গবাদি পশুর ক্ষেত্রে স্তনের প্রদাহ বা ম্যাস্টাইটিস রোগের বাড়বাড়ন্তের কথা প্রায়ই শোনা যায়। সেই রোগের চিকিৎসায় নানাবিধ অ্যান্টিবায়োটিকও ব্যবহার করা হয়। সম্প্রতি রাজ্য প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী দেখিয়েছেন যে এই রোগের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিকের সঙ্গে ভেষজ উপাদানও ব্যবহার করা যেতে পারে। তাতে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা আরও বৃদ্ধি পায়। সেই উপাদানও সহজলভ্য। আমবাঙালির অতি পরিচিত, ‘তুলসী’। তাঁদের এই সংক্রান্ত গবেষণাপত্র ইন্ডিয়ান জার্নাল অব ফার্মাকোলজি-সহ একাধিক বিজ্ঞানপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
জীবনরঞ্জন দাশ, তাপসকুমার সর, ইন্দ্রনীল সামন্ত এবং তপনকুমার মণ্ডলের গবেষণা দেখিয়েছে যে তুলসী পাতার (ওসিমাম স্যাংটাম) রস এই চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রথাগত ওষুধের সহকারী হিসেবে (সাপোর্টিভ থেরাপি) ব্যবহার করা যেতে পারে। রোগাক্রান্ত পশুদের উপরে এই সহায়ক চিকিৎসার সফল প্রয়োগও করা হয়েছে বলে গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। ওই বিজ্ঞানীরা গবেষণাপত্রে জানিয়েছেন, জুলাই মাস নাগাদ যখন তুলসী গাছে ফুল আসে তখন তুলসী গাছের পাতা তুলে, পিষে তা থেকে রস বেরকরা হয়েছিল। সেই রসই ব্যবহার করা হয়েছে।
দেখা গিয়েছে যে, অ্যান্টিবায়োটিকের পাশাপাশি যে রোগাক্রান্ত পশুগুলিকে তুলসী পাতার রস খাওয়ানো হয়েছে, তারা দ্রুত সুস্থ হয়েছে এবং অ্যান্টিবায়োটিকও ভাল কাজ করেছে। তুলসী পাতার মধ্যে থাকা ভেষজ উপাদান এবং অ্যান্টিবায়োটিকের রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলেই এই ফল।
তাপসকুমার জানান, গবাদি পশুদের মধ্যে ম্যাস্টাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার হার খুব বেশি। এই রোগের ফলে স্তনে প্রদাহ হয় এবং তাতে ডেয়ারি শিল্পের ক্ষেত্রেও নানা সমস্যা হয়। সে দিক থেকে অ্যান্টিবায়োটিক এবং ভেষজ—দুই উপাদান একত্রে কাজ করলে এই রোগের চিকিৎসা দ্রুত করা যেতে পারে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)