দেশে যুদ্ধের আবহ। আর তেমন সময়েই পঁচিশে বৈশাখ। গীতাঞ্জলির স্রষ্টা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন। যিনি লিখেছিলেন, চিত্ত যেথা ভয় শূন্য, উচ্চ যেথা শির...। যা এই সময়ে আরও বেশি করে প্রাসঙ্গিক। আসলে রবীন্দ্রনাথের কবিতা এমনই। তাঁর কবিতায় জীবনের প্রতি মুহূর্ত ধরা পড়েছে কোনও না কোনও ভাবে। সব সময়েই তিনি স্মরণীয়। সুসময়ে তো বটেই, কঠিন সময়ে আরও বেশি করে। তাই তাঁকে উদ্যাপন করা মানে জীবনকে উদ্যাপন করা।
তাঁর এ বারের জন্মদিনে হয়তো অন্য বারের মতো নয়। তবে উদ্যাপন কি থেমে থাকবে। রবীন্দ্রনাথের জন্মদিনে তাঁর গান শুনতে শুনতে বাড়িতে বানিয়ে ফেলুন ঠাকুরবাড়ির ব্যঞ্জন। রবীন্দ্রনাথকে উদ্যাপন করুন তাঁর বাড়ির খাওয়াদাওয়ায়। সন্ধ্যায় নয় বসুক গান-কবিতা-গল্পের ঘরোয়া আসর।
শিখে নিন ঠাকুরবাড়ির রান্না পোস্ত মাংস।
উপকরণ:
৭০০ গ্রাম পাঁঠার মাংস
৫-৬ টেবিল চামচ তেল
৪ টেবিল চামচ পোস্ত
১টা তেজপাতা
৪টি ছোট এলাচ
এক গাঁট দারচিনি
২ গাঁট মাপের আদা
৮-১০ কোয়া রসুন
২টি মাঝারি পেঁয়াজ
৪-৫টি কাঁচালঙ্কা
স্বাদমতো নুন
প্রণালী:
প্রথমে মাংসের টুকরোগুলো ধুয়ে নিন। তার পরে বাটা মশলাগুলো তৈরি করে রেখে দিন।
রান্নার নাম পোস্ত মাংস। তাই আগে পোস্ত বেটে নিন। ৪ টেবিল চামচ পোস্ত প্রথমে শুকনো মিক্সিতে গুঁড়িয়ে নিন। তার পরে তাতে ১/৪ কাপ জল দিয়ে আরও এক বার ঘুরিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে পোস্ত বাটা। একটি পাত্রে সরিয়ে রেখে এ বার মিক্সিতে দিন আদা, রসুন, ৩টি কাঁচালঙ্কা এবং টুকরো করে কাটা পেঁয়াজ। এখানেও ১/৪ কাপ জল দিয়ে ভাল ভাবে বেটে নিতে হবে। তার পরে বাটা মশলাটি একটি পাত্রে ঢেলে রাখুন।
এ বার আঁচে বসান প্রেশার কুকার। তাতে দিন তেল। তেল গরম হলে তার মধ্যে দিন তেজপাতা, দারচিনি আর ছোট এলাচ। এলাচ দেওয়ার সময় মুখটা একটু থেঁতো করে নিলে গন্ধ ভাল হবে। গরম তেলে গোটা মশলার সুগন্ধ বেরোলে ওর মধ্যে দিয়ে দিন মাংসের টুকরোগুলো। কিছু ক্ষণ নাড়াচাড়া করে দিয়ে দিন আদা-রসুন-পেঁয়াজ বাটা।
মশলা দিয়ে মাংস ভাল ভাবে কষাতে হবে। আদা-রসুনের কাঁচা গন্ধ চলে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। তার পরে দিন বেটে নেওয়া পোস্ত। তার পরে আরও মিনিট পাঁচেক মাংস কষিয়ে নিয়ে তার পরে দিন নুন এবং ২০০ মিলিলিটার বা ১ কাপের সামান্য কম জল।
জল দিয়ে মাংস এক বার ফুটে উঠলে প্রেশার কুকারের ঢাকা বন্ধ করে ৫-৬টি হুইসল পর্যন্ত রান্না হতে দিন। অবশ্য এটি আপনার প্রেশার কুকার বা কী ধরনের মাংস ব্যবহার করছেন তার উপর নির্ভর করছে। মাংস সেদ্ধ হওয়ার জন্য আপনার প্রেশার কুকারে যতগুলি হুইসল লাগে ততগুলিই দিন। তার পরে আঁচ বন্ধ করুন।
বাষ্প পুরোপুরি বেরিয়ে গেলে প্রেশার কুকারের ঢাকনা খুলে বাকি কাঁচালঙ্কা চিরে দিয়ে দিন। মাংসের ঝোলে যতটা ঘনত্ব চাইছেন, ততখানি পর্যন্ত কমিয়ে নিয়ে আঁচ বন্ধ করুন।
পোস্ত মাংস একটু মাখামাখাই হবে। এটি ভাত, পোলাও, এমনকি পরোটার সঙ্গেও পরিবেশন করা যেতে পারে।