Advertisement
E-Paper

প্যাঁচমিশেলি

মাতাল রিকশাওয়ালা। অপরাজেয় ঘুড়ি। হিন্দি গানের গাঁকগাঁক মাইক। বিশ্বকর্মা পুজোর নানা গল্প।ন তুন বিয়ের পর প্রথম বিশ্বকর্মা পুজো, তার ওপর বর সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। ওর অফিসে বিরাট করে পুজো হয়, বিল্ডারদের বাড়ি নেমন্তন্নও থাকে। খুব আশায় ছিলাম, রইরই করে কাটবে দিনটা। সকাল সকাল লাফিয়ে উঠে দু’ঘণ্টা ধরে সাজলাম। বর বলল, লাঞ্চ করেই আমাকে অফিসে নিতে আসবে, তার পর হইহই। বলে, নিজে আলমারি লন্ডভন্ড করে শেরওয়ানি খুঁজে পরে, জামা খুঁজতে দেরি হয়ে গেছে বলে কিচ্ছু না খেয়ে তিড়িংবিড়িং করে অফিসে রওনা দিল।

অনেকে মিলে

শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০০:০৩

ন তুন বিয়ের পর প্রথম বিশ্বকর্মা পুজো, তার ওপর বর সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। ওর অফিসে বিরাট করে পুজো হয়, বিল্ডারদের বাড়ি নেমন্তন্নও থাকে। খুব আশায় ছিলাম, রইরই করে কাটবে দিনটা। সকাল সকাল লাফিয়ে উঠে দু’ঘণ্টা ধরে সাজলাম। বর বলল, লাঞ্চ করেই আমাকে অফিসে নিতে আসবে, তার পর হইহই। বলে, নিজে আলমারি লন্ডভন্ড করে শেরওয়ানি খুঁজে পরে, জামা খুঁজতে দেরি হয়ে গেছে বলে কিচ্ছু না খেয়ে তিড়িংবিড়িং করে অফিসে রওনা দিল। আমিও আমার অফিসে এসে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বসে রইলাম। কখন বাজে বারোটা।
একটা নাগাদ ফোন এল। টাচ-আপ করে নাও। ফুর্তির চোটে সব্বাইকে চিৎকার করে বললাম, হ্যাঁ গো তোমাদের আজ প্ল্যান কী? আমরা তো হিহি, এক্ষুনি বেরিয়ে পড়ব।
দুটো-তিনটে বেজে গেল। না বর আসে, না তার ফোন। আমি ফোন করলেও ধরে না। ছ’টা নাগাদ ধৈর্যের বাঁধ ভাঙল। ‘বাড়ি চলে যাচ্ছি’— মেসেজ করে বেরিয়ে পড়লাম। সারা রাস্তায় লাইট, লোকে লোক। আমার চোখে জল কানে এফএম। বাড়ির দরজায় পৌঁছে ভুরু কুঁচকে গেল। ভেতর থেকে বন্ধ। মানে, মূর্তিমান ফিরে এসেছে। দাঁত কিড়মিড় করে বেল টিপতে লাগলাম। কেউ খুলল না।
পার্স থেকে চাবি বার করে দরজা খুলে ভেতরে গিয়ে দেখি বনবন পাখা, হুহু এসি, ফুরফুর নাক ডাকার আওয়াজ। ইঞ্জিনিয়ারবাবু শেরওয়ানি পরেই হাত-পা ছড়িয়ে নিদ্রা যাচ্ছেন। মাথায় এক গ্লাস জল ঢালার পর আধখানা চোখ মেলে বলল, খাবার আনিয়ে নাও। আমি কিছু খাব না। আট বোতল বিয়ার খেয়েছি!
কোনও রকমে ধরে ধরে বাথরুমে নিয়ে গেলাম। কয়েক মগ জল ঢালার পর বলল, রাগ করছ কেন? আমরা হাউস-পার্টি করব। আমার কেঁদে ফেলার উপক্রম। ইতিমধ্যে শাশুড়িমা ফোন করছেন। তিনিও অনেক ক্ষণ ধরে ছেলেকে পাচ্ছিলেন না, টেনশন চলছে।
মা’র ফোন আসতেই ছেলে সিধে। ‘না, না, ওই তো, ফোনটা সাইলেন্ট ছিল...এই এ বার বেরোব। আচ্ছা, পরে পরে... আমরা বেরোচ্ছি।’ দেখলাম, নেশাটা এই ঝাঁকুনিতে অর্ধেক কেটে গিয়েছে। কিন্তু, বাকি আদ্ধেকটা রয়েছে। কারণ, এক বার বলতেই ভ্যাবলার মতো মুখ করে কান ধরে দাঁড়িয়ে রইল। আর নাকি কক্ষনও এ ভাবে ডোবাবে না।

মেয়েদের স্কুল, বিশ্বকর্মা পুজোয় কিছুতে ছুটি দেওয়া হত না। তাও সেই দিনে অ্যাটেনডেন্স বেশ কম। দিদিরা অবাক, এ কী! এত জন আসেনি কেন? কাবেরী আগ বাড়িয়ে বলতে গেল, ‘ইয়ে, মনে হয়, সব ঘুড়ি ওড়াচ্ছে।’ কী রাগ! ‘এ আবার কী অনাসৃষ্টি! মেয়েরা ঘুড়ি ওড়াবে কেন? অ্যাঁ?’ তার পর থেকে কায়দা করে মাঝ সেপ্টেম্বরে হাফ-ইয়ার্লি রুটিন সেট করে, অঙ্ক পরীক্ষাটা তাক করে বিশ্বকর্মা পুজোর দিনেই ফেলা হত। না এসে যাবি কোথা?

অঙ্ক পরীক্ষা চলছে। এ দিকে স্কুল লাগোয়া রাস্তায় ইয়া প্যান্ডেল। মাইক তো মেয়েদের স্কুলের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবেই। গোটা স্কুল গমগম করছে। পরদেশি পরদেশি যানা নেহি। দিদিরা প্রচণ্ড গম্ভীর। হঠাৎ শুরু হল ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’। ক্লাসে যেন বোম ফাটল। খাতা সাদা, পেন চলছে না, পারলে বেঞ্চের ওপর দাঁড়িয়ে আলিশা চিনয়ের মুখস্ত পোজ শুরু করে সকলে! এই সময়ে ক্লাস ঘুরতে বেরোলেন স্বয়ং হেডমিস্ট্রেস। ঘরের ভেতরে ঢুকে প্রত্যেকটা রোয়ের পাশে দাঁড়িয়ে সক্কলের আপাদমস্তক খুঁটিয়ে দেখছেন। কেউ তাল দিচ্ছে কি না, পা নাড়ছে কি না, কারও গায়ে দুলুনির চিহ্নমাত্র দেখা যাচ্ছে কি না। চুক্কি দিচ্ছেন, এগিয়ে গিয়ে ঝড়াক করে পেছন ফিরছেন, দরজায় থমকে পড়ছেন, ফের জানলা দিয়ে উঁকি মারছেন। অঙ্কের গার্ড দিচ্ছেন না ‘অপসংস্কৃতি’র, গুলিয়ে যাচ্ছিল। অবশ্য সোহিনী ফিসফিস করে বলল, ও সব কিছু না। উনিও আসলে গানটা ভাল করে শুনবেন বলেই এ দিকটায় এসেছিলেন।

দুপুর প্রায় তিনটে, হঠাৎ পাড়ার ইলেকট্রিশিয়ান চাঁদুদা এল আমাদের ছাদে। বুড়োদা বলল, ‘তোর হাতে ওটা কী?’ ‘কয়েল।’ কয়েল মানে? আরে, মোটা তামার তার। রাজুদা এসে সেটা টেনে নিয়ে বলল, ‘বুড়ো, এ দিয়ে ঘুড়ি ওড়ানো যাবে?’ চাঁদুদা বলল, ‘সে কী করে হবে? কত ভারী!’ বুড়োদা বলল, ‘থাম, পান্তা ওড়ানো যাবে।’ ‘পান্তা’ হল সবচেয়ে বড় সাইজের ঘুড়ি। ওড়ানোর পর মাঞ্জা ধরে রাখা যায় না, এত টান। তামার তার দিয়েই ওড়ানো হল। হাওয়া ছিল ভাল, চড়চড় করে উড়ে গেল। আমাদের বাড়ির ঠিক পাঁচটা বাড়ি পেছনে থাকত বাঁকাদা, ভাল ঘুড়ি ওড়াত। বলল, ‘কী রে, পান্তা বাড়লি? দাঁড়া, দেখাচ্ছি।’ নিজে যে ঘুড়িটা ওড়াচ্ছিল, সেটা নামিয়ে একটা বড় ঘুড়ি বাড়ল। বুড়োদা আমাকে চোখ মটকে বলল, ‘জাস্ট চুপ করে ঘুড়িটা ধরে দাঁড়িয়ে থাক। আর কিচ্ছু করিস না।’ বাঁকাদা চড়চড় করে তলায় ঢুকে পড়পড় করে টান মারল। অন্য যে কোনও ঘুড়ি একশো বারে নিরানব্বই বার কাটা যাবেই ওই টানে। দেখি, বাঁকাদার ঘুড়ি ভো-কাট্টা। বাঁকাদা হাঁ, আমরা চেঁচাচ্ছি। বাঁকাদা রেগে লাল, ‘দাঁড়া, তোদের পান্তার ষষ্ঠীপুজো না করে আজ নামব না।’ আমরা বললাম, শুয়ে যাবে আজ, চান্স নিয়ো না। কে শোনে কার কথা! এর মধ্যে আরও দুটো ঘুড়ি ফুস্‌। আমাদের দারুণ মজা। তামার তারের পাশে কোথায় লাগে মাঞ্জা! রাজুদা বলল, ‘তারটা অ্যান্টেনার সঙ্গে আটকে রাখ। দেখি কার কত দম।’

ছ’ছটা ঘুড়ি গেল বাঁকাদার। ওর বাবাও খুব ভাল ঘুড়ি ওড়াতেন, তিনিও চলে এলেন ছাদে। আমার চিৎকার করে বললাম, জেঠু, হবে নাকি? জেঠুও তেড়েমেরে একটা বড় ঘুড়ি বাড়লেন। তারও একই হাল।

একটু পরে দেখি, বাঁকাদা আর জেঠু আমাদের ছাদে হাজির: ‘কী ব্যাপার বল তো! এ তো ন্যাচারাল নয়!’ রহস্য ফাঁস হতে জেঠু খুব চটে গেলেন। ‘অনেক ঘুড়ি আর মাঞ্জা নষ্ট হয়েছে তোদের জন্য। দাম দে!’ রাতে নীচের ঘর থেকে রাজুদার মা’র চিৎকার, টিভিতে ছবি আসছে না কেন? আসবে কী করে! অ্যান্টেনায় পান্তা লাগানো ছিল, তার ভারে কত বার ঘুরেছে, এখন তার মাথা ঘুরবে না!

ছোটমাসির ননদ ছিলেন চমৎকার মানুষ, শুধু মাথার কয়েকটা স্ক্রু ঢিলে। বিশ্বকর্মা পুজোর সকালে বসে আমি পড়ছি, বেল বাজল। সেই পিসি দাঁড়িয়ে। পরনে বাড়ির ম্যাক্সি, তাতে আবার ভেজা গামছা জড়ানো। পায়ে হাওয়াই চটি। হাতে বাজারের থলে। ঢুকেই মা’কে বললেন, খুকু, তোর কাছে থাকতে এলাম। কেন? কাল ওঁদের বাড়িতে রান্নাপুজো ছিল, তাতে তো প্রচুর ঝাড়পোঁছ করতে হয়, সকড়ি, এঁটো, ছোঁয়াছুঁয়ি কত্ত বাছবিচার মেনে চলতে হয়। উনি যত সবাইকে সাবধান করছেন এ সবে হাত দেবে না, চুল ফেলবে না, আমাকে টাচ করবে না, কেউ কিচ্ছু শুনছে না। এমনকী আজ যখন বাথরুমে ছিলেন, কে যেন রান্নাঘরে ঢুকে মামলেট ভেজে খেয়েছে, উনি গন্ধ পেয়েছেন। তক্ষুনি সংসার ত্যাগ করে বেরিয়ে পড়েছেন। গোলপার্কের বড় রাস্তায় বেরিয়েই একটা ফুলমালা ঝোলানো, ডাবের শীষ লাগানো পুজো করা ২৪০ দেখেই তাতে উঠে পড়েছেন। কন্ডাক্টর তাঁকে সম্মান করে টিকিটও চায়নি, এত ভাল ছেলে। ফলে নোংরা কাগজ ছুঁতে হয়নি। ধোওয়া কাপ-ডিশে চা মিষ্টি দিতে তিনি একটু শান্ত হয়ে বসলেন আর আমার মা জরুরি কিছু ফোন করতে গেল।

ফোনে মাসিকে মা যত ফিসফিস করে বলে ‘তোর ননদ একটা ম্যাক্সি পরে বাজারের ব্যাগ নিয়ে হাওয়াই চটি পায়ে আমাদের বাড়ি চলে এসেছে’, মাসি তত ও-প্রান্তে চেঁচায়, ‘অ্যাঁ, কী বলছিস? কী হয়েছে?’ ফলে মাকে রিপোর্ট রিপিট করতে গলা তুলতে হল, আর পাশের ঘর থেকে পিসি এসে হালুম: অ্যাই, কাকে ফোন করছিস? এর পর বাড়ির ফোন বেজেই চলল, আর পিসি খেপে লাল। ‘এত ফোন কে করছে রে?’ বলে মায়ের সঙ্গে সঙ্গে ঘুরতে লাগলেন খুব সন্তর্পণে, তুড়ুক তুড়ুক লম্ফ দিয়ে, সব ছোঁয়া বাঁচিয়ে। শেষে ফোনের প্রায় ঘাড়ের ওপর বসলেন, রিং হতে না হতেই হেঁড়ে গলায় ‘হ্যালঅ’। চেনা গলা পাওয়া মাত্র ও-প্রান্ত ফোন গদাম করে নামিয়ে দিল। আমি খ্যাকখ্যাক হাসছি দেখে ভুরু কুঁচকে তাকালেন। বললাম, জিয়োগ্রাফি পড়ছি তো, ত্যাড়াব্যাঁকা ম্যাপ দেখলেই হাসি পায়!

বিশ্বকর্মা পুজোর সন্ধে। আসলে নিশুতি রাত। পুরো রাস্তা বেবাক ফাঁকা। রিকশা স্ট্যান্ডে গিয়ে দেখি সেজেগুজে ক’খানা রিকশা দাঁড়িয়ে। কিন্তু কেউ কোত্থাও যাবে না। কারণ তাদের মালিকরা স্টেশন-লাগোয়া দিশির ঠেকে পুঁটলি পাকিয়ে শুয়ে। হঠাৎই ইউরেকা! আমাদের পাড়ার রিকশাকাকা তার রিকশাটি নিয়ে হাজির। ‘উঠে পড়ো দিদি’ শোনার দেড় সেকেন্ডেই আমি পরম নিশ্চিন্তে সওয়ার। ওঠামাত্র অবশ্য একটা বিজাতীয় গন্ধ ভকভক করে তেড়ে এল। নাকটি বুজে রইলাম। কিন্তু চোখ বুজে থাকা গেল না। দু’পা যেতে না যেতেই চেন গেল পড়ে। আর রিকশাকাকা সটান কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে মুখ ঝুলিয়ে রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে পড়ল। চেন তোলায় বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। বললাম, কাকা চেনটা তোলো। সে মোলায়েম হেসে বলল, ভয় পাচ্ছ কেন দিদি? চেন ঠিক নিজের জায়গায় উঠে পড়বে। মিনিটতিনেক গেল। আমি উসখুস। হঠাৎ পেছন থেকে একটা বাসের উদয়, আর কন্ডাকটরের তুমুল গালাগাল-সহ রিকশার প্রায় গা ঘেঁষে বেরিয়ে যাওয়া। অমনি রিকশাকাকা ঝড়াকসে লাফিয়ে উঠে হুড়মুড় করে চেনটা লাগিয়ে সেই দুরন্ত বাসের পেছনে বাঁইবাঁই করে তাড়া করল কন্ডাকটরকে মারবে বলে। রিকশা চলছে উল্কার বেগে। আমারও প্রায় উড়ন্ত অবস্থা। যে কোনও মুহূর্তে ছিটকে পড়ব। রিকশাকাকার কোনও হেলদোল নেই। এক বার আমায় ধমকে বলল, অত চেঁচাচ্ছ কেন? ঠিক করে ধরে বোসো। আচমকাই আস্তে হল রিকশার গতি। এ বার গুনগুন করে গান। তত ক্ষণে ভয়ানক রাগ হয়েছে আমার। বললাম, রিকশা থামাও। অমনি রিকশাকাকা পাশের একটা রিকশাকে ডেকে বলল, এ কে জানো? বড় ভাল মেয়ে। এর পর যত বার রাগারাগি করছি, চেঁচাচ্ছি, বলছি ‘নামব, নামিয়ে দাও’, রিকশাকাকা তত জোরে চেঁচিয়ে সারা পৃথিবীকে শুনিয়ে বলছে, এ আমার লক্ষ্মী মেয়ে। লক্ষ্মী হওয়ার ঝক্কি সে দিন কড়ায়গন্ডায় বুঝেছিলাম।

পাড়ার কোনও বাচ্চা ঘুড়ি ওড়াচ্ছে দেখলেই ছোটকা হাজির। ‘দেঃ, প্যাঁচ খেলা শিখিয়ে দিচ্ছি!’ তার পর প্যাঁচ, এবং ঘ্যাঁচ। অবধারিত ভাবে হাতের ঘুড়িটি খুইয়ে, ময়দান ছাড়তেন। এ বার পরের বাচ্চাটাকে, ‘দে, প্যাঁচ শেখাব!’ কাঁদো কাঁদো মুখে সে ঘুড়ি হ্যান্ডওভার করত। অ্যাকশন রিপ্লে। শুধু ঘুড়ি গেলেও কথা ছিল। সুতোও যেত। ছোটকা কাছাকাছি প্যাঁচ খেলা পছন্দ করতেন না মোটে। অনেক দূরের ঘুড়িদের সঙ্গে টক্কর দিতেন। আমাদের কাউকে সুতো ছাড়তে বলতেন। ছেড়েই যাচ্ছি, ছেড়েই যাচ্ছি। ঘুড়ি যখন কাটা পড়ল, লাটাইয়ের সুতো প্রায় সব শেষ। তাই একটা সময় বিশ্বকর্মা পুজোর দিন দূর থেকে ছোটকাকাকে আসতে দেখলে আমরাই ভোওওওওকাট্টা।

তখন ফার্স্ট ইয়ার। আমি ছিলাম অসম্ভব ফর্সা, আর আমার হরিহরাত্মা বন্ধু এমন কালো, সে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকলে ফেলুদাও ধাপ্পা খাবে। এক দিন তার বাড়ি গিয়েছি, হঠাৎ তার মা এসে বললেন, অ্যাই, তুমি নাকি সব সময় গর্ব করো, ফর্সা ফর্সা বলে? জানো, ও তোমার চেয়েও দেড় গুণ ফর্সা ছিল? গত বছর অবধি? আমার তো মুচ্ছো যাওয়ার জোগাড়। বললাম, তার পর হঠাৎ কী হল মাসিমা? বললেন, ওই তো, বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ভোর থেকে সন্ধে অবধি টানা ছাদে দাঁড়িয়ে এমন ঘুড়ি ওড়াল, রোদ্দুরের চোটে ওই বিলিতি রং অ্যাক্কেরে আফ্রিকা মেরে গেল। আমি মানে মানে বেরিয়ে এলাম। সেই থেকে আমার বিশ্বকর্মা পুজোর ওপর রাগ।

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy