Radha Vembu Zoho Co-founder from Middle-Class Family Who Became One of the World’s Top Billionaires according to Hurun India and Forbes dgtl
India’s one of the Richest Woman
ছিমছাম পোশাক, নেই সাজের বাহার, মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে কী ভাবে ৫৩ হাজার ৩০০ কোটির মালিক হলেন রাধা?
অভাবী ঘরে জন্ম। স্বপ্ন ছিল নিজের চেষ্টায় সফল হওয়ার। প্রচারের আলো থেকে সদা দূরে থাকতে পছন্দ করেন উদ্যোগপতি রাধা ভেম্বু। কর্মক্ষেত্রে সফল হওয়ার পাশাপাশি তিনি একজন স্ত্রী, একজন মা-ও বটে!
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:৪৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
কথায় আছে ‘যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে’। মহিলারা যে সমাজে কোনও ক্ষেত্রেই পিছিয়ে নেই তার প্রমাণ হামেশাই মেলে। ভারতের ধনী মহিলাদের তালিকায় সাবিত্রী জিন্দল, বিনোদ রাই গুপ্ত, রেখা ঝুনঝুনওয়ালা-সহ আরও বেশ কিছু নাম রয়েছে। কিন্তু জানলে অবাক হবেন, এমন এক মহিলা রয়েছেন যিনি প্রচারের আলো থেকে নিজেকে দূরে রাখলেও ভারতের স্বোপার্জিত ধনী মহিলাদের তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে।
০২১৭
তিনি রাধা ভেম্বু। একেবারে সাদাসিধে দেখতে এক মহিলা। আপাতদৃষ্টিতে দেখে ধরতেই পারবেন না যে ইনি বর্তমানে ভারতের অন্যতম ধনী মহিলা। যিনি কুঁড়েঘর থেকে উঠে এসে নিজের চেষ্টায় অর্থাৎ তথাকথিত কোনও রকম ‘গডফাদার’ ছাড়াই আজ কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির মালকিন হয়েছেন।
০৩১৭
একটি প্রতিবেদন সূত্রে, ২০২৩ সালের ফোর্বসের ‘রিয়্যাল টাইম রিচ’ তালিকা অনুযায়ী, রাধার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ২.৬ কোটি ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ২১,৪৫৫ কোটি টাকা। ২০২৫ সালের হুরুন ইন্ডিয়া তালিকা অনুযায়ী, তার আনুমানিক সম্পদের পরিমাণ ৫৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা।
০৪১৭
১৯৭২ সালে তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে জন্ম রাধার। পরিবার বলতে বাবা, মা এবং দুই ভাই। বাবা মাদ্রাজ হাই কোর্টে সামান্য এক কেরানি ছিলেন। খুব অল্প আয় দিয়েই কোনও মতে সংসার চলত।
০৫১৭
ছোট থেকেই মেধাবী ছিলেন রাধা। পড়াশোনার প্রতি একাগ্রতা ছিল তাঁর। সব সময়ই চেষ্টা ছিল বাবার উপর ভরসা করে নয়, নিজের চেষ্টায় কিছু করার। চেন্নাইয়ের হাই স্কুল থেকে পাশ করে মেধার ভিত্তিতে সুযোগ পান আইআইটি (ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলি) মাদ্রাজে।
০৬১৭
স্নাতক স্তরে পড়তে পড়তেই অর্থ উপার্জনের নেশা চাপে রাধার। তবে কোনও ছোটখাটো চাকরি করতে নারাজ ছিলেন তিনি। বাবাকে দেখে তাঁর মনে হয়েছিল, চাকরি নয়, বেশি উপার্জনের জন্য কোনও ব্যবসা করতে হবে।
০৭১৭
কিন্তু কী ভাবে ব্যবসা শুরু করবেন? তেমন পুঁজিও যে নেই। কোনও উচ্চবিত্ত আত্মীয়-বন্ধুরও নেই, যিনি সাহায্য করতে পারেন। তার উপর আবার মেয়ে হয়ে ব্যবসা! হাজারো প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়েছে রাধাকে।
০৮১৭
তবুও নিজের সিদ্ধান্তে অনড় ছিলেন। দুই ভাইকে (শ্রীধর ভেম্বু এবং শেখর ভেম্বু) সঙ্গে নিয়ে তৈরি করেন নিজের সংস্থা। সাল ১৯৯৬, সংস্থার নাম দেন ‘জোহো কর্পোরেশন’।
০৯১৭
কারও থেকে কোনও অর্থনৈতিক সাহায্য নেননি রাধা। ছোট থেকেই অল্প অল্প করে টাকা জমাতে শুরু করেন। তা দিয়েই শুরু করেছিলেন এই ব্যবসা। প্রথম দিকে এই সংস্থা সফ্টঅয়্যার ও ক্লাউডভিত্তিক সলিউশন বিক্রি করত।
১০১৭
কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশিই ব্যবসার কাজ শুরু করেন রাধা। দু’টি দিকই দক্ষতার সঙ্গে সামলেছিলেন তিনি। কলেজে পড়া মেয়েটি সে সময় থেকেই নিজের সংস্থাকে বড় করার স্বপ্ন বুনেছিলেন।
১১১৭
কলেজ পাশ করে আর কোনও দিকে নজর দেননি রাধা। দিনরাত ‘জোহো’কে বড় করার লক্ষ্যে এগিয়ে গিয়েছেন। এক সময় সংস্থার কর্মী বলতে ছিলেন তিন জন। রাধা ও তাঁর দুই ভাই। আজ সেই সংস্থাই হাজার হাজার মানুষের আয়ের জোগান দেয়।
১২১৭
বর্তমানে ‘জোহো’র মূল কার্যালয় রয়েছে চেন্নাই ও বেঙ্গালুরু শহরে। তবে আরও একটি প্রধান কার্যালয় রয়েছে টেক্সাসের অস্টিনে। অর্থাৎ, এই সংস্থার পরিধি ছাড়িয়েছে বিশ্বব্যাপী।
১৩১৭
প্রায় ন’টি দেশে ছড়িয়ে রয়েছে ‘জোহো’। ভারত, আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, জাপান, চিন, অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকো, নেদারল্যান্ডস এবং আবু ধাবিতে ‘জোহো’র কার্যালয় রয়েছে।
১৪১৭
তিন জন মিলে ‘জোহো’র কাজ শুরু করলেও সবচেয়ে বেশি অংশীদারি রাধারই। সংস্থায় ৪৭.৮ শতাংশ ভাগ রয়েছে তাঁর। শেখর রয়েছেন ৩৫.২ শতাংশ অংশীদারি নিয়ে। আর এক ভাই শ্রীধরের পাঁচ শতাংশ ভাগ রয়েছে।
১৫১৭
রাজেন্দ্রন দণ্ডপাণি নামে এক ব্যক্তিকে বিয়ে করেছেন রাধা। তাঁদের এক পুত্রসন্তান রয়েছে। রাজেন্দ্রন রাধার সংস্থাতেই কর্মরত। ডিরেক্টর অফ ইঞ্জিনিয়ারিং পদে কাজ করেন তিনি। রাধার স্বামী হওয়া সত্ত্বেও ‘জোহো’র রাজস্বে লিখিত ভাবে অংশীদার নন রাজেন্দ্রন।
১৬১৭
জনসেবামূলক কাজের সঙ্গেও যুক্ত রাধা। তিনি জানকী হাই-টেক অ্যাগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি কৃষি এনজিওর পাশাপাশি হাইল্যান্ড ভ্যালি কর্পোরেশন প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি রিয়্যাল এস্টেট সংস্থার পরিচালকও।
১৭১৭
এখনও নিয়মিত চেন্নাইয়ের অফিসে যান তিনি। পরনে থাকে ছাপা শাড়ি, মুখে প্রসাধনীর লেশমাত্র চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায় না। প্রচারবিমুখ মানুষটি সংসার এবং কাজ নিয়েই এগিয়ে চলেছেন।