Advertisement
E-Paper

রবিবাসরীয় ম্যাগাজিন

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৪ ০০:৪০

রিয়েলিটি শো

ভাল অভিনেত্রী খুঁজছিল এই শো। জিতলে স’ সিরিজ (Saw series)-এর সিনেমায় চান্স মিলবে। এই সিরিজ হল ভৌতিক সিনেমার নামী ফ্র্যাঞ্চাইজি। বুঝেছেন, শোয়ের নাম কেন ‘স্ক্রিম কুইন্স’? অবশ্য, ফিল্ম-ডিকশনারিতে এই শব্দবন্ধের একটা অন্য মানেও আছে। কোনও অভিনেত্রী বারে বারে হরর ফিল্মে অভিনয় করলে হলিউড তাঁকে স্ক্রিম কুইন বলে ডাকে। অনেকটা সেই ‘ড্যামসেল ইন ডিসট্রেস’-এর মতো চরিত্র। সুন্দরী মহিলা বিপদে পড়ে আছাড়িপিছাড়ি কাঁদছেন, থরথর করে কাঁপছেন, আর তাঁকে বাঁচাতে টগবগ এগিয়ে আসছে কোনও ‘শিভালরাস’ নায়ক। তবে, স্ক্রিম কুইন-এর ক্ষেত্রে বিপদের নাম ভূত, সাইকোপ্যাথ খুনি, দানব এই সব। এই রিয়েলিটি শোয়ের প্রতি এপিসোডে তিনটে ধাপ। অ্যাক্টিং চ্যালেঞ্জ, অ্যাক্টিং ক্লাস, ডিরেক্টর’স চ্যালেঞ্জ। অভিনেত্রীরা ভয়ের দৃশ্যের আবেগ-অভিব্যক্তি কত ভাল ফুটিয়ে তুলবেন, সবই এখানে যাচাই হয়ে যাবে।

প্রথমেই, অভিনেত্রীদের বিদঘুটে পাগলের সামনে ফেলে দেওয়া হল। (আরে, ডরো মত, এ-ও অভিনেতাই!) সে মেশিনের করাত নিয়ে ঘোরে। মানুষ সামনে পেলেই হাড়-মাংস মিহি করে চেঁছে দেয়। মেয়েদের ‘টাস্ক’ দেওয়া হল, কেঁদে-ককিয়ে, যেমন পারো তেমন করে ওকে বোঝাও, তোমাকে যেন না মারে। ডিরেক্টর’স চ্যালেঞ্জে বলা হল, হরর মুভি পোস্টারের শুট করো নিজে থেকে। এই সিঙ্গল শটে কে কেমন সিনেমাটা বেচতে পারে, সেটাই পরীক্ষা করা হবে। এক বার মেয়েদের বিশাল জানলা থেকে লাফ দিতে বলা হল। কোনও পর্ব ছিল ফিয়ার ফ্যাক্টর গোত্রের। প্রতিযোগী রক্ত-ভর্তি পুলে ঝাঁপ দেবেন, একা অন্ধকার মর্গে গিয়ে ড্রয়ার খুলে বিকৃত দেহ বার করবেন, শরীর ঢাকবেন শ’খানেক পিলপিলে আরশোলায়। বিচারকরা পারফরম্যান্স মেপে দেখবেন কার ভয় জিতল, কারটা হারল।

ভয় পাওয়ানোতেও এক্সপার্ট হতে হবে। ভূতে-ধরা চরিত্রে অভিনয় করে রক্ত জল করে দিতে হবে। এমন ভান করতে হবে যেন ভ্যাম্পায়ার, চাঁদটা উঠলেই শ্বদন্ত শানিয়ে জিভ লকলক করে রক্ত চুষে নেবে। এমনি আট এপিসোডের হার্ডল টপকে কম্পিটিশন জিতলেন তানেদ্রা হাওয়ার্ড। স’ সিরিজের ছ’নম্বর ফিল্মে পরদায় দেখা গেল তাঁকে।

২০১০-এর অগস্টে, আবার পরদায় ফিরল স্ক্রিম কুইন্স। সেকেন্ড সিজনের বিজয়িনী অভিনয় করবেন স’ থ্রিডি-তে। সিরিজের সাত নম্বর। কম্পিটিশনের শুরুতেই দশ প্রতিযোগীকে ঢুকিয়ে দেওয়া হল ঘোর দুঃস্বপ্নের মধ্যে। বিখ্যাত স্ল্যাশার মুভি (মার্ডার মিস্ট্রিরও এক কাঠি ওপরে) ‘আ নাইটমেয়ার অন এল্ম স্ট্রিট’-এর ধাঁচের খতরনাক খুনে-দৃশ্যে অভিনয় করে দেখাতে হল তাঁদের। তার পর নিজেদের শয়তানি করে দেখানোর পালা। ধরো, বয়ফ্রেন্ডের জন্য ডিনার রাঁধছ। এবং মনের মধ্যেও তৈরি হচ্ছে প্ল্যান, কী করে ছেলেটাকে খতম করবে। কিন্তু সাসপেন্সও চাই। তাই, তুমি যে ব্যাড গার্ল প্রথমেই বুঝিয়ে দিলে হবে না। দেখাতে হবে নিপাট ভালমানুষ, তার পর রূপ বদলিয়ে হিংস্র হয়ে উঠতে হবে, আস্তে আস্তে। এখানেই মার খেলেন সিয়েরা। বড্ড মিষ্টি হয়ে যাচ্ছিল তাঁর অ্যাক্টিং। অতএব, সোজা বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হল তাঁকে।

একটা সেক্সি, ডার্ক ফোটোশুট হল। লিজেন্ড হয়ে যাওয়া হরর চরিত্র সাজতে হবে। দানব-শিশুর মা, শয়তান স্কুলছাত্রী, পাপিষ্ঠা নার্স, সিরিয়াল কিলার, বা একা একা ফোনে কথা বলতে থাকা সন্দেহজনক মেয়ে (‘কৌন’ ছবির মতো?), ফ্র্যাংকেনস্টাইনের কনেবউ। একমাত্র গ্যাবি পেলেন শাওয়ারের নীচে মেয়ের চরিত্রটা (হিচককের ‘সাইকো’ ছবির দৃশ্য)। শো শেষের দিকে এগোচ্ছিল, বীভৎসতাও বাড়ছিল। স্ট্রিপ-ডান্স দেখাতে হল। মেয়েটি নাচের তালে পোশাক খুলতে খুলতে হঠাৎ হলদে পাইথন হয়ে গিলে নেয় খদ্দেরকে। সেক্সি ভ্যাম্পায়ার, নেকড়ে-মানুষ, মাথা চিবিয়ে খাওয়া জোম্বি— চলতেই থাকল!

ফাইনালে দেওয়া হল, অদ্ভুতুড়ে চরিত্র। ছোট্ট শহরের গণিকা, সাংঘাতিক এক আত্মা ভর করেছে তার ওপরে। মরার আগে কী কী কাণ্ড-কারখানা করতে পারে সে, অ্যাক্টো করে দেখাও। আতঙ্ক আর যৌনতা ঠিকঠাক মিশ খাওয়াতে হবে। জেসিকা বকুনি খেলেন। চরিত্রটাকে অশ্লীল করে দিচ্ছেন। তার পর দেওয়া হল মানসিক হাসপাতালের এক সাইকোর চরিত্র। সে গলায় সুতো পেঁচিয়ে শুধুমুধু মানুষ মারে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে সেকেন্ড সিজ্ন জিতলেন সেইই শাওয়ার-গার্ল, গ্যাবি ওয়েস্ট।

পরের স’ সিনেমাটার ভাবনাচিন্তা চলছে। তা হলে, হয়তো ফিরে আসবে এই রিয়েলিটি শো। নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন এখনও দেখছেন না কি?

এ বার মহাবিশ্বকাপের আসর বসেছে চাঁদ, মঙ্গল ও পৃথিবীর ব্রাজিল মিলে। ন’বারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল গ্রুপ-লিগের ম্যাচ স্বদেশে পায়নি। তারা খেলছে মঙ্গলের ‘মার্স অ্যাটাক’ স্টেডিয়ামে। সেখানে তিনটি ম্যাচে ফিফার খরচ হচ্ছে ত্রিশ লক্ষ কোটি ডলার। সঙ্গে বোয়িং ৯৯৯ রকেটের পরিবহণ খরচ। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বিপুল অর্থ ব্যয় করে ২০০ সমর্থককে মঙ্গলে পাঠিয়েছেন। তাই মুখে কালো কাপড় বেঁধে দেশে মিছিল বেরিয়েছে। তবে, প্রথম ম্যাচের পর ব্রাজিলের প্রধান স্ট্রাইকার বলেছেন, মঙ্গলবাসীর বিরুদ্ধে ৩-০ জিততে আমরা গ্রহের পরিবেশ থেকে ভালই সাহায্য পেয়েছি। মঙ্গলের অভিকর্ষজ ত্বরণ মাত্র ৩.৭ মিটার প্রতি বর্গসেকেন্ড। তাই আমরা লাফিয়ে লাফিয়ে এয়ার-ড্রিব্ল করেছি। মঙ্গল-কোচের অভিযোগ, ‘জাপানি রোবট-রেফারি কেন ব্রাজিলকে পেনাল্টি দিয়েছে? বলের মধ্যে রাখা ১৪টি ক্যামেরার চারটেই দেখাচ্ছে মিডফিল্ডার অভিনয় করে পড়ে গেছে!’ রোবটটি ডিকোড করে দেখা হচ্ছে, কোনও ব্রাজিলীয় হ্যাকার সাম্বা-ট্রোজান পুরেছেন কিনা। আর্জেন্টিনা, স্পেন, জার্মানি দলের দাবি, মানুষ-মাথা ও রোবট-শরীর সংকর-রেফারি ব্যবহারের। ফিফা প্রেসিডেন্ট চিন্তায়, কাপটা উতরোবে তো? কিন্তু রেফারিং নিয়ে উৎসাহী নন বিশ্বকাপের বিদেশি দর্শকরা। ম্যাচের আগে তাঁরা স্টেডিয়ামে ওড়াচ্ছেন ড্রোন-ক্যামেরা। সেগুলি ঘুরে ঘুরে খুব কাছ থেকে খেলার ছবি তুলে স্বয়ংক্রিয় ভাবে ফেম-বুকে আপলোড করছে। সৌরজগতের এই কাপে পিছিয়ে নেই ভারতও। সেক্টর ৫০০-র সংস্থা সুগোলক-টেক বানিয়েছে ফিফা-১৪ গেম। গেমের লেভেল পার হতে সাহায্য করবে স্বয়ং মেসির মস্তিষ্ক। বিপক্ষ আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়াবে গেমিং টুল রোনাল্ডো-স্পাইক। গেমটি সুপারকম্পিউটারের ক্ষমতাধর সুপারফ্যাবলেটেও খেলা যাবে। সুতরাং দর্শকদের খেলোয়াড় হিসেবেও ম্যাচ জেতার সুযোগ দিচ্ছে মহাবিশ্বকাপ।

বিশ্বজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, শ্রীভূমি, কলকাতা

লিখে পাঠাতে চান ভবিষ্যতের রিপোর্ট?

ঠিকানা: টাইম মেশিন, রবিবাসরীয়, আনন্দবাজার পত্রিকা,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা ৭০০ ০০১।

অথবা pdf করে পাঠান এই মেল-ঠিকানায়: robi@abp.in

magazine
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy