পড়াশোনার জন্য অনেকটা সময়ের প্রয়োজন ছিল। চাকরি করে প্রস্তুতি নিতে পারছিলেন না তিনি।

কিন্তু এই কঠিন পড়াশোনার জন্য অনেকটা সময়ের প্রয়োজন ছিল। চাকরি করে প্রস্তুতি নিতে পারছিলেন না তিনি।

১৩ ১৬
তাঁর মা স্বনির্ভর প্রকল্পের আওতায় ব্যবসার জন্য ঋণ নেন। এর পরই চাকরি ছেড়ে পুণে গিয়ে নিজেকে পুরোপুরি ইউপিএসসি-র পড়াশোনায় নিমজ্জিত করে দেন রমেশ।

তাঁর মা স্বনির্ভর প্রকল্পের আওতায় ব্যবসার জন্য ঋণ নেন। এর পরই চাকরি ছেড়ে পুণে গিয়ে নিজেকে পুরোপুরি ইউপিএসসি-র পড়াশোনায় নিমজ্জিত করে দেন রমেশ।

১৪ ১৬
২০১০ সালে তিনি প্রথম এই পরীক্ষায় বসেন। উত্তীর্ণ হতে না পারলেও স্টেট ইনস্টিটিউট অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কেরিয়ার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ফলে থাকার জন্য হস্টেল এবং পড়াশোনার জন্য স্কলারশিপ পান। নিজের দৈনন্দিন খরচাপাতি তোলার জন্য তিনি পোস্টার রং করতেন।

২০১০ সালে তিনি প্রথম এই পরীক্ষায় বসেন। উত্তীর্ণ হতে না পারলেও স্টেট ইনস্টিটিউট অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কেরিয়ার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ফলে থাকার জন্য হস্টেল এবং পড়াশোনার জন্য স্কলারশিপ পান। নিজের দৈনন্দিন খরচাপাতি তোলার জন্য তিনি পোস্টার রং করতেন।

১৫ ১৬
অবশেষে ২০১২ সালে তিনি আইএএস পরীক্ষায় সফল হন। এর কয়েক মাস পরে এমপিএসসি (মহারাষ্ট্র পাবলিক সার্ভিস কমিশন)-এর ফল প্রকাশ হয়। রমেশ সেই পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলেন।

অবশেষে ২০১২ সালে তিনি আইএএস পরীক্ষায় সফল হন। এর কয়েক মাস পরে এমপিএসসি (মহারাষ্ট্র পাবলিক সার্ভিস কমিশন)-এর ফল প্রকাশ হয়। রমেশ সেই পরীক্ষায় প্রথম হয়েছিলেন।

১৬ ১৬
আর্থিক সমস্যা, শারীরিক বাধা সব কিছুকেই ছাপিয়ে গিয়েছে তাঁর দৃঢ় চেতনা। সেই চেতনাতে ভর করে আজ তিনি আইএএস অফিসার।

আর্থিক সমস্যা, শারীরিক বাধা সব কিছুকেই ছাপিয়ে গিয়েছে তাঁর দৃঢ় চেতনা। সেই চেতনাতে ভর করে আজ তিনি আইএএস অফিসার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE