ছবি: প্রসেনজিৎ নাথ।
পূর্বানুবৃত্তি: বাজার করতে গিয়ে অভ্রর সঙ্গে দেখা হয় ওর প্রাক্তন প্রেমিকা রুমকির। সে এখন ঘোর সংসারী। অভ্র রুমকির ছেলেকে দেখতে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও নাকচ করে দেয় রুমকি। মন খারাপ হয় অভ্রর। চার দিকে হতাশার ছবি। স্কুলের ব্যাকবেঞ্চার টেনেটুনে গ্র্যাজুয়েট অমিয় আজ বড় নেতা। তার সুন্দরী বান্ধবী। শুধু তারই কিছু হল না। রিপোর্টার বন্ধু সৌমাল্যর সঙ্গেও দেখা হয় তার। কথায় কথায় উঠে আসে চার দিকে দুর্নীতি, প্রতারণা আর গণতন্ত্র নিয়ে তামাশার কথা। হতাশার পরিবেশে বাড়ির সাধারণ খাবার খেতে ভাল লাগে না অভ্রর বন্ধু মল্লারের। তার বাবা অতিরিক্ত সস্তায় বাজিমাত করতে চান, এমন অভিযোগে কিছুটা কথা কাটাকাটিও হয়। খেতে বসে একটা কিছু কথা বলবে ভেবেছিল সে। মাঝখান থেকে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়ল।
খেয়েদেয়ে কিছু ক্ষণ সিন্থেসাইজ়ার বাজাল মল্লার। এটাই এখন তার রুটিরুজি, নিয়মিত চর্চার মধ্যে থাকতেই হয়। সিন্থেসাইজ়ার বাজানো শেষ হতেই সে সিঁড়ি বেয়ে নামে। বাবার ঘরের দরজা খোলা, আধশোয়া ভঙ্গিতে পেপার পড়ছে।
সে সামনে দাঁড়িয়ে কোনও ভূমিকা ছাড়াই বলল, “দেড় লাখ টাকা লাগবে।”
পেপার থেকে চোখ না সরিয়ে কমল বললেন, “কার লাগবে?”
“আমার।”
“কেন?”
“একটা টোটো কিনব,” মল্লার বলল।
পেপার বন্ধ করে বিস্মিত চোখে তাকালেন কমল, “কিনে কী করবি?”
“চালাব। শুনেছি টোটো চালিয়ে ডেলি চারশো থেকে সাতশো টাকা করে রোজগার করছে অনেকে। ভেবে দেখলাম, মাসে পনেরো হাজার কামাই মন্দ হবে না। আত্মনির্ভর হওয়া যাবে। চার দিকে এত আত্মনির্ভর হওয়ার বাণী উড়ছে, জানো না?”
“তুই শেষে টোটো চালাবি?”
“কেন? কোনও কাজই ছোট নয়। ডিগনিটি অব লেবার বোঝো না দেখছি।”
কমল মাছি তাড়ানোর ভঙ্গিতে বললেন, “ও সব কেতাবি কথা রেখে দে। কমল ঘোষ, ব্যাঙ্কের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার হিসেবে যে কর্মজীবন শেষ করেছে, তার ছেলে রাস্তায় টোটো নিয়ে ঘুরবে? হোয়াট আ জোক! প্রেস্টিজ থাকবে আমার?’’
মল্লার শান্ত ভাবে বলল, “মানসম্মান ধুয়ে জল খাও তা হলে। আমেরিকায় নাসা-র এক বিজ্ঞানী অবসর সময়ে ক্যাব চালান। ওদের দেশের লোকের অত ঠুনকো অহং নেই। বেশ তো পেয়েছ আমাকে! এ দিকে ‘কিছু করছিস না’ বলে খোঁটা দেবে,
আবার কিছু করতে চাইলে বাগড়া দেবে? এটা
কেমন পলিটিক্স?”
“তোর মাথাটা দেখছি গেছে। বাপ হয়ে ছেলের ব্যাপারে পলিটিক্স করব? কেন, যে কাজটা করছিস, সেটাই মন দিয়ে কর।”
“দশটা বাড়ি গিয়ে মোট পাই ছ’হাজার।
বাড়িতে চার জন শেখে, চারশো করে নিই। টোটাল কত হল?”
“সাত হাজার ছ’শো।”
“ওতে কিছু হয়? খাটুনি বেশি, রোজগার কম। ঝড়-জল-বৃষ্টিতে নিয়ম করে দশটা বাড়িতে ছুটতে হচ্ছে। ওতে কোনও ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি না।”
“তুই টোটো চালানোর মধ্যে নিজের ফিউচার খুঁজে পাচ্ছিস? ভাল করে স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষাটা দে।”
“ওই আশাতেই থাকো। পরীক্ষা আদৌ নেবে? নিলেও তাতে যে ঘাপলা হবে না, তার গ্যারান্টি দিতে পারবে?”
“দেখ হয়তো এ বার ঠিকঠাক সিলেকশন হবে। বি পজ়িটিভ।”
“ধর্মতলার মঞ্চে কয়েকশো দিন অবস্থান করেও পজ়িটিভ কিছু হয়েছে? সময়টাই পজ়িটিভ কিছু হওয়ার নয়,” মল্লার বলল।
“পাস্ট নিয়ে ভাবা ছেড়ে দে। বেলা অবধি না ঘুমিয়ে প্রিপারেশন নে। সন্ধ্যায় যেমন শেখানো চলছে চালিয়ে যা। তোর কি ভাত-কাপড়ের অভাব হয়েছে?” নরম গলায় বললেন কমল।
“দূর! ও-সব পরীক্ষায় আর ভরসা নেই। ইউনিভার্সিটির ছ’খানা ব্যাচের ছেলেমেয়ে বসে আছে। আজ অবধি নিজেকে যোগ্য প্রমাণিত করার সুযোগ পায়নি কেউ। পরীক্ষা হলেও টাফ কম্পিটিশন হবে।”
“আগে থেকেই রণে ভঙ্গ দিচ্ছিস?”
“না,” মল্লার মাথা নাড়ে, “রিয়েলিটি বলছি। আমি যদি নিজের ইগো ছাড়তে পারি, তুমি পারবে না কেন? টোটোই চালাব আমি। আমাদের স্কুলমেট রণিত তো তাই করছে।”
“ছেলেটির ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড?”
“ওর বাবা সরকারি অফিসের পিওন ছিলেন।”
“তা হলে?” কমল চোখ নাচান, “তার সঙ্গে তুলনা করাটা ঠিক হল? টোটোর কথা তুই ভুলে যা।”
মল্লার রাগত ভাবে বলল, “একেবারেই তোমার জেদ এটা। কিছুই তো কিনে দাও না! দামি সিন্থেসাইজ়ারটা ও ভাই কিনে দিয়েছিল। তখনও তুমি হাত তুলে নিয়েছিলে।”
“ভেবেচিন্তে কনস্ট্রাকটিভ কিছু করতে চাইলে অবশ্যই টাকা দেব। কিন্তু টোটো কেনার পাগলামো করবি, আর আমি ক্যাশ দেব তা হতে পারে না।”
মল্লারের ইচ্ছে করছিল টেবিলে রাখা জলের গ্লাসটা সে ছুড়ে দেবে। অনেক কষ্টে রাগ চেপে সে পাংশুমুখে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ল। সাড়ে পাঁচটার আগে তার সিন্থেসাইজ়ার শেখানো শুরু হয় না। ঘরে থাকতেও ইচ্ছে করছে না। বাইরে আশ্চর্য সুন্দর এক বিকেল, নরম রোদ, এক ঝাঁক শালিক কলরব করছে। সে যে কোথায় যায় এখন!
ইতস্তত ঘুরেও বিক্ষিপ্ত মন একমুখী হল না। বড় একা লাগছে। অভ্রকে ফোন করল সে।
“ফ্রি আছিস?”
“হ্যাঁ।”
“তোর টিউশন নেই?”
“না।”
“তা হলে বেরিয়ে পড়।”
“কোথায় যাবি?”
মল্লার এক রাশ বিরক্তিতে বলল, “যেখানে ইচ্ছে। তোকে নিশ্চয়ই বেশ্যাখানা নিয়ে যাব না। এত প্রশ্ন কিসের? জলট্যাঙ্কের কাছে ওয়েট করছি। আপাতত নদীর কাছেই যাব বলে ঠিক করেছি। পরে প্ল্যান চেঞ্জ হতেও পারে।”
অভ্র বলল, “নদীর পাড়ে গিয়েই বসব। কত কাল দু’জনে এক সঙ্গে বসা হয়নি ওখানে। বেশি ক্ষণ বসবি না তাড়াতাড়ি পালিয়ে আসবি? তোর তো সন্ধে থেকেই একটার পর একটা বাড়িতে হাজিরা দেওয়া শুরু হয়।”
“পাঁচটার সময় ছিল একটা। যাব না বলে জানিয়ে দিচ্ছি। মুড আসছে না। তুই হেলেদুলে আসবি না, বি কুইক। একা একা প্রেমিকা ছাড়া কারও জন্য অপেক্ষা করা অন্যায়।”
অভ্র সব কথা শুনে বলল, “এই ব্যাপারে কাকুকে আমি দোষ দেব না। টোটো নামানোর প্ল্যানে কাকু সায় না দিয়ে ঠিক করেছে।”
মল্লার বলল, “ও! তোরও সেই মধ্যবিত্ত বাবুয়ানি। ক্লাস, থুড়ি স্টেটাস নিয়ে পড়ে আছিস!”
অভ্র শান্ত ভাবে বলল, “শোন, আমার মধ্যে ও সব নেই। ডিগ্রি-টিগ্রি ভুলে ওষুধের দোকানেও কাজ করেছি। সব লাইন সবার জন্য নয়। পাবলিক ট্রান্সপোর্টের লাইন মানেই খিস্তিখেউড়, ঝগড়া, হয়রানি লেগেই থাকবে। রাফ অ্যান্ড টাফ হতে হবে। তুই ভীষণ সেনসিটিভ, হজম করতে পারবি না। টোটোর লাইন নিয়ে ঝগড়া, অটোর সঙ্গে ঝামেলা, খুচরো নিয়ে প্যাসেঞ্জারের সঙ্গে তর্ক, কাউকে ঠুকে দিলে পাবলিকের পিটুনি... তুই শৌখিন শিল্পী।”
মল্লার মুখ বেঁকিয়ে বলল, “শৌখিনতা হাওয়া হয়ে গেছে। শিল্পী নয়, পাতি সিন্থেসাইজ়ার টিচার। কোনও প্রোগ্রামে ডাক পাই না, সিনিয়রদের মনোপলি চলছে। অনেক বদলে যাচ্ছি আমি। বেশ বুঝতে পারি।”
অভ্র মল্লারের দিকে তাকাল। দু’বছর আগেও বেশ নরম-সরম টাইপের ছেলে ছিল মল্লার, মুখে হাসি লেগে থাকত সারা ক্ষণ, কটু কথা বলত না সহজে। এখন কথাবার্তা রুক্ষ, হাবভাবে অস্থিরতা, মুখ খারাপ করে প্রায়ই। চোখে মাঝেমধ্যে বন্য উগ্রতা ঝিলিক মারে। আগে মদ ছুঁত না, এখন পনেরো দিন অন্তর বারে যায়, অপছন্দের কথা বললেই রেগে ওঠে।
“কী দেখছিস অমন করে?’’
“দেখছি যে, তোর বদল কতখানি হয়েছে?”
মল্লার পান খাচ্ছিল। পিক ফেলে বলল, “দেখে কিছু বোঝা যায় না। মনের ভিতরে ঢোকা বড় কঠিন কাজ। তবে খুব অস্থির লাগে, কোনও কিছুই ভাল লাগে না। ভাগ্যিস এই যন্ত্র শেখানোর লাইনে নেমেছিলাম, না হলে এত দিনে ডিপ্রেশনে পাগল হয়ে যেতাম। বদল তোরও হয়েছে। আগে চ্যাটাং-চ্যাটাং কথা বলতিস না, মৃদু স্বর বেরোত গলা দিয়ে, এখন মাঝেমধ্যেই গলা উচ্চগ্রামে উঠে যায়। শালা, আমরা কি সাধুসন্ত যে জীবনে ব্যর্থতায় নির্লিপ্ত থাকব, হাতে টাকা না থাকলেও অন্য মার্গে ভেসে বেড়াব? আজকাল হাত-পা নিশপিশ করে। চার দিকে দু’নম্বরি লোকজনের ভিড়, সেয়ানা মাল সব, কুটিল হাসি, প্যাঁচ-খেলানো কথাবার্তা! ইচ্ছে করে আচ্ছাসে লাথি কষিয়ে দিই।”
অভ্র বলে, “ও রকম ইচ্ছে আমার হয় না। ইনস্ট্যান্ট মুখ চালিয়ে দিই, ব্যাটাদের মুখ বন্ধ হয়ে যায়। এক জন বলল, ‘বেকার ভাতা পাচ্ছ তো? তা হলে?’ ভাবখানা এমন, যেন মাসে হাজার টাকা দিয়ে ধন্য করে দিচ্ছে। দিলাম ব্যাটাকে ধুয়ে। বললাম, অন্ধ আনুগত্য কারা করে জানেন? গাধা শ্রেণির মানুষ আর দু’মুখো ধান্দাবাজেরা। আপনি কোন শ্রেণিতে পড়েন? লজ্জা করে না আপনার? ওতেই মালটা ঠান্ডা হয়ে গেল।”
মল্লার নদীর দিকে তাকিয়ে উদাস ভাবে বলল, “স্বপ্নগুলো সব একে একে মরে যাচ্ছে।”
অভ্র নিঃশ্বাস ফেলে বলল, “আমিও ভাবি, এ ভাবেই কি জীবনটা কেটে যাবে? কত জ্ঞানের কথা শুনি। খারাপ সময় কেটে গিয়ে ভাল সময় আসবে। বিশ্বাস হয় না।”
মল্লার তর্জনী মটকে বলল, “কী জানি! মাঝে মাঝে ভুল করে সুদিনের স্বপ্ন দেখে ফেলি। তোর আর আমার বয়সটা তো কম হল না। চল্লিশ হতে মাত্র ছ’বছর বাকি। যৌবন টা-টা বাই-বাই করে পালাবে এ বার। কিছুই কি করতে পারব না আমরা?”
অভ্র বলল, “কী জানি! কর্মসংস্থান নেই, চাকরি নেই, এ দিকে নতুন নতুন ইউনিভার্সিটি খুলেই চলেছে। ইউনিভার্সিটি মানে হল উচ্চশিক্ষিত বেকার তৈরির কারখানা, ডিগ্রি দিয়েই খালাস, আর কোনও দায় নেই। কোটি কোটি কর্মসংস্থানের গল্পে কোনও সরকারই কম যায় না। খুব রাগ হয় জানিস!”
মল্লার ম্লান হাসে, “তুই তা-ও রাগ চেপে রাখতে পারিস, আমি পারি না। উগরে না দিলে মন এবং শরীর কোনওটাই ঠান্ডা হয় না। সে জন্য পরিচিতরা অনেকেই এড়িয়ে চলে। আচ্ছা, কখনও কি টার্নিং পয়েন্ট আসবে না আমাদের জীবনে?”
“কী জানি!”
মল্লার বলল, “আমার ভাইটা ভীষণ মেধাবী। আমি হলাম অ্যাভারেজ। ভাই যাদবপুর থেকে পড়ে মাত্র তেইশ বছর বয়সেই বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে জব পেয়ে গেল। পার অ্যানাম বাইশ লাখ পাচ্ছে। ঈশ্বর এমন একচোখো কেন রে? আমাকে ভাইয়ের মতো না হলেও কাছাকাছি লেভেলে মেরিট দিতে পারতেন। কম বয়স থেকেই সায়েন্স সাবজেক্টে পুয়োর, বাধ্য হয়ে তাই অন্য স্ট্রিমেই গেলাম। ইতিহাস পড়েও রিসার্চ করা যায়, চার বার খেটেও নেট লাগাতে পারলাম না। বড় খামতি এই জীবনে।”
তার পর শুধুই নীরবতা। বিকেলের কংসাবতী শোনে ওদের নীরব বিষণ্ণতার ভাষা। প্রাচীন বটের শরীরে বেলাশেষের গান, এক অপরূপ সূর্যাস্ত নেমে আসার প্রতীক্ষায় বিকেল মায়াবী হয়ে উঠেছে। এই পাড়ে লোকজন এখন কেউ নেই, একেবারে ফাঁকা। দূরে ইটভাটার সামনে একটি ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে।
স্তব্ধতা ভেঙে অভ্র বলল, “মাঝেমধ্যে ভাবি কোনও এক দেবদূত আসবে। তার জাদুতে জীবন বদলে যাবে।”
“ওগুলো সবই রূপকথার গল্প। জানিস, আজকাল কোনও ভাল স্বপ্ন দেখি না। কখনও খাদে পড়ে যাচ্ছি, কখনও মুখঢাকা এক মানুষ বন্দুক তাক করে আছে... যা-তা লেভেল। কোনও মেয়েও
আসে না স্বপ্নে। ধুত্তোরি!” মল্লার ঘাড় ঘুরিয়ে হাসার চেষ্টা করল।
তখনই মল্লারের ফোন রিংটোন নিয়ে
জেগে উঠল।
“হ্যালো।”
“আপনি কখন আসছেন আজ?”
“সন্ধে সাতটায় যাওয়ার কথা তো। টাইমেই পৌঁছে যাব। রাখছি।”
অভ্র জিজ্ঞাসা করল, “কে রে?”
মল্লার প্যান্টের পকেটে মোবাইল রেখে বলল, “প্রমিতদার বৌ। ভাল বাজায়, সুর তোলার সহজাত ক্ষমতা আছে। তবে বড্ড অস্থির। প্রত্যেক সপ্তাহে যে দিন শেখাতে যাই, সে দিন টাইম হওয়ার আগেই ফোনে জানতে চাইবে, আমি যাচ্ছি কি না! ছ’শো টাকা দিয়ে সব যেন মাথা কিনে রেখেছে!”
“কী আর করবি বল? আজ আমার টিউশন নেই, সন্ধেটা ফ্রি। ঘরে ফিরে বই নিয়ে বসব। সময় কেটে যাবে। বাইরে আর কত ফ্যা-ফ্যা করে ঘুরে বেড়াব?”
সূর্যাস্তের পালা এখন। নদীর জলে আলতার কারুকাজ, ও পারে মোহময় আলো। একটা লোকাল ট্রেন ব্রিজের উপর দিয়ে শুঁয়োপোকার
মতো চলেছে।
অভ্র মোহাবিষ্টের মতো বলল, “সূর্যাস্তের সময় পৃথিবীর সমস্ত নদীই সুন্দর।”
মল্লার বলল, “বাহ। বেড়ে বলেছিস।”
“আমার কথা নয়। পিট সিগার বলেছেন। কত গভীর অন্তর্দৃষ্টি থাকলে এমন অনুভব হয়!”
মল্লার বলল, “তুই বইপত্র পড়িস, অন্য মার্গে ভাবতে পারিস। আমার কথা ছাড়! আমি চিরকালের ভোঁতা। এ বার উঠতে হবে। আজ পর পর তিনটে বাড়িতে শেখাতে যেতে হবে।”
ক্রমশ
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy