চাঁদ-দেখতে: তমলুকের সায়েন্স সোসাইটির টেলিস্কোপে চাঁদের পূর্ণগ্রাস দেখছে এক খুদে। বুধবার ছবি তুলেছেন পার্থপ্রতিম দাস।
সামনে পেল্লাই টেলিস্কোপ। কম্পিউটারে চোখ লাগিয়ে সেই টেলিস্কোপে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ দেখছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। মাঝে মাঝে চাঁদের মাটির ছবি ভেসে আসছে পর্দায়। তুমুল আগ্রহে ঝুঁকে পড়ে সেই ছবি খুঁটিয়ে দেখছেন ‘ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্সের’ গবেষকেরা। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের সীতাপুরে বুধবার দেখা গেল এমনই দৃশ্য।
এ দিন বুধবার সকালেই সীতাপুরে পৌঁছে গিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। নেতৃত্বে ছিলেন ‘ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্সের’ অধিকর্তা তথা কলকাতার এস এন বোস সেন্টার ফর বেসিক সায়েন্সেসের অ্যাস্ট্রোফিজিক্স বা জ্যোতিঃপদার্থবিদ্যার অধ্যাপক সন্দীপ কুমার চক্রবর্তী। মূলত তাঁর উদ্যোগেই বছর ছয়েক আগে সীতাপুরে তৈরি হয়েছিল ‘আয়নোস্ফিয়ার অ্যান্ড আর্থকোয়েক রিসার্চ সেন্টার’। তাঁকে সাহায্য করেছিলেন গোমকপোতা গুণধর বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক সুব্রত কুমার বুড়াই। কী ভাবে কাজ হবে, কোন পথে এগোবে গবেষণা তা স্পষ্ট করতে সন্দীপবাবু বিজ্ঞানীদের নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করেন। চন্দ্রগ্রহণ শুরু হতেই বিজ্ঞানীরা চোখ রাখেন টেলিস্কোপে।
চন্দ্রগ্রহণ দেখতে জড়ো হয়েছিলেন উৎসাহীরা। কিন্তু অতিরিক্ত উৎসাহে গবেষণায় ক্ষতি হতে পারে। তাই গবেষণাকেন্দ্রের অনেক আগেই আটকে দেওয়া হয়েছিল উৎসাহীদের। তবে সংযত থেকে সহযোগিতা করেছেন তাঁরাও।
পৃথিবীর চারদিকে বায়ুমণ্ডল থাকায় কোনও উল্কা বা গ্রহাণু পৃথিবীতে ঢোকার আগেই জ্বলে শেষ হয়ে যায়। কিন্তু চাঁদে বায়ুমণ্ডল না থাকায় সেই সুযোগ নেই। ফলে সেই উল্কা বা গ্রহাণু নিমেষে আছড়ে পড়ে চাঁদের মাটিতে। প্রবল বিস্ফোরণে তৈরি হয় গহ্বর। সেই গহ্বরের ছবি তুলতেই এত আয়োজন। গহ্বরের ছবি পাওয়া গেল কি? সন্দীপবাবু জানিয়েছেন, তেমন বড় কিছু মেলেনি ঠিকই। যা পাওয়া গিয়েছে তা নিয়ে আরও গবেষণা চলবে।
সীতাপুরেই রয়েছে পূর্ব ভারতের সবচয়ে বড় ২৪ ইঞ্চির টেলিস্কোপ। রয়েছে আরও একটি দশ ইঞ্চির টেলিস্কোপও। গবেষকদের দাবি, মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘নাসা’ আগে এমন গবেষণা করলেও ভারতের মাটিতে এমন অনুসন্ধান এই প্রথম।
এ দিন তমলুকের বিদ্যাসাগর কৃষ্টি সম্মেলনীর প্রেক্ষাগৃহে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ নিয়ে একটি সেমিনার এবং টেলিস্কোপের সাহায্যে গ্রহণ পর্যবেক্ষণ শিবিরের আয়োজন করেছিল তমলুক সায়েন্স সোসাইটি। প্রায় পাঁচটি স্কুলের পঞ্চাশ জন ছাত্রছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকেরা অংশ নেয় ওই সেমিনারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy