Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Serial Killer

Serial Killer: রাত ৮টায় শুরু হত প্রস্তুতি, খুন করে টুকরো টুকরো শরীর শহরময় ছড়িয়ে দিত খুনি

পরবাসে ‘আশ্রয়’ পেয়ে চাকরি করতে আসা তরুণ যখন নিশ্চিন্ত, আচমকাই একদিন নির্মম ভাবে হত্যা করা হত তাঁকে।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২২ ১৮:৪৪
Share: Save:
০১ ১৩
‘শিকার’ ধরার পর তাকে পরম যত্নে নিজের কাছে রাখত চন্দ্রকান্ত ঝা। চাকরির ব্যবস্থা করে দিত। নিজের বাড়িতেই থাকতে দিত। এমনকি, দু’বেলা ভরপেট খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থাও করত সেই। সন্তানকে যেমন বাবা-মা আগলে রাখেন, চন্দ্রকান্ত ঠিক তেমনই তার ‘শিকার’কে চোখের আড়াল হতে দিত না।

‘শিকার’ ধরার পর তাকে পরম যত্নে নিজের কাছে রাখত চন্দ্রকান্ত ঝা। চাকরির ব্যবস্থা করে দিত। নিজের বাড়িতেই থাকতে দিত। এমনকি, দু’বেলা ভরপেট খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থাও করত সেই। সন্তানকে যেমন বাবা-মা আগলে রাখেন, চন্দ্রকান্ত ঠিক তেমনই তার ‘শিকার’কে চোখের আড়াল হতে দিত না।

০২ ১৩
পরবাসে এমন ‘আশ্রয়’ পেয়ে চাকরি করতে আসা তরুণ যখন নিশ্চিন্ত, আচমকাই একদিন নির্মম ভাবে হত্যা করা হত তাঁকে। তাঁর হাত, পা, শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ টুকরো টুকরো করে কেটে দিল্লি শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিয়ে আসত চন্দ্রকান্ত।

পরবাসে এমন ‘আশ্রয়’ পেয়ে চাকরি করতে আসা তরুণ যখন নিশ্চিন্ত, আচমকাই একদিন নির্মম ভাবে হত্যা করা হত তাঁকে। তাঁর হাত, পা, শরীরের অন্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ টুকরো টুকরো করে কেটে দিল্লি শহরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে দিয়ে আসত চন্দ্রকান্ত।

০৩ ১৩
খুনের পরের এই কৌশলই ছিল চন্দ্রকান্তের সবচেয়ে বড় ঢাল। এই চালাকির জন্যই পুলিশ খুঁজে পেত না কাকে খুন করা হয়েছে। চন্দ্রকান্তের বিরুদ্ধে থাকত না কোনও প্রমাণ। ফলে সন্দেহের বশে ধরা পড়েও প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেয়ে যেত খুনি চন্দ্রকান্ত।

খুনের পরের এই কৌশলই ছিল চন্দ্রকান্তের সবচেয়ে বড় ঢাল। এই চালাকির জন্যই পুলিশ খুঁজে পেত না কাকে খুন করা হয়েছে। চন্দ্রকান্তের বিরুদ্ধে থাকত না কোনও প্রমাণ। ফলে সন্দেহের বশে ধরা পড়েও প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেয়ে যেত খুনি চন্দ্রকান্ত।

০৪ ১৩
সব মিলিয়ে ১৪টি এফআইআর আর ৭টি খুনের মামলা দায়ের হয় চন্দ্রকান্তের নামে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটিতে কয়েক বছর জেল খেটেই ছাড়া পেয়ে যায় সে। তবে চারটি খুনের মামলায় তাকে ফাঁসির নির্দেশ দেয় দিল্লি কোর্ট। যদিও ফাঁসির নির্দেশ পেয়েও বিশেষ বিকার দেখা যায়নি দিল্লির এই সিরিয়াল কিলারের। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, কোর্টে চন্দ্রকান্তকে দেখে মনে হচ্ছিল খুন করার জন্য বিন্দুমাত্র অপরাধবোধ নেই তার।

সব মিলিয়ে ১৪টি এফআইআর আর ৭টি খুনের মামলা দায়ের হয় চন্দ্রকান্তের নামে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটিতে কয়েক বছর জেল খেটেই ছাড়া পেয়ে যায় সে। তবে চারটি খুনের মামলায় তাকে ফাঁসির নির্দেশ দেয় দিল্লি কোর্ট। যদিও ফাঁসির নির্দেশ পেয়েও বিশেষ বিকার দেখা যায়নি দিল্লির এই সিরিয়াল কিলারের। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, কোর্টে চন্দ্রকান্তকে দেখে মনে হচ্ছিল খুন করার জন্য বিন্দুমাত্র অপরাধবোধ নেই তার।

০৫ ১৩
দিল্লির এই ‘সিরিয়াল কিলার’ একসময়ে ত্রাস তৈরি করেছিল রাজধানীতে। তার শিকার হতেন বিহার বা উত্তরপ্রদেশ থেকে চাকরির খোঁজে দিল্লিতে আসা তরুণেরা।

দিল্লির এই ‘সিরিয়াল কিলার’ একসময়ে ত্রাস তৈরি করেছিল রাজধানীতে। তার শিকার হতেন বিহার বা উত্তরপ্রদেশ থেকে চাকরির খোঁজে দিল্লিতে আসা তরুণেরা।

০৬ ১৩
চন্দ্রকান্ত নিজেও বিহারের মাধেপুরা জেলার ঘোষাই গ্রাম থেকে এসেছিল দিল্লিতে। ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়াশোনা করে ১৯৮৬ সালে সে দিল্লি আসে সব্জি মান্ডিতে শ্রমিকের  কাজ করতে।

চন্দ্রকান্ত নিজেও বিহারের মাধেপুরা জেলার ঘোষাই গ্রাম থেকে এসেছিল দিল্লিতে। ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়াশোনা করে ১৯৮৬ সালে সে দিল্লি আসে সব্জি মান্ডিতে শ্রমিকের কাজ করতে।

০৭ ১৩
শোনা যায় বিহার থেকে দিল্লিতে আসার পর বিভিন্ন সময়ে দিল্লি পুলিশের হাতে হেনস্তা হতে হয়েছিল চন্দ্রকান্তকে। দিল্লি পুলিশের উপর তার মাত্রাছাড়া ঘৃণা থেকেই একের পর এক খুন করতে শুরু করে সে। দিল্লির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উদ্ধার হওয়া নিহতদের শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের পাশে এই মর্মে বেশ কয়েকটি চিরকুটও পেয়েছিল পুলিশ।

শোনা যায় বিহার থেকে দিল্লিতে আসার পর বিভিন্ন সময়ে দিল্লি পুলিশের হাতে হেনস্তা হতে হয়েছিল চন্দ্রকান্তকে। দিল্লি পুলিশের উপর তার মাত্রাছাড়া ঘৃণা থেকেই একের পর এক খুন করতে শুরু করে সে। দিল্লির বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উদ্ধার হওয়া নিহতদের শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গের পাশে এই মর্মে বেশ কয়েকটি চিরকুটও পেয়েছিল পুলিশ।

০৮ ১৩
এই চন্দ্রকান্তের নিজের পরিবারও ছিল। দু’বার বিয়ে করে সে। দ্বিতীয় স্ত্রী-র পাঁচ কন্যা রয়েছে। যদিও চন্দ্রকান্ত বরাবরই পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখত। আলাদা বাড়িতে থাকত সব সময়ে। আলিপুরে থাকত পরিবার। চন্দ্রকান্তের আস্তানা ছিল হায়দার পুরের জেজে কলোনিতে। এই বাড়িত ‘শিকার’দের লালন করত সে।

এই চন্দ্রকান্তের নিজের পরিবারও ছিল। দু’বার বিয়ে করে সে। দ্বিতীয় স্ত্রী-র পাঁচ কন্যা রয়েছে। যদিও চন্দ্রকান্ত বরাবরই পরিবারের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রাখত। আলাদা বাড়িতে থাকত সব সময়ে। আলিপুরে থাকত পরিবার। চন্দ্রকান্তের আস্তানা ছিল হায়দার পুরের জেজে কলোনিতে। এই বাড়িত ‘শিকার’দের লালন করত সে।

০৯ ১৩
খুন করার জন্য সামান্য ছুতোই যথেষ্ট ছিল। সিগারেট খাওয়া, মদ খাওয়া, আমিষ খাওয়া এমনকি, বিছানায় শুয়ে থাকার মতো অ-কারণও হয়ে উঠত বড় কারণ। যা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আরও মারাত্মক আকার নিত।

খুন করার জন্য সামান্য ছুতোই যথেষ্ট ছিল। সিগারেট খাওয়া, মদ খাওয়া, আমিষ খাওয়া এমনকি, বিছানায় শুয়ে থাকার মতো অ-কারণও হয়ে উঠত বড় কারণ। যা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে আরও মারাত্মক আকার নিত।

১০ ১৩
রাত ৮টায় মাথায় খুন চাপত চন্দ্রকান্তের। ওই সময়েই শুরু হত খুনের প্রস্তুতি! ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত  চন্দ্রকান্ত যত খুন করেছে, পুলিশ তদন্ত করে জেনেছে, তার প্রত্যেকটিই শুরু হয়েছে ওই সময়ের আশপাশে।

রাত ৮টায় মাথায় খুন চাপত চন্দ্রকান্তের। ওই সময়েই শুরু হত খুনের প্রস্তুতি! ১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত চন্দ্রকান্ত যত খুন করেছে, পুলিশ তদন্ত করে জেনেছে, তার প্রত্যেকটিই শুরু হয়েছে ওই সময়ের আশপাশে।

১১ ১৩
খুনের আগে প্রথমে ‘শিকার’-এর হাত  বেঁধে দিত সে। তারপর শুরু হত শাস্তি দেওয়ার পর্ব। নানচাকু গলায় জড়িয়ে শ্বাসবন্ধ করে শিকারকে খুন করত চন্দ্রকান্ত। তার পর ওই একই ঘরে নিথর শরীরের সামনে রাতের খাবার খেত সে।

খুনের আগে প্রথমে ‘শিকার’-এর হাত বেঁধে দিত সে। তারপর শুরু হত শাস্তি দেওয়ার পর্ব। নানচাকু গলায় জড়িয়ে শ্বাসবন্ধ করে শিকারকে খুন করত চন্দ্রকান্ত। তার পর ওই একই ঘরে নিথর শরীরের সামনে রাতের খাবার খেত সে।

১২ ১৩
এর পর ঠাণ্ডা মাথায় টুকরো টুকরো করে কাটত নিহতের শরীর। কোর্টে শুনানিতে একবার সে বলেছিল, সবচেয় কম রক্ত ঝড়িয়ে মানুষের দেহ টুকরো টুকরো করার শিল্প আয়ত্ব করে ফেলেছে সে।

এর পর ঠাণ্ডা মাথায় টুকরো টুকরো করে কাটত নিহতের শরীর। কোর্টে শুনানিতে একবার সে বলেছিল, সবচেয় কম রক্ত ঝড়িয়ে মানুষের দেহ টুকরো টুকরো করার শিল্প আয়ত্ব করে ফেলেছে সে।

১৩ ১৩
শেষ পর্যন্ত অবশ্য ফাঁসি হয় চন্দ্রকান্তের। তবে আদালত চন্দ্রকান্তের সিরিয়াল কিলার হয়ে ওঠার নেপথ্য কারণ মনে করিয়ে দিয়ে সতর্ক করেছিল দিল্লি পুলিশকেও। পুলিশকে বলা হয়েছিল, তাদেরও আচরণের সংশোধন প্রয়োজন।

শেষ পর্যন্ত অবশ্য ফাঁসি হয় চন্দ্রকান্তের। তবে আদালত চন্দ্রকান্তের সিরিয়াল কিলার হয়ে ওঠার নেপথ্য কারণ মনে করিয়ে দিয়ে সতর্ক করেছিল দিল্লি পুলিশকেও। পুলিশকে বলা হয়েছিল, তাদেরও আচরণের সংশোধন প্রয়োজন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE