Advertisement
E-Paper

ভিনগ্রহীদের মহাকাশযান হয়তো এসে গিয়েছে আমাদের কাছে! বললেন হার্ভার্ডের বিজ্ঞানী

জটিল সমীকরণের ফলাফল দেখে লোয়েব বলে দিয়েছেন, এখন ভিনগ্রহীদের সেই মহাকাশযানটি পেরিয়ে যাচ্ছে বৃহস্পতির কক্ষপথগুলি। আসছে পৃথিবীর দিকেই।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৮:০৬
বিশিষ্ট জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোয়েব ও ভিনগ্রহীদের মহাকাশযান। - ফাইল ছবি।

বিশিষ্ট জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোয়েব ও ভিনগ্রহীদের মহাকাশযান। - ফাইল ছবি।

হ্যাঁ, আর আসছে, আসবে নয়। এই ব্রহ্মাণ্ডে অনেক অনেক পথ পেরিয়ে ইতিমধ্যেই আমাদের সৌরমণ্ডলে ঢুকে পড়েছে ভিনগ্রহীদের একটি মহাকাশযান। তা আমাদের থেকে এখন রয়েছে ঠিক কতটা দূরে, এই মাসেই এক রাতে টেবিলে রাখা কাগজে খসখস করে লিখে তার জটিল সমীকরণও বানিয়ে ফেলেছেন তিনি। হিসেব কষে ফেলেছেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান আব্রাহাম লোয়েব। ঘনিষ্ঠ মহলে যিনি অভি লোয়েব নামনেই জনপ্রিয়।

জটিল সমীকরণের ফলাফল দেখে লোয়েব বলে দিয়েছেন, এখন ভিনগ্রহীদের সেই মহাকাশযানটি পেরিয়ে যাচ্ছে বৃহস্পতির কক্ষপথগুলি। আসছে পৃথিবীর দিকেই। এও বলে দিয়েছেন, ভিনগ্রহীদের সেই মহাকাশযানের খুব একটা সময়ও লাগবে না আমাদের গ্রহে পৌঁছতে। কারণ, তা ছুটে আসছে অসম্ভব জোরে। তাকে অত জোরে ছোটাতে কোনও জ্বালানির প্রয়োজন হচ্ছে না। সূর্যের আলোই তাকে ছোটাচ্ছে অত জোরে।

অন্য কেউ বললে হয়তো ‘পাগল’ বলে উড়িয়ে দেওয়া যেত। কিন্তু বলছেন যে অভি লোয়েব! যাঁর বাড়িতে এসে ডিনার করেছিলেন স্টিফেন হকিং। ডাকসাইটে চলচ্চিত্র পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ যাঁর কাছে ছুটে এসে বলেছিলেন, ‘‘ছবি করব। স্পেস (মহাকাশ) নিয়ে একটা ভাল আইডিয়া দিন তো।’’ যাঁর অফিসে এসে দেখা করেছিলেন রুশ ধনকুবের কোটিপতি য়ুরি মিলনার। সোফায় বসে এ-কথা ও-কথার পর যাঁকে মিলনার বলেছিলেন, সভ্যতা প্রথম যে আন্তর্নক্ষত্র মহাকাশযান পাঠাবে, তার নকশা বানিয়ে দিতে। ১০ কোটি ডলারের সেই প্রকল্পের জন্যই এখন নকশা বানাতে ব্যস্ত লোয়েব।

মাথায় আরও চিন্তা রয়েছে লোয়েবের। ফেসবুকের প্রধান মার্ক জুকেরবার্গও তাঁকে দিয়েছেন একটি কঠিল দায়িত্ব। লোয়েবকে ছাড়া যে হবে না সেই কাজ!

অভি লোয়েব। যাঁর বাড়িতে ডিনার করতে এসেছিলেন স্টিফেন হকিং

নতুন কথা বলেন। কেউ যা ভাবারও সাহস পায়নি, সেই কথাটাই বলেন বুক বাজিয়ে। ফলে, তাঁর নিন্দুকের সংখ্যা খুব কম নয়। বিশ্বের কোনও প্রান্ত থেকে কোনও এক দিন তাঁর কেউ সমালোচনা না করলেই যেন লোয়েবের মনে হয়, তিনি আর আমাদের গ্রহে নেই। মঙ্গল বা বৃহস্পতিতে চলে গিয়েছেন বলে কেউ তাঁর সুলুকসন্ধান জানতে পারছে না। তাই তাঁর নিন্দা, সমালোচনাতেও খামতি হচ্ছে!

এই সে দিনের ঘটনা। টেলিস্কোপে ধরা পড়ল অদ্ভুত একটি মহাজাগতিক বস্তু। যা অন্য কোনও গ্যালাক্সির কোনও নক্ষত্রমণ্ডল থেকে এসে কোনও সুদূর অতীতে ঢুকে পড়েছিল আমাদের সৌরমণ্ডলে। তার পর এখন সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে অসম্ভব দ্রুত গতিবেগে বেরিয়ে যাচ্ছে এই সৌরমণ্ডল ছেড়ে। তার গতিবেগ অসম্ভব দ্রুত বলে তাকে বেশি ক্ষণ দেখাও যাচ্ছে না। ফলে, তার আচার, আচরণ, চালচলন, মতিগতি ঠিক ভাবে ঠাওরও করতে পারছেন না বিশ্বের তাবড় তাবড় জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। শুধু এইটুকুই বোঝা গিয়েছে, সেটা পাথুরে। দেখতে অনেকটা সিগারের মতো। লম্বাটে। আর খুব পাতলাও। বড়জোর ১ মিলিমিটার পুরু। বিজ্ঞানীদের কেউ বলছেন, ওটা ধূমকেতু। কেউ বলছেন, ওটা কোনও গ্রহাণু বা তার অংশবিশেষ। যার নাম- ‘ওমুয়ামুয়া’।

দেখুন সেই ‘ওমুয়ামুয়া’র ভিডিয়ো

লোয়েব কিন্তু কয়েক মাস আগেই বলে দিয়েছিলেন, ‘‘ওটা হতেই পারে ভিনগ্রহীদের কোনও মহাকাশযান। ধূমকেতু বা গ্রহাণুর চেয়ে যা ছুটছে অনেক বেশি জোরে। আর সেটা সম্ভব হচ্ছে তাকে কেউ ছোটাচ্ছে বলে। তাকে ছোটাচ্ছে আদতে সূর্যের আলো। অত সরু বলেই সূর্যের আলো তাকে অত জোরে ছোটাতে পারছে।’’

‘ওমুয়ামুয়া’। যাকে লোয়েব বলছেন, ‘হতেও পারে ভিনগ্রহীদের মহাকাশযান।’

লোয়েবের ওই মন্তব্যের পরেই, যেমনটা হয়ে থাকে, নিন্দা, সমালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে বিশ্বজুড়ে। শুরু হয়ে যায় লোয়েবকে লক্ষ্য করে বিজ্ঞানীদের ‘ঢিল, পাটকেল’ ছোড়া।

ওহায়ো স্টেট ইউনিভার্সিটির বিশিষ্ট জ্যোতির্বিজ্ঞানী পল সাট্টার বললেন, ‘‘ওটা মোটেই ভিনগ্রহীদের মহাকাশযান নয়। ওঁরা (লোয়েব ও তাঁর সহযোগীরা) সৎ বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানের পদ্ধতিগুলিকে অপমান করেছেন। এটা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না।’’

তাত্ত্বিক জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইথান সিগেল ও নর্থ ক্যারোলিনা স্টেট ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞানী ক্যাটি ম্যাক বললেন, ‘‘অত্যন্ত অসাধু উদ্দেশ্যে এই সব কথা বলা হচ্ছে। এই সবের কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। সস্তা জনপ্রিয়তার মোহে এই সব বলছেন লোয়েব।’’

তা শুনে তুমুল হেসেছেন লোয়েব। বলেছেন, ‘‘আমি হাসছি। যাঁরা এই সব বলছেন, তাঁরা কিন্তু আমাকে ভুলও প্রমাণ করতে পারছেন না। সেটা যদি ওঁরা পারেন, আমি আমার কথা তা হলে ফিরিয়ে নেব। আর কীই বা হবে আমার? হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন আমি যে প্রশাসনিক দায়িত্ব রয়েছি, বড়জোর সেটা ছেড়ে দিতে হবে। তাতেও খারাপ হবে না। আমি আরও বেশি করে মন দিতে পারব জ্যোতির্বিজ্ঞানের গবেষণায়।’’

ছবি ও ভিডিয়ো সৌজন্যে: নাসা

Alien Spaceship Avi Loeb Harvard University ভিনগ্রহীদের মহাকাশযান অভি লোয়েব
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy