Scammers posing as fertility specialists are exploiting women with false pregnancy claims dgtl
miracle pregnancy scam
বন্ধ্যাত্ব থেকে মুক্তি পেতে নকল মাতৃত্বের ফাঁদে পা! অলৌকিক চিকিৎসায় ১৫ মাস ধরে ‘গর্ভবতী’
নারীরা সন্তানের জন্ম দিতে পারছেন না তাঁদের উপর সামাজিক চাপ যথেষ্ট। বন্ধ্যাত্বের কলঙ্ক এড়াতে তাঁদের অনেকেই মরিয়া হয়ে এই ব্যবস্থা অবলম্বন করছেন।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ১১:৫৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৪
মাতৃত্ব নিয়ে দুর্নীতি। সন্তানসুখ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার ব্যবসা ফেঁদে বসেছে জালিয়াতেরা। ভুয়ো চিকিৎসক সেজে একের পর অবৈধ ক্লিনিক তৈরি করে রমরমা ব্যবসা শুরু হয়েছে নাইজিরিয়া জুড়ে।
০২১৪
বিবিসির একটি সাম্প্রতিক রিপোর্টে উঠে এসেছে, মাতৃত্ব নিয়ে জালিয়াতি চক্র চলছে আফ্রিকার ওই দেশে। জালিয়াতেরা ‘অলৌকিক চিকিৎসা’র প্রতিশ্রুতি দিয়ে মহিলাদের, বিশেষত যাঁরা সন্তান ধারণে অক্ষম, তাঁদের প্রলুব্ধ করছে।
০৩১৪
এই সব মহিলা সন্তানের আশায় মোটা টাকা দিয়ে এই ফাঁদে পা দিচ্ছেন বলে বিবিসির রিপোর্টে বলা হয়েছে। অবৈধ ক্লিনিকগুলোতে মিথ্যা গর্ভধারণের মাধ্যমে মহিলাদের আর্থিক ও শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করা হচ্ছে। ক্লিনিকগুলির মাধ্যমে শিশু পাচারের ব্যবসা চলছে বলেও অভিযোগ।
০৪১৪
বিবিসি আফ্রিকার একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাইজিরিয়ায় এমন একটি চক্রের সন্ধান মিলেছে যারা সন্তানধারণে অক্ষম সেই সব মহিলাদের সঙ্গে প্রতারণা চালিয়ে আসছে।
০৫১৪
নাইজিরিয়ার এমনিতেই জন্মহার উঁচুর দিকে। তাই যে সব নারী সন্তানের জন্ম দিতে পারছেন না, তাঁদের উপর সামাজিক চাপ যথেষ্ট। বন্ধ্যাত্বের কলঙ্ক এড়াতে তাঁদের অনেকেই মরিয়া হয়ে এই সব ক্লিনিকের শরণাপন্ন হচ্ছেন।
০৬১৪
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিবিসির পক্ষ থেকে দু’জন দম্পতি সেজে সেই অসাধু চক্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ক্লিনিকের পক্ষ থেকে তাঁদের বলা হয় একটি গোপন চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে মহিলাদের গর্ভবতী করা সম্ভব।
০৭১৪
চিকিৎসা করাতে ইচ্ছুক মহিলাদের একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। নির্দিষ্ট একটি পানীয় খাওয়ানো হয়। এর পর তাঁদের শরীরে কিছু তরলও প্রবেশ করানো হয় বলে জানা গিয়েছে।
০৮১৪
এই সব পদার্থ শরীরে যাওয়ার ফলে স্ফীতোদর তৈরি হয় এবং এতেই বোঝানো হয় তাঁরা গর্ভবতী। ভুয়ো চিকিৎসকেরা এই মহিলাদেরও গর্ভাবস্থা পরীক্ষা করাতে হাসপাতালে যেতে বা অন্য পরীক্ষা করাতেও নিষেধ করেন বলে বিবিসি জানিয়েছে।
০৯১৪
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সব অবৈধ ক্লিনিকে আসা মহিলারা প্রায় ১৫ মাস ধরে গর্ভে সন্তান ধারণ করেছিলেন বলে দাবি করেছেন। কারণ তাঁদের বিশ্বাস করানো হয়েছিল, যে ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি তাঁদের উপর প্রয়োগ করা হয়েছে তা অলৌকিক। তাই এতটা সময় ধরে তাঁদের সন্তান বহন করতে হবে।
১০১৪
নকল প্রসবের সময় নির্ধারিত করার পর মহিলাদের বিরল এবং ব্যয়বহুল ওষুধ কিনতে বলা হয়। ক্লিনিকের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, এই সব ওষুধ ছাড়া প্রসব করানো সম্ভব হবে না। দম্পতি ওষুধের জন্য টাকা দিতে সম্মত হলে জাল চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচারের নামে মহিলাকে অজ্ঞান করেন।
১১১৪
প্রসব করানোর অছিলায় মহিলাদের শরীরে অস্ত্রোপচারের মতো একটি চিহ্ন তৈরি করে দেন ভুয়ো চিকিৎসকেরা। এই ধরনের মাতৃত্ব যাঁরা অনুভব করেছেন তাঁরা বলেছেন, এই সময়ে এমন একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয় যাতে তাঁরা আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন।
১২১৪
সেই সময় তাঁদের বিশ্বাস করানো হয় যে তাঁরা যেন সত্যিই সন্তান প্রসব করছেন। এই সব জাল ক্লিনিকগুলিতে সরকারি ধরপাকড় অভিযান চালানোর পর আরও একটি ভয়ঙ্কর সত্য সামনে এসেছে, যা হল শিশু কেনাবেচা।
১৩১৪
নকল প্রসূতিদের সন্তান হিসাবে যাদের হাজির করা হয় সেই শিশুগুলিকে অন্য মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে আনা হয় বলে দাবি করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। পুলিশি অভিযানের পরে ক্লিনিকগুলি থেকে কয়েক জন মহিলাকে উদ্ধার করা হয়। অভিযোগ, এঁদের আটকে রাখা হয়েছিল। এঁদের মধ্যে কয়েক জন নাবালিকা।
১৪১৪
এই মহিলাদের থেকে নবজাতকদের কেড়ে নেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ। এই নবজাতকদেরই প্রসূতি মহিলাদের সন্তান হিসাবে উপস্থাপন করা হয়। প্রতারকেরা সাধারণত আর্থিক ভাবে দুর্বল, অল্পবয়সি মেয়েদের টাকার টোপ দিয়ে তাঁদের সন্তান বিক্রিতে বাধ্য করে বলে জানা গিয়েছে।