E-Paper

অনন্ত পথের যাত্রী

সকলে নৃত্যগীত করতে করতে নীলাচলের রাজপথ ধরে এগিয়ে চলেছেন। এ যেন এক আশ্চর্য শোভাযাত্রা। দিব্যকান্তি মহাপ্রভু শোভাযাত্রার অগ্রভাগে নৃত্য করছেন। পথের দুই ধারে এই স্বর্গীয় দৃশ্য প্রত্যক্ষ করার জন্য বহু মানুষ জড়ো হয়েছে। তারা এই শোভাযাত্রার উদ্দেশে পুষ্পবৃষ্টি করছে।

অবিন সেন

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৫ ০৬:৪২

ছবি: রৌদ্র মিত্র।

পূর্বানুবৃত্তি: নৃসিংহর সঙ্গে তুক্কার দেখা হলেও পুনর্মিলন হল না। কারণ তুক্কা জানায়, ভিতরে ভিতরে সে মৃতপ্রায়। নৃসিংহকে দেওয়ার মতো তার আর কিছু অবশিষ্ট নেই। নৃসিংহ জানায় তবু সে অপেক্ষা করবে আজীবন। নীরব তুক্কা কোনও উত্তর দেয় না। তার দহন-জ্বালার কাহিনি সে লিখতে শুরু করে তার ‘তুক্কাপঞ্চকম’ নামের পদ্য সংকলনে। অন্য দিকে ক্ষয় ধরেছে মহাপ্রভুর শরীরে। মহাপ্রভুর নিকট-পরিকর স্বরূপ দামোদরের প্রয়াণ মহাপ্রভুকে আরও অশক্ত করে দিয়েছে। নদিয়া থেকে আসা জগদানন্দ, মহাপ্রভুর হাতে দেন অদ্বৈতাচার্যের পাঠানো একটি তর্জা। তা পড়ে আরও বিষণ্ণ, ম্রিয়মাণ হয়ে ওঠেন মহাপ্রভু। পরিস্থিতি ক্রমশ অনুকূলে আসছে, এই বার্তা চর মারফত গৌড়ের সুলতানের কাছে পাঠালেন গোবিন্দ বিদ্যাধর। মহাপ্রভু চোখের জলে আর কৃষ্ণনামে ক্রমশ উন্মাদদশা প্রাপ্ত হয়েছেন।

একদিন প্রভাতে মহাপ্রভু সকলকে ডেকে বললেন, “সামনে রথযাত্রা। চলো আমরা নগর-ভ্রমণে বেরোই। খোল-করতাল নিয়ে তোমরা সকলে আমার সঙ্গে চলো।”

ভক্তরা খুব খুশি হয়ে উঠলেন। নিত্যানন্দ মনে মনে ভাবলেন, ‘যাক, মেঘ বুঝি কাটল।’

মহাপ্রভু বললেন, “সঙ্কীর্তন হৈতে পাপ সংসার নাশন।/ চিত্ত শুদ্ধি সর্ব ভক্তি সাধন উদগম...”

সকলে নৃত্যগীত করতে করতে নীলাচলের রাজপথ ধরে এগিয়ে চলেছেন। এ যেন এক আশ্চর্য শোভাযাত্রা। দিব্যকান্তি মহাপ্রভু শোভাযাত্রার অগ্রভাগে নৃত্য করছেন। পথের দুই ধারে এই স্বর্গীয় দৃশ্য প্রত্যক্ষ করার জন্য বহু মানুষ জড়ো হয়েছে। তারা এই শোভাযাত্রার উদ্দেশে পুষ্পবৃষ্টি করছে।

সেই ভিড়ের মধ্যে গৌড় থেকে আগত চার সৈন্যও বৈষ্ণব ছদ্মবেশে তাদের সঙ্গে সঙ্গে চলেছে। তাদের কাজ নীরবে এই শোভাযাত্রা অনুসরণ করা। হয়তো তাদের দেখেছে কেউ কেউ। কিন্তু খেয়াল করেনি। এমন তো কত নতুন মানুষ আসছে। দলে দলে তারা মহাপ্রভুর আদর্শে দীক্ষিত হয়ে বৈষ্ণব দলের ভিড়ে মিশে যাচ্ছে।

নিত্যানন্দ প্রভু তাঁর মধুর গলায় কীর্তন গাইছেন আর আলোকলতার মতো মহাপ্রভু নৃত্য করে চলেছেন। উদ্দাম, বাহ্যজ্ঞানহীন সেই নৃত্য। নীলাচলের পথঘাট-উদ্যান দেখে তাঁর যেন বৃন্দাবনের কথা মনে পড়ছে বার বার। ‘কোথায় কৃষ্ণ, কোথায় কৃষ্ণ, কোথায় গেলে তোমায় পাই’— বলতে বলতে দুই চোখে তাঁর অনবরত জলের ধারা। বার বার গাছের ফাঁকে ফাঁকে, মানুষের ভিড়ে ভ্রমে কৃষ্ণকে অবলোকন করছেন তিনি। আর তখনই সেই দিকে ছুটে যাচ্ছেন। কোথায় তাঁর পদক্ষেপ পড়ছে কোনও খেয়াল নেই।

তখন বিকেলের আলো নিভে আসছে। সন্ধ্যা আগত। সহসা সেই ভিড়ের মধ্য থেকে একটা প্রস্তরখণ্ড গড়িয়ে এল ঠিক মহাপ্রভুর পায়ের কাছে।

বিকেলের মরা আলোকে সেই গুরুভার পাথর কোথা থেকে গড়িয়ে এল, কেউই লক্ষ করল না। এমনকি কেউ খেয়াল করল না, ভিড়ের মধ্য থেকে ছায়ার দিকে যেন সরে গেল দু’টি অচেনা মানুষ। সেই দিকে কারও দৃষ্টি ছিল না। সহসা সেই পাথরখণ্ডে হোঁচট খেয়ে মহাপ্রভু মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। তাঁর বাম পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলিতে ক্ষত হয়ে গলগল করে রক্ত বেরোতে লাগল। সেই সঙ্গে তাঁর মুখ দিয়ে ক্রমাগত গভীর কাতরোক্তি নির্গত হতে লাগল। জগন্নাথ দাস, কাশী মিশ্র প্রমুখ ভক্তেরা তাঁকে সামলানোর চেষ্টা করতে লাগলেন। মহাপ্রভু তত ক্ষণে সংজ্ঞাহীন হয়ে ভূমিতে শয্যা নিয়েছেন। সেই রুক্মিণী অমাবস্যার দিন সন্ধ্যায় সকলে ধরাধরি করে মহাপ্রভুকে মন্দির প্রাঙ্গণের উত্তর প্রান্তের মণ্ডপে নিয়ে গিয়ে চিত করে শুইয়ে দিলেন। তাঁর শ্বাসপ্রশ্বাস চলছিল, কিন্তু অচেতন অবস্থায় তিনি চক্ষু মুদিত করে ছিলেন। সকলে ঘিরে ধরে মহাপ্রভুকে শুশ্রূষা করতে লাগলেন। জগন্নাথ দাস মহাপ্রভুর মাথা কোলে নিয়ে মুখে বার বার জল সিঞ্চন করতে লাগলেন। বহু ক্ষণ মহাপ্রভুর জ্ঞান এল না।

ধীরে ধীরে জলসিঞ্চনের ফলে মহাপ্রভুর জ্ঞান ফিরল। মহাপ্রভুকে সংজ্ঞাপ্রাপ্ত দেখে তাঁর সহচরেরা আনন্দিত হয়ে উঠল। জগন্নাথ দাস মুখের কাছে ঝুঁকে তাঁকে কথা বলতে অনুরোধ করলেন। কিন্তু মহাপ্রভুর শরীর ভীষণ দুর্বল। তিনি কথা বলতে পারলেন না। মহাপ্রভুর জ্ঞান ফিরে আসতে দেখে একে একে ভক্তরা সেই স্থান ত্যাগ করে চলে গেলেন। কারণ জগন্নাথ দাসই সকলকে চলে যেতে বললেন। সকলে ঘিরে বসে থাকলে প্রভুর শরীরে বাতাস লাগছিল না। সেই স্থান ফাঁকা হতে সন্ধ্যার মনোরম বাতাস প্রভুর সারা গায়ে পালকের স্পর্শ বুলিয়ে দিল। প্রভুর মুখের ভাব দেখে মনে হল, বাতাসে তিনি কিছুটা আরাম পেয়েছেন।

মহাপ্রভুর প্রিয় রামরাজা প্রশাসনিক কাজে অন্যত্র গিয়েছিলেন। প্রভুর এই দুর্ঘটনার সংবাদ পেয়ে দ্রুত মন্দির প্রাঙ্গণে দৌড়ে এলেন।

দেখলেন, মহাপ্রভুর মাথা কোলে নিয়ে তখনও জগন্নাথ দাস মৃদু মৃদু তাঁর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। রায় রামানন্দ বিস্তারিত শুনে ভাবতে লাগলেন, এ কেমন করে হল! পরিষ্কার রাজপথে এমন গুরুভার প্রস্তরখণ্ডই বা কোথা থেকে এল!

তিনি মহাপ্রভুর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে মৃদু স্বরে ডাকতে লাগলেন, “প্রভু, প্রভু, এখন কেমন বোধ করছেন?” মহাপ্রভু নিমীলিত চোখে তাঁর প্রিয় রামরাজার দিকে তাকালেন। তাঁর চোখের কোণ বেয়ে এক ফোঁটা জল গড়িয়ে নামল। ঠোঁটদু’টি এক বার নড়ে উঠল। প্রথমে স্বর ফুটল না। তার পরে ক্ষীণ গলায় বললেন, “মন্দিরের সন্ধ্যারতির খোল-করতাল বাজছে। আমাকে শুনতে দাও।”

একটু থেমে আবার ফিসফিস করে বললেন, “আমাকে তোমরা ভগবানের কাছে নিয়ে চলো, আমি ভক্তদের নৃত্য দেখব।”

জগন্নাথ দাস তাঁকে নিষেধ করলেন। বললেন, “তোমার শরীর দুর্বল। পায়ে ভীষণ ক্ষত। তুমি এক হাত পরিমাপ ভূমিও হেঁটে পার হতে পারবে না।”

মহাপ্রভু তাঁর কথা না শুনেই উঠে বসার চেষ্টা করলেন। কিন্তু দুর্বল শরীরে উঠতে পারলেন না।

রায় রামানন্দও তাঁকে নিষেধ করলেন।

তিনি এক বার ঘাড় ঘুরিয়ে জগন্নাথ দাসের দিকে তাকালেন। জগন্নাথ দাস এই ইঙ্গিত বুঝলেন। তিনি মৃদু গলায় কীর্তন শুরু করলেন।

রায় রামানন্দও সেখানে বসে বিভোর হয়ে সেই মধুর গীত শুনতে লাগলেন।

গান শুনে প্রভুর মনে আবার ভাবের উদয় হল। গান শুনতে শুনতে তাঁর দুই চোখ বেয়ে জলের ধারা নামতে পাগল।

কীর্তন থামলে রায় রামানন্দ বললেন, “যাই আমি এক বার রাজবৈদ্যকে সংবাদ পাঠাতে বলি...” তার পরে আবার নিজের মনেই বললেন, “না না, এক জনকে পাঠিয়ে দিই। সঙ্গে করে যত তাড়াতাড়ি পারবে নিয়ে চলে আসবে।”

রাতের দিকে মহাপ্রভুর শরীরে প্রবল উত্তাপ দেখা দিল। জগন্নাথ দাস সারা রাত্রি প্রভুর মাথায় জলপট্টি দিতে লাগলেন। কিন্তু তাতে সুফল মিলল না। জ্বরের ঘোর উত্তরোত্তর বাড়তে লাগল। জগন্নাথ দাসের মনে হল, প্রভুর দেহের উপরে ধান ছড়িয়ে দিলে বুঝি উত্তাপে তা খই হয়ে যাবে। তাঁর সারা পা ফুলে গিয়েছে। যেন বিষক্রিয়া হয়েছে সেখানে। সেই বিষ যেন ক্রমশ সারা গায়ে ছড়িয়ে পড়ছিল। তিনি কোনও কথা বলতে পারছিলেন না। পায়ের বেদনাও উত্তরোত্তর বাড়ছিল।

রাজবৈদ্য তখনও এসে পৌঁছতে পারেননি বলে জগন্নাথ দাস একটি পাত্রে জল গরম করে নিয়ে এলেন। তার পরে ধীরে ধীরে প্রভুর বাম পা সেই গরম জলে ডুবিয়ে দিলেন। প্রভু যেন কিছুটা আরাম পেলেন। কিন্তু শরীরের জ্বর কমছিল না কিছুতেই। রাতের দিকে সারা শরীরে প্রবল কম্পনের সঙ্গে জ্বরের তীব্রতা বাড়তে লাগল। জগন্নাথ একটি উষ্ণ বস্ত্র নিয়ে এসে প্রভুর সারা শরীর ঢেকে দিলেন।

মহাপ্রভু তাঁর দিকে তাকিয়ে বললেন, “তুমি আমার কাছেই থেকে যাও। তুমি কাছে থাকলে আমার কষ্টের অনেকখানি লাঘব হয়। তুমি শ্রীজগন্নাথদেবের অন্যতম প্রধান সেবক। আমি তোমার সেবা পাচ্ছি, এ যে আমার পরম সৌভাগ্য।”

এই কথা বলতে বলতে মহাপ্রভুর দু’চোখ দিয়ে জলের ধারা নামতে লাগল। সাধ্বী নারী যেভাবে স্বামীর সেবা করে, সেই ভাবে জগন্নাথ দাস নিরন্তর প্রভুর সেবা করে যেতে লাগলেন।

পরদিন রবিবার বেলা দ্বিপ্রহরে যখন মহাপ্রভুর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হতে থাকল, তখন দু’-এক জন ভক্তকে প্রভুর মাথার কাছে বসিয়ে রেখে জগন্নাথ দাস গেলেন রায় রামানন্দর কাছে। যদি কোনও ভাবে রাজবৈদ্যকে দ্রুত নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা যায়।

তিনি চলে যেতেই সহসা আরও দু’জন ভক্ত সেখানে এসে উপস্থিত হলেন। মহাপ্রভুর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে তারা বলল, “প্রভু, জগন্নাথদেবের দর্শন করবেন না?”

মহাপ্রভু চোখ খুললেন। চোখ খুলে রাখতেও যেন তাঁর অসীম বেদনা। তাঁর দুই চোখ দিয়ে বিন্দু বিন্দু অশ্রু গড়িয়ে নামল। মৃদু স্বরে কৃষ্ণনাম বলতে বলতে তিনি সম্মতিসূচক ঘাড় নাড়লেন। দুই ভক্ত ধরাধরি করে মহাপ্রভুকে বয়ে নিয়ে চলে গেলেন জগন্নাথদেবের মূল মন্দিরের ভিতরে।

কোথা থেকে যেন তাদের সঙ্গে কয়েক জন পান্ডা-বেশী ব্যক্তি মন্দিরে প্রবেশ করল। তাদের সবার পরনে আপাদমস্তক ঢাকা সাদা বসন।

ফিরে এসে প্রভুকে উত্তরের প্রাঙ্গণে দেখতে না পেয়ে জগন্নাথ দাস উদ্বিগ্ন হয়ে উঠলেন। কোথায় গেলেন মহাপ্রভু? কী ভাবেই বা গেলেন?

তিনি পাগলের মতো চারদিকে খোঁজ করতে লাগলেন। সামনে যাকেই দেখতে পাচ্ছেন তাকেই জিজ্ঞাসা করছেন, মহাপ্রভুকে তারা দেখেছে কি না! কেউ মহাপ্রভুর সংবাদ দিতে পারছে না। শেষে তিনি প্রধান মন্দিরের ভিতরে দৌড়ে গেলেন। খুঁজতে খুঁজতে শেষে দেখতে পেলেন, কোইলী বৈকুণ্ঠের কাছে মহাপ্রভুর দেহ শায়িত আছে। মহাপ্রভুর চক্ষু মুদিত। জগন্নাথ দাস প্রভুর গায়ে হাত দিয়েই ডুকরে কেঁদে উঠলেন। এক ভক্তকে ডেকে বললেন, “যাও, এখুনি রায় রামানন্দকে এখানে ডেকে নিয়ে এসো।”

বার্তা পেয়ে রায় রামানন্দ দৌড়ে মন্দিরে এসে উপস্থিত হলেন। দেখলেন, ক্রন্দনরত জগন্নাথ দাস বসে আছেন শায়িত মহাপ্রভুর দেহের পাশে। রায় রামানন্দের চোখ দিয়ে জলের ধারা নামতে লাগল। তিনি পরম মমতায় মহাপ্রভুর মুখে, সারা দেহে হাত বুলিয়ে দিতে লাগলেন। তিনি বুঝতে পারলেন, মহাপ্রভুর প্রাণ নশ্বর মানবদেহ ছেড়ে অসীম অনন্তের দিকে পাড়ি দিয়েছে। ভাবলেন, ঈশ্বরের প্রাণ বুঝি ঈশ্বরের বিগ্রহেই বিলীন হয়ে গিয়েছে।

তিনি আদেশ দিলেন, “আজ মন্দিরের সমস্ত দরজা বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে নিত্যকার দেবপূজা।”

তৃতীয় প্রহরে মন্দিরের সমস্ত দরজা ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে গেল। কোনও দর্শনার্থীই আর মন্দিরে প্রবেশ করতে পারলেন না।

রামানন্দ মহারাজাকে সংবাদ দেওয়ার জন্য দূত প্রেরণ করলেন। পথের মধ্যেই সেই ঘোড়সওয়ারের সঙ্গে মহারাজা প্রতাপরুদ্রদেবের দেখা হয়ে গেল। তিনি শুভ চন্দনযাত্রা দর্শনের উদ্দেশ্যে আসছিলেন।

মহারাজা মন্দিরে প্রবেশ করে মহাপ্রভুকে ওই অবস্থায় দেখে কান্নায় ভেঙে পড়লেন।

রায় রামানন্দ তাঁকে সান্ত্বনা দিতে দিতে বললেন, “আমাদের প্রিয় মহাপ্রভু মানবলীলা সাঙ্গ করে দেববিগ্রহে বিলীন হয়ে গেছেন। এটাই সত্য। এটাই ধ্রুব। এই প্রাণহীন দেহকে মন্দিরের বাইরে নিয়ে গেলে মহাপ্রভুর অসম্মান হবে। গৌড়ীর ভক্তরা এর অন্য অর্থ প্রচার করবে। নবকলেবর অনুষ্ঠানে যেমন জীর্ণ দেববিগ্রহকে সমাধিস্থ করা হয়, তেমনি মহাপ্রভুর প্রাণহীন দেহকে কোইলী বৈকুণ্ঠেই সমাহিত করা হোক।”

মহারাজা প্রতাপরুদ্রদেব সম্মতি দিলেন।

সহসা যেন আকাশ ডেকে উঠল। মন্দিরের মাথার কাছে কালো বাজপাখির মতো বিশাল এক খণ্ড মেঘ। অপরাহ্ণেই যেন সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। সমস্ত মন্দির প্রাঙ্গণ যেন অসীম মৌনে ঢেকে গেছে।

অনন্ত পথের পথিক অন্তহীন পথেই যেন চিরযাত্রা করেছেন। ফেলে রেখে গেছেন অসীম আলোর ঠিকানা।

শেষ

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bengali Novel Bengali Series

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy