Advertisement
E-Paper

দেখতে খিচুড়ি, কিন্তু স্বাদে খিচুড়ি নয়! কর্নাটকের বিসি বেলে বাথ বঙ্গজনেরও রসনা তৃপ্ত করবে

সোজা কথায় বিসি বেলে বাথ শব্দ তিনটির অর্থও সেই ডাল-ভাত। তবে তা বলা হচ্ছে একটু লোভনীয় ভাবে। কন্নড় শব্দ তিনটির একত্রে অর্থ হল গরমাগরম চাল-ডালের রান্না। এই ভাবে খাবারের কথা বললে খাওয়ার জন্য কে না লালায়িত হবেন?

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০১ মে ২০২৫ ০৯:৫৯
খিচুড়ির থেকে স্বাদে এবং গন্ধে অনেকটা আলাদা বিসি বেলে বাথ।

খিচুড়ির থেকে স্বাদে এবং গন্ধে অনেকটা আলাদা বিসি বেলে বাথ। ছবি: পিপারপট ইন্ডিয়া ডট কম।

গরম গরম ডাল-ভাত। বাঙালিরা তো বটেই, অধিকাংশ ভারতীয়ের কাছেও এটি সেরা ‘কমফোর্ট ফুড’। অর্থাৎ আরাম দেওয়া খাবার। ধরুন দীর্ঘ দিন ঘরের বাইরে রয়েছেন। নানা রকম খাওয়াদাওয়া করছেন। কিন্তু বাড়ি ফিরে প্রথম ওই ডাল-ভাতটিই খেতে ইচ্ছে হবে।

সোজা কথায় বিসি বেলে বাথ শব্দ তিনটির অর্থও সেই ডাল-ভাত। তবে তা বলা হচ্ছে একটু লোভনীয় ভাবে। কন্নড় শব্দ তিনটির একত্রে অর্থ হল গরমাগরম চাল-ডালের রান্না। এই ভাবে খাবারের কথা বললে খাওয়ার জন্য কে না লালায়িত হবেন!

কর্নাটকের শতাব্দীপ্রাচীন এই রান্না যিনি প্রথম তৈরি করেছিলেন তাঁর লক্ষ্যও হয়তো তা-ই ছিল। তবে নাম যা-ই হোক, বিসি বেলে বাথ দেখতে হুবহু খিচুড়ির মতো। কিন্তু রূপ দেখে ভুললে মুশকিল। কারণ দেখতে খিচুড়ির মতো এই খাবার স্বাদে মোটেই খিচুড়ির মতো নয়। স্বাদে অনেক তফাত। সুঘ্রাণেও।

ছুটির দুপুরে হাতে একটু বাড়তি সময় নিয়ে এই রান্নাটি করে দেখতে পারেন।

কী ভাবে বানাবেন?

উপকরণ:

মশলার জন্য—

১/৪ কাপ ছোলার ডাল

১/৪ কাপ গোটা ধনে

২ টেবিল চামচ বিউলির ডাল

২ টেবিল চামচ জিরে

আধ চা চামচ মেথি দানা

২ টেবিল চামচ সাদা তিল

২ টেবিল চামচ পোস্ত দানা

আধ চা চামচ গোটা গোলমরিচ

৬টি ছোট এলাচ

৩ গাঁট মাপের দারচিনি

৫টি লবঙ্গ

১ চা চামচ তেল

২০-২২টি শুকনো লঙ্কা

১/৪ কাপ রোদে শুকোনো নারকেলের টুকরো

১/২ চা চামচ হলুদগুঁড়ো

১/৪ চা চামচ হিং

বিসি বেলে বাথ দেখতে হুবহু খিচুড়ির মতো।

বিসি বেলে বাথ দেখতে হুবহু খিচুড়ির মতো। ছবি: সংগৃহীত।

মূল রান্না—

সেদ্ধ করার জন্য:

৩/৪ কাপ অড়হর ডাল

১ কাপ ছোট দানার যে কোনও চাল

২ টি মাঝারি মাপের গাজর মাঝারি টুকরোয় কাটা

১৫টি বিন্‌স মাঝারি টুকরোয়

২টি মাঝারি মাপের আলু ডুমো করে কাটা

৫ কাপ জল

১ চা চামচ তেল

১/৪ চা চামচ হলুদ গুঁড়ো

মশলা কষানোর জন্য:

২ টেবিল চামচ ঘি

২ টেবিল চামচ কাজু (অর্ধেক করে নেওয়া)

২ টেবিল চামচ কাঁচা বাদাম

১ চা চামচ কালো সর্ষের দানা

৩-৪টি শুকনো লঙ্কা

৮-১০টি কারিপাতা

১/৪ চা চামচ হিং

১ টি বড় টম্যাটো মাঝারি টুকরোয় কাটা

১/৩ কাপ কড়াইশুঁটি

স্বাদমতো নুন

১টি ক্যাপসিকাম বড় চৌকো টুকরোয় কাটা

দেড় টেবিল চামচ তেঁতুল জলে ভেজানো

২ টেবিল চামচ গুড়

৪ টেবিল চামচ বিসি বেলে বাথ মশলা

৪ টেবিল চামচ ধনেপাতা কুচি

ছুটির দুপুরে হাতে একটু সময় নিয়ে এই রান্নাটি করে দেখতে পারেন।

ছুটির দুপুরে হাতে একটু সময় নিয়ে এই রান্নাটি করে দেখতে পারেন। ছবি: সংগৃহীত।

প্রণালী :

প্রথমে মশলাটি বানিয়ে নিন। একটি ফ্রাইং প্যান আঁচে বসিয়ে তার মধ্যে দিয়ে দিন ছোলার ডাল থেকে পোস্ত পর্যন্ত সব ক’টি উপকরণ। কম আঁচে হালকা নাড়াচাড়া করতে থাকুন। সুগন্ধ বেরোলে ওর মধ্যে দিন এলাচ, দারচিনি, লবঙ্গ এবং গোটা গোলমরিচ। আরও মিনিট তিনেক নাড়াচাড়া করার পরে মশলাগুলো একটি আলাদা বাটিতে ঢেলে ঠান্ডা হতে দিন। এ বার আঁচে বসানো প্যানে তেল দিয়ে তাতে শুকনো লঙ্কা এবং রোদে শুকিয়ে নেওয়া নারকেল দিয়ে ভাল ভাবে ভেজে মশলার বাটিতে ঢেলে রাখুন। সব মশলা ঠান্ডা হলে মিক্সিতে দিয়ে তার মধ্যে দিন হলুদ এবং হিং। সব একসঙ্গে ভাল ভাবে গুঁড়িয়ে একটি মিহি পাউডারের মতো মশলা তৈরি করুন। এই মশলা একটি বায়ুরোধক পাত্রে রেখে দিলে বহু বার ব্যবহার করা যাবে।

এ বার মূল রান্না। প্রথমে চাল-ডাল-সব্জি খিচুড়ির মতো সেদ্ধ করে নিন। চাল এবং ডাল ভাল ভাবে ধুয়ে প্রেশার কুকারে দিন। তার মধ্যে দিন গাজর, বিন্‌স, আলু। ৫ কাপ জল, তেল এবং গুঁড়ো হলুদ। কুকার আঁচে বসিয়ে ৩-৪টি হুইস্‌ল হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। আঁচ বন্ধ করে বাষ্প নিজে থেকে বেরিয়ে যেতে দিন। তার পরে ঢাকনা খুলুন।

এ বার কড়াইয়ে ঘি গরম করে তার মধ্যে কাজু আর বাদাম দিয়ে হালকা লালচে রং ধরলে ভেজে তুলে নিন। এটা শেষে ব্যবহার করা হবে।

এর পরে কড়াইয়ে থাকা ঘি-তে একে একে দিন সর্ষে, কারিপাতা, শুকনো লঙ্কা এবং হিং। সুগন্ধ বেরোলে এবং কারিপাতা ভাজা ভাজা হয়ে এলে দিন টম্যাটো, কড়াইশুঁটি এবং নুন। টম্যাটো গলে গেলে দিন ক্যাপসিকাম। ২-৩ মিনিট নাড়াচাড়া করার পরে দিন জলে ভেজানো তেঁতুলের ক্বাথ এবং গুড়। তেঁতুলের কাঁচা গন্ধ চলে গেলে ওর মধ্যে দিন সামান্য জল। ফুটে উঠলে কুকারে সেদ্ধ করা চাল, ডাল এবং সব্জি দিয়ে ভাল ভাবে মশলার সঙ্গে মিশিয়ে নিন। একটি পাত্রে ৪ টেবিল চামচ বিসি বেলে বাথ মশলা এবং সামান্য জল একসঙ্গে মিশিয়ে সেটি কড়াইয়ে দিয়ে দিন। মশলা-চাল-ডাল ভাল ভাবে মিশে গেলে তার পরে প্রয়োজনমতো গরম জল দিয়ে বিসি বেলে বাথ যতটা গাঢ় বা পাতলা করতে চান, তা করে নিন।

এই পর্বে নুন দেখে নিন। প্রয়োজন বুঝে নুন ঠিক করে কড়াইয়ে দিন ভেজে রাখা বাদাম এবং কুচোনো ধনেপাতা। এক বার নেড়ে নিয়ে আঁচ বন্ধ করুন।

গরম অবস্থাতেই বিসি বেলে বাথের উপরে সামান্য ঘি ছড়িয়ে পরিবেশন করুন।

bisi bele bath Khichdi Recipes Comfort Food Karnataka cuisine
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy