Advertisement
E-Paper

অপারেশন জঙ্গি

জঙ্গিদের ধরতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গের গোয়েন্দা পুলিশ অফিসাররা কখনও কোড ল্যাংগোয়েজ ভাঙেন, কখনও সাংবাদিকের ভেক ধরে হানা দেন ডেরায়। খ বরের কাগজ পুরোটা হাট করে মেলে ধরে কেউ পড়ে না। অথচ বাঁকুড়া বাসস্ট্যান্ডে একটা গাছতলায় বসে, লোকটা অমন অদ্ভুত ভাবেই পড়ছে আনন্দবাজার। যাতে কাগজের নামটা বেশ দূর থেকে দেখা যায়। ঝানু গোয়েন্দা অফিসারদের বুঝতে অসুবিধে হল না, এ-ই সেই লোক।

সুরবেক বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০১৬ ০০:০০
‘বেবি’ ছবিতে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স অফিসার জঙ্গি পাকড়াও করছেন। এই বাংলার গোয়েন্দা পুলিশ অফিসাররাও দক্ষতায় কিছু কম যান না।

‘বেবি’ ছবিতে স্পেশাল টাস্ক ফোর্স অফিসার জঙ্গি পাকড়াও করছেন। এই বাংলার গোয়েন্দা পুলিশ অফিসাররাও দক্ষতায় কিছু কম যান না।

খ বরের কাগজ পুরোটা হাট করে মেলে ধরে কেউ পড়ে না। অথচ বাঁকুড়া বাসস্ট্যান্ডে একটা গাছতলায় বসে, লোকটা অমন অদ্ভুত ভাবেই পড়ছে আনন্দবাজার। যাতে কাগজের নামটা বেশ দূর থেকে দেখা যায়। ঝানু গোয়েন্দা অফিসারদের বুঝতে অসুবিধে হল না, এ-ই সেই লোক। কিন্তু মাথায় টুপি কোথায়, সাদা টুপি?

লালবাজারের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স-এর গোয়েন্দারা একেবারে হাঁড়ির খবর পেয়েছেন: লালগড় থেকে এক মাওবাদী বাঁকুড়া বাসস্ট্যান্ডে যাবে গোলাবারুদ আনতে। আর এক মাওবাদী তাকে সেগুলো দেবে। কিন্তু দুজনের কেউই কাউকে চেনে না। মোবাইল ব্যবহারের প্রশ্নই নেই। তা হলে কী করে চিনবে? লালগড় থেকে যে যাবে, তার মাথায় থাকবে সাদা টুপি, আর হাতে আনন্দবাজার।

এটা ২০০৯-এর শেষ দিক। লালগড় আন্দোলন ঘিরে মাওবাদী কার্যকলাপ তুঙ্গে। সকাল সাতটা থেকে এক ডজন গোয়েন্দা অফিসার বাঁকুড়া বাসস্ট্যান্ডে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে অপেক্ষা করছেন। এখন দুপুর বারোটা। কাগজ-পড়া লোক দেখে গোয়েন্দাদের নজর তার ওপর। কিন্তু সাদা টুপি না থাকলে পুরোটা তো মিলছে না।

আর একটি লোক কাগজ-পড়া লোকের দিকে এগিয়ে এল। হাতে ধরা বড় একটা নাইলনের থলে। দুজনে কথা বলল, তার পর বাসস্ট্যান্ড ছেড়ে অন্য দিকে হাঁটা লাগাল। অবাধে। কারণ, গোয়েন্দাদের মধ্যে কথাবার্তা বলে ঠিক হয়েছে, টুপি যখন নেই, তখন একে ধরা ঠিক হবে না। তিন দিন পর গোয়েন্দারা খবর পেলেন, সেই দিনই বাঁকুড়ায় গোলাবারুদ হাতবদল হয়েছে। তখন আর হাত কামড়ানো ছাড়া কিছুই করার নেই।

দিন কুড়ি পরে মাওবাদী সংগঠনের ভেতরে কাজ করা পুলিশের স্পাই খবর দিল, বাঁকুড়া বাসস্ট্যান্ডে ফের গোলাবারুদ নিতে একই লোক যাবে লালগড় থেকে। আবার সেই অপেক্ষা। কয়েক জন গোয়েন্দা বললেন, এখন তো দুজন দুজনকে চিনে নিয়েছে। তা হলে আর কাগজ হাতে ধরে, টুপি পরে চেনা দিতে হবে কেন? কিন্তু তাঁদের অবাক করে দিয়ে, বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ দেখা গেল, সেই একই লোক হাট করে খুলে পড়ছে আনন্দবাজার। একটু পরে অন্য লোকটি নাইলনের থলে নিয়ে এগিয়ে এল। দুজনকেই পাকড়াও করে, থলের মুখ থেকে চাদর সরাতেই দেখা গেল, খবরের কাগজের মোড়কে থাকে থাকে রাখা ডিটোনেটর, তার। বুলেট। আড়াইশো গুলি, চারশো ডিটোনেটর পাওয়া গিয়েছিল।

২০০৯-এর মাঝামাঝি খাস লালগড় থেকে চরের খবর, বছর পঁয়ত্রিশের এক লোককে মাওবাদী স্কোয়াডের সঙ্গে ঘুরতে দেখা যাচ্ছে। সঙ্গে বন্দুক-টন্দুক নেই, কেবল গরম গরম রাজনৈতিক বক্তৃতা দেন। ভাষায় একটা শহুরে পালিশ আছে। স্থানীয় মানুষের ভিড়ে মিশে যাওয়ার মতো চেহারা। মুখ খুললে অবশ্য বোঝা যায়, তিনি আদপেই এখানকার লোক নন। গোয়েন্দারা বুঝলেন, ইনি নির্ঘাত মাওবাদী সংগঠনের উঁচু লেভেলের কেউ।

সেই স্পাইকে কলকাতায় ডেকে বহু মাওবাদী নেতার ছবি দেখানো হল। পঞ্চাশ জনের ছবি দেখেও মাথা নাড়ছিল, একান্নতম ছবিটা দেখে লাফিয়ে উঠল। গোয়েন্দারা দেখলেন, ওই নেতা হুগলির জাঙ্গিপাড়ার বাসিন্দা, মাওবাদীদের রাজ্য কমিটির সদস্য। কিন্তু তাঁকে ধরতে লালগড়ে ঢুকতে হবে। তা অসম্ভব। গ্রাম কে গ্রাম মাওবাদীদের আন্ডারে। দেখতে দেখতে ২০১০-এর পুজো চলে এল। লালগড় আন্দোলন তখন অনেকটা ঝিমিয়ে এসেছে। হঠাৎ সেই স্পাইয়ের ফোন পেলেন এক গোয়েন্দা অফিসার। ফিসফিস করে কথা বলছে।

‘স্যর, ও এখন আমার সামনে।’

‘মানে, তুমি কোথায়?’

‘আমি কল্যাণী এসেছিলাম আত্মীয়বাড়ি। এখন কলকাতা ফিরছি কল্যাণী লোকালে। একই কামরায় সে-ও উঠেছে! আমাকে অবশ্য দেখেনি।’

সেই মাওবাদী নেতা কল্যাণী লোকাল থেকে দমদমে নেমে মেট্রো ধরলেন। নামল পুলিশের চরও। গোয়েন্দাদের দল তখন ওঁত পেতে দমদমে। তাঁরাও মেট্রো ধরলেন। নেতা চাঁদনি চক নেমে সিঁড়ি দিয়ে উঠতেই, তাঁকে ধরে সোজা লালবাজার! উনি ধরা পড়েছিলেন বলেই সে বছরের শেষে মাওবাদীদের তখনকার রাজ্য সম্পাদক কাঞ্চন ওরফে সুদীপ চোংদারকে গ্রেফতার করা গিয়েছিল।

তবে কাঞ্চনের আগে মাওবাদীদের রাজ্য সম্পাদক ছিলেন যিনি, সেই হিমাদ্রি সেন রায় ওরফে সোমেনকে গ্রেফতার করতে মগজাস্ত্রের চূড়ান্ত প্রয়োগ করেছিলেন এক অফিসার। ২০০৮-এর ফেব্রুয়ারি। সোমেনকে তার বহু আগে থেকেই জালে তোলার চেষ্টা হচ্ছে। এক দিন, সোমেনের মোবাইলে আড়ি পেতে অফিসার শুনলেন, সোমেন এক শাগরেদকে বলছেন, ‘আমরা হাটে দেখা করব।’ হাটে? কোন হাটে? সেটা তো বলা হল না। তা হলে, ওই লোকটাই বা বুঝবে কী করে, কোন হাটে দেখা হবে? কথাগুলো রেকর্ড করে রেখেছিলেন গোয়েন্দা। বার বার চালিয়ে শুনতে শুরু করলেন। ‘হাট’ শব্দটা বলার সময়ে ‘হা’-র ওপর যেন একটু বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। অনাবশ্যক ভাবেই। হেডফোনে বার বার শুনে বোঝা গেল, ‘হাট’ নয়, বলা হচ্ছে ‘হার্ট’। হার্টের বাংলা হৃদয়। হৃদয়পুর স্টেশন।

সোমেনকে গ্রেফতারের সময়ে আর এক প্রস্থ নাটক। ওই অফিসার ‘অপারেশন’ চালিয়েছিলেন একা। উনি জানতেন, সোমেনের ডাকনাম বাচ্চু। সাধারণ পোশাকে হাঁটতে হাঁটতে হৃদয়পুর স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে হঠাৎ সোমেনের মুখোমুখি হয়ে মুচকি হেসে বললেন, ‘কেমন আছেন বাচ্চুদা?’ ডান হাতটা বাড়িয়ে দিলেন হ্যান্ডশেক করার জন্য। ডাকনাম শুনে রিফ্লেক্সে সোমেনও হাত বাড়িয়ে দিলেন। ব্যস, সে হাত আর ছাড়াতে পারেন না! অফিসার বজ্রমুষ্টিতে চেপে ধরেছেন। উপায় না দেখে, সোমেন ‘ডাকাত! ডাকাত!’ চিৎকার জুড়লেন। লোকজন যদি তাই শুনে ডাকাতটাকে মারতে শুরু করে, পালিয়ে যাবেন। লোক ছুটে আসছিলও। অফিসার তখন চেঁচিয়ে বললেন, ‘খবরদার, এ মাওবাদী জঙ্গি। বোমা আছে।’ ঘাবড়ে গিয়ে পিছিয়ে গেল জনতা। তত ক্ষণে পৌঁছে গেছে রেল পুলিশ।

তবে শারীরিক শক্তিতে জঙ্গিকে কাবু করা কাকে বলে, দেখিয়েছিলেন লালবাজারের এক গোয়েন্দা। ২০০৯-এ লস্কর-ই-তইবা’র এক জঙ্গিকে ধরার সময়ে। ঠিক ছিল, উত্তর ২৪ পরগনার বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে, এ-পারে সেই জঙ্গি ঢুকলেই তাকে ধরা হবে। ও-পারে থাকা এক চর তাকে ভুজুংভাজুং দিয়ে এখানে নিয়ে আসবে। কিন্তু মাঝরাত পর্যন্ত অপেক্ষার পর জানা গেল, তাকে এ-পারে আনা গেলেও, গোয়েন্দারা যেখানে অপেক্ষা করছেন, সেখানটায় আনা যাচ্ছে না। ইছামতীর অন্য দিকে, পাড় ঘেঁষে একটা জায়গায় সে অপেক্ষা করছে। আর এগোচ্ছে না। তখন ওই অফিসার রাতের অন্ধকারে বিড়ালের মতো নিঃশব্দে ওই জঙ্গিকে পাকড়াও করে নিয়ে ফেললেন ইছামতীতে। তার মুখে ঢুকিয়ে দিলেন পিস্তলের নল। অপারেশনটা হয়েছিল দু’পারের সীমান্তরক্ষীদের না জানিয়েই। জলের মধ্যে ঝটাপটি আওয়াজ শুনে সার্চলাইট ফেলতে শুরু করলেন তাঁরা। অফিসার দেখলেন, জোরালো আলো তাঁকে ছুঁয়ে ফেলেছে। এক্ষুনি হয়তো ছুটে আসবে ঝাঁকে ঝাঁকে গুলি। ওই অবস্থাতেই এক হাতে নিজের জামাপ্যান্ট খুলে এমন ভাবে বসলেন, যেন প্রকৃতির ডাকে সা়ড়া দিতে নদীর ধারে এসেছেন। সীমান্তরক্ষীদের আলো পড়ল তাঁর পশ্চাদ্দেশে। তাঁরা আসল ব্যাপার বুঝতেই পারলেন না। আলো ফেলা বন্ধ হলে, জঙ্গিকে নিয়ে নিরাপদ জায়গায় চলে এলেন ওই অফিসার।

বিপদের ঝুঁকি অবশ্য সব চেয়ে বেশি ছিল লালগড়ে গিয়ে ছত্রধর মাহাতোকে গ্রেফতার করার অভিযানে। কলকাতার স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের এক অফিসার, সাংবাদিক সেজে ছত্রধরের সাক্ষাৎকার নিতে চাইলেন। মাওবাদীদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত, ঝাড়গ্রামের বাসিন্দা এক সাংবাদিককে ধরে বসলেন, ‘ওঁর একটা ইন্টারভিউয়ের ব্যবস্থা করে দাও না ভাই! আমি ‘এশিয়ান নিউজ এজেন্সি’-র ফ্রিল্যান্স রিপোর্টার, ইন্টারভিউটা নিতে পারলে চাকরিটা পাকা হয়ে যাবে। একটু দেখো না প্লিজ!’ তার পর, ‘তোমার কাছে অমুকের রেফারেন্সে আসছি’ বলে মিডিয়ার এমন এক কেউকেটার নাম করলেন, ঝাড়গ্রামের সাংবাদিকটি জিজ্ঞেস অবধি করলেন না, তোমায় ওরা কোনও চিঠি দেয়নি? প্রমাণ কী, তুমি ওখানে খবর লেখো? এটাও খোঁজ নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করেননি, আদৌ ওই নামে কোনও সংবাদ সংস্থা পৃথিবীতে আছে কি না!

সেই সাংবাদিক ব্যবস্থা করে দিলেন। নিজে সঙ্গে গেলেনও। ২০০৯-এর ২৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে ছত্রধরের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে। গোয়েন্দা, আর ক্যামেরাম্যানের ভেক ধরা তাঁর এক সহযোগী গিয়ে পৌঁছলেন বিরকাঁড় গ্রামে, যেখানে মাওবাদী গণ-সংগঠন ‘পুলিশি সন্ত্রাসবিরোধী জনসাধারণের কমিটি’-র ডেরা। ‘সাক্ষাৎকার’ শুরুর কিছু ক্ষণের মধ্যেই পিস্তল দেখিয়ে ছত্রধরকে পাকড়াও করলেন। মাওবাদী সশস্ত্র প্রহরার ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে আসতে, ছত্রধরকে পণবন্দি হিসেবে ব্যবহার করলেন দুই অফিসার। বোকা বনে যাওয়া বিপ্লবীরা অসহায় হয়ে নেতার ‘অপহরণ’ দেখলেন!

২০১২-র নভেম্বরে, বাংলাদেশের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ অপরাধী সুব্রত বায়েন গ্রেফতার হল। খবর ছিল, মাঝরাতের পর উত্তর ২৪ পরগনার এক জায়গায় সুব্রত আসবেন, আর একটা গোপন আশ্রয়ে তাকে মোটর সাইকেলে পৌঁছে দেবে একটা লোক। এক দল গোয়েন্দা সে দিন মোতায়েন উত্তর ২৪ পরগনার ওই জায়গায়। আর কলকাতায় বসে, ওই মোটর সাইকেল চালকের মোবাইলে আড়ি পেতে, আর এক দল গোয়েন্দা তাঁদের জানিয়ে যাচ্ছিলেন, কী কথা শুনেছেন, কোত্থেকে, মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন কী। এ দিকে মোটর সাইকেলের লোক সারা ক্ষণ গ্যাং-এর অন্যদের বলে যাচ্ছে, ‘আমি একটা হিরো হন্ডা বাইকে চড়ে যাচ্ছি।’ কিন্তু মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ধরে, সেই তল্লাট চষে ফেলেও সেখানে কোনও হিরো হন্ডা মোটর সাইকেলে কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না, যে সন্দেহভাজন। এ ভাবে চলল ঘণ্টা চারেক!

ওখানে এমন এক অফিসার ছিলেন, মোটর সাইকেল-ই যাঁর অবসর সময়ের ধ্যানজ্ঞান। তিনি ফোনে আড়ি পেতে কথাগুলো শুনতে শুনতে ভাবলেন, লোকটা বলছে বটে সে হিরো হন্ডায় আছে, কিন্তু ওর বাইকের শব্দ ইয়ামাহা আর এক্স হান্ড্রেড-এর মতো শোনাচ্ছে! মোটর সাইকেল নিয়ে উনি এত ঘাঁটাঘাঁটি করেছেন, জানতেন, এক-এক বাইকের শব্দ এক-এক রকম। সে সব ওঁর মুখস্থ! তক্ষুনি আর এক্স হান্ড্রেডের খোঁজ শুরু হল, আর লোকটাকে পাওয়া গেল কিছু ক্ষণের মধ্যেই, ওই মডেলের বাইকেই! তাকে ফলো করতেই, সুব্রতর খোঁজ মিলল।

তবে সন্দেহভাজন লস্কর-ই-তইবা জঙ্গি, এবং মুম্বই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদে নাশকতার ঘটনায় জড়িতদের অন্যতম সামির ওরফে নইমকে পুলিশ বা গোয়েন্দাদের কেউ ধরেননি। ২০০৭-এর এপ্রিলে পেট্রাপোল সীমান্তের কাছে মহারাষ্ট্রের ছেলে সামির ও তিন পাকিস্তানি যুবক যখন গ্রেফতার হয়, গোয়েন্দারা জানতে পারেন, হাওড়া থেকে ট্রেনে বারাণসী গিয়ে আত্মঘাতী হামলা চালানোর কথা ছিল তাদের। সামির এতটাই কট্টর জঙ্গি ছিল, ধরা পড়ার সময়ে প্রমাণ লোপাট করতে মোবাইল থেকে সিমকার্ড খুলে চিবিয়ে খেয়ে ফেলেছিল!

সেই সামির ধরা পড়ল কী করে? পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ হয়ে বনগাঁ দিয়ে চোরাপথে ভারতে ঢুকেছিল ওই চার জন। ওই এলাকায় নিত্যদিনের ঘটনা। এর বাড়ির উঠোন, তার ধানখেত, ওর মাঠ দিয়ে ঘুরে ঢুকতে হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা এতে অভ্যস্ত। কিন্তু সামিরের সঙ্গে থাকা যুবকদের লম্বা, ফর্সা চেহারা, আর কুর্তা-পাজামার ধরন দেখে মানুষের সন্দেহ হয়। তখনই ওদের আটকে দেন। কথা বলতে গিয়ে দেখেন, তারা বাংলা বোঝেই না, কথা বলছে হিন্দি ও উর্দুতে। সন্দেহ হয়, এরা নিছক রুজি-রোজগারের জন্য আসা বাংলাদেশি না, বাইরের লোক। অন্য মতলব আছে। গ্রামের লোকই ওদের তুলে দেন বিএসএফের হাতে।

লোকজন এমন সতর্ক হলে হয়তো গোয়েন্দা অফিসারদের এই সব দুরন্ত কীর্তিকাহিনি জন্মাবেই না! কিন্তু পৃথিবী দ্বিগুণ নিরাপদ হবে।

Rabibashariya Terrorism
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy