Advertisement
E-Paper

মৃত্যুকে পিছিয়ে দিন আরও বেশ কয়েকটা বছর

অমরত্বের প্রত্যাশী অনেকেই। রবীন্দ্রনাথ সেই কবেই লিখে গিয়েছেন, ‘মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে...’। কিন্তু, প্রকৃতি বা বিজ্ঞান কেউই এখনও পর্যন্ত জীবজগত্‌কে ইচ্ছেপূরণের সেই রাস্তা বাতলে দেয়নি।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৫:৩৭
সাহচর্য। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

সাহচর্য। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।

অমরত্বের প্রত্যাশী অনেকেই। রবীন্দ্রনাথ সেই কবেই লিখে গিয়েছেন, ‘মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে...’। কিন্তু, প্রকৃতি বা বিজ্ঞান কেউই এখনও পর্যন্ত জীবজগত্‌কে ইচ্ছেপূরণের সেই রাস্তা বাতলে দেয়নি।

তবে, অমরত্ব না হলেও সাম্প্রতিক এক গবেষণা মৃত্যুর দিন ক্ষণকে বেশ কয়েক বছর পিছিয়ে দেওয়ার আশ্বাসবাণী শুনিয়েছে। এবং জীবনকাল প্রায় ৪০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার আশাও দেখা দিয়েছে। কাজেই এখন যাঁর জীবনকাল ৮০ বছর, মলিকিউলার জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সাহায্যে তিনিই বেঁচে থাকবেন ১১২ বছর। বিজ্ঞানীরা এই বিষয়ে আশাবাদী। সম্প্রতি নেচার পত্রিকায় এমন এক গবেষণাপত্র প্রকাশ পাওয়ার পর দুনিয়া জুড়ে শোরগোল তৈরি হয়েছে।

জীবদেহে নানা ঘটনাবলী নিয়ন্ত্রণ করে জিন। সে রকমই প্রায় ৪০ হাজার জিন নিয়ে কাজ কাজ চলছিল জুরিখের ইটিএইচ গবেষণাগার এবং জার্মানির জেনা সেন্টার ফর সিস্টেম বায়োলজি অব এজিং-এর জেন এজ কনসর্টিয়ামের উদ্যোগে। এর মধ্যে কোন জিনগুলি বার্ধক্যের সঙ্গে জড়িত, তা নিয়েও চলছিল গবেষণা। মূলত নিমাটোড পর্বের সি এলিগ্যানস, জেব্রা ফিশ এবং ইঁদুরের জিনের উপর পরীক্ষা চালানো হয়। তাতে বিজ্ঞানীরা দেখেন, তিনটি প্রজাতিতেই ৩০টি জিন বার্ধক্যের সঙ্গে সরাসরি জড়িয়ে রয়েছে। জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সাহায্যে ওই তিন প্রজাতির জীবনকাল বাড়াতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁদের দাবি, প্রায় ৪০ শতাংশ বাড়ানো গিয়েছে জীবনকাল। আর মানুষের বেশি কাল বাঁচার সম্ভাবনাটাও এখানেই লুকিয়ে রয়েছে। কেননা, মানবদেহেও রয়েছে ওই ৩০টি জিন। কাজেই, মলিকিউলার জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং-এর সাহায্যে সেই জিনের কর্মকাণ্ডকে প্রভাবিত করে মানুষের জীবনকাল বাড়ানোর সম্ভাবনা উজ্জ্বল।

আরও পড়ুন- যৌবনের রক্তে বার্ধক্য দূর, নতুন যযাতির কাহিনি লিখছে বিজ্ঞান?

বিজ্ঞানীরা ওই তিন প্রাণীর দেহে জিনগুলির কার্যকারিতা আরও খতিয়ে দেখেছেন। সেই গবেষণার পর তাঁদের ধারণা, ওই ৩০টির মধ্যে একটি জিনই প্রাণীদের আয়ু নিয়ন্ত্রণ করে। বিক্যাট-১ (ব্র্যাঞ্চড চেন অ্যামিনো অ্যাসিড ট্রান্সপারেজ-১) ওই জিনের এম-আরএনএ-কে প্রভাবিত করে নিমাটোডের ক্ষেত্রে সর্বাধিক ২৫ শতাংশ এবং ইঁদুরের ক্ষেত্রে প্রায় ৪০ শতাংশ আয়ু বেড়েছে। মানুষের ক্ষেত্রে যদি বিক্যাট-১-এর প্রভাব নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তবে মানুষের আয়ু বেড়ে ১২০ বছর হতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।

মানবদেহে অপরিহার্য অ্যামাইনো অ্যাসিড রয়েছে ন’টি। তার মধ্যে কয়েকটি মানবদেহ বিকাশের কাজ করে। বিক্যাট-১ ওই কাজ নিয়ন্ত্রণ করে। এ বার তার প্রভাব যদি কোনও ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তবে ওই অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলি তাদের স্বাভাবিক কাজ করতে পারবে না। ফলে দেহ বিকাশের কাজও ধীরে হবে। এবং বার্ধক্য থেকে শুরু করে মৃত্যু— সবই পিছিয়ে যেতে পারে। আপাতত বিজ্ঞানীদের অস্ত্র এই বিক্যাট-১। তাকে নিয়ন্ত্রণ করে আয়ু বাড়ানোর কাজে তাই ব্যস্ত রয়েছেন তাঁরা।

মানবদেহের উপর এখনও পরীক্ষা শুরু হয়নি। ভবিষ্যতে সে কাজ হবে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা। তবে, জিনের স্বভাব-চরিত্র-গোত্র যে হেতু পরীক্ষা-সফল জীবদেহের সঙ্গে মানুষের মিলে যায়, তাই আশার জায়গা থেকে সরছেন না তাঁরা।

Gene
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy