Reaction of co-actor in a film scene changed actress’s life, her first husband allegedly had affair with her younger sister dgtl
Lalita Pawar
বোনের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়েছিলেন প্রথম স্বামী! সহ-অভিনেতার কাছে চড় খেয়ে মুখের গঠন বদলে গিয়েছিল ‘মন্থরা’র
হিন্দি ভাষার ছবির পাশাপাশি মরাঠি এবং গুজরাতি ভাষার ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন নায়িকা। কম সময়ের মধ্যে ইন্ডাস্ট্রিতে জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এই সিনেমার কারণেই তাঁর জীবনে কালো মেঘ ঘনিয়ে এসেছিল।
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০২৫ ১৩:৪৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
সাত দশকের কেরিয়ারে ঝুলিতে ভরে ছিলেন ৭০০টিরও বেশি ছবি। পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। নাম উঠেছে গিনেস বুকেও। বড় পর্দায় প্রচুর অভিনয় করলেও নায়িকাকে দর্শক মনে রেখে দিয়েছেন ‘রামায়ণ’-এর মন্থরা হিসাবে। এই চরিত্রাভিনেত্রী ললিতা পওয়ারের জীবনকাহিনি শুনে চোখে জল আসতে বাধ্য।
০২১৮
১৯১৬ সালের এপ্রিল মাসে নাসিকের এক রক্ষণশীল পরিবারে ললিতার জন্ম। রেশম এবং সুতির কাপড়ের ব্যবসায়ী ছিলেন তাঁর বাবা লক্ষ্মণ রাও শগুন। ললিতার প্রকৃত নাম ছিল অম্বা লক্ষ্মণ রাও শগুন। পরে অভিনয়জগতে এসে ললিতা নামেই পরিচিত হয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
০৩১৮
ছোটবেলা থেকে অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ ছিল ললিতার। ন’বছর বয়সে প্রথম অভিনয় করেছিলেন তিনি। ১৯২৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘রাজা হরিশ্চন্দ্র’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল ললিতাকে।
০৪১৮
চল্লিশের দশকে নির্বাক চলচ্চিত্রের অন্যতম নায়িকা হয়ে উঠেছিলেন ললিতা। হিন্দি ভাষার ছবির পাশাপাশি মরাঠি এবং গুজরাতি ভাষার ছবিতেও অভিনয় করেছিলেন তিনি। কম সময়ের মধ্যে ইন্ডাস্ট্রিতে জনপ্রিয় হয়ে গিয়েছিলেন ললিতা। কিন্তু এই সিনেমার কারণেই তাঁর জীবনে কালো মেঘ ঘনিয়ে এসেছিল।
০৫১৮
১৯৪২ সালে শুটিং চলছিল ‘জঙ্গ-এ-আজ়াদি’ নামের একটি হিন্দি ছবির। এই ছবিতে নায়িকা ললিতার সহ-অভিনেতা ছিলেন ভগবান দাদা। চিত্রনাট্য অনুযায়ী সেই ছবির একটি দৃশ্যে ললিতাকে চড় মারার কথা ছিল ভগবান দাদার। এই দৃশ্যের শুটিং করতে গিয়েই ঘটে যায় অনর্থ।
০৬১৮
বলিপাড়ার একাংশের দাবি, বুঝতে না পেরে প্রয়োজনের তুলনায় জোরেই ললিতাকে আঘাত করে ফেলেছিলেন ভগবান দাদা। তাঁর চড় সপাটে এসে পড়েছিল ললিতার গালে। সঙ্গে সঙ্গে যন্ত্রণায় কুঁকড়ে গিয়েছিলেন নায়িকা।
০৭১৮
বলিউড সূত্রে জানা যায়, চড়ের আঘাত সহ্য করতে পারেননি ললিতা। আঘাত পেয়ে তাঁর মুখের এক দিক প্রায় অসাড় হয়ে গিয়েছিল। ‘ফেসিয়াল নার্ভ’ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল ললিতার।
০৮১৮
মুখের পাশাপাশি বাঁ চোখেও আঘাত লেগেছিল ললিতার। তিন বছর ধরে ললিতার চোখের চিকিৎসা চলেছিল। দৃষ্টিশক্তি বেঁচে গেলেও চোখের ক্ষত থেকে গিয়েছিল ললিতার আজীবনের সঙ্গী হয়ে। মুখের গঠনের পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় তার প্রভাব এসে পড়েছিল ললিতার কেরিয়ারেও।
০৯১৮
বলিপাড়া সূত্রে খবর, চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর মুখ্যচরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ললিতার। তাঁর জন্য নির্ধারিত হয়ে গিয়েছিল খলনায়িকার ভূমিকা।
১০১৮
অধিকাংশ সময় ললিতাকে দজ্জাল শাশুড়ির ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা যেত। তাঁর একপেশে ভাবমূর্তি ভেঙেছিলেন পরিচালক হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়। তাঁর ছবিতে ললিতাকে পাওয়া গিয়েছিল মমতাময়ী রূপে।
১১১৮
কেরিয়ারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনও খুব একটা সুখকর ছিল না ললিতার। ললিতার প্রথম স্বামী ছিলেন গণপতরাও পওয়ার। কিন্তু তাঁর সঙ্গে সংসার বেশি দিন টেকেনি নায়িকার।
১২১৮
কানাঘুষো শোনা যায় যে, ললিতার বোনের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন গণপতরাও। স্বামী এবং বোনের এই বিশ্বাসঘাতকতা মানতে পারেননি ললিতা। তাই বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নায়িকা।
১৩১৮
বিবাহবিচ্ছেদের পর আবার সংসার পেতেছিলেন ললিতা। প্রযোজক রাজপ্রকাশ গুপ্তকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। বিয়ের পর দুই পুত্রের জন্ম দিয়েছিলেন ললিতা।
১৪১৮
১৯৬১ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল ‘সম্পূর্ণ রামায়ণ’। এই ছবিতে ললিতাকে দেখা গিয়েছিল মন্থরার ভূমিকায়। বক্স অফিসে চূড়ান্ত সফল হয়েছিল এই ছবি।
১৫১৮
মন্থরার চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকমনে জায়গা করে নিয়েছিলেন ললিতা। পরে আশির দশকের শেষে ছোট পর্দায় সম্প্রচার শুরু হয়েছিল রামানন্দ সাগরের ‘রামায়ণ’ ধারাবাহিকের। এই ধারাবাহিকেও মন্থরার চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল ললিতাকে। এই চরিত্রের জন্য ললিতা ছাড়া অন্য কারও কথা নাকি ভাবতেই পারেননি ধারাবাহিক নির্মাতারা।
১৬১৮
‘রামায়ণ’-এর মন্থরা হিসাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন ললিতা। তবে শুধুমাত্র অভিনয়ই নয়, প্রযোজনার কাজও সামলাতে দেখা গিয়েছিল ললিতাকে। ১৯৩১ সালে মুক্তি পাওয়া নির্বাক ছবি ‘কৈলাস’-এর সহ-প্রযোজক ছিলেন তিনি। ১৯৩৮ সালে তাঁর প্রযোজনায় ‘দুনিয়া ক্যায়া হ্যায়’ নামের একটি হিন্দি ছবি মুক্তি পেয়েছিল।
১৭১৮
১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ভাই’ নামের একটি হিন্দি ছবিতে শেষ অভিনয় দেখা গিয়েছিল ললিতার। তার পর আর অভিনয় করেননি তিনি। মুম্বইয়ের জুহুতে স্বামী, সন্তান এবং নাতি-নাতনিদের সঙ্গে থাকতেন ললিতা।
১৮১৮
অসুস্থতার কারণে মুম্বই থেকে পুণে চলে গিয়েছিলেন ললিতা। মুখে ক্যানসার ধরা পড়েছিল তাঁর। ১৯৯৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন ললিতা। ফুরিয়ে যায় ‘মন্থরা-কাহিনি’।