দিন কয়েক আগেই রবির স্ত্রীর কাছ থেকে একটি সূত্র পেয়েছিল কর্নাটক পুলিশ। তাঁকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে যে, রবির ঠিকানা একমাত্র রামজিই জানেন। রামজি গুজরাতের বাসিন্দা হলেও থাকেন কোচিতে। তাঁর সঙ্গেই ব্যবসায়িক লেনদেনের সম্পর্ক ছিল রবির। এর পরই কোচিতে রামজির খোঁজে যায় পুলিশ। কিন্তু তাঁর হদিস পাওয়া যায়নি।
মাইসুরু পুলিশ কমিশনার রমেশ ভানোতের নেতৃত্বে ১১ জনের একটি দল গঠন করে কেরল, তেলঙ্গানা এবং মহারাষ্ট্রে তল্লাশিতে পাঠানো হয়। পাশাপাশি, রামজির ফোনের টাওয়ার লোকেশন চিহ্নিত করা শুরু করে পুলিশ। গত ১৩ জানুয়ারি আমদাবাদে রামজির ফোনের টাওয়ার লোকেশন চিহ্নিত করে আমদাবাদে পৌঁছয়। সেখান থেকে রামজি, মধুসূদন, শ্রুতেশ কুমারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের সূত্রে ধরেই রবির খোঁজ পায় পুলিশ। আমদাবাদ শহরেই ব্যবসায়িক চুক্তির বিষয়ে এসেছিলেন। তখনই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযোগ উঠেছে, স্যান্ট্রো রবির সঙ্গে বিজেপির নাকি ‘ঘনিষ্ঠ যোগ’ রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরাগা জ্ঞানেন্দ্রর সঙ্গেও নাকি ‘ঘনিষ্ঠ যোগ’ আছে। এমনই অভিযোগ তুলেছে বিরোধী দলগুলি। আরও অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এবং টাকার বিনিময়ে রবি নাকি পুলিশ আধিকারিকদেরও বদলি করিয়ে দিতেন। যদিও স্যান্ট্রো রবির সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে বিজেপি।
পুলিশ সূত্রে খবর, ১৯৯৫ সালে অপরাধের দুনিয়ায় পা রাখেন রবি। ১৯৯৮ সালে তাঁর বিরুদ্ধে নাবালিকাকে অপহরণ করে ধর্ষণ করার অভিযোগ ওঠে। শুধু তা-ই নয়, ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য নাবালিকাকে হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায় নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন। কিন্তু কয়েক দিন পরই ধরা পড়ে যান। অসুস্থতার অছিলায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিন্তু সেখান থেকে পালিয়ে যান রবি।
পুলিশ সূত্রে খবর, সেই সময় থেকে মাদক পাচার, নারী পাচারের সঙ্গে পুরোপুরি যুক্ত হয়ে পড়েছিলেন রবি। এই কাজ করে বেশ পসার জমিয়েছিলেন তিনি। তখন বাজারে প্রথম স্যান্ট্রো গাড়ি আসে। বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল স্যান্ট্রো গাড়ি। রবিও একটি কিনেছিলেন। কিন্তু তাঁর ওই স্যান্ট্রো গাড়িই হয়ে উঠেছিল পাচারের বাহন। মহিলা সরবরাহ করা, মহিলা পাচার করার জন্য এই গাড়িটিকেই ব্যবহার করতেন তিনি।
মাইসুরুর অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশ আধিকারিক এস কে সুকেশ জানিয়েছেন, স্যান্ট্রো গাড়িটি ছিল রবির ‘চলতা ফিরতা’ একটি অফিস। যত রকম অনৈতিক কাজ এবং অপরাধের চুক্তি হত এই গাড়িতেই। স্যান্ট্রো গাড়িটি ছিল রবির সর্বক্ষণের সঙ্গী। আর সেই থেকেই গোটা মাইসুরু এবং পরবর্তী কালে গোটা কর্নাটকে তিনি স্যান্ট্রো রবি নামেই পরিচিত হয়ে উঠেছিলেন।
২০১০-’১৪ সালের মধ্যে নারী পাচার, যৌনচক্র চালানো-সহ একাধিক মামলা দায়ের হয় স্যান্ট্রো রবির বিরুদ্ধে। বেঙ্গালুরুর কুখ্যাত গ্যাংস্টারদের সঙ্গে নিবিড় যোগ ছিল রবির। তবে গত কয়েক বছরে রাজনীতিতেও তাঁর প্রভাব বাড়তে শুরু করে বলে অভিযোগ ওঠে। রবির বিরুদ্ধে ১৪টি মামলা ঝুলছে। তার মধ্যে ১০টি মামলাই যৌনচক্রের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy