Advertisement
E-Paper

আমিষ ছাড়া পুজোর পেটপুজো অসম্পূর্ণ? মাহি বিরিয়ানি, চিংড়ির ধোঁকা থাকুক পুজো-স্পেশ্যাল মেনুতে

কয়লার নিভু আঁচে, দমে রান্না করা মাছের বিরিয়ানি কিন্তু স্বাদে মাংসের বিরিয়ানির থেকে এতটুকুও কম নয়। পুজোর দিনে আমিষ খেতে চাইলে পাতে থাক মুর্শিদাবাদি মাছের বিরিয়ানি আর চিংড়ি মাছের ধোঁকার ডালনা।

সায়ন্তনী মহাপাত্র

সায়ন্তনী মহাপাত্র

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৪ ১৫:০২
উৎসবের ভূরিভোজে পাতে যখন আমিষ।

উৎসবের ভূরিভোজে পাতে যখন আমিষ। ছবি: সায়ন্তনী মহাপাত্র।

দুর্গাপুজায় আমিষ না নিরামিষ, সেই নিয়ে মতপার্থক্য বহু দিনের। এক পক্ষের মানুষ বলেন, ধর্মাচরণ অতি শুদ্ধমতে, ভক্তি সহকারে করা উচিত। আমিষ খাবারের প্রোটিন মানুষের শরীরে উদ্দীপনা বাড়ায় এবং একাগ্রতা নষ্ট করে, তাই ভক্তিসাধনের ক্ষেত্রে এই ধরনের খাবার অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। অন্য পক্ষে যাঁরা, তাঁরা আবার বাংলার ভৌগোলিক অবস্থান আর শাস্ত্র- পুরাণ ঘেঁটে বলেন, নদীমাতৃক বাংলার রোজকার রান্নায় প্রতিফলিত হবে মাটির ফসল আর জলের মাছ, সেটাই তো স্বাভাবিক! আর বাংলার ঘরে ঘরে ভালমন্দ মানে চিরকালই মাছের বিবিধ পদ। সেই কবে থেকে বাঙালি যাপনের এ এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। শুধু খাবার হিসেবে নয়, বঙ্গজীবনের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য কৃষ্টি, সবটুকু জুড়েই তো মাছের উপস্থিতি।

তবে যদি ভাবেন বাংলার মাছের স্বাদে কেবল বাঙালিই আকুল, তবে মস্ত ভুল হবে। এর স্বাদে মজে আছেন তাঁরাও, যাঁরা যুগে যুগে এই বাংলায় বাস করতে এসেছেন। মুর্শিদাবাদের নবাবি ঘরানার রাঁধুনিরাও তাই বাংলার একান্ত নিজস্ব রুই মাছ দিয়ে মোগলাই পদ্ধতিতে বানিয়েছিলেন ‘মাহি বিরিয়ানি’। পার্সিয়ান ‘মাহি’ শব্দের অর্থ মাছ। কয়লার নিভু আঁচে, দমে রান্না করা এই মাছের বিরিয়ানি কিন্তু স্বাদে মাংসের বিরিয়ানির থেকে এতটুকুও কম নয়। পুজোর দিনে আমিষ খেতে চাইলে পাতে থাক মুর্শিদাবাদি মাছের বিরিয়ানি আর চিংড়ি মাছের ধোঁকার ডালনা।

মাহি বিরিয়ানি

উপকরণ:

বড় রুই মাছ: ১ কেজি

বাসমতি চাল: ১ কেজি

টক দই: ৩/৪ কাপ

পেয়াঁজ: ৩ টি , মিহি করে কুচোনো

আদা: দেড় টেবিল চামচ

রসুন: দুই টেবিল চামচ

কাঁচালঙ্কা বাটা: ১ টেবিল চামচ

গোলমরিচ গুঁড়ো: ১ চা চামচ

ধনে গুঁড়ো: ১ টেবিল চামচ

হলুদ গুঁড়ো: ১ টেবিল চামচ

লেবুর রস: ১ টি

শাহি জিরে: আধ চা চামচ

জায়ফল জয়িত্রী সামান্য

এলাচ, লবঙ্গ, দারচিনি: সামান্য

তেজপাতা: ৪-৫ টি

বিরিয়ানি মশলা: পরিমাণ মতো

নুন: স্বাদ অনুযায়ী

জাফরান: সামান্য

দুধ : ১/২ কাপ

ঘি: পরিমাণ মতো

প্রণালী:

মাছ ধুয়ে নুন, হলুদ, সামান্য অদা রসুন বাটা আর লেবুর রস দিয়ে মাখিয়ে রাখুন। দুধ খানিক গরম করে তাতে জাফরান ভিজিয়ে রাখুন। চাল ধুয়ে ফুটন্ত জলে ফেলে ৮০ শতাংশ রান্না করে রাখুন। জল ঝরিয়ে বিছিয়ে রাখুন প্লেটে বা শুকনো পরিষ্কার কাপড়ের উপরে।

ঘি গরম করে ১টি বড় পেয়াঁজ লাল করে ভেজে তুলে রাখুন। মাছ মাঝারি করে ভেজে তুলে রাখুন। এ বার ঘি গরম করে প্রথমে সমস্ত গোটা গরমমশলা ফোড়ন দিন। সুগন্ধ বেরোলে পেয়াঁজ কুচি ছেড়ে কম আঁচে হালকা সোনালি রং ধরা পর্যন্ত রান্না করুন। তাতে আদা রসুন, কাঁচালঙ্কা বাটা দিয়ে আবারও কষিয়ে নিন। ধনে, হলুদ, গোলমরিচ গুঁড়ো সামান্য জলে গুলে মিনিট দুয়েক নাড়াচাড়া করুন। এর পরে আঁচ কমিয়ে দই দিয়ে ভাল করে কষান তেল না বেরোনো পর্যন্ত।

নুন, গরমমশলা আর মাছ দিয়ে ভাল করে নেড়ে ৩/৪ কাপ গরম জল দিয়ে দিন। সামান্য গ্রেভি থাকতে ১/২ চা চামচ বিরিয়ানি মশলা দিয়ে নামিয়ে ফেলুন।

একটু তলাভারী পাত্রে, এই মাছ, ভাত, ঘি, বিরিয়ানি মশলা, ভাজা পেয়াঁজ দিয়ে পরতে পরতে সাজান। উপর থেকে দুধে ভেজানো জাফরান দিন। মুখ শক্ত করে ঢেকে দমে বসান। পারলে জ্বলন্ত কাঠকয়লার অঙ্গার দিন ঢাকার উপরেও। ২৫-৩০ মিনিট মতো রাখুন। খুলে মিশিয়ে পরিবেশন করুন নতুন স্বাদের মাহি বিরিয়ানি।

ধোঁকাতেও আমিষের ছোঁয়া!

ধোঁকাতেও আমিষের ছোঁয়া! ছবি: সায়ন্তনী মহাপাত্র।

চিংড়ি মাছের ধোঁকা

উপকরণ:

চিংড়ি মাছ একটু বড় আকারের: ১৪-১৫টি (মাথা বাদ দিয়ে)

ডিমের সাদা অংশ: ১টি

গোলমরিচের গুঁড়ো: ১ চামচ

বিস্কুটের গুঁড়ো : ২ চামচ

আলু: একটি বড়, ডুমো করে কাটা

নুন : স্বাদ মতো

চিনি : স্বাদ মতো

হলুদ

লঙ্কার গুঁড়ো : স্বাদ মতো

সর্ষের তেল: পরিমাণ মতো

বাটা পেঁয়াজ: ২ টেবিল চামচ

আদা-জিরে বাটা: ২ ছোট টেবিল চামচ

দই: ২ টেবিল চামচ

তেজপাতা, গোটা গরমমশলা ফোড়নের জন্য

গরম মশলার গুঁড়ো: ১/২ চা চামচ

কাঁচালঙ্কা: ৫-৬ টি

প্রণালী:

মাছগুলি কাঁচালঙ্কা দিয়ে বেটে নিন। একদম মিহি করবেন না যেন। একটি পাত্রে মাছ বাটার সঙ্গে ডিমের সাদা অংশ, মরিচগুঁড়ো, নুন, হলুদ আর প্রয়োজন মতো বিস্কুটের গুঁড়ো মাখিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করুন।

একটি ছড়ানো পাত্রে তেল মাখিয়ে এই মিশ্রণ সমান করে ছড়িয়ে ৭-৮ মিনিট ভাপিয়ে নিন। ঠান্ডা হলে বরফি আকারে কেটে তুলুন।

তেল গরম করে দুই দিক হালকা করে ভেজে নিন। ওই তেলেই আলু সোনালি করে ভেজে নিন।

এ বার তেলে গোটা গরম মশলা, কাঁচালঙ্কা, তেজপাতা দিন। তার পর পেয়াঁজ, নুন, হলুদ, লঙ্কাগুঁড়ো দিয়ে কষিয়ে নিন। তেল বেরোলে আদা জিরে বাটা দিয়ে নাড়াচাড়া করুন। মশলার কাঁচা গন্ধ চলে গেলে ফেটানো দই দিয়ে আবারও কষান। আলু দিয়ে নেড়ে দেড় কাপ গরম জল দিয়ে ফোটান। ৭-৮ মিনিট পরে মাছের ধোঁকাগুলি দিয়ে নুন, মিষ্টি দিন স্বাদ মতো। একটু ঝোল থাকতে গরমমশলা ছড়িয়ে গ্যাসের আঁচ বন্ধ করে দিন।

Puja 2024 Special Durga Puja 2024
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy