Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
Pakistan-China Relationship

নতুন প্রেমিকের মন রাখতে পর হল পুরনো প্রেমিক! শ্যাম আর কুল দুই-ই কি হারাতে চলেছে পাকিস্তান?

সচেতন ভাবেই হোক, কিংবা ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির বাধ্যবাধকতা, চিন-ঘনিষ্ঠতা ক্রমশ বৃদ্ধি করেছে পাকিস্তান। সমানুপাতিক হারে ওয়াশিংটনের সঙ্গেও দূরত্ব বেড়েছে তাদের।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৫৮
Share: Save:
০১ ১৮
Pakistan reportedly prefers China over US on diplomatic relation

শ্যাম রাখি না কুল! দীর্ঘ দিন এই কূটনৈতিক দোদুল্যমানতায় থাকার পর কি এ বার প্রিয় বন্ধুকে বেছে নিচ্ছে পাকিস্তান? বর্তমানের প্রিয় বন্ধুকে সন্তুষ্ট করতে সাবেক প্রিয় বন্ধুর থেকে ক্রমশ দূরত্বও বাড়িয়ে চলেছে ইসলামাবাদ।

০২ ১৮
Pakistan reportedly prefers China over US on diplomatic relation

যে দুই বন্ধুকে পাকিস্তান এই কিছু দিন আগে পর্যন্তও সমান গুরুত্ব দিয়েছে, তারা হল আমেরিকা এবং চিন। অতীতে বহু আন্তর্জাতিক সঙ্কটে দুই মহাশক্তিধর রাষ্ট্রকে আলোচনার টেবিলে বসাতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নিয়েছে ইসলামাবাদ।

০৩ ১৮
Pakistan reportedly prefers China over US on diplomatic relation

কিন্তু সচেতন ভাবেই হোক, কিংবা ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির বাধ্যবাধকতায়— ক্রমশ বেজিং ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধি করছে পাকিস্তান। সমানুপাতিক হারে ওয়াশিংটনের সঙ্গেও দূরত্ব বাড়ছে তাদের। কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ আবার পাকিস্তানের এই অবস্থানে খুব একটা বুদ্ধিমত্তার ছাপ দেখতে পাচ্ছেন না।

০৪ ১৮
Pakistan reportedly prefers China over US on diplomatic relation

গত মার্চে ১২০টি দেশকে নিয়ে ‘ডেমোক্র্যাসি সামিট’ নামে একটি গণতন্ত্র সংক্রান্ত সম্মেলন হয়। এই সম্মেলনের সহ-উদ্যোক্তা ছিল আমেরিকা। পাকিস্তানকে এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হলেও, তারা তা প্রত্যাখ্যান করে।

০৫ ১৮
Pakistan reportedly prefers China over US on diplomatic relation

কানাঘুষোয় শোনা যায়, তাইওয়ানকে ওই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানোর প্রতিবাদেই পাকিস্তানের এই আমন্ত্রণ বয়কটের সিদ্ধান্ত। প্রসঙ্গত, তাইওয়ানকে চিন নিজেদের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে দাবি করে। সরকারি ভাবে আমেরিকা এবং পাকিস্তানও তা-ই মনে করে। যদিও তাইওয়ানের ‘স্বাধিকার’কে সর্বদাই গুরুত্ব দেয় জো বাইডেনের দেশ।

০৬ ১৮
Pakistan reportedly prefers China over US on diplomatic relation

তবে একটি সম্মেলনে গরহাজির থাকলেও পাকিস্তানকে নিয়ে তেমন শোরগোল পড়েনি। সেটা পড়ল পাকিস্তান কিছু দিন আগেই চিনের একটি গণতন্ত্র সংক্রান্ত সম্মেলনে যোগ দেওয়ার পর। গত সপ্তাহেই বেজিং এবং চিনা দ্বীপ হাইনানে ‘ডেমোক্র্যাসি: শেয়ারড হিউম্যান ভ্যালুজ়’ নামে একটি সম্মেলন হয়।

০৭ ১৮
Pakistan reportedly prefers China over US on diplomatic relation

আন্তর্জাতিক এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকে পাকিস্তান। ইসলামাবাদের এই সিদ্ধান্ত তাদের বেজিং ঘেঁষা কূটনৈতিক অবস্থানকে আরও স্পষ্ট করে দিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

০৮ ১৮
Pakistan reportedly prefers China over US on diplomatic relation

অথচ ১৯৭১ সালে আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে সম্পর্ক ‘স্বাভাবিক’ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিল পাকিস্তান। ১৯৫৪ সালে পাকিস্তান আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট সিয়াটোয় যোগ দেয়। তবে এই ঘটনায় যাতে চিন অসন্তুষ্ট না হয়, তার জন্য বেজিংকে ইসলামাবাদ জানায়, দু’পক্ষের সম্পর্ক আগের মতোই থাকবে।

০৯ ১৮
Pakistan reportedly prefers China over US on diplomatic relation

১৯৫৫ সালের বান্দুং সম্মেলনে যোগ দিল জওহরলাল নেহরুর জোটনিরপেক্ষ নীতির সমর্থক দেশগুলি। সেই সম্মেলনে পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মহম্মদ আলি বোগরা চিনের তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রধান চৌ এন লাইকে জানালেন, আমেরিকার সঙ্গে তাদের জোট চিনের বিরুদ্ধে নয়। সবটাই ভারত-বিরোধিতার জন্য।

১০ ১৮
Pakistan reportedly prefers China over US on diplomatic relation

ইসলামাবাদের জবাবে সন্তুষ্ট বেজিং আমেরিকার বিদেশনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলে গেলেও পাকিস্তানের কোনও প্রকাশ্য সমালোচনা করেনি। ১৯৬২ সালের ভারত-চিন যুদ্ধে আরও কাছাকাছি এল বেজিং এবং ইসলামাবাদ। ভারত-বিরোধিতা এই নিবিড় বন্ধুত্বকে আরও সহায়ক করে তুলেছিল।

১১ ১৮
Pakistan reportedly prefers China over US on diplomatic relation

১৯৬৫ সালের ভারত-পাক যুদ্ধে চিন ইসলামাবাদকে সাহায্য করল। এই সময়ে পাকিস্তান আমেরিকাকে বার্তা দিল যে, তাদের সঙ্গে চিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ওয়াশিংটনের স্বার্থকে বিপদে ফেলবে না।

১২ ১৮
Pakistan reportedly prefers China over US on diplomatic relation

ভিয়েতনাম থেকে সেনা সরানোর জন্য চিন আমেরিকার বিরুদ্ধে সরব হলেও মুখে কুলুপ এঁটে রইল বেজিং-বন্ধু পাকিস্তান। একই সময়ে আমেরিকার ‘প্ররোচনা’ সত্ত্বেও তাইওয়ানকে চিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে মেনে নিল ইসলামাবাদ।

১৩ ১৮
Pakistan reportedly prefers China over US on diplomatic relation

বর্তমানে পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের কর্তাদের একাংশের দাবি, গণতন্ত্রের অভাবের কথা বলে আমেরিকা বিভিন্ন দেশের সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ করছে। ইসলামাবাদের ‘একপেশে’ বিদেশনীতির সমালোচকদের আবার বক্তব্য, পাকিস্তানের কোনও আপত্তি থাকলে তা সম্মেলনে হাজির হয়েই বলা যেত।

১৪ ১৮
Pakistan reportedly prefers China over US on diplomatic relation

এ ক্ষেত্রে ভারতের উদাহরণও টেনেছে তারা। আমেরিকার গণতন্ত্র সংক্রান্ত সম্মেলনে গিয়েও তারা যৌথ ঘোষণাপত্রের তিনটি অনুচ্ছেদ নিয়ে আপত্তি জানিয়ে নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরেছে।

১৫ ১৮
Pakistan reportedly prefers China over US on diplomatic relation

তবে অনেকেই মনে করছেন, অর্থনৈতিক সঙ্কটে ভোগা পাকিস্তান অনেকাংশেই চিনের উপরে নির্ভরশীল। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে পাকিস্তানে মোটা টাকা বিনিয়োগ করেছে চিন। এই নিয়ে পাকিস্তানের একাংশে ক্ষোভ-বিক্ষোভও কম নেই।

১৬ ১৮
Pakistan reportedly prefers China over US on diplomatic relation

পাকিস্তানের বৃহত্তম প্রদেশ বালুচিস্তান প্রাকৃতিক ভাবে সবচেয়ে সম্পদশালী। কিন্তু ধীরে ধীরে তা বেহাত হয়ে যাচ্ছে বালোচ নাগরিকদের। ‘চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডর’ (সিপিইসি) তৈরির পরে গত কয়েক বছরে সেই লুট আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ। তার পরেই বালুচিস্তানে তো বটেই, পাকিস্তানের অন্যত্র চিনা নাগরিকদের লক্ষ্য করে হামলার ঘটনা বেড়েছে।

১৭ ১৮
Pakistan reportedly prefers China over US on diplomatic relation

অন্য দিকে, পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদ বন্ধে দৃঢ় অবস্থান নেওয়ার দাবি জানিয়ে এসেছে আমেরিকা। আবার ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চিনা ‘আগ্রাসন’ বন্ধে গত কয়েক বছরে ভারত নির্ভরতা ক্রমশ বাড়িয়েছে আমেরিকা।

১৮ ১৮
Pakistan reportedly prefers China over US on diplomatic relation

তবে পাকিস্তানের ‘চিননির্ভর’ বিদেশনীতির সাফল্য নিয়ে সন্দিহান সে দেশের অনেকেই। চিনা ঋণনীতির ফাঁদে পড়ে পাকিস্তান তার অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা নষ্ট করতে চলেছে কি না, কিংবা পরবর্তী কালে আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে দৌত্য করে বিশেষ কিছু আদায় করার সুবিধা থেকে ইসলামাবাদ বঞ্চিত হল কি না, সেই প্রশ্ন তুলছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE