Advertisement
E-Paper

গ্রহণ দেখার আগ্রহ ভেস্তে দিল ত্রিস্তর মেঘের হামলা

ভারত-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে খাবার, ফলের রস ইত্যাদি বিলি করা হয়েছে দর্শকদের মধ্যে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:০৬
কেরলের চেরুভাতুর শহর থেকে ক্যামেরাবন্দি সূর্যগ্রহণ। রয়টার্স

কেরলের চেরুভাতুর শহর থেকে ক্যামেরাবন্দি সূর্যগ্রহণ। রয়টার্স

সকালে মেঘের ফাঁকে সূর্যের দেখা পেয়ে আহ্লাদিত হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় সরকারি জ্যোতির্বিজ্ঞানী। সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে প্রতিষ্ঠানের ছাদে টেলিস্কোপের সাহায্যে সূর্যের প্রতিবিম্ব তৈরি করে সাদা বোর্ডে সেই প্রতিচ্ছবিও দেখছিলেন। কিন্তু গ্রহণের তুঙ্গ পর্যায়ে পৌঁছনোর ঠিক আগেই বাদ সাধল প্রকৃতি। আকাশ ছেয়ে গেল কালো ঘন মেঘে। তার জেরেই টেলিস্কোপের নজরদারির আওতার বাইরে চলে গেলেন সুয্যিমামা!

নির্ঘণ্ট মেনে সকাল ৮টা ২৭ মিনিটেই শুরু হয়েছিল সূর্যগ্রহণ। ৯টা ৫৩ মিনিটে গ্রহণের সর্বোচ্চ পর্যায় দেখা যেত। তার আগেই সব ভেস্তে দিল মেঘের হামলা। ১১টা ৩২ মিনিটে গ্রহণমুক্তির দৃশ্যও দেখা যায়নি।

কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা পজিশনাল অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টারের অধিকর্তা সঞ্জীব সেন বলেন, ‘‘আদতে বলয়গ্রাস হলেও কলকাতা থেকে আংশিক গ্রহণ দেখা যেত। তাতে আমরা দেখতে পেতাম, সূর্যের সর্বোচ্চ ৪৫ শতাংশ ঢাকা পড়ছে। ঠিকই চলছিল। কিন্তু ওই সর্বোচ্চ পর্যায়ের আগেই সব ঢেকে দিল মেঘ।’’ আবহাওয়া দফতরের খবর, আবহমণ্ডলের তিন স্তরেই মেঘ জমেছিল। তার ফলেই এই পরিস্থিতি।

এক লহমায়
কার গ্রহণ

• সূর্যের বলয়গ্রাস। অর্থাৎ চাঁদ আড়ালে পুরো ঢাকা পড়ে না সূর্য। চার পাশ থেকে বলয়ের মতো অনাবৃত অংশ দেখা যায়।

বলয়গ্রাসের পথ

• দক্ষিণ ভারতের একাংশের উপর দিয়ে। কলকাতা-সহ দেশের বেশির ভাগ অংশ থেকে আংশিক গ্রহণ দেখা গিয়েছে।

কলকাতায় গ্রহণ শুরু

• সকাল ৮টা ২৭ মিনিটে।
গ্রহণ শেষ
• বেলা ১১টা ৩২ মিনিটে।

গ্রহণের তুঙ্গ পর্ব

• সকাল ৯টা ৫৩ মিনিট (সূর্যের ৪৫ শতাংশ চাঁদের আড়ালে ঢাকা পড়ে)।

মেঘে ঢাকল আকাশ

• সকাল ৯টা ৫২ মিনিটে।

মেঘলা আবহাওয়ার মধ্যেই অনেকে জড়ো হয়েছিলেন পজিশনাল অ্যাস্ট্রোনমি ভবনের ছাদে। বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি তাঁরাও ফিল্টার লাগানো টেলিস্কোপে চোখ রেখে এবং প্রতিবিম্বে গ্রহণ দেখেছেন। ৯টা ৫২ মিনিটে আচমকা আকাশ মেঘে ঢেকে যাওয়ায় তাঁরাও বাড়ির পথ ধরেন।

বেঙ্গালুরুতেও গ্রহণ দেখার জন্য প্রস্তুতি ছিল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোফিজ়িক্সে। জড়ো হয়েছিলেন অনেক সাধারণ মানুষ। ওই প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী সুজন সেনগুপ্ত ফেসবুকে লিখেছেন, আকাশ মেঘে ঢেকে যাওয়ায় টেলিস্কোপ দিয়ে গ্রহণ দেখতে পাননি। তবে কোডাইকানাল পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে যে-ছবি ধরা পড়েছে, তার ‘লাইভ’ সম্প্রচারিত হয়েছে বেঙ্গালুরুর ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে।

প্রায় এক দশক পরে সূর্যের বলয়গ্রাসের পথ আবার ভারতের উপর দিয়ে গেল। কিন্তু ২০১০ সালের জানুয়ারির পরে এ বারেও সেই পথ গিয়েছে দক্ষিণ ভারতের একাংশের উপর দিয়েই। তাই ভারতের বাকি অংশের কৌতূহলীদের আংশিক গ্রহণেই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে।

পজিশনাল অ্যাস্ট্রোনমি সেন্টার জানিয়েছিল, দক্ষিণ ভারতের কান্নুর, কোয়ম্বত্তূর, কোঝিকোড়, উটি, মাদুরাই, মেঙ্গালুরু, কোচি, তিরুচিরাপল্লি-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে এ বার বলয়গ্রাস স্পষ্ট দেখা যাবে। এর মধ্যে পাহাড়ি শহর উটি থেকে সব থেকে ভাল গ্রহণ দেখা গিয়েছে। বলয়গ্রাস কমবেশি নজরে এসেছে বাকি শহরগুলিতেও। কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে গ্রহণ দেখতে প্রচুর ভিড় হয়। তবে মাঝেমধ্যে হাল্কা মেঘ এসে গ্রহণ দেখায় ব্যাঘাত ঘটিয়েছে। প্রচলিত সংস্কার অনুযায়ী গ্রহণ চলাকালীন খাদ্যগ্রহণ নিষিদ্ধ। সেই সংস্কার কাটাতে এ দিন গ্রহণ চলাকালীন দক্ষিণ

ভারত-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে খাবার, ফলের রস ইত্যাদি বিলি করা হয়েছে দর্শকদের মধ্যে। তবে এ-সবের মধ্যেই অসংখ্য মানুষ ‘সংস্কার’ ধরে রেখেছেন। গ্রহণ চলাকালীন কেরলের শবরীমালা-সহ বিভিন্ন মন্দির বন্ধ রাখা হয়েছিল। মন্দির বন্ধ ছিল মথুরা, কুরুক্ষেত্রেও। উত্তর ভারতে হাড় হিম করা ঠান্ডার মধ্যেও সকালে যমুনা-সহ বিভিন্ন জলাশয়ে স্নান করেছেন লোকজন।

Solar Eclipse Weather
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy