Advertisement
E-Paper

চাঁদই পারবে ব্রহ্মাণ্ডের ‘সবচেয়ে বড়’ রহস্যের উন্মোচন করতে? কোমর বেঁধে নামছেন বিজ্ঞানীরা

অস্তিত্ব যে আছে, সে ব্যাপারে সকলেই নিশ্চিত। কিন্তু কখনওই তার দেখা মেলেনি। ব্রহ্মাণ্ডের সেই অদৃশ্য ভূতুড়ে পদার্থের সন্ধানে একদা ‘ঘর-বাড়ি’ও ছেড়েছিলেন সার্নের বিজ্ঞানীরা। কিন্তু সে ধরা দেয়নি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:২৯
ছবি: নাসা।

ছবি: নাসা।

অস্তিত্ব যে আছে, সে ব্যাপারে সকলেই নিশ্চিত। কিন্তু কখনওই তার দেখা মেলেনি। ব্রহ্মাণ্ডের সেই অদৃশ্য ভূতুড়ে পদার্থের সন্ধানে একদা ‘ঘরবাড়ি’ও ছেড়েছিলেন সার্নের বিজ্ঞানীরা। কিন্তু সে ধরা দেয়নি। মহাবিশ্বের সবচেয়ে বড় রহস্য রহস্যই থেকে গিয়েছে! সেই ডার্ক ম্যাটারের খোঁজে এ বার চাঁদের মাটিকে কাজে লাগাতে চাইছেন বিজ্ঞানীরা।

আমাদের চারপাশে গাছপালা, নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত, গ্রহ-উপগ্রহ, ছায়াপথ-সহ যে সমস্ত দৃশ্যমান জড় পদার্থগুলি দেখা যায়, তারা এই মহাবিশ্বের মোট ভরশক্তির ৫ শতাংশ মাত্র। বাকি ৯৫ শতাংশ সম্পূর্ণ অদৃশ্য। অজানা। রহস্যময় এক অন্ধকার জগৎ। তার মধ্যে ৭০ শতাংশই হল অদৃশ্য শক্তি (জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে ডার্ক এনার্জি)। আর ২৫ শতাংশ ডার্ক ম্যাটার।

এই ডার্ক ম্যাটারের শুধু অস্তিত্বটুকুই বিজ্ঞানীদের জানা। কিন্তু তার উৎস কী, কী দিয়ে তৈরি, তা এখনও সম্পূর্ণ অজানা। তবে এটা স্পষ্ট যে, আলোর সঙ্গে এই সব ভূতুড়ে পদার্থের কিছু একটা শত্রুতা রয়েছে। সে আলো শোষণ করে না। আলোর প্রতিফলন, প্রতিসরণ বা বিচ্ছুরণ কিছুই করে না। ফলে একে দেখাও যায় না। মহাবিশ্বের এখানে-ওখানে সর্বত্র ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা সত্ত্বেও ডার্ক ম্যাটার দেখা যায় না কারণ, কোনও যন্ত্র বা ডিটেক্টর দিয়ে একে শনাক্ত করা যায় না। অন্য কোনও পদার্থের সঙ্গে কোনও ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়াও হয় না।

ডার্ক ম্যাটার আমাদের পরিচিত ইলেকট্রন, প্রোটন, নিউট্রন কণা দিয়ে তৈরি নয়। বিজ্ঞানীদের অনুমান, কোয়ান্টাম ফিজ়িক্স-এ ‘এক্সিয়ন’ নামে এক ধরনের পারমাণবিক কণার কথা বলা হয়, যার বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে ডার্ক ম্যাটারের কিছু মিল রয়েছে। হতে পারে ডার্ক ম্যাটার ‘এক্সিয়ন’ দিয়ে তৈরি। আবার না-ও হতে পারে।

জাপানের সুকুবা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষকের বক্তব্য, ডার্ক ম্যাটারের কণা যদি হালকা হয়, তবে তা কখনওই একে অপরের কাছাকাছি আসবে না। ছড়িয়েছিটিয়ে থাকবে। ধূলিকণার মতো উড়বে। কিন্তু ডার্ক ম্যাটারের কণা ভারী হলে তা জমাট বেঁধে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কাঠামো তৈরি হতে পারে। কিন্তু সেই কণা হালকা না ভারী, তা জানার জন্য এক উপায় খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

গবেষকেরা জানান, বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণের পর, ছায়াপথ, গ্রহ-নক্ষত্র তৈরি হওয়ার আগে পর্যন্ত (এই সময়কে ডার্ক এজ বা অন্ধকারযুগ বলে) মহাবিশ্ব হাইড্রোজেন গ্যাসে ভরা ছিল। হাইড্রোজেন পরমাণু থেকে এক ধরনের ক্ষীণ রেডিয়ো তরঙ্গ (২১ সেমি তরঙ্গদৈর্ঘ্যের) বার হয় এই গ্যাস যত ঘন এবং গরম হবে, এই সঙ্কেতের শক্তিও বদলাবে। বিজ্ঞানীদের অনুমান, এই সঙ্কেতের ভিতরেই লুকিয়ে রয়েছে ডার্ক ম্যাটারের রহস্য। ডার্ক ম্যাটারের কণা যদি ভারী হয়, তার থেকে নির্গত সঙ্কেত হালকা কণার ডার্ক ম্যাটারের সঙ্কেতের চেয়ে আলাদাই হবে।

কিন্তু চাঁদ কী ভাবে এই রহস্যের সমাধান করবে? গবেষকদের মত, এই ক্ষীণ সঙ্কেত পৃথিবীতে বসে শোনা সম্ভব নয়। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল এই কম তরঙ্গদৈর্ঘ্যের সঙ্কেত আটকে দেবে। কিন্তু চাঁদের উল্টো পিঠ নীরব। সেখানে এই সঙ্কেত শোনা গেলেও যেতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। ইতিমধ্যেই জাপান-সহ বিভিন্ন দেশই চাঁদে এ রকম পর্যবেক্ষণকেন্দ্র স্থাপনের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা শুরু করেছে।

Cold Dark Matter
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy