Stunning frescoes of Greek mythological characters found in ancient roman town Pompeii dgtl
Pompeii
রোমান নগরী পম্পেইয়ের দেওয়ালে গ্রিসের ট্রয় যুদ্ধের চরিত্রদের রঙিন চিত্র! ভাবাচ্ছে ইতিহাসবিদদের
১৭ শতকের গোড়া থেকে পম্পেই নগরীর হারানো ইতিহাস খুঁজে পেতে খননকার্য চলেছে। প্রত্নতাত্ত্বিকদের হাতে উঠে আসছে নতুন নতুন তথ্য। তার মধ্যেই সম্প্রতি আবিষ্কৃত হল দু’হাজার বছর আগেকার নাম না জানা শিল্পীদের কীর্তি।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:৩৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
ইটালির পম্পেই নগরীতে আবিষ্কৃত হয়েছে অতি প্রাচীন দেওয়ালচিত্র! যার বিষয়বস্তু আবার গ্রিক পুরাণ। যা আবার নতুন করে ভাবাচ্ছে প্রত্নতাত্ত্বিকদের।
০২১৫
দক্ষিণ-পশ্চিম ইটালির বন্দর নগরী পম্পেই। ৭৯ খ্রিস্টাব্দে মাউন্ট ভিসুভিয়াসের অগ্ন্যুৎপাতের কবলে পড়ে সেই শহর ও পার্শ্ববর্তী হারকিউলেনিয়াম-সহ রোমান সাম্রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
০৩১৫
১৭ শতকের গোড়া থেকে পম্পেই নগরীর হারানো ইতিহাস খুঁজে পেতে খননকার্য চলেছে। প্রত্নতাত্ত্বিকদের হাতে উঠে এসেছে নতুন নতুন তথ্য। তার মধ্যেই আবিষ্কৃত হল দু’হাজার বছর আগেকার নাম না জানা শিল্পীদের কীর্তি।
০৪১৫
সম্প্রতি প্রত্নতাত্ত্বিকরা পম্পেই নগরীতে একটি হলঘর আবিষ্কার করেছেন। মনে করা হচ্ছে, সেই ঘরে বসত ভোজসভা। একসঙ্গে অনেকে সেখানে খেতে বসতেন। চলত আলাপ-আলোচনা।
০৫১৫
প্রত্নতাত্ত্বিকদের অবাক করেছে ওই ভোজনকক্ষের দেওয়ালচিত্র বা ‘ফ্রেস্কো’গুলি। ঘরের দেওয়াল থেকে ধুলো এবং অগ্ন্যুৎপাতের ছাই সরাতেই প্রকাশ্যে এসেছে রঙিন ছবিগুলি। এখনও পর্যন্ত দু’টি দেওয়ালচিত্র আবিষ্কার করেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। দেওয়ালচিত্রগুলির রং এখনও স্পষ্ট।
০৬১৫
তবে প্রত্নতাত্ত্বিকদের আরও অবাক করেছে ওই দেওয়ালচিত্রের বিষয়বস্তু। গ্রিক প্রত্নকথায় ট্রয়ের যুদ্ধের উল্লেখ রয়েছে। যা নিয়ে কবি হোমার রচনা করেছিলেন তাঁর মহাকাব্য ‘ইলিয়াড’। সেই যুদ্ধের চরিত্রেরাই জায়গা পেয়েছে ওই দেওয়ালচিত্রগুলিতে। যা ইতিহাসবিদদের মধ্যে পম্পেই নগরী নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনার অবকাশ তৈরি করেছে।
০৭১৫
কালো রঙের দেওয়ালে রংবেরঙের ওই দু’টি চিত্র। ফ্রেস্কোগুলির মধ্যে একটিতে ফুটে উঠেছে প্যারিস ও হেলেনের সাক্ষাতের দৃশ্য। গ্রিক প্রত্নকথা অনুযায়ী, প্যারিস ছিল ট্রয়ের রাজকুমার। রাজা প্রিয়ামের পুত্র। আলেক্সান্দ্রোস নামেও পরিচিত ছিল সে। অন্য দিকে, রানি হেলেন ছিল স্পার্টার রাজা মেনেলাউসের স্ত্রী। গ্রিসের পুরাণ অনুযায়ী, প্যারিস হেলেনকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার কারণে ট্রয় যুদ্ধের সূত্রপাত।
০৮১৫
ছবিতে দেখা যাচ্ছে, কোনও সহচরীকে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে হেলেন। তার সঙ্গে কথা বলছে প্যারিস। প্যারিসের পায়ের কাছে একটি বাঘ বা সিংহী ধরনের কোনও প্রাণী বসে রয়েছে। হেলেনের দিকে হাত বাড়িয়ে রয়েছে প্যারিস।
০৯১৫
অন্য ফ্রেস্কোটিতে দেখা যাচ্ছে, গ্রিক দেবতা অ্যাপোলোর সামনে বসে রয়েছে রাজা প্রিয়ামের কন্যা কাসান্দ্রা। তার মুখ বিষণ্ণ।
১০১৫
কিংবদন্তি অনুযায়ী, ক্যাসান্দ্রাকে ভবিষ্যদ্বক্তা হওয়ার বর দিতে চেয়েছিলেন সূর্য এবং সঙ্গীতের দেবতা অ্যাপোলো। কিন্তু ক্যাসান্দ্রা অ্যাপোলোর ইচ্ছা পূরণ না করার কারণে গ্রিক দেবতা অভিশাপ দিয়েছিলেন যে, ক্যাসান্দ্রার ভবিষ্যদ্বাণী কখনওই কেউ বিশ্বাস করবে না।
১১১৫
যে ভোজনকক্ষে এই ছবিটি আবিষ্কৃত হয়েছে, সেটি প্রায় ১৫ মিটার দীর্ঘ এবং ছ’মিটার চওড়া। ঘরের দরজা খুলে উঠোনের দিকে যাওয়া যায়। একটি দীর্ঘ সিঁড়ি দিয়ে উঠে যাওয়া যায় দোতলায়। বিশাল এই ঘরটির মেঝে ১০ লক্ষেরও বেশি ছোট ছোট সাদা টাইলের টুকরো দিয়ে মোজ়াইক করা।
১২১৫
সিঁড়ির দরজার নীচে নির্মাণ সামগ্রীর একটি বড় স্তূপও উদ্ধার হয়েছে। বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই খননস্থলে ১০৭০টি বাড়ি রয়েছে। যেগুলির মধ্যে ১৩ হাজারের বেশি কক্ষ রয়েছে।
১৩১৫
পম্পেই নগরীর ওই খননস্থলে ভোজনকক্ষটি ছাড়াও দু’টি পরস্পর-সংযুক্ত ঘর, একটি বেকারি, একটি কাপড় কাচার ঘর এবং একটি বসার ঘরের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।
১৪১৫
পম্পেই পুরাতাত্ত্বিক ক্ষেত্রের দায়িত্বে থাকা গবেষক গাব্রিয়েল জ়ুকট্রিগেলের জানিয়েছেন, এত দিন পম্পেইকে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর শহর হিসাবে ভাবা হত। কিন্তু নতুন আবিষ্কারের কারণে প্রাচীন নগরীর অন্য একটি সত্তা উঠে এসেছে। পম্পেই যে রোমান সাম্রাজ্যের শিল্প-সংস্কৃতির অন্যতম পীঠস্থান ছিল, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই বলে মন্তব্য করেছেন গাব্রিয়েল।
১৫১৫
গাব্রিয়েলের কথায়, “মানুষ সূর্যাস্তের পরে খাওয়ার জন্য ওই ভোজনকক্ষে আসত। হয়তো কয়েক পেয়ালা ওয়াইন পানের পর ওই দেওয়ালচিত্র তাদের কাছে জীবন্ত হয়ে উঠত। তেলের বাতির ধোঁয়া থেকে ঘরকে বাঁচাতে দেয়ালগুলিকে কালো রং করা হয়েছিল।’’