E-Paper

মহাকাশে দৈত্যাকার ‘রেডিয়ো কোয়াজ়ার’, আবিষ্কার চার বাঙালির

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, যে সকল গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ থেকে বেতার তরঙ্গ (রেডিয়ো সিগন্যাল) নির্গত হয়, তাদের ‘রেডিয়ো গ্যালাক্সি’ বলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৫ ০৯:৩৩
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

তারা ৭২ লক্ষ আলোকবর্ষ পর্যন্ত বিস্তৃত। আকারে আকাশগঙ্গা (মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি)-র চেয়ে ২০-৫০ গুণ বড়। এমন ৫৩টি দৈত্যাকার ‘রেডিয়ো কোয়াজ়ার’ আবিষ্কার করলেন চার বাঙালি জ্যোতির্বিজ্ঞানী। মেদিনীপুর সিটি কলেজের মহাকাশ বিজ্ঞানী সব্যসাচী পালের নেতৃত্বাধীন একটি দল মোট ৩৬৯টি ‘রেডিয়ো কোয়াজ়ার’-এর সন্ধান পেয়েছেন। তাঁদের গবেষণাপত্রটি আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমিকাল সোসাইটি-র জার্নাল ‘দ্য অ্যাস্ট্রোফিজ়িক্যাল জার্নাল সাপ্লিমেন্ট সিরিজ়’-এ প্রকাশিত হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, যে সকল গ্যালাক্সি বা ছায়াপথ থেকে বেতার তরঙ্গ (রেডিয়ো সিগন্যাল) নির্গত হয়, তাদের ‘রেডিয়ো গ্যালাক্সি’ বলে। প্রত্যেকটি ‘রেডিয়ো গ্যালাক্সি’র কেন্দ্রস্থলে থাকে এক বা একাধিক বিশাল ভরবিশিষ্ট কৃষ্ণগহ্বর। এই কৃষ্ণগহ্বরের কাছের অঞ্চল থেকে দুই দিকে জেট নির্গত হয় যা প্রধানত রেডিয়ো তরঙ্গে দৃশ্যমান। এই জেট-বিশিষ্ট রেডিয়ো গ্যালাক্সিগুলি আকাশগঙ্গা ছায়াপথের থেকে আকারে অনেকটাই বড় হয়। কোয়াজ়ার বা ‘কোয়াসি স্টেলার অবজেক্ট’ হল এক বিশেষ ধরনের রেডিয়ো গ্যালাক্সি যার কেন্দ্রস্থলে সূর্যের ভরের ১ কোটি থেকে ১০০ কোটি গুণ ভর বিশিষ্ট বিশালাকার কৃষ্ণগহ্বর থাকে। এই বিশাল ভরবিশিষ্ট কৃষ্ণগহ্বরগুলি আশপাশের গ্যাস ও ধুলো আকর্ষণ করে এক জ্বলন্ত উজ্জ্বল ডিস্ক তৈরি করে।

সব কোয়াজ়ার থেকে বেতার তরঙ্গ নির্গত হয় না। কেবলমাত্র খুব অল্প সংখ্যক কোয়াজ়ার শক্তিশালী বেতার তরঙ্গ বিকিরণ করে এবং তার মধ্যে আরও ক্ষুদ্র একটি অংশ প্রদর্শন করে লক্ষ লক্ষ আলোকবর্ষ জুড়ে প্রসারিত বিশাল জেট। এদের বলা হয় দৈত্যাকার রেডিয়ো কোয়াজ়ার।

পুণের উত্তরে প্রায় ৯০ কিলোমিটার দূরে খোদাদ গ্রামে অবস্থিত ‘জায়ান্ট মিটারওয়েভ রেডিয়ো টেলিস্কোপ’ (জিএমআরটি) হল বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী রেডিয়ো টেলিস্কোপ। এটি নির্মাণ ও পরিচালনা করে ‘ন্যাশনাল সেন্টার ফর রেডিয়ো অ্যাস্ট্রোফিজিক্স’ (এনসিআরএ-টিআইএফআর)। ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জিএমআরটি দৃশ্যমান ৯০% আকাশ জুড়ে ১৫০ মেগাহার্ৎজ়-এএকটি সমীক্ষা চালায়। তার তথ্য ব্যবহার করে চার বিজ্ঞানী এই বিরল ও বিশালাকার রেডিয়ো উৎসগুলিকে শনাক্ত করেন।

মহাকাশ বিজ্ঞানী সব্যসাচী পালের নেতৃত্বে এই আবিষ্কারের মূল কাজ করেছেন দুই তরুণ বিজ্ঞানী, মেদিনীপুর সিটি কলেজের সৌভিক মানিক এবং সিধো কানু বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতাই ভূক্তা। এই গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে সিধো কানু বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুশান্তকুমার মণ্ডলেরও।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

black hole Interstellar Space

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy