জলবায়ু বদলের জেরে খাদ্য সঙ্কটের কথা বারবারই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে উঠে এসেছে। এ বার সেই সঙ্কটের মোকাবিলায় অপ্রচলিত বনজ খাদ্যের উপরে নির্ভরশীল হওয়ার নিদান দিচ্ছেন বিজ্ঞানীদের অনেকে। সম্প্রতি কলকাতায় ইনস্টিটিউট অব ইকোটক্সিকোলজি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট আয়োজিত পরিবেশ সম্মেলনেও এ বিষয়ে আলোকপাত করেছেন এক দল বিজ্ঞানী। জি বি পন্থ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হিমালয়ান এনভায়রনমেন্ট-এর বিজ্ঞানী সন্দীপ রাওয়ত ও তাঁর সহযোগীদের এক গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, হিমালয় পার্বত্য় এলাকায় এমন অনেকে বনজ সম্পদ আছে যা পুষ্টিগুণে ভরপুর অথচ তার ব্যবহার কম। এখনও পর্যন্ত এমন ৯০টি গাছগাছড়ার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে বলেও ওই গবেষণাপত্রে দাবিকরা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, জলবায়ু বদলের জেরে প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম পরিবর্তন হচ্ছে। বাড়ছে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা এবং দুর্যোগ। তার প্রভাব কৃষি উৎপাদনেও পড়ছে। এই সব মিলিয়েই আগামী দিনে খাদ্য় সঙ্কটের আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা। রাষ্ট্রপুঞ্জের একাধিক নথিতেও এই আশঙ্কার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই বিপদ এড়াতে এক দিনে যেমন সুস্থায়ী কৃষি প্রযুক্তি প্রবর্তনের কথা বলা হচ্ছে, তেমনই গত বছর দুয়েকের মধ্যে ইউরোপ ও আমেরিকা থেকে প্রকাশিত একাধিক গবেষণাপত্রেও খাদ্য সঙ্কট এড়াতে বনজ সম্পদের উপরে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সন্দীপ রাওয়ত ও তাঁর সহযোগীদের গবেষণাপত্রে গোল্ডেন হিমালয়ান র্যাস্পবেরি-সহ কয়েকটি ফল এবং গাছগাছড়ার কথা উল্লেখ করেছেন যেগুলি পুষ্টিগুণে ভরপুর এবং হিমালয়ের বিভিন্ন এলাকায় পাওয়া যায়। তবে এগুলি বৃহত্তর ক্ষেত্রে ততটা ব্যবহৃত হয় না। তবে ওই এলাকার সংস্কৃতি বিষয়ক গবেষকদের একাংশ বলছেন, অনেক ক্ষেত্রে জনজাতিদের খাদ্য তালিকায় এবং ভেষজ চিকিৎসায় এই উপাদানগুলি ব্যবহৃত হয়।
ওই পরিবেশ সম্মেলনের আহ্বায়ক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় এবং কো-অর্ডিনেটর শ্রেয়সী মুখোপাধ্যায় জানান, সম্মেলনে খাদ্য সুরক্ষা এবং পরিবেশ সংক্রান্ত আরও নানা বিষয় উঠে এসেছিল। কী ভাবে জীববৈচিত্র রক্ষা করা যায়, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে, সে ব্যাপারেও দিশা দেখিয়েছেন গবেষকেরা। উপস্থিত ছিলেনবিশিষ্ট বিজ্ঞানীরাও।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)